আজঃ শুক্রবার ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৬ জন নিহত, আহত ১০৫৪

ডেস্ক নিউজ:

যাত্রী কল্যাণ সমিতি

২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে দেশের গণমাধ্যমে ৫২১ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৬ জন নিহত, ১০৫৪ জন আহতের তথ্য পাওয়া গেছে। একই সময়ে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল (পঙ্গু হাসপাতালে) ১১৫৩ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৭২ জন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭৭১ জন, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫৫৮ জন, নারায়ণগঞ্জে খানপুর হাসপাতালে ৪২০ জনসহ মোট ৩৩৭৪ জন যাত্রী ও পথচারী সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে জরুরী বিভাগে ভর্তি হয়েছে। সেই হিসেবে হাসপাতালের তথ্যসহ আহত রোগীর সংখ্যা ৪৪২৮ জন। এই মাসে রেলপথে ৪৪ টি দুর্ঘটনায় ৪২ জন নিহত, ২১ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ০৭ টি দুর্ঘটনায় ০৬ জন নিহত, ১৩ জন আহত এবং ০৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৫৭২ টি দুর্ঘটনায় ৫৩৪ জন নিহত এবং ৪৪৬২ জন আহত হয়েছে। এই সময়ে ১৬৪ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৭০ জন নিহত, ১৭৩ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩১.৪৭ শতাংশ, নিহতের ৩৪.৯০ শতাংশ ও আহতের ১৬.৪১ শতাংশ। এই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে ১২৩ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৭ জন নিহত ও ২৭০ জন আহত হয়েছে, সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বরিশাল বিভাগে ৩৩ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত ও ১২৫ জন আহত হয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি রবিবার সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবেদন তুলে ধরে সংগঠনটি। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ পথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৪ জন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৩৩ জন চালক, ৭৪ জন পথচারী, ২৪ জন পরিবহন শ্রমিক, ৬৯ জন শিক্ষার্থী, ০৬ জন শিক্ষক, ৭৫ জন নারী, ৫১ জন শিশু, ০৩ জন সাংবাদিক, ০১ জন চিকিৎসক , ০১ জন আইনজীবী, ০১ জন প্রকোশলী, ০৩ জন মুক্তিযোদ্ধা, এবং ১৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছে- ০৩ জন পুলিশ সদস্য, সেনা বাহিনী ০১, বিমান বাহিনী ০১, ০১ জন চিকিৎসক , ০১ জন আইনজীবী, ০৩ জন মুক্তিযোদ্ধা, ০১ জন প্রকোশলী, ৯৬ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৬৯ জন পথচারী, ৪৭ জন নারী, ৩৮ জন শিশু, ২৯ জন শিক্ষার্থী, ১২ জন পরিবহন শ্রমিক, ০৬ জন শিক্ষক, ও ০৯ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৭২৭ টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৫.১৭ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৫.৯৯ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১১.৫৫ শতাংশ বাস, ১৫.৮১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক, ৪.৮১ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ১০.৫৯ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬.০৫ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫১.৬৩ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২২.৪৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৪.৫৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১০.৩৬ শতাংশ বিবিধ কারনে, চাকায় ওড়না পেছিয়ে ০.৫৭ শতাংশ, এবং ০.৩৪ ট্রোন-যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩৩.৯৭ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১৭.০৮ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৪১.৪৮ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫.৭৫ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০.৯৫ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.৩৪ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে, জানুয়ারি মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণসমূহ :
১. ট্রাফিক আইনের অপপ্রয়োগ, দুর্বল প্রয়োগ, নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনিয়ম দুর্নীতি ব্যাপক বৃদ্ধি।
২. মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও তিন চাকার যানের ব্যাপক বৃদ্ধি ও এসব যানবাহন সড়ক মহাসড়কে অবাধে চলাচল।
৩. সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কে বাতি না থাকা । রাতের বেলায় ফক লাইটের অবাধ ব্যবহার।
৪. সড়ক-মহাসড়কে নিমাণ ক্রটি, ফিটনেস যানবাহন ও অদক্ষ চালকের হার ব্যাপক বৃদ্ধি।
৫. ফুটপাত বেদখল, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা।
৬. উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি।
৭. অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানো।

সংগনটি দুর্ঘটনার প্রতিরোধে ৮ দফা সুপারিশ পেশ করেছে –
১. রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে প্রাথমিক উৎস থেকে সড়ক দুর্ঘটনার পুর্নাঙ্গ ডাটা ব্যাংক চালু করা।
২. স্মার্ট গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা, মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মতো ছোট ছোট যানবাহন আমদানী ও নিবন্ধন বন্ধ করা।
৩. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে যানবাহনের ফিটনেস প্রদান।
৪. রাতের বেলায় বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল চালকদের রিফ্লেক্টিং ভেস্ট পোশাক পরিধান বাধ্যতামূলক করা।
৫. সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘন্টা সুনিশ্চিত করা।
৬. রাতের বেলায় চলাচলের জন্য জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে পর্যাপ্ত আলোক সজ্জার ব্যবস্থা করা।
৭. ব্লাক স্পট নিরসন করা, সড়ক নিরাপত্তা অডিট করা, স্টার মানের সড়ক করিডোর গড়ে তোলা।
৮. দেশে সড়কে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু ঠেকাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ’র চলমান গতানুগতিক কার্যক্রম অডিট করে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা চিহ্নিত করা, প্রাতিষ্ঠানিক অকার্যকারিতা সংস্কার করা।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের “মার্চ ফর জাষ্টিস” পালিত

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ কর্তৃক সংঘটিত সকল সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের যথাযথ বিচার এবং জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে ভূমিকা পালনকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে চট্টগ্রামে কেন্দ্র ঘোষিত “মার্চ ফর জাষ্টিস“ পালন করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি মোঃ সুমন আলীর নেতৃত্বে নগরীর প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি ও পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ছাত্রদল কতৃক কেন্দ্র ঘোষিত “মার্চ ফর জাষ্টিস” পালিত হয়। এসময় ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ প্রতিষ্ঠান প্রধান বরাবর সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের বিচারের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি ছাত্রনেতা মোঃ আরমান হোসাইন, মোঃ মানিক রতন তারেক, আহসান আলমগীর চৌধুরী, সাফায়েত মাহমুদ আলিফ, রিদওয়ান মাহফুজ হৃদয় এবং পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ছাত্রনেতা মোঃ রিয়াদুল ইসলাম রিয়াদ , মোঃ সিয়াম, মোঃ সান, মোঃ মাসুম, আতিকুর রহমান সহ ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ।

জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভা

জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস ২০২৫ উপলক্ষে এবং শিশুর মনের বিকাশের জন্য বই পড়ার কোন বিকল্প নেই !!
“আলোচনা সভা”শীর্ষ এই আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ শাহাদাত হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সানাউল্লাহ খান, কার্যকারী কমিটির সদস্য দুই মোঃ সাজু খান, লাইবেরিয়ান মো:-সাজ্জাদ খান সহ পাঠাগারটির পাঠক মাসুম পারভেজ

সবার জন্য পড়া উন্মুক্ত পাঠাগার প্রতিষ্ঠাতা:-শাহাদাত হোসেন বলেনআমার আজও মনে পড়ে.. ছোটবেলা থেকে নতুন বইয়ের গন্ধ প্রচন্ড ভালোবাসতাম, যা আজও বিন্দুমাত্র কমলো না ! গাছ ও পানির অপর নাম যদি হয়ে থাকে জীবন ! তাহলে চোখের আপর নাম দৃষ্টি..আমার কাছে বইয়ের আপর নাম আলো !! জীবনের পদে পদে ঘন কুয়াশা ভেদ করে আলোর ছটা ছড়ায় যে সূর্য তার নাম বই !! বইয়ের জগর্তে যে এক’বার প্রবেশ করছে একনিষ্ঠাভাবে সেই কুড়িয়েছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতব মণিমুক্তা !

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ