আজঃ বুধবার ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

যাত্রী প্রতিনিধি ছাড়া, আবারো অটোরিক্সার ভাড়া বাড়াতে চাই বিআরটিএ- যাত্রী কল্যাণ সমিতি

এম মনির চৌধুরী রানা

সিএনজি চালিত অটোরিক্সার মতো ছোট একটি পরিবহন খাতের ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি প্রতিরোধে বারবার ব্যর্থ হলেও বিআরটিএ আবারো নতুন করে অটোরিক্সার যাত্রী ভাড়া ও মালিকের দৈনিক জমা বৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

আজ ০৩ জুন সোমবার দেশের গনমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমন অভিযোগ তুলেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

বিবৃতিতে তিনি দাবি করেন, যাত্রী কল্যাণ সমিতির ২০১৬ সালের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী সিএনজি চালিত অটোরিক্সার ৯৮ শতাংশই মিটারে চলে না। ৮৭ শতাংশ যাত্রীদের পছন্দের গন্তব্যে যায় না । এসব সিএনজি অটোরিক্সার ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি যখন চরমে পৌঁেছছিলেন ঠিক তখনই রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার একটু স্বস্থির র্বাতা নিয়ে যাত্রীদের পাশে দাঁড়ায়। ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগরীর উত্তরা থেকে মতিঝিল রুটে মেট্রোরেল চালু হয়েছে। চট্টগ্রামের কালুরঘাট থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এসি বাস চালু হতে যাচ্ছে। এসব কারনে চাপে পড়ে অটোরিক্সার এসব ভাড়া নৈরাজ্য এখন বন্ধ হওয়ার পথে। ঠিক তখনই কতিপয় অটোরিক্সার মালিক সমিতির নেতারা বিআরটিএর সাথে আতাঁত করে আবারো নতুন করে ভাড়া নৈরাজ্য উস্কে দিতে যাত্রীভাড়া ও মালিকের দৈনিক জমা বৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বিআরটিএর দ্বায়িত্ব ছিল সিএনজি চালিত অটোরিক্সার মিটারে চলাচল নিশ্চিত করা। প্রতিটি অটোরিক্সা বিনাপ্রশ্নে যাত্রীদের পছন্দের গন্তব্যে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা। ছোট এই দুটি অঙ্গীকার প্রতিষ্টায় সম্পূণ ব্যর্থ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ। তারা যাত্রী প্রতিনিধি ছাড়া, যাত্রীদের অভিযোগ নিম্পত্তি ছাড়া, পূর্বের ভাড়া বাড়ানোর সময়ে যাত্রী সেবা সংক্রান্ত অটোরিক্সা মালিক সমিতি কর্তৃক প্রদত্ত অঙ্গীকারনামা পুরনে ব্যর্থতার পরেও অদৃশ্য কারনে সম্প্রতি বিআরটিএ সদর কার্যালয়ে ভাড়া বৃদ্ধির জন্য গোপনে বৈঠক করেছে। এই বৈঠকের পর থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলরত সিএনজি অটোরিক্সার যাত্রী ভাড়া ও মালিকের দৈনিক জমা রাতারাতি বৃদ্ধির গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তিনি মালিকদের সাথে আতাঁত করে এহেন ভাড়া বৃদ্ধির পাঁয়তারা জরুরি ভিত্তিতে বন্ধ করার দাবী জানান।

উল্লেখ্য যে, সিএনজি চালিত অটোরিক্সা পরিচালনার জন্য ২০০৬ সালের একটি নীতিমালা রয়েছে। এই নীতিমালা অনুযায়ী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগরীর জন্য একই হারে যাত্রী ভাড়া ও মালিকের জমা নির্ধারণ করা হয়। সরকার অটোরিক্সার দৈনিক জমা যখন ৬০০ টাকা নির্ধারণ করেছিলেন তখন এই নীতিমালা লংঘন করে ঢাকা মহানগরীর অধিকাংশ মালিক ২ বেলায় ৬০০ টাকা করে দৈনিক ১২০০ টাকা জমা আদায় করেছে। এরপর সরকার অটোরিক্সার দৈনিক জমা ৯০০ টাকা নির্ধারণ করলে এখন কোন কোন মালিক ২ বেলায় ৮০০ টাকা হারে দৈনিক ১৬০০ টাকা আবার কেউ দৈনিক ১৮০০ টাকা আদায় করছে। এই বিষয়ে একাধিক শ্রমিক সংগঠন সুর্নিদ্দিষ্ট তথ্য উপাত্তসহ বিআরটিএর কাছে অভিযোগ জমা করলেও বিআরটিএ এহেন দৈনিক জমা আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে দৈনিক জমা ১১৫০ টাকা করা হলে যাত্রীরা আবারো অটোরিক্সার ভাড়া নৈরাজ্যর শিকার হবে বলে মনে করে যাত্রী অধিকার সুরক্ষায় নিয়োজিত এই সংগঠনটি। অটোরিক্সা মালিকদের এহেন অতিরিক্ত দৈনিক জমার কারনে ৪ লক্ষ টাকা দামের একেকটি অটোরিক্সা মেট্রো নিবন্ধন পেলে ২২ থেকে ২৫ লক্ষ টাকায় বাজারে বিক্রি হচ্ছে। অথচ একটি পুরনো বাসের দাম ১০/১২ লক্ষ টাকায় পাওয়া যায়। সরকার মধ্যআয়ের লোকজনকে যাত্রীসেবা প্রদানের মাধ্যমে দিয়ে প্রাইভেট গাড়ি চাহিদা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে এই অটোরিক্সা সার্ভিস চালু করে। দফায় দফায় মালিকের দৈনিক জমা বৃদ্ধির কারনে প্রতিটি অটোরিক্সা এখন একেকটি স্বর্ণের ডিম পাড়া হাঁেস পরিনত হয়েছে। এইখাতে যাত্রী হয়রানি ও ভাড়া নৈরাজ্য চরমে উঠার কারনে যাত্রীরা বাধ্য হয়ে প্রাইভেট পরিবহনের দিকে ঝুঁকছে। এতে নগরীর যানজট ও জনজট দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে এসব অটোরিক্সার লাঘাম টেনে ধরার পরিবর্তে ভাড়া নৈরাজ্য উস্কে দেওয়া সমিচীন হবে না বলে মনে করেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

একইসাথে প্রতিটি অটোরিক্সার মিটারে চলাচল নিশ্চিত করা, বিনাপ্রশ্নে যাত্রীরা যেখানে যেতে চাই সেখানে যাতায়াতের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে এই সেক্টরে শৃঙ্খলা প্রতিষ্টার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবী জানান তিনি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

রূপগঞ্জে সরকারি রাস্তা দখল করে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার গন্ধর্বপুর উচ্চ বিদ্যালয়-কর্ণগোপ সড়কের শাখা রাস্তা বরপা-শান্তিনগর সড়কের নোয়াগাঁও এতিমখানা মোড় এলাকায় সরকারি রাস্তা দখল করে বাড়ি নির্মাণের কাজ অব্যাহত রাখার অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, তারাবো পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের নোয়াগাঁও গ্রামের রজব আলীর ছেলে মোস্তফা মিয়া ওই রাস্তার মাটি কেটে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ করছেন। এখনই রাস্তার মাটি কাটা বন্ধ করতে না পারলে পরবর্তীতে বিষয়টি আরো জটিল হয়ে পড়বে। রাস্তা দখলে নিয়ে মাটি কাটার কাজ এলাকাবাসী বাঁধা দেওয়ায় মোস্তফা মিয়া ও তার নিয়োজিত সন্ত্রাসীরা তাদেরকে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করছে। রূপগঞ্জ

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও তারাবো পৌর প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলামকে জানিয়েও এলাকাবাসী কোন সুফল পাচ্ছে না বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। মোস্তফা মিয়া স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় অনেকেই তার রাস্তা দখলে নিয়ে মাটি কাটার প্রতিবাদ করতে পারছে না। এলাকাবাসীর চলাচলের একমাত্র এই রাস্তাটি হলেও এর প্রতিকার কেউ করতে পারছে না।

জানা গেছে, ১৯৯২সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভূমি হুকুম দখল করে এসএসআইসি-৮ প্রকল্পের আওতায় এখানে ৩০ফুট প্রস্থে সেচ খাল ও ১০ফুট প্রস্থে রাস্তা নির্মাণ করে। পরে তারাবো পৌরসভা এ রাস্তাটিকে ইটের সলিংয়ে উন্নীত করে। এলাকাবাসী যখন রাস্তাটিকে প্রসস্ত ও পাকা করার দাবি জানিয়ে আসছে, ঠিক তখনই স্থানীয় প্রভাবশালী ও আওয়ামীলীগ সমর্থক মোস্তাফা মিয়া ভূমি হুকুম দখলকৃত সেচ খাল ভরাট করে রাস্তাটি দখলে নিয়ে বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ চালিয়ে আসছেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মোস্তাফা মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কথা বলতে অস্বীকার করেন।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও তারাবো পৌর প্রশাসক মোঃ সাাইফুল ইসলাম বলেন, সেচ খালের জমি ও রাস্তা দখলকারীরা যত প্রভাবশালীই হোক ছাড় দেওয়া হবে না। বেদখলকৃত সকল সরকারি জমি উদ্ধার করা হবে। দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে।

চট্টগ্রামে পুলিশের অভিযানে আ. লীগের ২৬ নেতাকর্মী গ্রেফতার

চট্টগ্রাম মহানগরের ১৬ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরও ২৬ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার বিকেলে নগর পুলিশের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, রোববার দুপুর ২টা থেকে সোমবার দুপুর ২টা পর্যন্ত

বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিশেষ ক্ষমতা আইন ও সন্ত্রাসীবিরোধী আইনে এক বা একাধিক মামলা রয়েছে

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মঈনুল হোসেন গালিব (৩২), শাহাজাহান ইসলাম প্রকাশ সাজু (২৮), মো. নাহিদুল আলম এলিন (৪৩), মো. সফর আলী (৩৯), লিয়াকত আলী আরিফ (৪১), মো. আলমগীর হোসেন মোর্শেদ (৪০), মো. রিয়াদ প্রকাশ রিয়াজ (২৬), মো. রবিন হোসেন (২৭), দূর্জয় চন্দ্র দাস (২২), মো. জানে আলম, আক্তার হোসেন শাকিল (২৫), শেখ খান ইমন (২২), মনির হোসেন (২০), মো. আরিফ

(২৪), মো. ইউনুস (২০), মো. জসিম উদ্দিন (৫৪), মো. মাহমুদ ইকবাল (৩৪), মো. মনছুর আলম (৪৪), মো. আব্দুর রহিম (৩৭), কাজী মো. ইব্রাহীম শরীফ (৪৯), মো. নাহিদুল আলম চৌধুরী (১৯), মো. চাঁন মিয়া (২০), মো. বেলাল (৩৪), সাজ্জাদ হাসান (২৩), মো. রফিক (৪০) এবং পেয়ার আহমেদ (৪৫)।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ