আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

অবশেষে ১৪ বছর পর শিশু ওয়াসিম হত্যা মামলার রায় আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বহুল আলোচিত শিশু কাজী মশিউর রহমান প্রঃ ওয়াসিম হত্যা মামলার রায় আগামী ৯ জুন রোববার। ১৪ বছর পর প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত, চট্টগ্রামে মামলাটির রায় ঘোষণা হবে। হত্যার শিকার শিশু ওয়াসিম মিরসরাইয়ের মঘাদিয়া ইউনিয়নের ভূঁইয়া তালুক কাজী বাড়ির কাজী মোশাররফ হোসেন বাবলুর পুত্র।
প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পিপি এডভোকেট দেলোয়ার হোসেন জানান, ২০১০ সালের ২২ নভেম্বর বিকেল ৫টায় মিরসরাইয়ের মঘাদিয়া ইউনিয়নের ভূঁইয়া তালুক কাজী বাড়ির পূর্বপাশের ছনখোলায় আসামী কাজী নাহিদ হোসেন পল্লব ৫ বছর বয়সী শিশু ওয়াসিমকে ১০ মিনিটের উপরে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এ সময় সিগারেটের আগুনে ছ্যাকা দিয়ে শিশুটির মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামী বাড়িতে এসে তার মা,বাবা ভাইকে ঘটনা খুলে বলে। পরিবারের পক্ষ থেকে আসামীকে পালিয়ে যেতে বললেও ঘরে লুকিয়ে থাকে। ওই রাতে আসামীর পরিবারের সদস্যরা ছনখোলা থেকে শিশুর লাশকে বস্তাবন্দী করে পাশের ধানক্ষেতে ফেলে দেয়। এদিকে শিশুটিকে না পেয়ে জেঠা কাজী একরামুল হক মিরসরাই থানায় পরের দিন ২৩ নভেম্বর একটি সাধারণ ডায়েরী দাযের করেন। ঘটনার পরেদিন শিশুর বস্তাবন্দী লাশ পাশের ধানক্ষেতে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে পরিবারের সদস্যদের দিয়ে শিশু ওয়াসিমের লাশ নিশ্চিত হয়ে ঘটনাস্থল ছনখোলা থেকে আসামীর মোবাইল ও শিশুটির স্যান্ডেল উদ্ধার করে হত্যাকারীকে সনাক্ত করে। শিশুটির লাশ উদ্ধারের পর মিরসরাই থানায় শিশুটির জেঠা একটি মামলা (নং-২২(১১)১০) দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলাটি দায়রা জজ আদালতে দায়রা মামলা (নং-১১২৫/২০১২) মূলে চলমান থাকে। গত ২৯ মে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আসামী কাজী নাহিদ হোসেন পল্লব ও কাজী ইকবাল হোসেন বিপ্লবকে জামিন নামঞ্জুর করে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলা চলাকালীন সময়ে আসামী কাজী নাহিদ হোসেন পল্লব হত্যার দায় স্বীকার করে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় জাবনবন্দি দেন। মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরুতে ৩০২/২০১ দন্ড বিধি ধারায় আসামী কাজী নাহিদ হোসেন পল্লব, তার ভাই কাজী ইকবাল হোসেন বিপ্লব, বাবা ফজলুল কবির প্রঃ হরমুজ মিয়া ও মা মিসেস নুর জাহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্যে ফজলুল কবির প্রঃ হরমুজ মিয়া ও মিসেস নুর জাহান বেগম মারা যান।
শিশুটির পিতা কাজী মোশাররফ হোসেন বাবলু জানান, আমার অবুঝ আদরের সন্তান কাজী মশিউর রহমান প্রঃ ওয়াসিমকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি হত্যাকারিদের সর্বোচ্চ শাস্তির আশা করছেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ