আজঃ মঙ্গলবার ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

সুর্বণচরে মুক্তিযোদ্ধার জমি দখলের চেষ্টা স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের

মোঃএনায়েত হোসেন নোয়াখালী প্রতিনিধি

নোয়াখালীর সুর্বণচর উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নে এক মহিলা মেম্বার থেকে জমি দখল ও চাঁদার দাবি এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া যায়।ভোক্তভোগী আলেয়া মেম্বার সুর্বণচর উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের একজন স্থায়ী বাসিন্দা ও শহীদ পরিবারের সন্তান এবং ঐ ইউনিয়নের সাবেক ব্লক মেম্বার।স্থানীয় সূত্রে জানাযায়,মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন থেকে আলেয়া বেগম মেম্বার প্রায় ২ একর সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণ এর লেখিত দায়িত্ব পাওয়ার পরে কিছু কুচক্রী মহল উঠেপড়ে লেগেছে বিভিন্ন কায়দায় মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিনের জমি দখলের চেষ্টাই। আলেয়া মেম্বার যখন বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন থেকে অনুমতি নিয়ে ঐ জায়গায় যখন তার আরেকটি জমি থেকে মাটি এনে ভরাট করে দোকান ঘর তোলা শুরু করেন,তখনই এলাকার কিছু প্রভাবশালী নেতা তার নিকট প্রথমে ঘরের বিটার দাবি করেন। পরে ঘরের বিটা না পাওয়ায় মোটা অংকের টাকার দাবি করে।ভোক্তভোগী এলাকার প্রভাবশালী নেতা হতে একেবারে নিম্ম শ্রেণীর নেতাদের টাকা পয়সা ঠিক মতোই না দিতে পারাই ঐ সকল নেতাকর্মীরা তাদের কৌশলের মাধ্যমে এলাকায় কিছু মহিলা দিয়ে তার স্বামীর সামনে বেদমমার দোর করেন।ভোক্তভোগী এলাকাতে কারো কাছে কোন বিচার না পাওয়ায় হতাশা হয়ে পড়েন।পরে তিনি জেলা প্রশাসক,সুর্বণচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনার ভূমির নিকট অভিযোগ দাখিল করলে তারা তদন্ত করে প্রথমে সঠিক প্রমাণ পাওয়ায় এটা বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিনের জায়গা। তারপর কাগজপত্র দেখে জমি গুলো সহকারী কমিশনার ভূমি তিনি সরজমিনে নিজে এসে মূল জমির মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিনকে ভূমি পরিমাপ করে বুঝিয়ে দেন।পরে কিছু এলাকার কুচক্রী মহল ডিসি,ইউএনও,এসিল্যান্ড,ওসি সহ স্থানীয় চেয়ারম্যান,মেম্বারদের ভুল বুঝিয়ে আলেয়া মেম্বারের উপর নানা ভাবে অত্যাচার শুরু করে ফলে আলেয়া মেম্বার ঐ জমিতে দোকান ঘর করতে বাঁধার মুখে পড়ছেন।এদিকে দোকান ঘরের বিটাই মাটি না ফেলাতে পেরে দোকান ঘর গুলো ভেঙে পড়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করে আলেয়া মেম্বার।তিনি আরও বলেন আমার সব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বলে এমন অভিযোগ করেন।

এছাড়া আলেয়া মেম্বার কিভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিনের জায়গা দায়িত্ব নিয়েছে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে আলেয়া মেম্বার বলেন,আমিও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। এছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন ভাই যখন অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন তারা তাদের জমি রক্ষণাবেক্ষণ না করতে পারাই আমাকে লেখিত দেন যে আমার পরিবর্তে তুমি এই জায়গা দেখাশোনা করবে।যেখানে যা প্রয়োজন তুমি কর।যদি কোন খানে অফিস আদালতে সমস্যা হয় তাহলে তুমি আমাকে ফোন দিলে আমি হাজির হয়ে যাবো স্বশরীরে।না হয় ফোনে বলে দিবো।এখন আমি ঐ কাগজ নিয়ে যখন মাটি ভরাট শুরু করি স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী নেতা আমার কাছ থেকে প্রথমে ঘরের বিটার দাবি করেন।আমি তাদের ঘরের বিটাও দি এরপরে আমার কাছে চাঁদার দাবি করেন।আমি যখন চাঁদা বা,ঘরের বিটা দিতে রাজি না হয় তখন আমার উপর নানা ভাবে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন শুরু করে।পরে আমি মাননীয় সংসদ সদস্যকে বিষয়টা জানাইলে তিনি এসে সরজমিনে দেখেন এবং আমাকে নির্দেশ দেন মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন আর আমি মিলে যেন এই জায়গাটা ভোগ করি।এরপরেও কিছু স্থানীয় নেতারা আবার এমপি সাহেবকে ভুল বুঝিয়ে দেন যাতে আমার বিরুদ্ধে কাজ করে। আমি তারপরও জোর করে আইনের আশ্রয় নিয়ে জায়গাটা ভরাট করি কিছু ঘর তুলি।ঘর করতে গেলেও আমাকে অনেকে বাঁধা দেয় এসব বাঁধা না শুনে আমি কাজ করে যাচ্ছি।কিছু লোক রাতের আধাঁরে জোরপূর্বক ঘর করতে চাইলে আমি সুর্বণচর ইউএনও এবং চরজব্বর থানার অফিসার ইনচার্জ এর সহযোগিতায় সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করি। এখন আমি যাতে সুন্দর ভাবে বসবাস করতে পারি সে জন্য সহযোগিতা চাই প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে।

এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিনের সাথে সরাসরি কথা হলে তিনি জানান,আমি অসুস্থ হওয়ায় আমার ভূয়াঁরহাটের ঐ জায়গাটুকু আলেয়া মেম্বারকে দায়িত্ব দি। কারণ আমি শারীরিক ভাবে অসুস্থ। আমার পক্ষে আসা যাওয়া খুবই কষ্টকর।এখন শুনতেছি ঐ এলাকার কিছু প্রভাবশালী নেতারা নাকি আমার জায়গা জবর দখল করতে চাই।এ বিষয়টা আমাকে বাসায় এসে আলেয়া মেম্বার জানাইলে আমি জেলা প্রশাসকে অবহিত করি তিনি আমাকে বলেছে যথেষ্ট পরিমানে সহযোগিতা করবে বলে আশ্বাস দেন।

অন্যদিকে ভোক্তভোগী আলেয়া মেম্বার অভিযোগ সঠিক কিনা সে বিষয়ে জানতে চাইলে সুর্বণচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল আমিন সরকার বলেন,আমরা জেলা প্রশাসকের নির্দেশক্রমে আমি সুর্বণচর সহকারী কমিশনার ভূমি কে মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিনের জায়গাটা সরজমিনে গিয়ে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য নির্দেশ দিলে।সহকারী কমিশনার ভূমি সরজমিনে গিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিনের উপস্থিতে জায়গাটা বুঝিয়ে দিয়ে আসে।তখন সেখানে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতির পাশাপাশি আলেয়া মেম্বার ও ছিল।পরে শুনলাম আলেয়া মেম্বারকে বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন নাকি লেখিত ভাবে ঐ জায়গার রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য দায়িত্ব দেন।এছাড়া আলেয়া মেম্বার বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিনের আত্মীয় বলে পরিচয় দেন।আমরা একজন মুক্তিযোদ্ধাকে যতটুকু সহযোগিতা করার প্রয়োজন ততটুকু করেছি প্রশাসনিক ভাবে।প্রয়োজনে আরও করবো।কেউ যদি মুক্তিযোদ্ধার জায়গা দখল করতে চাই তাহলে আমরা আইনগত ভাবে ব্যবস্থা নিবো।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বোয়ালখালীতে বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে ৩২ টি চেক বিতরণ

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের উদ্যোগে বোয়ালখালীতে ৩২ টি বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানে চেক বিতরণ করা হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় শাকপুরা প্রজ্ঞাবংশ বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ উপলক্ষে এক সভা বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের ট্রাষ্টি রূবেল বড়ুয়া হৃদয় এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন- চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ঐক্য ফ্রন্ট বোয়ালখালী উপজেলা শাখার সভাপতি পল্টু কান্তি বড়ুয়া ও সমাজকর্মী রাজীব বড়ুয়ার উপস্থাপনায় এতে আশির্বাদক ছিলেন- শাকপুরা সার্বজনীন তপোবন বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত বসুমিত্র মহাস্থবির, ভদন্ত বিপস্সী মহাথের, ভদন্ত পরমানন্দ মহাস্থবির, ভদন্ত দীপানন্দ থেরো। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন -চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব আজিজুল হক চেয়ারম্যান,

জেলার সদস্য মোঃ শওকত আলম, বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক হাজী ইছহাক চৌধুরী, সাবেক সদস্য সচিব হামিদুল হক মান্নান চেয়ারম্যান, পৌরসভা বিএনপি সাবেক আহবায়ক শহীদুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক প্রচার সম্পাদক সরোয়ার আলমগীর, বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, শওকত আলী চেয়ারম্যান, আবদুল আওয়াল মঞ্জু, শাকপুরা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম খান, পৌরসভা বিএনপি নেতা হাজী আবু আকতার, বোয়ালখালী উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মোঃ ইকবাল হোসেন, প্যানেল চেয়ারম্যান হাসান চৌধুরী, শ্রমিক দল নেতা মোঃ মোঃ ইলিয়াসসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ,

বোয়ালখালী সম্মিলিত বৌদ্ধ পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী জয়সেন বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ ঐক্য ফাউন্ডেশন বোয়ালখালী উপজেলা শাখার সভাপতি বিকাশ বড়ুয়া, বৈদ্যপাড়া পঞ্চরত্ন স্মৃতি পরিষদের সভাপতি দেশপ্রিয় বড়ুয়া, প্রদীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ঐক্য ফ্রন্ট মহানগর-জেলা ও উপজেলা শাখার নেতা কমল জ্যোতি বড়ুয়া,তাপস বড়ুয়া , সুমন বড়ুয়া, রনি বড়ুয়া চৌধুরী, বিপ্লব বড়ুয়া, প্রকৌশলী দিক্ষিত বড়ুয়া, অর্ণব বড়ুয়া,সুমন বড়ুয়া ছোটন বড়ুয়া,পিপলু বড়ুয়া সহ বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার/ মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ বলেছেন- বাংলাদেশ সম্প্রতির মেলবন্ধ, এদেশে সকল ধর্মের সহবস্থান ছিল -আছে- থাকবে। তাই ধর্মীয় সৌহার্দ্য বজায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এরিই ধারাবাহিকতায় আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট আমাকে নির্বাচিত করুন আমি আপনাদের সকলের আশির্বাদ প্রার্থী। তিনি এসময় বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের ট্রাস্টি রূবেল বড়ুয়ার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন এখন সরকারী টাকা দপ্তরে গিয়ে আনতে হয়না, রূবেল বড়ুয়াই সরকারী টাকা নিয়ে আপনাদের নিকট হাজির। তার এ কর্মযজ্ঞকে আপনাদের আশির্বাদে রাখতে হবে।

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক গ্রেফতার

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। কথিত প্রেমিকের নাম বুলবুল (২০)। তিনি উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চাচকিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী ফকিরের ছেলে।রবিবার(৭ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে চাচকিয়া বিলের মধ্য নিয়ে গিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী কে তার প্রেমিক বুলবুল সহ বন্ধুরা মিলে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় ধর্ষণ মামলা রজ্জু করেন। মামলায় তথিত প্রেমিক বুলবুল সহ ৪ জন কে আসামি করা হয়।

ধর্ষণের খবর পেয়ে এএসপি সার্কেল (চাটমোহর) আবু বক্কার সিদ্দিক ও থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বুলবুল এর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার দিন গত শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রীকে চাচকিয়া বিলের মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে বুলবুল তার বন্ধু সোহানুজ্জামান ও তাওহিদ মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তারা মেয়েটির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এবং ঘটনাটি কাউ কে জানালে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরদিন শনিবার দুপুরে ঘটনা জানার পর ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত বুলবুল কে দুপুরে পাবনা আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাবনা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ