আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

জলাবদ্ধতা নিরসনে নালা-খাল-সড়ক সংস্কার কার্যক্রম চলমান থাকবে:চসিক মেয়র।

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বুধবার দুপুরে বর্ষায় নগরীর ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও নালা-নর্দমা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। তিনি প্রধান নগর ভবন, বাটালি হিল, টাইগারপাস, চট্টগ্রাম থেকে শুরু করে বহদ্দারহাট, চকবাজার, কাপাসগোলা, ফরিদা পাড়া পর্যন্ত রাস্তা, ড্রেনেজ এবং সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোর বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন।

পরিদর্শনকালে ফরিদা পাড়ার একটি পাঁচতলা ভবনের জানালা থেকে একজন বাসিন্দা নালায় ময়লা ফেললে তাৎক্ষণিকভাবে মেয়র নিজেই মোবাইল ফোনে ভবন মালিককে কল করে সতর্ক করেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড করলে ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানান।

তিনি বলেন, বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্থ নগরীর বিভিন্ন সড়ক চসিকের ইঞ্জিনিয়ারদেরসহ সরেজমিনে দেখেছি । সরজমিনে দেখার পর মনে হয়েছে নগরীর বেশ কিছু নালা অনেক অপরিকল্পিতভাবেকরা হয়েছিল অতীতে। যার কারণে বৃষ্টির পানি ঠিকমত নিষ্কাশন হচ্ছে না। বর্ষাকালে আমাদের প্ল্যান নালাগুলোকে আমরা কন্টিনিউয়াস প্রসেসে ক্লিন রাখবো। এইজন্য এই তিন মাস নালা সংস্কারের কাজ চলবে। আর খাল সংস্কারের কাজ তো চলমান আছেই।

“ইতোমধ্যে মঙ্গলবার নগরীর জলাবদ্ধতা বিষয়ে সমস্ত সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে আমরা একসাথে বসেছি। আমরা কাজ করছি সমন্বিতভাবে। আমরা একটা কন্টিনিউয়াস মনিটরিং এর মধ্যে আছি। রাস্তা যেগুলো ভারী বর্ষণের কারণে খানা-খন্দ হয়ে গেছে সেগুলো আমরা রিপেয়ার চালিয়ে যাব।এখানে জোয়ারের পানির একটা ফ্যাক্টর আছে। সেজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে আমরা বলেছে তারা যাতে সুইস গেটগুলো যাতে সেভাবে নিয়ন্ত্রণ করে আর পাম্পিং হাউজের ব্যবস্থা করে। আরেকটা হচ্ছে আমাদের ওয়াসাকে বিভিন্ন জায়গায় না কাটার জন্য আমি তাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছি। তিন মাস যাতে বর্ষার সময় তারা এ ধরনের ধরনের সড়ক কাটাকুটি না করে।

তিনি আরও বলেন, বৃষ্টির সময় শহরের কিছু কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে, তার অন্যতম কারণ হচ্ছে নালায় ময়লা ফেলা ও ড্রেনেজ লাইনের প্রতিবন্ধকতা। এ সমস্যা সমাধানে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। নাগরিক সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে অভিযান ও প্রচারণা আরও জোরদার করা হবে।

নগরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে শুধু সিটি কর্পোরেশনের নয়, নাগরিকদেরও দায়িত্ব রয়েছে। আমরা উন্নয়ন কাজ করছি, কিন্তু নাগরিকদের যদি সচেতন না করি, তাহলে এই কাজগুলোর ফল ভোগ করা যাবে না। এজন্য সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল হতে হবে।
“বাসার ময়লা নালা-খালে ফেললে আমরা ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে জরিমানা করব। এ ময়লার কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে এবং পানি জমে সেখানে মশার প্রজনন ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। সেখানে ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়া, এডিস মসার লার্ভা জন্ম নিচ্ছে। তাই আমরা যদি স্বাস্থ্য সচেতন হই তাহলে আশা করি এই শহরটা ক্লিন হেলদি এবং সেফ হবে।

পরিদর্শনকালে মেয়রের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ফরহাদুল আলম, নির্বাহী প্রকৌশলী রিফাতুল করিম, শাফকাত আমিনসহ প্রকৌশল বিভাগ ও পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা এবং বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

 

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক গ্রেফতার

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। কথিত প্রেমিকের নাম বুলবুল (২০)। তিনি উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চাচকিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী ফকিরের ছেলে।রবিবার(৭ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে চাচকিয়া বিলের মধ্য নিয়ে গিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী কে তার প্রেমিক বুলবুল সহ বন্ধুরা মিলে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় ধর্ষণ মামলা রজ্জু করেন। মামলায় তথিত প্রেমিক বুলবুল সহ ৪ জন কে আসামি করা হয়।

ধর্ষণের খবর পেয়ে এএসপি সার্কেল (চাটমোহর) আবু বক্কার সিদ্দিক ও থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বুলবুল এর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার দিন গত শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রীকে চাচকিয়া বিলের মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে বুলবুল তার বন্ধু সোহানুজ্জামান ও তাওহিদ মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তারা মেয়েটির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এবং ঘটনাটি কাউ কে জানালে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরদিন শনিবার দুপুরে ঘটনা জানার পর ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত বুলবুল কে দুপুরে পাবনা আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাবনা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

সাঘাটায় নবযোগদানকৃত ইউএনও আশরাফুল কবীরকে সাংবাদিকদের ফুলেল শুভেচ্ছা

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় নবযোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুল কবীরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার সকালে ইউএনও কার্যালয়ে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিকরা ইউএনওকে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান এবং সাঘাটার সার্বিক উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁর সাফল্য কামনা করেন। এসময় ইউএনও আশরাফুল কবীর সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করে বলেন,
“সাঘাটার উন্নয়ন ও জনসেবার মানোন্নয়নে প্রশাসন ও গণমাধ্যম পরস্পরের পরিপূরক। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”তিনি আরও বলেন,সাঘাটা উপজেলার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। এ কাজে গণমাধ্যমের গঠনমূলক ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকরা নতুন ইউএনওর সঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং স্থানীয় সমস্যাবলি নিয়ে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় মহলে ধারণা করা হচ্ছে, ইউএনও আশরাফুল কবীরের যোগদানে সাঘাটা উপজেলায় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন দিগন্ত যুক্ত হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ