
চট্টগ্রাম মহানগরের ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ডের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্যদের মতো স্বামী হারা সুগন্ধা দাশের মেয়ের অস্ত্রোপচারের জন্য রাখা সবটাকা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।সে টাকা কিভাবে পুনরায় যোগাড় করবেন সে চিন্তায় আত্মহারা মা সুগন্ধা দাশ। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া ঘরের এক পাশে বসে কেঁদেই যাচ্ছিলেন স্বামী হারা সুগন্ধা দাশ। তার এমন অসহায়ত্বের খবর পান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। অবশেষে ফিরে পেলেন মেয়ের চিকিৎসার ৫০ হাজার টাকা, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন সুগন্ধা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ছুটে আসেন ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ডের সেই টেক পাড়া ও এয়াকুব নগরের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায়। মেয়ের চিকিৎসার ৫০ হাজার টাকা অর্পিতা দাশের মায়ের হাতে তুলে দেন তিনি। পাশাপাশি তিনি অর্পিতার চিকিৎসার বিষয়েও উদ্যোগ নেবেন বলে তাঁর মাকে আশ্বস্ত করেছেন।
জানা গেছে, ২০১৭ সালে স্বামী পরিমল দাশকে হারান সুগন্ধা। এরপর থেকে ছেলে ও মেয়ের কথা ভেবে আর বিয়ে করেননি এই নারী। বড় ছেলের বয়স মাত্রই ২০। তিনি অবশ্য এখনো তেমন কিছু করেন না। আর ১৬ বছরের মেয়ে অর্পিতা নবম শ্রেণিতে পড়ছে পাথরঘাটা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। বন্দর হাসপাতালে দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করা মায়ের আয়েই চলছিল অর্পিতাদের সংসার। এর মধ্যে অর্পিতা অসুস্থ হয়ে পড়ায় আরও বিপাকে পড়েছিলেন মা। তবে জেলা প্রশাসকের সহায়তা পাওয়ার পর আপাতত তার সেই দুশ্চিন্তা আর নেই।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, বন্দর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেয়ের অস্ত্রোপচারের জন্য অনেক কষ্টে ৫০ হাজার টাকা জমিয়ে ছিলেন মা সুগন্ধা দাশ। কিন্তু আগুনে সেই টাকাটা পুড়ে যায়। আমরা গণমাধ্যমে খবর দেখার পর এই মাকে মেয়ের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দিয়েছি। পাশাপাশি আমি বন্দর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলব, যাতে কম খরচে কীভাবে অর্পিতার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়।
জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধামন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সুগন্ধা দাশ বলেন, অনেক কষ্টে মেয়ের অস্ত্রোপচারের জন্য টাকাটা জমিয়েছিলাম। কিন্তু আগুন আমার সবকিছুই ছাই করে দিয়েছে। এখন আমাকে ডিসি মহোদয় পুড়ে যাওয়া ৫০ হাজার টাকা সহায়তা করেছেন। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী ও ডিসি মহোদয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আর যেসব সাংবাদিক ভাইয়েরা আমার দুর্দশার বিষয়টি তুলে ধরে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তাঁদের ঋণও শোধ করতে পারব না।