
দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দরের চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি) ও নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বিদেশি অপারেটরকে দেওয়ার চুক্তি থেকে সরে আহার আহবান জানিয়েছেন রক্ষা পরিষদ। সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি-এনসিটি বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কর্মচারীদের শোকজসহ নানাবিধ হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে বন্দর অভিমুখে পদযাত্রা শেষে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
নগরের আগ্রাবাদ মোড় থেকে পদযাত্রাটি বারিক বিল্ডিং এলাকায় বন্দর অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটকে দেন। এ সময় সড়কের একপাশে যানজট তৈরি হয়। সেখানেই সমাবেশ করে বক্তব্য দেন পরিষদের নেতারা। এ সময় পরিষদের আহ্বায়ক হাসান মারুফ রুমী বলেন, চুক্তির জায়গা থেকে সরে আসেন। আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা বলেছেন। নির্বাচনে মনোযোগ দেন, অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করবেন না।

হাসান মারুফ রুমী বলেন, পূর্ববর্তী ফ্যাসিবাদী সরকার ওই চুক্তি করেছিল। আমরা দাবি করেছিলাম, সব চুক্তি জনগণের সামনে প্রকাশ করতে হবে। গোপন চুক্তি আমরাসহ এ দেশের জনগণ পড়ে দেখেনি। জনগণের প্রতিনিধি, স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে বসেনি আলোচনা করেনি। চুক্তি নিয়ে কথা বলেনি। চুক্তির ফলে কী হবে সেটিও আপনারা গোপন করছেন। আর যখন শ্রমিকরা আন্দোলন করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ হুমকি দিচ্ছে। আমরা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, রক্তের ওপর কোনো সরকার টিকতে পারেনি।
গুম করে, খুন করেও টিকতে পারেনি। বন্দর শ্রমিকদের হুমকি দেবেন, চাকরিচ্যুত করবেন, গ্রেফতারের ভয় দেখাবেন এটা করে আন্দোলনের আগুনে ঘি ঢাললে পরিণতি ইতিহাসে বার বার নজির আমরা দেখেছি। সুতরাং সময় থাকতে অবিলম্বে হুমকি ধামকি বন্ধ করেন। চুক্তির জায়গা থেকে সরে আসেন। আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা বলেছেন। নির্বাচনে মনোযোগ দেন, অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করবেন না। চুক্তির জায়গা থেকে ফিরে আসেন। অবিলম্বে এনসিটি সিসিটির চুক্তি প্রক্রিয়া থেকে সরে আসেন। দুর্নীতি থাকলে তদন্ত করেন। সমাধান বের করেন।

তিনি বলেন, বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি সিসিটি এনসিটি কোনোভাবেই বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দিতে দেন না। বন্দরের লভ্যাংশ শ্রমিকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। তার মানে এটি লাভজনক। এনসিটি সিসিটি আমরা মেনে নেব না। আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। উনারা মুখস্থ বলে দিচ্ছেন বন্দরের সক্ষমতা কম। নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে সরকারকে। রূপরেখা তৈরি করতে হবে।
বক্তারা বলেন, এনসিটি বন্দরের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চলছে। রেকর্ড আয় করেছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে। এনসিটি বিদেশিদের হাতে তুলে দিয়ে বাংলাদেশের অস্তিত্ব সংকটে ফেলা আমরা শক্তহাতে প্রতিরোধ করব। আমরা বন্দর রক্ষা করব। আমরা আমাদের দেশ রক্ষা করব।

বন্দরের সিসিটি এনসিটিতে বিদেশি অপারেটর নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল এবং লালদিয়া চর টার্মিনাল ও পানগাঁও টার্মিনালে বিদেশি প্রতিষ্ঠান নিয়ে চুক্তি প্রকাশের দাবিতে পৃথক আন্দোলন করছে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদও (স্কপ)। বুধবার (২৬ নভেম্বর) বন্দরের টোল প্লাজা গেট ও বড়পোল মোড়ে অবরোধ কর্মসূচি শেষে স্কপ নেতারা ঘোষণা দেন আগামী ৫ ডিসেম্বর পুরাতন রেল স্টেশন চত্বরে বৃহত্তর সমাবেশ ও মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়।













