আজঃ শুক্রবার ৭ নভেম্বর, ২০২৫

ঝালকাঠির দু’টি আসনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে আমু – ওমর বিজয়ী, প্রথম নৌকার প্রার্থী ওমর

মশিউর রহমান রাসেল ঝালকাঠি প্রতিনিধি

ঝালকাঠি -১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসনে নৌকা প্রতিক নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর (বীর উত্তম) ৯৫ হাজার ৪৭৮ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। ৭৬ বছরে বয়সে তিনি এই প্রথম আওয়ামীলীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতিকে প্রথমবারে তিনি নৌকায় ভোট দিয়েছেন। ঝালকাঠি-২ (সদর-নলছিটি) আসনে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা আমির হোসেন আমু ১লাখ ৩৭ হাজার ১ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। টানা চতুর্থথবারে তিনি এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।

ঝালকাঠির দুটি আসনে ২৩৭কেন্দ্রের ফলাফলে বেসরকারীভাবে চুড়ান্তভাবে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম রবিবার রাত সাড়ে ১১ টায় এই ফলাফল আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা দেন।

প্রাপ্ত ফলাফলে, ঝালকাঠি -১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসনে নৌকা প্রতিক নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর (বীর উত্তম) ৯৫ হাজার ৪৭৮ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাকের পার্টির আবু বকর সিদ্দিক গোলাপ ফুল প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন এক হাজার ৬২৪ ভোট।
এছাড়াও অন্যান্য প্রার্থীদের মধ্যে ট্রাক প্রতিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার আবুল কাশেম ফখরুল ইসলাম পেয়েছেন ৩৭০ভোট, প্রার্থীতা থেকে সরে যাওয়া এম মনিরুজ্জামান মনির ঈগল প্রতিকে পেয়েছেন ৬২৫ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টি মজিবুর রহমান ডাব প্রতিকে পেয়েছেন ১৪২ভোট, তৃণমূল বিএনপি মনোনীত সোনালী আঁশ প্রতিকে জসিম উদ্দিন তালুকদার পেয়েছেন ২৮২ভোট, জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতিকে এজাজুল হক এজাজ পেয়েছেন ১২৭২ ভোট ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট মনোনীত মামুন সিকদার ছড়ি প্রতিকে পেয়েছেন ৯৭ভোট। এ আসনে মোট ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন একলাখ তের হাজার ১৫জনে, এর মধ্যে বৈধ ভোট ৯৯৮৯০টি এবং বাতিল হয়েছে একহাজার চারশত পচিশটি। এ আসনের মোট ৯০টি কেন্দ্রের ফলাফলের তথ্য অনুযায়ী শতকরা ৪৭.৭৮ ভাগ ভোটার ভোট প্রয়োগ করেছে।

অপরদিকে ঝালকাঠি-২ (সদর-নলছিটি) আসনে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা আমির হোসেন আমু ১লাখ ৩৭ হাজার ১ ভোট পেয়ে বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রার্থী জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতিকের প্রার্থী মো. নাসির উদ্দিন এমরান পেয়েছেন ৪,৩১৭ ভোট। এছাড়াও আম প্রতিকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. ফোরকান পেয়েছেন ৩হাজার ২৫০ভোট। এ আসনে মোট ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন একলাখ ছিচল্লিশ হাজার ৭৫৭জনে, এর মধ্যে বৈধ ভোট ১৪৪৫৬৮টি এবং বাতিল হয়েছে দুইহাজার একশত উননব্বইটি।
এ আসনের মোট ১৪৭ টি কেন্দ্রের ফলাফলের তথ্য অনুযায়ী শতকরা ৪২.৯০ ভাগ ভোটার ভোট প্রয়োগ করেছে।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম রবিবার রাত সাড়ে ১১ টায় এই ফলাফল আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা দেন। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভাকক্ষে ফালাফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে রিটার্নিং কর্মকর্তা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালেক এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর লে. কমান্ডার রউফ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রামে গণসংযোগকালে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গুলিবিদ্ধ।

চট্টগ্রাম মহানগরে গণসংযোগকালে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বিএনপি নেতা এরশাদ উল্লাহ। তিনি চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন। এছাড়া তিনি চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। বুধবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে পাঁচলাইশের হামজার বাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিএনপি মিডিয়া সেল থেকে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে।

মিডিয়া সেলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বিএনপি জানায়, চট্টগ্রাম-৮ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বুধবার চট্টগ্রামের হামজারবাগ এলাকায় গণসংযোগ চলাকালে দুর্বৃত্তরা তার ওপর হামলা চালায় এবং পায়ে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, এরশাদ উল্লাহ বায়েজিদ এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন। এই সময় দুর্বৃত্তরা এসে গুলি করেছেন। এতে এরশাদ উল্লাহসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তবে কেন এই ঘটনা ঘটছে তা জানি না। এরশাদ উল্লাহকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। আমরা ঘটনাস্থলে রয়েছি। পরে বিস্তারিত বলতে পারব।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এরশাদ উল্লাহ নির্বাচনী প্রচারণা করছিলেন বাযেজিদ বোস্তামী এলাকায়। এই সময় সরওয়ার বাবলা নামের একজনকে লক্ষ্য করে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। এতে এরশাদ উল্লাহ, সরওয়ার বাবলাসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধসহ সহিংস ঘটনা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২৩৭ আসনে প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করেছে বিএনপি। এর পরপরই চট্টগ্রামে মহাসড়ক অবরোধসহ সহিংস ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দলের চার নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার সন্ধ্যার পর দলীয় মনোনয়নকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কদমরসুল, ভাটিয়ারী বাজার ও জলিল গেইট এলাকায় সহিংসতা, হানাহানি এবং রাস্তা অবরোধসহ জনস্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন কয়েকজন স্থানীয় নেতা।

ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আলাউদ্দিন মনি, সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন বাবর, সীতাকুণ্ড পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মামুন এবং যুবদলের সোনাইছড়ী ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক মমিন উদ্দিন মিন্টু—কে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত চারজনই বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ