
দক্ষিণ ফটিকছড়িতে দুই দিনে তিন মর্মান্তিক মৃত্যুর শিকার হয়েছেন ৩ জন, সোমবার ঈদুল আযহার দিনে এক পাগলা মহিষের আক্রমণে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। একজন আহত হয়ে হাসপাতালে আছে। পালিয়ে আসা একটি পাগলা মহিষ এই তাণ্ডব চালায়। এ সময় পাগলা মহিষটি ঘরে ঢুকে আক্রমণের পর বৃদ্ধ ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (১৭ জুন) রাত ৮টার দিকে উপজেলার সমিতিরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ নিশ্চিন্তপুর গ্রামের আজিম মুন্সির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওই বৃদ্ধের নাম মো. মীর আহমেদ। তিনি ওই এলাকার মৃত হামিদ আলীর ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সমিতিরহাট ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সদস্য নুরুল আলম।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই বিষয়ে বলেন, মহিষটি হঠাৎ আচমকা এসে আজিম মুন্সির বাড়ির একটা জরাজীর্ণ ঘরের পেছনের দরজা দিয়ে ঢুকে যায়। ওই ঘরে সামনের রুমে থাকা বৃদ্ধ মীর আহমেদকে পায়। সেখানে মহিষটি তার পায়ে, বুকেসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। এরপর মহিষটি ওখান হতে পালিয়ে আরো ১ কিলোমিটার গিয়ে এক হিন্দু বাড়ির বসত ঘরে ঢুকে পরে এবং ক্লান্ত হয়ে ওখানে লুটিয়ে পরে। এরপর লোকজন জড়ো হয়ে মহিষটিকে জবেহ করে দে। মহিষটির নির্দিষ্ট কোনো মালিকের খোঁজ পাওয়া গেছে কিনা জানা যায়নি।
এই দিকে দিন না পেরুতেই একই ইউনিয়নে ঘটে যায় আরেক মর্মান্তিক ঘটনা। একই ইউনিয়ন সমিতিরহাটে বি-দ্যুৎ পৃ-ষ্ঠ হয়ে সালাউদ্দিন তাসিন (১৭) নামে এক স্কুল ছাত্রের মৃ*ত্যু হয়।
তার বাড়ি সমিতির হাট ৮নং ওয়ার্ডের রাজা মিয়া চৌধুরী বাড়ি,
প্রবাসী বাবুর বড় ছেলে, তাসিন সমিতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র।
এলাকাবাসী হতে জানা যায় মৃত তাসিন চাচার নতুন বাড়ির উঠানে খেলার একপর্যায়ে নতুন ভবনের ছাদে বল পরে।
সেই বলটি আনতে গেলে ঘরের ছাদের উপর দিয়ে যাওয়া ১১ হাজার ভো-ল্টেজের বিদ্যুতের লাইনের সাথে লেগে ঘটনাস্থলে মৃত্যু বরণ করেন।তার মৃত্যুতে এলাকায় ও পরিবারে চলছে শোকের মাতম। এই বিষয়ে সমিতির হাটের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ ইমন প্রবাসে অবস্থান করায় তার সাথে সরাসরি যোগাযোগ না হলেও তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই দুটি বিষয়ে অত্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

আরেক দিকে ওপর এক ঘটনায় বখতপুর চারাবটতল গোলদার বাড়ি স্কুল সংলগ্ন গোলদার বাড়িতে ভোর রাতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৭ টি বসত ঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সাথে সাথে ঘরের ভিতরে আটকা পড়ে এক বয়স্ক মহিলার মৃত্যু হয়। আনোয়ার পাশা, মীর পাশা তাদের মায়ের মৃত্যুতে হতবিহ্বল হয়ে পরে। শত শত মানুষ তাদের পাশে দাঁড়াতে ছুটে আসেন। এই অগ্নিকান্ডে তাদের দেখতে ছুটে আসেন ফটিকছড়ি থেকে নির্বাচিত এম পি খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। এই সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সকলের সাথে কথা বলেন এবং বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে তিনি নগদ অর্থ প্রদান করেন। এছাড়া এই অগ্নিকান্ডের খবর শুনে ছুটে আসেন নব নির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন মুহুরী। তিনিও সকল ক্ষতিগ্রস্থদের সাথে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান এবং আগুনে পুড়ে যাওয়া পুরো বসত ভিটা হেঁটে হেঁটে পরিদর্শন করেন। এই এম পি এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে সার্বক্ষণিক ভাবে ছিলেন বখতপুরের চেয়ারম্যান ফারুকুল আজম বি এস সি। উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শারমিন আকতার নূপুর সহ আরো অনেক মহিলা নেত্রী। এছাড়া ইউ পি সদস্য বৃন্দ, এলাকাবাসী সহ আরো অনেকে।
এইদিকে এলাকাবাসী সহ সকলে সাংসদ,উপজেলা চেয়ারম্যান সহ সকল নেতৃবৃন্দের কাছে দাবী জানান আগামী অল্প দিনের মধ্যে যেন দক্ষিণ ফটিকছড়িতে একটি ফায়ার স্টেশন স্থাপন করা হয়। এই সময় এলকাবাসী বলেন, যদি আজকে নিকটবর্তী একটি ফায়ার স্টেশন থাকত তাহলে হয়ত এত বড় ক্ষয়ক্ষতি হতনা।