আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

সরগরম চট্টগ্রামের সংস্কৃতি অঙ্গন

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ৮ জুন শিল্পকলা একাডেমির নির্বাচন

সরগরম চট্টগ্রামের সংস্কৃতি অঙ্গন
আগামী ৮ জুন শিল্পকলা একাডেমির নির্বাচন
ছবি-২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: শিল্পকলা একাডেমির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরগরম হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের সংস্কৃতি অঙ্গন। আগামী ৮ জুন এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন হয়েছিল ২০১৮ সালে। তিন বছর মেয়াদের ওই কমিটি ছয় বছর পার করার পর সেটি বিলুপ্ত করে সম্প্রতি এডহক কমিটি গঠন করা হয়, যার মেয়াদ শেষ হচ্ছে জুনে। এ অবস্থায় গত ২ মে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. সাদি উর রহমান জাদিদ নির্বাচনী উপ-কমিটির রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। এতে ৮ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, গত ৯ মে থেকে মনোনয়ন পত্র বিতরণ শুরু হয়। ১৫ মে ছিল মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষদিন। গতকাল রোববার মনোনয়নপত্র বাছাই হয়। ২৬ মে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন। বিভিন্ন পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ২৩ জন মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে নির্বাচন আয়োজনের তোড়জোড়ের মধ্যে আবৃত্তিশিল্পী রাশেদ হাসান গত ১৪ মে জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি স্মারকলিপি দেন। জেলা প্রশাসক পদাধিকার বলে শিল্পকলা একাডেমির কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি। স্মারকলিপিতে তিনি বিভিন্ন অভিযোগ তুলে পুনঃতফসিল ঘোষণার দাবি জানান।
জানতে চাইলে রাশেদ হাসান বলেন, গঠনতন্ত্রে বার্ষিক সাধারণ সভার কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু গত ছয় বছরে সাধারণ সদস্যদের নিয়ে একটি সভাও করা হয়নি। নির্বাচনের পর সহ-সভাপতি রণজিৎ রক্ষিত মারা গেছেন। শূন্যপদ পূরণ করা হয়নি। গঠনতন্ত্রে বলা আছে, তিনবছর পর কমিটি অটো বিলুপ্ত হয়ে যাবে। সেই কমিটি যে আরও তিন বছর তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করল, সেটা তো অবৈধ। ছয় বছরে সদস্যদের একবারও চাঁদা পরিশোধের জন্য বলা হয়নি। অথচ গঠনতন্ত্রে বলা আছে, দুইবছর চাঁদা পরিশোধ না করলে তার সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে। ছয়বছর পর এতে গত ৪ এপ্রিল মেসেজ পেলাম, ২২ এপ্রিলের মধ্যে বার্ষিক চাঁদা পরিশোধ করে সদস্যপদ নবায়ন করতে হবে। চাঁদা পরিশোধের সময় দিল ৪ এপ্রিল থেকে ২২ এপ্রিল। তখন ঈদুল ফিতর, পহেলা বৈশাখের বন্ধের সময়। অনেক সদস্য চাঁদা জমা দিতে পারেননি। মোট সদস্য ছিল ৬৭১ জন। যতদূর খবর পেয়েছি, নবায়ন করেছে ৫৪৩ জন। ১৫-২০ জনের মতো মারা গেছেন। তাহলে আরও একশ’রও বেশি সদস্য তাদের সদস্যপদ নবায়ন করতে পারেননি।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে সাধারণ সদস্যদের মতামত নেওয়া হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, হঠাৎ করে বলা হল ৮ জুন নির্বাচন। কোরবানির ঈদের মাত্র আটদিন আগে, তার ওপর হজের সময়, উপজেলা নির্বাচন চলছে, এটি কি শিল্পকলার নির্বাচন করার উপযুক্ত সময় হলো? এটা হীরক রাজার দেশ নাকি? নির্বাচন দেবেন আর সদস্যদের সঙ্গে কোনো আলাপ করবেন না? সদস্যদের এত অমর্যাদা কেন করছেন ?
কমিটির আর্থিক কর্মকাণ্ডে কোনো স্বচ্ছতা ছিল না অভিযোগ করে রাশেদ হাসান বলেন, করোনার সময় শিল্পকলা একাডেমির মাধ্যমে অনেক সদস্যকে সরকারি সহায়তা দেওয়া হয়েছে, এটি আমরা দেখেছি। কিন্তু কাকে কত টাকা দেওয়া হয়েছে, কত টাকা এসেছে, কিভাবে বিলিবণ্টন হয়েছে এর কোনো স্বচ্ছতা নেই। গত ছয় বছরে শিল্পকলা একাডেমি বরাদ্দ করা অর্থ কীভাবে খরচ করেছে, সেটিও সদস্যদের জানানো হয়নি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সদ্যবিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু বলেন, বার্ষিক সাধারণ সভা হয়নি, এটি অসত্য তথ্য। প্রথমবার সাধারণ সভা হয়েছে। এরপর করোনার কারণে দুই বছর করতে পারিনি। বর্তমান জেলা প্রশাসক দায়িত্ব নেয়ার পর কমিটি বিলুপ্ত করে এডহক কমিটি গঠন করে দেন। সেই কমিটির মেয়াদ জুন পর্যন্ত। স্বাভাবিকভাবেই এডহক কমিটিকে জুনের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে বিদায় নিতে হবে। অর্থনৈতিক কার্যক্রমের বিষয় বলা হচ্ছে। এখানে তো সাধারণ সম্পাদকের কোনো এখতিয়ার নেই। শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার পদাধিকার বলে কমিটির অর্থ সম্পাদক আর জেলা প্রশাসক সভাপতি। খরচের কোনো বিল-ভাউচার কিংবা চেকে সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর কিংবা মতামত নেওয়ার কোনো গঠনতান্ত্রিক বিধান নেই বলে তিনি জানান।
কিছু সদস্যপদ নবায়ন করতে না পারার অভিযোগের বিষয়ে বাবু বলেন, সদস্যপদ নবায়নের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে, ফেসবুকে শিল্পকলা একাডমির পেইজে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। আমরাও নিজেরা নবায়নের অনুরোধ করে নিজেদের টাইমলাইনে পোস্ট করেছি, প্রত্যেক সদস্যকে মেসেজ দেওয়া হয়েছে। এরপরও অবহিত না করার যে বিষয় বলা হচ্ছে, সেটা একান্তই তাদের ব্যক্তিগত। আর কীভাবে বললে অবগত হতেন সেটা আমার জানা নেই।
যুগ্ম সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বী কংকন দাশ বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত কিংবা জেলা শিল্পকলা একাডেমির যে কোনো বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ জাতীয় শিল্পকলা একাডেমি, জেলা প্রশাসক এবং এডহক কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী যদি নির্বাচন হয়, তাহলে অবশ্যই অংশগ্রহণ করবো। যদি পুনঃতফসিল হয়, তাহলে সে অনুযায়ী অংশ নেব। আমরা এখন সাধারণ সদস্য মাত্র। এখানে আমাদের সিদ্ধান্তের কোনো বিষয় নেই।
জানা গেছে, পুনঃতফসিলের দাবি জানানো রাশেদ হাসান প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের সভাপতি। কংকন দাশ একই সংগঠনের সহ-সভাপতি। সেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ পাল সদস্য পদে নির্বাচন করছেন। রাশেদ হাসানের সঙ্গে স্মারকলিপি জমা দেয়া আবৃত্তিশিল্পী সেলিম রেজা সাগরও সদস্য পদে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সাইফুল আলম বাবু প্রশ্ন তুলেছেন, বার্ষিক সাধারণ সভা কিংবা আর্থিক বিষয়াদি নিয়ে অভিযোগ গত চার বছরে কেন তোলা হয়নি। শিল্পকলা একাডেমি একটি সরকারি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, এটি নাচ-গানের কোনো ক্লাব নয়। গত নির্বাচনের সময়ও এ ধরনের নানা অভিযোগ তোলা হয়েছিল। বলা হচ্ছে, চার বছর ধরে সাধারণ সভা হয়নি, অনিয়ম হয়েছে। তাহলে চার বছরে একজন সদস্যও কেন বিষয়টি বললেন না। ৪ এপ্রিল সদস্যপদ নবায়নের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। এরপর ২২ এপ্রিল পর্যন্ত সময় ছিল। কেউ তো এসে বললেন না যে, সময় বাড়াতে হবে। কেউ বললেন না আপনারা মিটিং ডাকুন।
বাবু আরও বলেন, জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়ে স্মারকলিপি দিয়ে অভিযোগ করার দরকার ছিল না, বিষয়টা তো বসেই সমাধান করা যেত। বাইরে বাইরে কথা না বলে, আমরা তো সবাই বন্ধুবান্ধব, সংস্কৃতিকর্মী, আমরা তো একসঙ্গে বসে কথা বলতে পারতাম। এভাবে আলোচনার মাধ্যমে তো বৃহৎ সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানটিকে ছোট করা হচ্ছে, সংস্কৃতিকর্মীদের ছোট করা হচ্ছে, যে ৫৪৩ জন তাদের সদস্যপদ নবায়ন করেছেন, তাদেরও ছোট করা হচ্ছে।
সাইফুল আলম বাবু বলেন, আসলে আমি গত ছয় বছর ধরে মাঠে ছিলাম, করোনার সময় সংস্কৃতিকর্মীদের পাশে ছিলাম। এর ফলে আমার যে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে, সেটা ক্ষুন্ন করার জন্য কেউ কেউ মরিয়া হয়ে উঠেছেন। যারা সকালে ডিসি অফিসে গিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন, বিকেলে তাদের কেউ কেউ আবার নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। এতে বোঝা যায়, একটা পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য এটা করা হচ্ছে। নির্বাচন বানচালের পরিস্থিতি।
জানতে চাইলে রাশেদ হাসান আরো বলেন, অনেকে বলছেন- এতদিন পর কথাগুলো কেন বলছেন? কখন বলব? ছয়বছরে একটা সাধারণ সভা হয়নি, কোথায় বলব? কেউ কেউ বলছেন- শেষ মুহূর্তে এসে কেন বলছেন? আমি বললাম- শিল্পকলার মেম্বার কী আমি একজন? আপনারা পাবলিকলি বলেননি কেন? শিল্পকলার সদস্যদের কাজ কি শুধু নির্বাচনে ভোট দেওয়া?
আমি আমার প্রতিবাদটা জানিয়ে রাখলাম। নতুন তফসিল ঘোষণার দাবি করেছি এবং বিদ্যমান তফসিলে নির্বাচনে অংশ নেয়া থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি। এরপরও যদি নির্বাচন জোরপূর্বক করে ফেলে, তাহলে করবে। আমি তো আর রাজনৈতিক দলের কর্মী না যে, মারামারি করবো। নির্বাচন হয়ে গেলে হয়ে যাবে। শিল্পকলার সেক্রেটারি হওয়া না হওয়া আমার জন্য বড় বিষয় নয়, আমি তো রাজনৈতিক দলের সদস্য নই, আমার মূল পরিচয় আমি একজন শিল্পী।
সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার বলেন, শিল্পকলার নির্বাচন নিয়ে কিছু কিছু কথাবার্তা হচ্ছে শুনেছি। কেন, ঠিক কী কারণে সমস্যা, সেটা বলতে পারছি না। দুয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় কিছু নিউজ দেখেছি। সেখানে বার্ষিক সাধারণ সভা না হওয়া, আর্থিক কিছু বিষয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে। অভিযোগগুলো যৌক্তিক, তবে যার বা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে, তাদেরও বক্তব্য থাকতে পারে, সেটা দেখলাম না। যার কারণে সামগ্রিক বিষয় নিয়ে একটা গ্যাপ তৈরি হয়েছে। কেউ ক্ষমতায় গেল বা কোনো পোস্টে বসলো মানেই সব দায়দায়িত্ব তার, বিষয়টা এমন নয়। আমারও তো দায়দায়িত্ব আছে। দিনশেষে ক্ষমতায় যাওয়া ব্যক্তি যেমন শিল্পকলার একজন সাধারণ সদস্য, আমিও একজন সাধারণ সদস্য। আবার দিনশেষে আমরা সবাই সংস্কৃতিকর্মী। সুতরাং সমস্যা থাকলে, সেটা আমরা বসে ঠিক করে ফেলতে পারতাম। কারণ শিল্পীদের জন্যই শিল্পকলা।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। সুন্দরভাবে নির্বাচন হয়ে যাওয়াটাই কাম্য। তবে তিন বছরের নির্বাচন ছয় বছরে হওয়া কাম্য নয়। সাংবাদিকদের নির্বাচন, আইনজীবীদের নির্বাচন যদি মেয়াদের মধ্যে হতে পারে, সংস্কৃতিকর্মীদেরটা হতে পারবে না কেন? নির্বাচন যদি সঠিক সময়ে হয়ে যেত, তাহলে এসব জটিলতা তৈরি হতো না। সার্বিকভাবে বলতে পারি যে, একটা ঐক্যমত্যে পৌঁছে সুন্দরভাবে নির্বাচনটা হওয়া অসম্ভব কিছু নয়, এটার জন্য এত অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের প্রয়োজন ছিল না।
বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত নাট্যজন রবিউল আলম বলেন, একটা নির্বাচন যেহেতু হচ্ছে, এখানে পক্ষে-বিপক্ষে কথা আসবেই। এটাকে খুব বড়ো করে দেখার কিছু নেই বলে আমি মনে করি। দেশের অনেক শিল্পকলা একাডেমিতে তো নির্বাচনই হয় না। খোদ ঢাকাতেও হয় না। সুতরাং নির্বাচন হলে যে শিল্পকলায় খুব বড়কিছু হয়ে যাবে আর না হলে শিল্পকলা ধ্বংস হয়ে যাবে, সেটা আমি মনে করি না। গত ছয় বছর তো একটা কমিটি ছিল। তাদের তো খুব বেশি কর্মকাণ্ড আমি দেখিনি জাতীয় দিবসে ফুল দেয়া ছাড়া। সেক্রেটারি খুবই একটিভ ছিলেন, উনি ক্যারিশমেটিক লোক। বলতে গেলে, উনি একাই পুরো কমিটিকে ধরে রেখেছিলেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।


চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গাঙ্গেয় বদ্বীপের সংগীত ব্যক্তিত্ব যোগী স্বপন কুমার দাশ’র রচিত আধ্যাত্মিক ও দেহতত্ত্ব বিষয়ক গান নিয়ে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাংবাদিক কিরন শর্মার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রদীপ প্রজ্জ্বলক ও প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম এর পরিচালক মো.মাহফুজুল হক। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর প্রখ্যাত সাধক শ্রীমৎ স্বামী সত্যানন্দ ব্রহ্মচারী’জীকে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে ‘খুঁজি তাঁরে’ অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয়।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা রাখাল চন্দ্র ঘোষ (যুদ্ধকালিন কমান্ডার), আব্দুর রহিম (লোক ও মরমি শিল্পী), রূপম ভট্টাচার্য (সাংবাদিক), স ম জিয়াউর রহমান(সাংবাদিক), দিদারুল ইসলাম (সংগীত পরিচালক ও কন্ঠ শিল্পী), তন্দ্রা দাশগুপ্তা, সংগীত শিল্পী সঞ্জয় রক্ষিত সহ প্রমুখ। সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত

ছিলেন পাপিয়া আহমেদ (সংগীত প্রযোজক বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম), অপু বর্মন (সংগীত শিল্পী বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন এবং সংগীত শিক্ষক জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চট্টগ্রাম), অপু সেনগুপ্ত (বিশিষ্ট গীতিকার বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন), দীপ্ত দত্ত সংগীত শিল্পী (বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন)।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন, খ্যাতনামা মরমি কন্ঠ শিল্পী শিমুল শীল, বাউল শিল্পী বাবুল শীল, অভিষেক দাশ, বাউল জুয়েল দ্বীপ, শিউলী চৌধুরী, আনন্দ প্রকৃতি(মো:তৌহিদুল ইসলাম), আধাত্মিক শিল্পী সুরনাথ, কাওয়ালী শিল্পী মেঘলা। ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি প্রতিযোগিতার সেরা কন্ঠ শিল্পী বাঁধন ঘোষ, ইন্দ্রিলা ঘরজা, মিম দাশ, অধরা চৌধুরী রাত্রি, আরাধ্যা মজুমদার, সৈয়দ রাসতিন, অরূপ কুমার শীল, ঊর্মি নাগ সংগীত পরিবেশন করেন।

যন্ত্র সংগীত শিল্পীতে ছিলেন- কীবোর্ডে রুবেল ঘোষ, অক্টোপ্যাডে পাপন, তবলায় উৎস, বাংলা ঢোলে হৃদয় বাঁশিতে নিলয়। সংগীত তত্বাবধানে যোগী স্বপন কুমার দাশ, অনুষ্ঠান তত্বাবধানে মো: মোহসীন(সাধারণ সম্পাদক, ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি সংসদ)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মো: সাইফুর রহমান ও ববিতা ইসলাম।

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ