আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

নিরাপত্তা সমন্বয় সভা অনুষ্ঠান দীর্ঘায়িত হলে ঝুঁকি বাড়ে,

সময় বেঁধে’ পহেলা বৈশাখ প্রতিটি ভেন্যুতে তিন স্তরের নিরাপত্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রামে এবারও বাংলা বর্ষবরণের আয়োজনের জন্য সময় বেঁধে দিয়েছে নগর পুলিশ। পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা সমন্বয় সভায় সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হলে আপত্তি জানান সংস্কৃতিজন কামরুল হাসান বাদল। জবাবে নগর পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেছেন, অনুষ্ঠান দীর্ঘায়িত হলে ঝুঁকি বাড়ে। গতকাল সোমবার দুপুরে নগরীর দামপাড়ায় সিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে ‘পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে নিরাপত্তা সমন্বয় সভা’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়।
সভার শুরুতে সার্বিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা তুলে ধরেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (অপারেশন) মো. জাহাঙ্গীর। এরপর আয়োজক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা তাদের মতামত তুলে ধরেন।
বরবারের মতো এবারও নগরীর তিনটি স্থানে বড় আকারে পহেলা বৈশাখের আয়োজন করা হচ্ছে। সিআরবির শিরিষতলায় নববর্ষ উদযাপন পরিষদ, চট্টগ্রাম, ডিসি হিলে সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদ এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এসব আয়োজন হবে। এর বাইরে রবীন্দ্রসঙ্গীত উদযাপন পরিষদ, চট্টগ্রাম প্রথমবারের মতো নগরীর এনায়েত বাজার মহিলা কলেজ মাঠে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের আয়োজন করেছে।
নববর্ষ উদযাপন পরিষদ, চট্টগ্রামের সংগঠক কবি কামরুল হাসান বাদল সভায় জানান, সিআরবি শিরিষতলায় প্রতিবছরের মতো এবারও ১৩ এপ্রিল বাংলা বর্ষবিদায় এবং ১৪ এপ্রিল নববর্ষ বরণের আয়োজন করেছে। বর্ষবিদায়ের আয়োজন ১৩ এপ্রিল বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে সন্ধ্যা ৬টা কিংবা মাগরিবের নামাজের আগপর্যন্ত চলবে। পহেলা বৈশাখে সকাল ৭টায় অনুষ্ঠান শুরু হবে। চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। স্থানীয় মসজিদের সঙ্গে সমন্বয় করে আজান ও নামাজের সময় অনুষ্ঠানে বিরতি থাকবে বলে তিনি জানান।
বক্তব্যে কামরুল হাসান বাদল অভিযোগ করেন, সিআরবিতে পুলিশের অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কারণে মূল মঞ্চ ঢাকা পড়ে যায়।
তিনি বলেন, সাত রাস্তার মোড় থেকে শিরিষতলার দিকে গেলে যে ঢালু পথটা দিয়ে মঞ্চের সামনে নামতে হয়, সেখানেই পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষটা করা হয়। এতে সাত রাস্তার মোড় কিংবা আশপাশ থেকে মূল মঞ্চটা আর দেখা যায় না। গতবছরও এভাবে করা হয়েছে। আমরা আপত্তি করেছিলাম, কিন্তু তারপরও করা হয়েছে। অনুরোধ করব, সেখানে যে পুলিশ ক্যাম্পটা করা না হয়। একপাশে যেখানে জনসমাগম কম, সেখানে করা হলে আমাদের জন্যও সুবিধা, পুলিশের দ্রুত রেসপন্স করার ক্ষেত্রেও সুবিধা হয়।
জবাবে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যেখানে কন্ট্রোল রুম করা হয়, সেখান থেকে মঞ্চসহ চারপাশ পর্যবেক্ষণ করা সহজ হয়। প্রয়োজনে পুলিশও দ্রুত সেখান থেকে রেসপন্স করতে পারে।
সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় মূল মঞ্চে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়, এমন স্থানে পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন না করার নির্দেশনা দেন।
এদিকে সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদের পক্ষে সুচরিত দাশ খোকন সভায় জানান, প্রতিবছর বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণের দু’দিনের আয়োজন করলেও এবার তারা শুধুমাত্র পহেলা বৈশাখের আয়োজন করছে। পহেলা বৈশাখ অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল ভোর সাড়ে ৬টায় তাদের আয়োজন শুরু হবে। দুপুরে নামাজের বিরতি দিয়ে বিকেল ৫টা থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৫টার মধ্যে তাদের আয়োজন শেষ হবে।
জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ, চট্টগ্রামের সংগঠক অনির্বাণ ভট্টাচার্য সভায় জানান, বর্ষবিদায়ের দিনে ১৩ এপ্রিল রাতে সংগঠনের পক্ষ থেকে ডিসি হিলের সামনে নন্দনকানন এলাকায় সড়কে আলপনা আঁকা হবে। পরদিন সকাল ৮টায় এনায়েত বাজার মহিলা কলেজ মাঠে পহেলা বৈশাখের আয়োজন শুরু হবে। পরিষদের শিল্পীরা প্রথমে দুই ঘন্টা সঙ্গীত পরিবেশন করবেন। এরপর বিরতি দিয়ে দুপুর দু’টায় আবার অনুষ্ঠান শুরু হবে। তখন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন তাদের পরিবেশনা নিয়ে থাকবে।

সভায় সিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, নগর পুলিশ সিআরবি শিরিষতলা, ডিসি হিল ও শিল্পকলা একাডেমিকে মূল ভেন্যু ধরে নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। অনুষ্ঠান চলাকালীন ডিসি হিল ও সিআরবি শিরিষতলা এলাকা পুরোপুরি যানবাহনমুক্ত থাকবে। ডিসি হিলের আশপাশে চারটি স্পট এবং সিআরবি শিরিষতলার আশপাশে তিনটি স্পটে পুলিশের ব্যারিকেড থাকবে, যাতে কোনো ধরনের যানবাহন প্রবেশ করতে না পারে।
প্রতিটি ভেন্যুতে নগর পুলিশের পক্ষ থেকে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় জানান।
সভায় বলা হয়, প্রতিটি ভেন্যুতে থানার সার্বক্ষণিক টিম ও মোবাইল টিম, ফুট পেট্রোল, চেকপোস্ট, সাদা পোশাকে পুলিশ, ডিবি টিম, সোয়াট টিম, কুইক রেসপন্স টিম, ডগ স্কোয়াড কে-নাইন ও বোম্ব ডিজপোজাল ইউনিট মোতায়েন থাকবে। এছাড়া পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হবে। প্রবেশপথে আর্চওয়ে থাকবে, মেটাল ডিটেক্টর দিয়েও তল্লাশি করা হবে। মঙ্গল শোভাযাত্রার সম্মুখ, মধ্য ও শেষ- তিনভাগে পুলিশ মোতায়েন থাকবে বলে সভায় জানানো হয়েছে। এছাড়া সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করা, আয়োজকদের পক্ষ থেকে প্রতিটি ভেন্যুতে সিসি ক্যামেরা ও পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবকের ব্যবস্থা করা, আজান-নামাজের সময় মাইক অথবা লাউডস্পিকার বন্ধ রাখাসহ ১১ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়।
সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা আছে, সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে প্রোগ্রাম শেষ করতে হবে। আশা করছি, প্রোগ্রাম কোনোভাবেই সন্ধ্যা ৬টার পর যাবে না।
সময় বেঁধে দেয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়ে সভায় কবি কামরুল হাসান বাদল বলেন, প্রতিবছর পুলিশের পক্ষ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়। আমরাও অবশ্য সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান আয়োজন করেছি, কারণ আমরা এতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এই শহরে তো অনেক প্রোগ্রাম হয়, মধ্যরাত পর্যন্ত হয়, সারারাতও চলে। তাহলে পহেলা বৈশাখের আয়োজনে এত বিধিনিষেধ কেন ?
জবাবে সিএমপি কমিশনার বলেন, সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে, এটা কোনো আইন না। প্রেক্ষিত বিবেচনায় এটা করা হয়েছে। অনেকগুলো ভেন্যুতে অনুষ্ঠান হয়। আমাদের যেসব ফোর্স, তারা কিন্তু আগের রাত থেকে ডিউটি করে।
বাদল আবারও আপত্তি জানিয়ে বলেন, সারাবছরে তো খুব বেশি এ ধরনের অনুষ্ঠান হয় না। বড় অনুষ্ঠান বলতে পহেলা বৈশাখেই হয়। এতেই খুব বেশি চাপ পড়ে কি ?
সিএমপি কমিশনার বলেন, আয়োজন যত দীর্ঘায়িত হয়, ঝুঁকি তত বাড়ে। যারা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী, তাদের নিরাপত্তারও তো একটা বিষয় আছে। আসুন, আমরা এ বিষয়টা নিয়ে আর বিতর্ক না করি। পহেলা বৈশাখের আয়োজন নিয়ে দৃশ্যমান কোনো ঝুঁকি নেই। তবে সম্ভাব্য ঝুঁকির কথা মাথায় রেখেই আমাদের সতর্কতা এবং প্রস্তুতি আছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের কর্মসূচীতে রয়েছে-১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কাট্টলীস্থ’ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে (ডিসি পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে) ৩১ বার তোপধ্বনি ও পুস্পস্তবক অর্পণ, সকল সরকারী-বেসরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিবসের শুভ উদ্বোধন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেও সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন।

ঐদিন সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য মহান বিজয় দিবস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন।

বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আহসান হাবীব পলাশ ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন। বেলা ১২টায় সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকেটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চল”িচত্র প্রদর্শনী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তনে বা উন্মুক্ত ¯’ানে ব¯‘ুনিষ্ট ও নৈর্ব্যত্তিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চল”িচত্র প্রদর্শনী। এছাড়া বিজয় দিবসের দিন সুবিধাজনক সময়ে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদেও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত,

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বা¯’্য, জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোড়া ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনা, জেলা পর্যায়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান, টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট, প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ, কাবাডি, হা-ডু-ডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সুবিধাজনক সময়ে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুপুর দেড়টায় হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে-কেয়ার, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কর‌্যাণ কেন্দ্র, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ও ভবঘুরে পুনর্বাসন কেন্দ্রসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন।

দিনব্যাপী শিশু পার্ক, ডিসি পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা শিশুদের জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা ও বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাকরণ, পর্যটন কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং ডিশ ক্যাবল অপারেটর/ মালিকগণ কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন। ১৫-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান/ স্থাপনায় আলোকসজ্জাকরণ এবং মহান বিজয় দিবসের পরদিন ১৭ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ‘চট্টগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও সর্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামিলীগের সাবেক পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার মিয়ার বিএনপিতে যোগদান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জুলফিকার মিয়া বিএনপিতে যোগদান করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি ঢাকায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) এর বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান সম্পন্ন করেন।

এ সময় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তাকে দলে স্বাগত জানান। দলীয় একটি সূত্র বলছে, আগাম রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে জুলফিকার মিয়ার এই যোগদান বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করবে বলে সকলে মনে করছেন।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামিলীগের এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন কর্তৃক নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বিএনপির অনেক ত্যাগি নেতারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন- বিএনপির এমন দিন আসবে কখনো চিন্তাও করিনি। তবে কী আওয়ামিলীগ দিয়ে বিএনপির ত্যাগীদের আবার নির্যাতনের স্বীকার করতে চায় মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ? কেন আমরা এতদিন নির্যাতিত ছিলাম? এই দিন দেখার জন্য?

এ বিষয়ে জুলফিকার মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ দেখায়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোচনা সমালোচনার শুরু হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছে; এভাবে আওয়ামিলীগ দ্বারা বিএনপি সাজাতে থাকলে ভোটের মাঠে এর প্রভাব বিস্তার করবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ