আজঃ সোমবার ১৭ নভেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে

জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উদযাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে
জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের
জন্মবার্ষিকী উদযাপন

ছবি-২-জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আনোয়ার পাশা
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫-তম জন্মবার্ষিকী ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং নজরুল শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোঃ আনোয়ার পাশা। মূখ্য আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি নেছার উদ্দিন আহমদ, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস.এম শফিউল্লাহ, চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মাহবুব আলম খান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরওয়ার কামাল ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুর উদ্দিন। আলোচনা সভা শেষে সাংস্কৃতিক পর্বে কবিতা, গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনাদর্শ তুলে ধরেন এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে তাঁর অবদানের কথা উল্লেখ করেন। এছাড়াও বক্তারা নজরুলের অসাম্প্রদায়িক জীবনাদর্শ অনুসরণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, শান্তিপূর্ণ, সুখী-সমৃদ্ধ, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বক্তারা আরও বলেন, জাতীয় কবি নজরুল দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়েও ছিলেন অসাম্য, অসুন্দর ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে অক্লান্ত বিদ্রোহী চির উন্নত শির। বাংলা কাব্যে এক নতুন যুগের সৃষ্টা নজরুল পরাধীন ব্রিটিশ ভারতে মুক্তির বাণী বয়ে এনেছিলেন তাঁর কাব্যে। সূচনা করেছিলেন এক নতুন যুগের। অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশী আর ভাঙ্গার গান ‘যৌবনের জয়গান’ গেয়ে জাগিয়ে তুলেছিলেন তিনি গোটা উপমহাদেশের মানুষকে। ১৯২১ সালে ‘বিদ্রোহী’ কবিতা লিখে সে সময়ে ব্রিটিশ শাসনের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছেন। ব্রিটিশ বিরোধী কবিতার জন্য করেছিলেন কারাবরণ। কিন্তু কখনোই ঔপনিবেশিক শাসনের কাছে মাথা নত করেননি। ঔপনিবেশিক শাসনের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির জন্য উজ্জ্বীবিত করতে বারবার গেয়েছেনÑ বলবীর, বল উন্নত মম শির। শির নেহারি আমারি নতশির, ওই শিখর হিমাদ্রির।’
বক্তারা বলেন, বাংলা গানের জগতে নজরুল সুর ও বাণীর ক্ষেত্রে ঘটিয়েছেন এক অনন্য বিপ্লব। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ২৪ মে কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে ঘোষণা করা হয় জাতীয় কবি হিসেবে। ১৯৭৬ সালে মৃত্যু বরণ করলে কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাধিস্থ করা হয়। মৃত্যুর আগে তিনি লিখেছিলেন-“মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই, যেন গোরে হতে মুয়াজ্জিনের আযান শুনতে পাই”।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কক্সবাজারগামী প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে বোয়ালখালীতে মো. জয়নাল আবেদীন (২১) নামের এক যুবক আহত হয়েছেন। শনিবার (১৫ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় বোয়ালখালী পৌরসভার বাহির সিগন্যাল ঠাণ্ডা মিয়া চৌকিদার বাড়ি ঘাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।জয়নাল পটিয়া উপজেলার মালিয়ারা ইউনিয়নের মালেক ডিলারের বাড়ির মৃত মো.আবু ছৈয়দের ছেলে। সে ট্রেনের ছাদে করে পটিয়ায় যাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কক্সবাজারগামী ট্রেনের ছাদে ৩ যুবক হাতাহাতি করছিলো। এ সময় তারা তিনজনই নিচে পড়ে যায়। এর মধ্যে জয়নাল আবেদীন গুরুতর আহত হন।উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

গ্রীন–ক্লিন–হেলদি–সেইফ সিটি গঠনে সহযোগিতা বৃদ্ধির আলোচনা।

 

চট্টগ্রামকে একটি গ্রীন, ক্লিন, হেলদি ও সেইফ সিটি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইংল্যান্ডের বার্মিংহাম সিটি কাউন্সিলের লর্ড মেয়র জাফর ইকবালের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠক করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
শুক্রবার বার্মিংহাম সিটি কাউন্সিল কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সৌজন্য বৈঠকে দুই নগরের নেতৃত্ব শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং আধুনিক নগর উন্নয়ন নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন।

বৈঠকে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রামের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম—বিশেষ করে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সবুজায়ন, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার, নগর নিরাপত্তা এবং জলবায়ু–সহনশীল শহর গঠনের পরিকল্পনা—সম্পর্কে লর্ড মেয়রকে অবহিত করেন। তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের দীর্ঘমেয়াদি নাগরিকবান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনাও তুলে ধরেন।

লর্ড মেয়র বার্মিংহামের স্মার্ট সিটি অভিজ্ঞতা ও টেকসই নগর উন্নয়ন প্রক্রিয়া বিস্তারিতভাবে তুলে ধরে চট্টগ্রামের সঙ্গে জ্ঞান, প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি চট্টগ্রামের সার্বিক উন্নয়ন অগ্রগতি ও মেয়রের নেতৃত্বে চলমান ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রশংসা করেন।
বৈঠকে উভয়পক্ষ ভবিষ্যতে স্মার্ট সিটি গভর্ন্যান্স ও ডিজিটাল উদ্ভাবন,জলবায়ু–সহনশীল নগর পরিকল্পনা,আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা,পরিবেশবান্ধব শহরের বিষয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বৈঠকের চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন লর্ড মেয়রকে চট্টগ্রাম সফরের আমন্ত্রণ জানান। দুই নগর নেতৃত্বই ভবিষ্যতে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ