আজঃ শুক্রবার ২১ মার্চ, ২০২৫

চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু যান ও পথচারী চলাচলে প্রস্তুত

এম মনির চৌধুরী রানা চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

কালুরঘাট রেলসেতু যানবাহন ও পথচারী চলাচলের জন্য অবশেষে প্রস্তুত হয়েছে। সম্পন্ন হয়েছে ব্রিজের উপরে কার্পেটিংয়ের কাজ। প্রথমবারের মতো সেতুর দক্ষিণ পাশ দিয়ে নির্মিত ওয়াকওয়ের কাজও শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে কর্ণফুলী নদীর উভয় পারের মানুষ চলাচল শুরু করেছে। শতবর্ষী এ সেতুর ওপর দিয়ে প্রথমবারের মতো ওয়াকওয়ে দিয়ে হেঁটে চলাচল করতে পেরে তারা খুশি। এখন সেতুর ওপর ট্রেন এবং যানবাহন চলাচলের সময় পাশের ওয়াকওয়ে দিয়ে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবে পথচারীরা। কারিগরি দিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে শীঘ্রই আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটি যানবাহন ও পথচারী চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্ত বলেন, ব্রিজের ওপরে কার্পেটিংয়ের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। শেষ হয়েছে সেতুতে প্রথমবারের মতো যুক্ত হওয়া ওয়াকওয়ের কাজ। তিনি বলেন, কোরবানির ঈদের আগে পথচারীদের জন্য সেতুর ওয়াকওয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হবে। বর্তমানে উভয় পারের মানুষ জোর করে ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করছে। জুলাই থেকে সেতু দিয়ে গাড়ি চলাচল করতে পারবে বলে জানান তিনি। রেলওয়ের প্রকৌশলীরা জানান, বুয়েট প্রকৌশলীদের পরামর্শে প্রায় ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হচ্ছে কালুরঘাট সেতু। সংস্কারের প্রথম ধাপ শেষ করে গত ডিসেম্বর থেকে কক্সবাজারগামী ট্রেন চলাচল শুরু হলেও যানবাহন ও পথচারী চলাচলের জন্য ওয়াকওয়ে নির্মাণ করতে সময় লাগে। সেতুটি দিয়ে যানবাহন চলাচলের পথ থাকায় রেল ট্র্যাকের অভ্যন্তরে পানি জমে পাত ক্ষতিগ্রস্ত হতো। এ কারণে বছরের বিভিন্ন সময় রেল ট্র্যাক মেরামতের প্রয়োজনে সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য বন্ধ রাখা হতো। তবে এবার বিদ্যমান পাটাতনের ওপর বিশেষ প্রযুক্তির কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে পানি নিষ্কাশনের পথ রাখা হয়েছে। এরপর ওই কংক্রিট ঢালাইয়ের ওপর পিচ দিয়ে সড়কপথ নির্মাণ করা হয়। এতে সড়ক ও রেলপথ উভয়ই আগের চেয়ে শক্ত থাকবে। বর্ষা মৌসুম কিংবা কুয়াশার পানি না জমে কংক্রিট ঢালাইয়ের অভ্যন্তরীণ ড্রেনেজ সিস্টেম দিয়ে নদীতে পড়লে রেল ট্র্যাক, ক্লিপ ও সেতুর ইস্পাতের পাটাতন ক্ষয় হবে না। বিশেষ প্রযুক্তি ও বুয়েটের পরামর্শে নতুন করে নির্মাণ করায় মেয়াদোত্তীর্ণ সেতুটি দীর্ঘ সময় ব্যবহারযোগ্য থাকবে বলে মনে করছেন রেলওয়ের প্রকৌশলীরা। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞ টিমের তত্ত্বাবধানে সেতুটির সংস্কার কাজ করছে ম্যাঙ। গত ২০২৩ সালের ১ আগস্ট থেকে সেতুর সংস্কার কাজ শুরু হয়। ২০২৩ সালের ১৮ জুন রেলওয়ের সাথে ম্যাঙ ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের চুক্তি হয়। প্রথম দফায় ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সেতুর সংস্কার কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে সংস্কার কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ পর্যন্ত বেশ কয়েক দফা পেছানো হয় সেতুটির সংস্কার কাজ। তবে সংস্কারের প্রথম ধাপ শেষ করে ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যটন নগরী কসবাজার রুটে প্রথমবারের মতো যাত্রীবাহী (কসবাজার এঙপ্রেস) ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এর আগে ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে দোহাজারী কসবাজার রেললাইন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরও আগে ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর সংস্কাররত কালুরঘাট সেতু দিয়ে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম থেকে ট্রায়াল রানের ট্রেন কসবাজার যায়। এখন সেতুর উপর দিয়ে কসবাজার রুটে প্রতিদিন দুটি আন্তঃনগর ট্রেন এবং একটি স্পেশাল ট্রেন এবং দোহাজারী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তেলবাহী ট্রেন চলাচল করে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

রূপগঞ্জে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার,থানায় অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাংবাদিকের ছবি ব্যবহার করে অসত্য ও অপপ্রচার ছাড়ানোর ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন সাংবাদিক রনি আহমেদ।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সকালে ভুক্তভোগী শ্বশরীরে থানায় উপস্থিত হয়ে সাধারণ ডায়েরি জিডি করেন। যাহার জিডি নং ১১/৪৩। তিনি ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া সিএসবি নিউজ ইউএসএ এবং অনলাইন ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম দৈনিক আলোর সকালে রূপগঞ্জ উপজেলা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন।

জিডির সূত্র ধরে জানা যায়, উপজেলা পূর্বাচল উপশহর কাঞ্চন ব্রীজ টু নিলা মার্কেট ৩০০ ফিট সড়কে অস্থায়ী টং দোকানে কতিপয় অসাধু চোরাই তেল ব্যাবসায়ী জ্বালানি তেল বিক্রি করিয়া আসিতেছে মর্মে প্রত্যক্ষ প্রমাণ পেয়ে ভিডিও চিত্র সহ দৈনিক আলোর সকাল অনলাইনে সংবাদ প্রকাশ করেন। এই নিউজকে কেন্দ্র করে “somoy khobor” নামিয় ফেইসবুকের একটি ফেইক আইডি থেকে সাংবাদিক রনির ছবি ব্যবহার করে মানসম্মান হানিকর বিভিন্ন পোস্ট করে অসত্য ও অপপ্রচার চালাচ্ছে। জিডিতে এই আইডির বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা ও মানহানিকর তথ্য পোস্ট করার মাধ্যমে হেয় প্রতিপন্ন করার অভিযোগ করা হয়েছে।

সাংবাদিক রনি আহমেদ বলেন, টং দোকানে চোরাই তেলের রমরমা ব্যাবসা, প্রশাসনের নজরদারি নেই এমন শিরো নামে একটি অনলাইনে প্রমানসহ ভিডিও চিত্রে সংবাদ প্রকাশ করলে কতিপয় অসাধু চোরাই তেল সিন্ডিকেট ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য আমার ছবি ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। মানহানি করার লক্ষেই এ ধরনের অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এর সাথে স্থানীয় নামধারি কয়েকজন সংবাদ কর্মীও জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। পরবর্তীতে অনুসন্ধানি রিপোর্টের মাধ্যমে এই চোরাই তেল সিন্ডিকেট সম্পর্কে বিস্তারিত জাতীর সামনে তুলেদরা হবে জানিয়ে আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ অপপ্রচারের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন তিনি।

রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. লিয়াকত আলী বলেন, “সাংবাদিক রনি আহমেদের ছবি ব্যাবহার করে তার বিরুদ্ধে ফেসবুকে অসত্য ও অপপ্রচার মুলক পোস্ট করা হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে। এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন তিনি। বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

বোয়ালখালীতে বৃদ্ধার মৃত্যুতে ঘর ভাগের দাবিতে দাফনে বাধা!

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর আমুচিয়াতে গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সকাল ৬টায়। মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু বরণ করেন সালমা খাতুন(৭৬) নামের বৃদ্ধা। বৃদ্ধার জীবনের শেষ ইচ্ছে ছিলো বাবার বাড়ির সামাজিক কবরস্থানে দাফনের। তবে এতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাঁর ঘর ভাগের দাবি। শেষতক স্থানীয় এক যুবদল নেতা রোকন উদ্দিনের হস্তক্ষেপে পূরণ করা হয় বৃদ্ধার শেষ ইচ্ছে।
সালমা খাতুন বোয়ালখালী উপজেলার ৯নং আমুচিয়া ইউনিয়নের ৮ নাম্বার ওয়ার্ডের খান বাহাদুরপাড়ার মরহুম চুন্নু মিয়া টেন্ডলের মেয়ে। তাঁর বিয়ে হয়েছিলো কধুরখীলে। তবে বেশিদিন ঠাঁই হয়নি স্বামীর সংসারে। একমাত্র কন্যা জাহানারা বেগমকে নিয়ে ৫০ বছর আগে বাপের বাড়িতে ফিরে আসেন। অদৃষ্টের নিয়তিকে মেনে নিয়ে বাবার করে দেওয়া ঘরে মেয়েকে জীবন যাপন করেন। মেয়েকে বড় করে বিয়ে দিয়েছেন। সালমা খাতুনের দুই ভাই। বড় ভাই মারা গেছেন। ছোট ভাই ও দুই ভাইয়ের ছেলেদের সংসারেরও ঠাঁই হলো না তার।সম্প্রতি বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে মেয়ে শ্বশুর বাড়ি নিয়ে যান। সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মরহুমার মেয়ে জাহানারা বলেন, ‘মায়ের শেষ ইচ্ছে ছিলো আমার নানার বাড়িতে যেন দাফন করা হয়। নয়তো আমার শশুর বাড়িতেই দাফনের ব্যবস্থা করেছিলাম। তিনি জানান, ‘ইচ্ছে অনুসারে পৈতৃক বাড়ির সামাজিক কবরস্থানে দাফনের প্রস্তুতি চলছিল। যোহরের নামাজের পর জানাজার সিদ্ধান্ত নেন এলাকাবাসী।বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে মেয়ের শ্বশুর বাড়ি থেকে সালমার মরদেহ বাবার বাড়ির উঠোন অবধি পৌঁছালেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি সালমা খাতুনের সস্মৃতি বিজড়িত ঘরে। সেই ঘরটি দুইভাগে ভাগ না হলে দাফন করতে দেওয়া হবে বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়। ফুফু সালমা খাতুনের ঘরটি দুই ভাগের দাবি তুলে এই বাধ সাধে দুই ভাইয়ে ছেলেরা।
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মো.রোকন উদ্দিন বলেন, ‘সালমা খাতুন সম্পর্কে আমারও ফুফু হন। তাঁর দুই ভাইয়ের সন্তানরা ঘরটি। ভাগ না করলে দাফন করতে বাধা দিচ্ছিল। এক প্রকার মারামারি করার উপক্রম। এ ঘটনায় উপস্থিত সকলে হতবাক হয়ে পড়েন। মো.রোকন জানান, ‘খবর পেয়ে এলাকাবাসীকে নিয়ে তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করি। তারা মানছিলো না। পরে প্রশাসনের সহযোগিতা নেওয়া হবে জানালে তারা কিছুটা নিবৃত্ত হয়। এরপর নির্ধারিত সময়ে নামাজে জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ