
মোহাম্মদ শাহ এমরান, টেকনাফ (কক্সবাজার) দ্বাদশ জাতীয় সাংসদ ২৪ এ সংসদীয় আসন (২৯৭) কক্সবাজার-০৪ (উখিয়া-টেকনাফ) লক্ষি আসন নিয়ে আওয়ামী লীগের একই দলের দুই প্রার্থীর বাঁচা মরার লড়াই চলছে।
সরেজমিনে প্রত্যক্ষ দেখা মিলে ১/১১ ওয়ান ইলাভেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে অধিনে ২৯ ডিসেম্বর ২০০৮ নির্বাচনে আব্দুর রহমান বদি নৌকায় মনোনয়ন পেয়ে বিএনপি শাজাহান চৌধুরী হারিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানের মাধ্যমে প্রথম বারের মত জয়লাভ করে। আব্দুর রহমান বদি দ্বিতীয় বারের মত ৫ই জানুয়ারি ২০১৪ সালে ও জয়লাভ করে। পরবর্তীতে আব্দুর রহমান বদি জনগনের মন জয় করতে পরলেও জয় করতে পারেনি দলের নেতা কর্মীকে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় নৌকা মনোনয়ন না পেয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহন থেকে বঞ্চিত হন। মাঠে নিয়ে আসে সহধর্মিণী জানাবা শাহিনার আক্তার কে প্রথম বারের মতো নৌকার মনোনয়ন নিশ্চিত করে ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করে। একি পরিবার টানা তিনবার জাতীয় সাংসদ নৌকার প্রতিক নিয়ে নির্বাচিত হলো।
বাংলাদেশ স্বাধীনের পরবর্তীতে দেখা মিলে এই আসনে যিনি নির্বাচিত হয়েছেন, তারাই সরকার গঠনের দায়িত্ব প্রাপ্ত হয়েছে। প্রথম জাতীয় সাংসদ শুরু হয় ১৯৭০ সালে থেকে ২০১৮ এই পর্যন্ত যারা এই আসনে যিনিই বিজয় লাভ করছে, সেই সরকারিই সরকার গঠনের দায়িত্ব প্রাপ্ত হলেন।

তারই লক্ষ নিয়ে (উখিয়া-টেকনাফ) লক্ষি আসনের কোমর বেঁধে নামছে দুই প্রার্থী সাবেক জাতীয় সাংসদ সদস্য জনাবা শাহিনা আকতার (নৌকার) প্রতিক নিয়ে ও টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব নুরুল বশর (ঈগল) প্রতিক নিয়ে মাঠে নামে।
আব্দুর রহমান বদি সহধর্মিণী সাবেক জাতীয় সাংসদ জনাবা শাহিনা আক্তার নৌকা প্রতিক নিয়ে মাঠে ছিলো, আমি থাকবো এই ইস্তাহার নিয়ে সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে পাড়ায়, মহল্লায় মিছিল শুরু করে আব্দুর রহমান বদি ও তার নাম নেতা কর্মীরা ।
সরকারের উন্নয়ন কক্সবাজার টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক, সাবরাং টুরিজম পার্ক, জালিয়ার দ্বীপ এক্সক্লুসিভ “নাফ ট্যুরিজম পার্ক” ও রাস্তাঘাট উন্নয়নের কাজ উখিয়া টেকনাফ রাস্তা প্রসস্থকরন কিছু শেষ হয়েছে, কিছু চলমান রয়েছে।
সাবেক এমপি বদি বলেন সকল প্রকার সমাজসেবা, সাধারণ মানুষের সাথে মাঠে ময়দানে সুখে দুঃখে পাশে আমি আছি থাকবে। সাধরন মানুষ ও ভোটারের মন জয় করতে পরলেও নেতাকর্মীদের মন জয় করতে পারেনি। হাটে, ঘাটে, বাজারে মাঠে উঠে পড়ে লেগেছে। তার পরেও বদি তার সহধর্মিণী কোমর বেঁধে মাঠে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কিছু নেতাকর্মীরা না থাকলেও জয়ের জন্য বদ্ধপরিকর।
এদিকে পিছিয়ে নেই দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত টেকনাফ উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ্ব নুরুল বশর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রার্থীতা ফরম কিনে। নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট আইনী জটিলতার কারণে তার প্রার্থীতা ফরম বাচাই পর্বে বাতিল করাহয়। আইনী লড়ায়ে মহামান্য হাইকোর্ট থেকে আলহাজ্ব নুরুল বশর তাঁর প্রার্থীতা ফিরে পায়। নির্বাচন কমিশন তাকে প্রতীক বরাদ্ধ দেয় ঈগল।
বশরের বক্তব্য উঠে আসে, বিগত ৫ টি বছর এমপির কোথাও দেখা মেলেনি এমন কি উপজেলার মাসিক আইন শৃংখলা মিটিংয়েও সবখানে এমপির পরিবর্তে দেখা যেত সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদি কে। এই আমলে দলীয় নেতা কর্মীদের কোন মূল্যায়ন ছিলনা, মূল্যায়ন ছিল ভিন্ন দলের নেতা কর্মীদের। নৌকার প্রার্থীর প্রতি অসন্তোষ ভোটার ও দলীয় নেতাকর্মীরা।
নুরুল বশর ঈগল প্রতিক মাঠে আশায় পাল্টে যায় ভোটের হিসেব নিকাশ। দলীয় নেতা কর্মী, ও ভোটারদের মাঝে চলছে পক্ষ বিপক্ষ অবস্থান।
শুরু হয়ে যায় (উখিয়া-টেকনাফ) লক্ষি আসনের জন্য উভয়ের পক্ষ বিপক্ষ সভা সমাবেশে মিছিল মিটিং চলছে, চলছে গান-বাজনা নিয়ে মাইকিং।
চেলেঞ্জের মুখামুখি হয়েছে নৌকা ও ঈগল, কে হবেন উখিয়া টেকনাফ লক্ষ আসনের কর্নধার।

যেখানে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলীয় হাই কমান্ড নির্বাচন কে অংশ গ্রহন মূলক করতে যে যার ইচ্ছামত প্রার্থীর পক্ষে ভোট করতে পারবে বলে ঘোষনা দিলেও প্রার্থীদের পক্ষ- বিপক্ষে বক্তব্য ভোট ব্যাংকে দলকে ধ্বসের দিকে নমাতে বলে ধারণা করেছেন অভিজ্ঞ মহল।
উলেখ্য যে, (উখিয়া-টেকনাফ) নির্বাচন এলাকা লক্ষি আসনে ৪জন প্রার্থী রয়েছে। জাতীয় পাটি, তৃণমূল বিএনপির, ইসলামী ঐক্যজোট, ন্যাশনাল পিপলস্ পাটির, কংগ্রেস পাটির নির্বাচন করলেও মূলত হাড্ডা হাড্ডি প্রতিদ্বন্ধিতা নৌকাও ঈগল প্রতীকের মধ্যে।
আগামী ৭ই জানুয়ারি দেখা মিলবে এই লক্ষি আসনের কর্নধারে নামের তালিকা।