
চুয়েটে বাস ভাংচুরের প্রতিবাদে গত রোববার ধর্মঘট চলাকালে চট্টগ্রাম নগরীর অক্সিজেন এলাকায় বিআরটিসির বাস ভাঙচুর করে পরিবহন শ্রমিকদের একাংশ। এ অভিযোগে ৫ পরিবহন শ্রমিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধর্মঘট প্রত্যাহারে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক চলাকালে শ্রমিক নেতাদের দাবি ছিল আটক শ্রমিকদের মুক্তি দেওয়ার। তবে আটক শ্রমিকদের জামিন না মঞ্জুর হওয়ায় দুই পার্বত্য জেলা-রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়িসহ উত্তর চট্টগ্রামের ২৫ টি রুটে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় বাংলাদেশ শ্রমিক পরিবহন ফেডারেশনের অধীন উত্তর চট্টগ্রাম পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়ন।এর ফলে ভোগান্তিতে পরেছেন এ রুটের যাত্রীরা।এর আগে চালকদের নিরাপত্তাসহ ৪ দফা দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়ে ১২ ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নেয় বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। তবে চার পরিবহন শ্রমিককে গ্রেপ্তারের পর বিনা শর্তে মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বাস শ্রমিক ফেডারেশন। পরে যাত্রীদের দিনভর ভুগিয়ে শ্রমিকদের জামিনের পরই চট্টগ্রাম-রাঙামাটি ও চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়িসহ উত্তর চট্টগ্রামের ২৫ রুটে চলা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন পরিবহন নেতারা। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে শ্রমিকরা কর্মবিরতির কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাজাহান।
এর আগে উত্তর চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, রাঙামাটিসহ ২৫টি রুটে পরিবহন কর্মবিরতি পালন করেছে গণপরিবহন শ্রমিকরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এ রুটের যাত্রীরা। গত সোমবার বিকেল ৫টা থেকে তারা এই ধর্মঘট পালন করছেন। গতকাল মঙ্গলবারও চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড় থেকে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, মালিকছড়ি, পানছড়ি, দীঘিনালা, মাটিরাঙ্গা, মহালছড়িসহ উত্তর চট্টগ্রামের ২৫ রুটে গাড়ি ছাড়ে। কিন্তু শ্রমিকরা গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকায় বিপাকে পড়েছেন যাত্রী এবং মালিকরা। শ্রমিকদের দাবি ছিল, গ্রেফতার হওয়া চার শ্রমিককে বিনা শর্তে মুক্তি দিতে হবে। একই সঙ্গে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে অক্সিজেন বাস কাউন্টার থেকে উত্তর চট্টগ্রামের কোরো বাস ছেড়ে যায়নি। ফিরতি গাড়ি চট্টগ্রাম শহরেও প্রবেশ করেনি। এতে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে বের হওয়া যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। অনেকে সকাল থেকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরও বাস না পেয়ে বেশি ভাড়ায় সিএনজি অটোরিকশা রওনা দেন।
যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল থেকেই অনেক যাত্রী গন্তব্যে যাওয়ার জন্য অক্সিজেনে এসেছেন। কিন্তু কোনো বাস নেই। তাই এ তীব্র গরমের মধ্যে তারা দোকানের সামনে ও ফিলিং স্টেশনে অপেক্ষা করছেন। অটোরিকশা করে এই গরমের পাহাড়ি পথে যাওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়া তারা দ্বিগুণ ভাড়া দাবি করছে। বাস না পেলে বাধ্য হয়ে যেতে হবে।
আনোয়ার হোসেন নামে এক শ্রমিক নেতা জানান, ২৮ তারিখ বিনাদোষে আমাদের ৪ জন শ্রমিককে অক্সিজেন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের বিনা শর্তে মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের করতে হবে। আমরা সোমবার বিকেল ৫টা থেকে বাস বন্ধ রেখেছি। আমাদের শ্রমিক ভাইয়ের যতক্ষণ মুক্তি দেওয়া না হবে। ততক্ষণ আমরা বাস চালাবো না।
চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, বাস তো আমরা বন্ধ রাখিনি। শ্রমিকরা বন্ধ রেখেছে। তারা এই কর্মবিরতি পালন করছে। আমরাও চাই মামলা প্রত্যাহার করে শ্রমিকদের মুক্তি দেওয়া হোক।