
শিক্ষা-গণতত্র-মনুষ্যত্ব রক্ষার সংগ্রামের ৪ দশকে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এর ৪০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার সমাবেশ নিউমার্কেট মোড়ে বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত হয়। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, চট্টগ্রাম নগর শাখার স্কুল বিষয়ক সম্পাদক উম্মে হাবিবার সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সদস্য অরুপ মহাজন, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আহমদ জসীম। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নগর শাখার সভাপতি মিরাজ উদ্দিন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ছাত্র সমাজের অগ্রবর্তী চিন্তার পথিকৃৎ সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠার চার দশক পার করছি । ৪০ বছর আগে সর্বজনীন বিজ্ঞানভিত্তিক সেক্যুলার বৈষম্যহীন একই পদ্ধতির গণতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের সংগ্রামের প্রত্যয় ঘোষণা করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট যাত্রা শুরু করেছিল । নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে সংগ্রামমূখর ৪০ বছর অতিক্রম করতে চলেছে এই সংগঠন। শিক্ষার সংকোচন, বাণিজ্যিকীকরণ, বেসরকারিকরণ, সাম্প্রদায়িকরণ এর বিরুদ্ধে ধারাবাহিক লড়াই সংগ্রাম পরিচালনা করে আসছে এ সংগঠন।

সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, ২০২৩ থেকে চালু করা হয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১। কোন প্রকার প্রস্তুতি ও আয়োজন ব্যতিরেকে শিক্ষার্থীদের উপর চাপানো হল এই কারিকুলাম। ফলত, ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকেরা পড়ছেন বিপাকে। শিক্ষানুরাগী মানুষের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকসহ দেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদদের মতামত নিয়ে শিক্ষাক্রমের মূল্যায়ন ও পরিমার্জন করার। কিন্তু সরকার সেদিকে কর্ণপাত করছেন না। নতুন কারিকুলামের আঙ্গিকে নতুন বই জানুয়ারির ১ তারিখে দেয়া হয়েছে। ভুলে ভরা, নিম্নমানের পাঠ্যপুস্তক দেয়া হচ্ছে কোমলমতি শিশু-কিশোরদের হাতে। ইতিমধ্যেই মুদ্রণবিভ্রাটের কারণে সাতক্ষীরা থেকে ৩১ হাজার বই ফেরত নেয়া হয়েছে। এহেন দায়িত্বহীন কাজ শিশু-কিশোরদের মনে দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষত তৈরি করবে। শিক্ষায় বাণিজ্যিকীকরণ-বেসরকারিকরণ নীতির ফলে উচ্চ শিক্ষায় ব্যয় বৃদ্ধি ঘটছে তীব্র আকারে। দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৫৭টি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১১৩টি। উচ্চশিক্ষায় অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীকে অর্থের বিনিময়ে সার্টিফিকেট কিনতে হচ্ছে। জনগণকে জিম্মি করে চলছে শিক্ষার রমরমা ব্যবসা। ইউনেস্কো শিক্ষাখাতে জিডিপির ৬ ভাগ বরাদ্দের কথা বললেও এ বছর আমাদের বরাদ্দ মাত্র ১.৭৬ শতাংশ, যেটি গতবারের চেয়ে .০৭ শতাংশ কম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন। ক্যাম্পাসগুলিতে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের দ্বারা গণরুম-গেস্টরুম নির্যাতন এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ ও শিক্ষার গণতান্ত্রিক পরিবেশ ধ্বংস করা হয়েছে।