আজঃ শুক্রবার ১৪ মার্চ, ২০২৫

চট্টগ্রাম জেলা:

দক্ষিণ ফটিকছড়িতে দুই দিনে মর্মান্তিক মৃত্যুর শিকার ৩ জন

মাসুদুল ইসলাম মাসুদ ফটিকছড়ি প্রতিনিধি:

ফটিকছড়ি:

 

দক্ষিণ ফটিকছড়িতে দুই দিনে তিন মর্মান্তিক মৃত্যুর শিকার হয়েছেন ৩ জন, সোমবার ঈদুল আযহার দিনে এক পাগলা মহিষের আক্রমণে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। একজন আহত হয়ে হাসপাতালে আছে। পালিয়ে আসা একটি পাগলা মহিষ এই তাণ্ডব চালায়। এ সময় পাগলা মহিষটি ঘরে ঢুকে আক্রমণের পর  বৃদ্ধ ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (১৭ জুন) রাত ৮টার দিকে উপজেলার সমিতিরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ নিশ্চিন্তপুর গ্রামের আজিম মুন্সির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওই বৃদ্ধের নাম মো. মীর আহমেদ। তিনি ওই এলাকার মৃত হামিদ আলীর ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সমিতিরহাট ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সদস্য নুরুল আলম।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই বিষয়ে বলেন, মহিষটি হঠাৎ আচমকা এসে আজিম মুন্সির বাড়ির একটা জরাজীর্ণ ঘরের পেছনের দরজা দিয়ে ঢুকে যায়। ওই ঘরে সামনের রুমে থাকা বৃদ্ধ মীর আহমেদকে পায়। সেখানে মহিষটি তার পায়ে, বুকেসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। এরপর মহিষটি ওখান হতে পালিয়ে আরো ১ কিলোমিটার গিয়ে এক হিন্দু বাড়ির বসত ঘরে ঢুকে পরে এবং ক্লান্ত হয়ে ওখানে লুটিয়ে পরে। এরপর লোকজন জড়ো হয়ে মহিষটিকে জবেহ করে দে। মহিষটির নির্দিষ্ট কোনো মালিকের খোঁজ পাওয়া গেছে কিনা জানা যায়নি।

এই দিকে দিন না পেরুতেই একই ইউনিয়নে ঘটে যায় আরেক মর্মান্তিক ঘটনা। একই ইউনিয়ন  সমিতিরহাটে বি-দ্যুৎ পৃ-ষ্ঠ হয়ে সালাউদ্দিন তাসিন (১৭) নামে  এক স্কুল ছাত্রের মৃ*ত্যু হয়।
তার বাড়ি সমিতির হাট ৮নং ওয়ার্ডের রাজা মিয়া চৌধুরী বাড়ি,
প্রবাসী বাবুর বড় ছেলে, তাসিন সমিতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র।
এলাকাবাসী হতে জানা যায়  মৃত তাসিন চাচার নতুন বাড়ির উঠানে খেলার একপর্যায়ে নতুন ভবনের ছাদে বল পরে।
সেই  বলটি  আনতে গেলে ঘরের ছাদের উপর দিয়ে যাওয়া ১১ হাজার ভো-ল্টেজের বিদ্যুতের লাইনের সাথে লেগে ঘটনাস্থলে মৃত্যু বরণ করেন।তার মৃত্যুতে এলাকায় ও পরিবারে চলছে শোকের মাতম। এই বিষয়ে সমিতির হাটের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ ইমন প্রবাসে অবস্থান করায় তার সাথে সরাসরি যোগাযোগ না হলেও তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই দুটি বিষয়ে অত্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

আরেক দিকে ওপর এক ঘটনায় বখতপুর চারাবটতল গোলদার বাড়ি স্কুল সংলগ্ন গোলদার বাড়িতে ভোর রাতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৭ টি বসত ঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সাথে সাথে ঘরের ভিতরে আটকা পড়ে এক বয়স্ক মহিলার মৃত্যু হয়। আনোয়ার পাশা, মীর পাশা তাদের মায়ের মৃত্যুতে হতবিহ্বল হয়ে পরে। শত শত মানুষ তাদের পাশে দাঁড়াতে ছুটে আসেন। এই অগ্নিকান্ডে তাদের দেখতে ছুটে আসেন ফটিকছড়ি থেকে নির্বাচিত এম পি খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। এই সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সকলের সাথে কথা বলেন এবং বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে তিনি নগদ অর্থ প্রদান করেন। এছাড়া এই অগ্নিকান্ডের খবর শুনে ছুটে আসেন নব নির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন মুহুরী। তিনিও সকল ক্ষতিগ্রস্থদের সাথে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান এবং আগুনে পুড়ে যাওয়া পুরো বসত ভিটা হেঁটে হেঁটে পরিদর্শন করেন। এই এম পি এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে সার্বক্ষণিক ভাবে ছিলেন বখতপুরের চেয়ারম্যান ফারুকুল আজম বি এস সি। উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শারমিন আকতার নূপুর সহ আরো অনেক মহিলা নেত্রী।  এছাড়া ইউ পি সদস্য বৃন্দ, এলাকাবাসী সহ আরো অনেকে।
এইদিকে এলাকাবাসী সহ সকলে সাংসদ,উপজেলা চেয়ারম্যান সহ সকল নেতৃবৃন্দের কাছে দাবী জানান আগামী অল্প দিনের মধ্যে যেন দক্ষিণ ফটিকছড়িতে একটি ফায়ার স্টেশন স্থাপন করা হয়। এই সময় এলকাবাসী বলেন, যদি আজকে নিকটবর্তী একটি ফায়ার স্টেশন থাকত তাহলে হয়ত এত বড় ক্ষয়ক্ষতি হতনা।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

নেত্রকোনায় উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসের মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি।

নেত্রকোনার পূর্বধলায় জাতীয় পরিচয় পত্র পরিসেবা স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের হতে সংবিধিবদ্ধ নতুন কমিশনে হস্তান্তরের কূট পরিকল্পনার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অফিসার্স এসোসিয়েশনের উদ্যোগে উপজেলা নির্বাচন অফিসের সামনে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে উপজেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।কর্মসূচির নাম ‘স্ট্যান্ড ফর এনআইডি’। এই কর্মসূচিতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সকাল ১১ টা থেকে বেলা দুপুর ১টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি করেন।

উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, সাংবিধানিক অধিকার যেন খর্ব না হয়। নির্বাচন কমিশনে এনআইডি ডাটাবেইজ নামে কিছু নেই। আছে ভোটার ডাটাবেইজ। বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে এনআইডি দেয়া হয়। ভোটার তালিকা থেকে এনআইডি ডাটাবেজ আলাদা করার কোনো সুযোগ নেই।জাতীয় পরিচয় পত্র অন্য কোথাও স্থানান্তর  হলে বিপুল অর্থের প্রয়োজন হবে যা বিনামূল্যে নির্বাচন কমিশনের জনবল করে দিচ্ছে।এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. নাজমুল ইসলাম, সহকারী নির্বাচন অফিসার মুহাম্মদ আব্দুল মালেক, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. আব্দুল কুদ্দুস ও অফিস সহায়ক মো. তোফাজ্জল হোসেন সহ আরো অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।

সাড়ে ৫ লাখ শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়াবে চসিক

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনে ৫ লক্ষ ৬০ হাজার শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে ৬-১১ মাসের ৯০ হাজার এবং ১২-৫৯ মাসের ৪ লাখ ৭০ হাজার শিশুকে ক্যাপসুল খাওয়াবে চসিক। বৃহস্পতিবার টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের পর চিকিৎসক ও গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এসময় তিনি ক্যাম্পেইন সফল করার বিষয়ে চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রস্তুতি সম্পর্কে অবগত হয়ে দিক-নির্দেশনা দেন।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় উক্ত ক্যাম্পেইন সফল ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার করার লক্ষ্যে ব্যপক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। যথাক্রমে কেন্দ্রীয় এ্যাডভোকেসী ও পরিকল্পনা সভা আয়োজন, জোন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে এ্যাডভোকেসী ও পরিকল্পনা সভা আয়োজন, ওয়ার্ড পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষন, প্রতিটি ওয়ার্ডে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল বিতরণ, ব্যপকভাবে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ, সকল আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, মসজিদের খতিব ও ইমাম সাহেবদের দিয়ে প্রচারণার উদ্যোগ নিয়েছে চসিক ।

শনিবার (১৫ মার্চ) চসিকের সাতটি ইপিআই জোনের আওতায় ৪১ ওয়ার্ডে ১ হাজার ৩২১টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ ক্যাম্পেইন চলবে। ৬-১১ মাসের শিশুকে ১ লাখ ইউনিটের নীল রঙের ও ১২-৫৯ মাসের শিশুকে ২ লাখ ইউনিটের লাল রঙের ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
চসিক মেয়র জানান, জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন সফল করার লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চসিক। ক্যাম্পেইনে বাদ পড়া শিশুদের চসিকের ব্যবস্থাপনায় চসিক পরিচালিত দাতব্য চিকিৎসালয়, নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ইপিআই কেন্দ্রে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। শিশুদের রাতকানা রোগ প্রতিরোধ এবং অপুষ্টি ও মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষার জন্য মা, বাবা, অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান মেয়র।

মেয়র জানান, ক্যাম্পেইন চলাকালে মা ও শিশুর পুষ্টি নিশ্চিতকরণে গর্ভবতী ও প্রসূতি মা’দের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ প্রাণিজ খাবার (মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, কলিজা) এবং উদ্ভিজ্জ খাবার (হলুদ ফল, রঙিন শাক-সবজি) খাওয়াতে পরামর্শ দেওয়া হবে। জন্মের পর এক ঘণ্টার মধ্যে শিশুকে শাল দুধ খাওয়ানোসহ প্রথম ছয় মাস শিশুকে শুধু মায়ের দুধ খাওয়ানোর বিষয়ে পুষ্টিবার্তা প্রচার করা হবে। ছয় মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরি সুষম খাবার পরিমাণ মতো খাওয়াতে হবে।
এর আগে ২০২৪ সালের ১ জুন অনুষ্ঠিত জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনে চসিকের অর্জনের হার ৯৯ শতাংশ।

৬-১১ মাসের ৮৮ হাজার ৫৯০ শিশুর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৮৭ হাজার ৯৫৭ শিশুকে ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছিল। অন্যদিকে ১২-৫৯ মাসের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৭১ হাজার ৯৫০ শিশু। এর বিপরীতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৯৫৯ শিশুকে ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছিল। অর্জনের হার ৯৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ ইমাম হোসেন রানা, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ হোসনে আরা, সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম, ডাঃ তপন কুমার চক্রবর্তী, জোনাল মেডিকেল অফিসার ডাঃ সুমন তালুকদার, ডাঃ আকিল মাহমুদ নাফে, ডাঃ আবদুল মজিদ সিকদার, ডাঃ শর্মীলা রায়, ডাঃ মামুন রশিদ।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ