
থানা হেফাজতে দুদকের সাবেক এক কর্মকর্তার মৃ*ত্যুর একদিন পর চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশ সদর দপ্তরের এক আদেশে তাদের দামপাড়া পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) স্পীনা রাণী প্রামানিক।

দুই পুলিশ সদস্য হলেন- এএসআই ইউসুফ আলী ও এটিএম সোহেল রানা। ‘প্রশাসনিক কারণে’ তাদের প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) এমএ মাসুদের সই করা আদেশে।
বন্দর নগরীর এক কিলোমিটার এলাকা থেকে মঙ্গলবার দুদকের সাবেক উপ-পরিচালক সৈয়দ মো. শহীদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায় চান্দগাঁও থানার দুই পুলিশ সদস্য। পরে থানায় অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃ*ত ঘোষণা করেন।

শহীদুল্লাহর ছেলে নাফিস শহীদ বলেন, “যে মামলায় আমার বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, সে বিষয়ে আমরা কিছুই জানতাম না। রাতে বাসার কাছে রাস্তা থেকে সাদা পোশাকের দুই পুলিশ সদস্য তাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়।
নাফিসের অভিযোগ, তার বাবাকে পুলিশ ‘জোর করে টেনে-হিঁচড়ে’ নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি প্রতিবেশী লোকজন তাদের জানান। ঘটনা শুনে তার চাচা ও ফুফাত ভাই চান্দগাঁও থানায় গেলেও তাদের সেখানে ‘প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি’।
“আমার বাবা হৃদরোগী ছিলেন। আগে তার বাইপাস হয়েছিল। সেজন্য ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী চলতে হয়। আমার চাচা থানায় ওষুধ নিয়ে গেলেও তাকে সেগুলো আমার বাবার কাছে পৌঁছাতে দেয়নি পুলিশ।
পুলিশ বলছে, রনি আক্তার তানিয়া নামে এক নারীর করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় শহীদুল্লাহকে। ওই নারী নিজেকে ‘শহীদুল্লাহর বাসার গৃহকর্মী’ দাবি করেন। বেতনের ‘বকেয়া টাকা আনতে বাসায় যাওয়ায়’ গত ২৩ অগাস্ট রাতে তাকে শহীদুল্লাহ ও তাদের আত্মীয় কায়সার আনোয়ার ‘মারধর করেছিলেন’ বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
এ মামলায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। ২ অক্টোবর এএসআই ইউসুফ আলীকে পরোয়ানা তামিলের আদেশ জারি করা হয়।
শহীদুল্লাহকে পরোয়ানামূলে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়ে চান্দগাঁও থানার ওসি খায়রুল ইসলাম বলেন, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায় তাকে হাজতে রাখা হয়নি। তার কক্ষে বসানো হয়েছিল। এসময় অসুস্থবোধ করেন শহীদুল্লাহ। পরিবারের সদস্যরাসহ তাকে বেসরকারি একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে ওই মামলাকে ‘ভুয়া’ দাবি করেন শহীদুল্লাহর ছেলে নাফিস বলেন, “আমাদের বাসায় রনি আক্তার তানিয়া নামে কোনো গৃহকর্মী ছিলেন না। চাঁদা দাবি ও ভাঙচুরের অভিযোগে স্থানীয় কিছু লোকের বিরুদ্ধে আমার বাবা আগে একটি মামলা করেছিলেন। তারা প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে আসামিরা রনি আক্তার তানিয়া নামে ওই নারীকে দিয়ে ‘ভুয়া মামলা’ করিয়েছেন।
তিনি বলেন, “থানায় বাবা (শহীদুল্লাহ) অসুস্থবোধ করলে তখন পুলিশ এসে কোনো স্বজন বাইরে আছে কিনা জানতে চান। এসময় আমার চাচা থানায় প্রবেশ করে দেখেন, আমার বাবা টেবিলে মাথা নিচু করে আছে। তখন তাকে ডাকাডাকি করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।