আজঃ সোমবার ১৭ নভেম্বর, ২০২৫

বানিজ্যিক রাজধানী:

চট্টগ্রাম কারাগারে বন্দির ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যুতে তদন্ত কমিটি গঠন।

চট্টগ্রাম অফিস:

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত এক বন্দির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ। গত সোমবার সন্ধ্যায় কারাগারের ভেতরে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। কারা কর্তৃপক্ষের ভাষায়, আত্মহত্যার ‘অপচেষ্টারত’ অবস্থায় তাকে উদ্ধারের পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মৃত ইব্রাহীম নেওয়াজ (৩০) রাঙামাটি পৌর সদরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি গত ছয় মাস ধরে কারাগারে ছিলেন। তবে কারা কর্তৃপক্ষ ওই বন্দি আত্মহত্যা করেছেন উল্লেখ করে থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে।

কারা অভ্যন্তরে বন্দির মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে চট্টগ্রাম বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজন) টিপু সুলতানকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ।
ডিআইজি-প্রিজন টিপু সুলতান বলেন, কারাগারে অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন হয়েছে। আমাকে প্রধান করে বিভাগের আরও তিন জেলা কারাগারের তিন জেল সুপারকে এতে সদস্য করা হয়েছে। তদন্ত শেষের সময়সীমা অবশ্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি।
তবে ঘটনার বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন ও জেলার মো. এমরানকে বেশ কয়েকবার কল করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে জেলারের পক্ষ থেকে একজন কারা কর্মকর্তা এ বিষয়ে তথ্য দেন।
ওই কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, গত সোমবার সন্ধ্যায় কারাভ্যন্তরে তালাবন্দি করার সময় বন্দি গণনা করতে গিয়ে একজন কম পাওয়া যায়। খোঁজাখুঁজির পর তাকে কারাগারের খাদ্য গুদামের সামনে চৌবাচ্চার টিনশেডের রডের সঙ্গে প্লাস্টিকের বস্তা ও কম্বলের বর্ডারের অংশ দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে কারা কর্তৃপক্ষ নগরীর কোতোয়ালী থানায় একটি ইউডি (অপমৃত্যু) মামলা দায়ের করেছে। এতে ‘সাজাপ্রাপ্ত বন্দি মৃত্যুর’ বিষয়ে সিনিয়র জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেনের একটি প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আত্মহত্যার অপচেষ্টারত অবস্থায় বন্দিকে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে কারা হাসপাতালের সহকারি সার্জনের পরামর্শে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিবেদনে ‘ফাঁসিতে ঝুলে’ মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম ওবায়দুল হক বলেন, কারাগারের অভ্যন্তরে একজন বন্দি আত্মহত্যা করেছেন উল্লেখ করে থানায় একটি অপমত্যু মামলা দায়ের হয়েছে।
সিনিয়র জেল সুপারের প্রতিবেদনে বন্দির বিষয়ে আরও উল্লেখ আছে, রাউজান থানার একটি মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন ইব্রাহীম নেওয়াজ। চট্টগ্রামের সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাজা পরোয়ানামূলে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি।,

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

একের পর এক ক্ষতিগ্রস্থ বিদেশ ফেরত যাত্রীরা ছিনতাইয়ের স্বর্গরাজ্য আট কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সেপ্রেসওয়ে

চট্টগ্রাম মহানগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত আট কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সেপ্রেসওয়ে ছিনতাইকারীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। পতেঙ্গা ও লালখান বাজার ছাড়া এক্সপ্রেসওয়েতে মাঝখানে কোথাও উঠার সুযোগ না থাকলেও একের পর এক ছিনতাই হচ্ছে। এলিভেটেড এক্সেপ্রেসওয়েতে কয়দিন বিরতির পর পর ঘটছে ছিনতাই ও অপহরণের ঘটনা। আর এসব ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছে বিদেশ ফেরত যাত্রীরা। এদিকে পতেঙ্গা ও বন্দর থানা পুলিশ দিনে এবং রাতে দুই শিফটে ডিউটি করছে এক্সপ্রেসওয়ের উপর।কিন্তু ছিনতাইকারীদের দৌরত্ব থামছেনা।

এ বিষয়ে পতেঙ্গা থানার ওসি কাজী মো. সুলতান আহসান উদ্দিন জানান, এক্সপ্রেসওয়েতে দিনের বেলায় পতেঙ্গা ও রাতের বেলায় বন্দর থানার দুটি টহল দল পালাক্রমে ডিউটি করছে।পুলিশ সজাগ রয়েছে। অন্যদিকে ডবলমুরিং থানার ওসি বাবুল আজাদ জানান, ফ্লাইওভারে উঠে ডিউটি করার আমাদের সুযোগ নেই। কারণ আমাদের উঠতে হলে পতেঙ্গা অথবা লালখান বাজারে যেতে হয়। তবে সম্প্রতি পতেঙ্গা ও বন্দর থানা পুলিশ ফ্লাইওভারে ডিউটি করে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি ও পুলিশ সায়েন্স বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, এক্সপ্রেসওয়েতে যেসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটছে- তার ১০টি যদি আপনি এনালাইসিস করেন- প্রায় সবগুলোই ঘটছে রাত ১০টার পর থেকে ভোরের মধ্যে। কারণ সেখানে আলোকায়ন, সিকিউরিটি ফোর্স, নজরদারির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। যারা অপরাধী তাদের ধরে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থাও হচ্ছে না।

তিনি বলেন, এক্সপ্রেসওয়েতে পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা বসানো প্রয়োজন। পুলিশের নিয়মিত টহলের পাশাপাশি মোটরসাইকেল পেট্রোলিং বাড়ানো যায়। যারা টোল আদায় করেন- তারাও প্রাইভেট সিকিউরিটি ফোর্স রাখতে পারেন। তবে সবচেয়ে বেশি যেটা জরুরি- অপরাধীদের ধরে দৃষ্টান্তমূলক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে নজর দিলে সেখানে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কমে আসবে।
জানা গেছে, তিন বছর আবুধাবি থেকে দেশে আসে সুমন দাশ। নগরীর দেওয়ানবাজারের বাসিন্দা অমল দাস ছেলেকে আনতে যান চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে। দীর্ঘদিন কাছে পাওয়া ছেলেকে নিয়ে বাসায় ফেরার পথে ছিনতাইকারীরা প্রবাসী সুমনের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়। গত ৬ আগস্ট রাত নয়টায় নগরীর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

ওই রাতে পরিচিত একজন ট্যাক্সি চালক নিয়ে বিমানবন্দর থেকে সুমনকে আনতে গিয়েছিলেন তার বাবা। রাত আনুমানিক নয়টায় বিমান বন্দর থেকে বের হয়ে ট্যাক্সি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠে। কিছুদূর চলার পর পেছন দিক থেকে আসা একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস ট্যাক্সিকে ধাওয়া করে। ট্যাক্সিটি না থামলে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে থামায়। মাইক্রোবাস থেকে মুখোশ পরা ৮/৯ জন ছেলে নেমে প্রথমে ট্যাক্সির কাঁচ ভেঙ্গে দেয়। তারা অস্ত্রের মুখে সুমনকে জিম্মি করে নগদ ৫০ হাজার টাকা, পাসপোর্ট ও লাগেজ কেড়ে নেয়। পরে তারা সুমনকে স্বর্ণ দেয়ার জন্য চাপ দেয়। এক পর্যায়ে ছিনতাইকারীরা ট্যাক্সি চালককে ছেড়ে দিয়ে সুমন ও তার বাবাকে মাইক্রোতে তুলে সীতাকুণ্ডের পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে যায়। সুমনের কাছ থেকে তারা নগদ টাকা, পাসপোর্ট, লাগেজ সবকিছু কেড়ে নিয়ে রাত ১২ টার সময় ছেড়ে দেয়। পরে সীতাকুণ্ড এলাকায় ডেকে নিয়ে সুমনকে তার পাসপোর্ট ফেরত দেয়।

গত ২৭ অক্টোবর সকাল দশটায় সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে দেশে ফিরেন ইমরান মুন্না। সোলেমান নামে এক আত্মীয় বিমানবন্দর থেকে মুন্নাকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তাদের বহনকরা সিএনজি ট্যাক্সি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাঠগড় বাজার অংশে পৌঁছালে তাদের গতিরোধ করা হয়। অস্ত্র ঠেকিয়ে তাদের অন্য একটি গাড়িতে তুলে অপহরণ করা হয়। অপহরণের ঘণ্টাখানেক পর অক্সিজেন এলাকা থেকে অপহৃত মুন্নাকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বায়েজিদ থানা থেকে সদ্য বদলিকৃত ইপিজেড থানার ওসি মো. মো. কামরুজ্জামান জানান, ঘটনার পর পর অক্সিজেন এলাকা থেকে সুমন নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছিল। প্রবাসীর খোয়া যাওয়া মালামালও উদ্ধার করা হয়েছিল। ঘটনার শিকার মুন্নাকে মামলা করার জন্য অনেক অনুরোধ করেছি। কিন্তু তিনি মামলা করতে রাজি হননি।

এদিকে দুবাইয়ের চায়না মার্কেটের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হাটহাজারীর মেখলের বাসিন্দা শাহাব উদ্দিন রনি গত ১৪ জুলাই ভোরে তিনি শাহ আমানত বিমানবন্দরে নামেন। বড় ভাইকে আনতে বিমান বন্দরে গিয়েছিলেন সালাউদ্দিন। তিনিও দুইমাস আগে বাইরাইন থেকে দেশে আসেন। সাহাব উদ্দিন জানান, বিমান বন্দর থেকে বের হয়ে সকাল সাড়ে আটটায় দুইভাই প্রাইভেটকারে হাটহাজারীর উদ্দেশ্যে রওনা হন। এলিভেটেড এক্সপ্রেওয়ের টোল বক্স পার হয়ে আনুমানিক দ্ইু কিলোমিটার যেতেই একটি কালো মাইক্রোবাস তাদের প্রাইভেটকারের গতিরোধ করে।

মাইক্রো থেকে সাত আটজন যুবক নেমে ছুরি দিয়ে প্রথমে গাড়ির চাকা ফাংচার করে দেয়। আনুমানিক ৩০-৩৫ বছর বয়সী এসব যুবকদের হাতে হাতে ওয়াকিটকি ও অস্ত্র ছিল। তারা অস্ত্রের মুখে ১০০ গ্রাম স্বর্ণের অলংকার, একটি স্যামসাং ট্যাব, একটি আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্স, একটি স্যামসাং এস ২৪ আল্ট্রাসহ মোট পাঁচটি মুঠোফোন, ৫০০০ ইউএস ডলার, ৪৫০০ দিরহাম ও নগদ টাকা কেড়ে নেয়। এতে প্রায় ২৬ লাখ টাকার ক্ষতির শিকার হন তিনি। এ বিষয়ে প্রবাসী শাহাব উদ্দিন বলেন, তারা আমাদের দুই ভাইকে খুবই মারধর করেছে। নিরাপদ মনে করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েকে বেছে নিয়েছিলাম। কিন্তু আমর ধারণা ভুল ছিল বলে তিনি জানান।

চট্টগ্রামে যেভাবে হত্যা করা হয় মোবাইল মেকানিককে, গ্রেফতার-৩।

চট্টগ্রামে যেভাবে হত্যা করা হয় মোবাইল
চট্টগ্রাম মহানগরে পাওনা টাকা আদায় করতে গিয়ে মোবাইল মেকানিক আকাশ ঘোষ হত্যায় প্রধান অভিযুক্তসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।কোতোয়ালী থানাধীন এনায়েত বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছিল। গ্রেফতারকৃতরা হলেন-মো.সানি (২৪), মো.ইউছুফ (৩৫) ও শাকিল আলম ফয়সাল (২৬)।শনিবার দুপুরে র‌্যাবের চান্দগাঁও ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য দেন র‌্যাব-৭ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তাওহিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, গত ১৪ নভেম্বর এনায়েত বাজার এলাকায় আকাশ ঘোষকে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় ভিকটিম আকাশকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরও বলেন, আকাশ ঘোষ গোয়ালপাড়া পুকুরপাড় এলাকার বাসিন্দা এবং পেশায় মোবাইল মেকানিক। একমাস পূর্বে অভিযুক্ত সানি ভিকটিম আকাশের দোকানে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে পরিবর্তন করা জন্য নিয়ে গেলে ভিকটিম মোবাইলের ডিসপ্লে পরিবর্তন করেন। মেরামতের ১৫শ’ টাকা পরিশোধের জন্য বলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত সানি তাকে কিছু টাকা পরিশোধ করে। গত ১৪ নভেম্বর আকাশ বাকি পাওনা টাকা আদায়ের জন্য অভিযুক্ত সানিকে চাপ দেয়।

সানি তাকে টাকা দেওয়ার জন্য রাতে কসাইপাড়া এলাকায় একটি গলিতে নিয়ে যায়। সেখানে অভিযুক্ত সানি ও তার সহযোগীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে আকাশ ঘোষকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ