আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

কর্মচারী রোহিঙ্গা যুবকের ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের রামুর বাসিন্দা পরিচয়ে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় কর্মচারি হিসেবে চাকুরি নিয়ে ছিলেন রোহিঙ্গা যুবক মোহাম্মদ নুর। চাকুরির সুবাধে মালিকের পরিবারের সদস্যের সাথে সুসর্ম্পকও তৈরি করেন। মালিকের ৭ বছরের শিশু পুত্র রোহিঙ্গা যুবককে ডাকতেন ভাইয়া বলে। আর দেড় মাসের ছেড়ে দিয়ে ফেরার সময় সেই শিশুটিকে অপহরণ করে নিয়ে আসা হয়েছিল কক্সবাজারে। কক্সবাজারের কলাতলীর সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পূর্ব পার্শ্বে প্রিন্স রিসোর্টের এক কক্ষে জিম্মি করে দাবি করা হয়েছিল ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ। যদিও ২ দিন পরে প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ সেই শিশুটিকে উদ্ধার করেছে। একই সঙ্গে আটক করা হয়েছে রোহিঙ্গা যুবক মোহাম্মদ নুরকেও।

সোমবার দুপুর ১২ টায় কক্সবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম।

আটক মোহাম্মদ নুর কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শাহ আলমের ছেলে।

উদ্ধার হওয়া শিশু আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ, চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতি বাগানেরর ফরিদুল আলমের ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, দেড় মাস আগে মোহাম্মদ নুরকে চুনতির ফরিদুল আলম তাঁর মুরগির ফার্মের কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দেন। সেখানেই মালিকের শিশুকে অপহরণের পরিকল্পনার নেন রোহিঙ্গা মোহাম্মদ নুর। কাজের সুবাধে পরিবারের এবং শিশুটির সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে এবং শিশুটি নুরকে ভাইয়া বলে ডাকতে শুরু করে। গত ৭ ডিসেম্বর মোহাম্মদ নুর মালিককে জানিয়ে দেন তিনি আর কাজ করবেন না। মালিকও নুরকে তার বকেয়া পরিশোধ করে দেন। পরের দিন ৮ ডিসেম্বর নুর জামা কাপড় নেয়ার কৌশলে শিশুকে ট্রেন দেখাবে বলে অপহরণ করে কক্সবাজারে নিয়ে আসে।

পুলিশ সুপার জানান, এর পর ফরিদুল আলমের ফোনে অপহরণের কথা জানিয়ে মুক্তিপণ বাবদ ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। ফরিদুল আলম বিকাশ মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকাও দেন। নুর বাকী টাকা প্রদানের জন্য ফরিদুলকে কক্সবাজার আসতে বলেন। এর মধ্যে ফরিদুল ৮ ডিসেম্বর লোহাগাড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সেই ডায়েরির সূত্র ধরে কক্সবাজার জেলা পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় কলাতলীর সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পূর্ব পার্শ্বে আবাসিক প্রতিষ্ঠান প্রিন্স রিসোর্টের ১০৩ নং কক্ষ থেকে শিশুটি উদ্ধার করে রোহিঙ্গা যুবককে আটক করেছে।

মো. মাহফুজুল ইসলাম জানান, নুরের বিকাশে ২০ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। এব্যাপারে লোহাগাড়া থানায় নিমিত মামলা হবে।

এসপি বলেন, রোহিঙ্গারা যেন কোনভাবেই চাকুরি না দেয়া হয় এর জন্য পুলিশ নানাভাবে কাজ করছেন। পুলিশের নিয়মিত অভিযানে রোহিঙ্গাদের আটক করে ক্যাম্পেও ফের পাঠানো হচ্ছে।

শিশুর পিতা ফরিদুল আলম জানান, মোহাম্মদ নুর নিজকে কক্সবাজারের রামুর বাসিন্দা বলে চাকুরি নিয়ে ছিল। পরে রোহিঙ্গা নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে বিদায় করা হয়। বেতনের টাকা দেয়ার পরও তার ছেলে অপহরণ করে এ যুবক।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ