আজঃ সোমবার ১৭ নভেম্বর, ২০২৫

এপ্রিলে সড়ক দুর্ঘটনায় ৭০৮ জন নিহত — যাত্রী কল্যাণ সমিতি

এম মনির চৌধুরী রানা

বাংলাদেশে এপ্রিল মাসে ৬৮৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭০৮ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এ সময় দুই হাজার ৪২৬ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া, রেলপথে ৪৪টি দুর্ঘটনায় ৪৭ জন নিহত ও ৩৬ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ৬টি দুর্ঘটনায় ৮ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন এবং একজন এখনো নিখোঁজ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর সই করা এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথে দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সারাদেশে সড়ক, নৌ ও রেলপথে ৭৩৩টি দুর্ঘটনায় ৭৬৩ জন নিহত ও ২ হাজার ৪৭২ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া, ৩০৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২৭৪ জন নিহত ও ৩২৮ জন আহত হয়েছেন। যা মোট দুর্ঘটনার ৪৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ ও মোট নিহতের ৩৮ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং আহতের ২৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এপ্রিল মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এই বিভাগে সর্বোচ্চ ১৫৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭৯ জন নিহত ও ৩০৫ জন আহত হয়েছেন। বরিশাল বিভাগে সর্বনিম্ন ৩৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৩ জন নিহত ও ৪৮ জন আহত হয়েছেন। সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ সদস্য, ১৬৯ জন চালক, ৬৩ জন পথচারী, ৫৮ জন পরিবহন শ্রমিক, ৪৬ জন শিক্ষার্থী, ৬ জন শিক্ষক, ১১৯ জন নারী, ৬৭ জন শিশু, ৩ জন সাংবাদিক, ২ জন চিকিৎসক, ১ জন আইনজীবী, ৩ জন প্রকৌশলী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৮ জন নেতা-কর্মীর পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছেন- ১ জন পুলিশ সদস্য, ৩ জন সেনাসদস্য, ১ জন সাংবাদিক, ২ জন চিকিৎসক, ১২৩ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৫৮ জন পথচারী, ৯৩ জন নারী, ৪৯ জন শিশু, ৩৬ জন শিক্ষার্থী, ৩৩ জন পরিবহন শ্রমিক, ৬ জন শিক্ষক, ৩ জন প্রকৌশলী ও ৮ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী। দুর্ঘটনায় পড়া যানবাহনের মধ্যে ছিল ৩৪ দশমিক ৭১ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ বাস, ১৩ দশমিক ১৫ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ নছিমন করিমন মাহিন্দ্রা ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬ দশমিক ২৭ শতাংশ প্রাইভেটকার এসইউভি-মাইক্রোবাস। এ ছাড়া, মোট দুর্ঘটনার ৪৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৫ দশমিক ৩২ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ এবং ২৩ দশমিক ১৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে। ৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ বিবিধ কারণে যেমন- চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে ০ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং ০ দশমিক ৪৩ শতাংশ ট্রেনের সঙ্গে অন্য কোনো যানবাহনের সংঘর্ষে। দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এপ্রিল মাসে মোট দুর্ঘটনার ৩৫ দশমিক ২৮ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৪২ দশমিক ৪৫ শতাংশ ফিডার রোডে ঘটেছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

গাজীপুরের পেট্রলবোমাসহ দুই যুবককে আটক।

গাজীপুরের টঙ্গীতে পেট্রলবোমাসহ দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশ। শনিবার (১৫ নভেম্বর) দিবাগত রাত প্রায় ১টা ২০ মিনিটে টঙ্গী পশ্চিম থানার স্টেশন রোডের মন্নু টেক্সটাইল মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশ থেকে তাদের আটক করা হয়।গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—আ. রহিম (২৫) ও মো. মবিন (২১)।

পুলিশ জানায়, গভীর রাতে টঙ্গী পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনোহর আলী সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে টহল দেওয়ার সময় দুই যুবককে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে আটক করেন। পরে তল্লাশি চালিয়ে তাদের কাছ থেকে একটি পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদের টোকাই বলে জানায়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারুন-অর-রশীদ জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

নেত্রকোণা হাসপাতালে আলাদা ডায়ারিয়া ওয়ার্ড উদ্বোধন।

নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আলাদা ডায়রিয়া ওয়ার্ড আনুষ্ঠানিকভাবে ১৬ নভেম্বর (রবিবার) ৩য় তলায় উদ্বোধন করা হয়েছে। উদ্বোধন করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোমেনুল ইসলাম।

এসময় উপস্থিত ছিলেন মোহনগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুল ইসলাম রতন, প্রধান সহকারি মোঃ মাহবুবুর রহমান খান, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার শহিদুর রহমান, সিনিয়র স্টাফ নার্স নূরে ফারজানা প্রমুখ। মোহনগঞ্জ হাসপাতালের ডায়ারিয়া রোগীদের আলাদা কোন ওয়ার্ড ছিল না।

পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডের মাঝামাঝি খালি জায়গার মেঝেতে ডায়ারিয়া রোগীর চিকিৎসা করা হতো। ৪ নভেম্বর নেত্রকোণা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ গোলাম মাওলা নঈম এর কাছে আলাদা ওয়ার্ড খোলার জন্য মোহনগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুল ইসলাম রতন দাবী করলে তিনি মানবিক বিবেচনায় বিষয়টি আমলে নিয়ে আলাদা ওয়ার্ড খোলার নির্দেশ দেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোমেনুল ইসলামকে।

উক্ত নির্দেশের প্রেক্ষিতে আজকে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় আলাদা ডায়ারিয়া ও ডেঙ্গু ওয়ার্ড খোলা হয়। এতে ডায়ারিয়া রোগীরা অনেকটা ভোগান্তি থেকে রেহায় পেয়েছে আজ থেকে। মোহনগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি আজ বাস্তবায়ন হয়েছে। এলাকা বাঁশি নেত্রকোণা সিভিল সার্জনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ