আজঃ বুধবার ২১ মে, ২০২৫

নেত্রকোনা:

পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

রিপন গুন নেত্রকোনা প্রতিনিধি:

কমলকান্দা:

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার নদ-নদীর পানি বাড়ছে। আর এতে ঢলের পানিতে জেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

সরেজমিনে দেখাগেছে, টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার উব্ধাখালি নদীর পানি বেড়ে ৮টি ইউনিয়নের ৬৫টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে কলমাকান্দা সদর, বরখাপন ও পোগলা ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা এবং কৈলাটি, রংছাতি ও খারনৈসহ বাকি পাঁচটি ইউনিয়নের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু কাঁচা পাকা সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। ওই এলাকার উব্দাখালীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৪৭ সেমি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ। পানি ঢুকতে শুরু করেছে সদর ও বারহাট্টা উপজেলার লোকালয়েও।

জেলার কলমাকান্দার মহাদেও, দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী, নেত্রকোনা সদরের মগড়া, বারহাট্টার কংস ও খালিয়াজুরির ধনুসহ বিভিন্ন ছোট-বড় নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে বলে জানিয়েছে নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড।

কলমাকান্দা উপজেলা সদরের ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা মনোরঞ্জন শীল বলেন, পাহাড়ি ঢলে উব্দাখালীরনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলা সদরসহ আশপাশের এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। উপজেলা সদর লাগোয়া গ্রাম রাজাপুর, ভোটপাড়া, মনতলা, ঘোষপাড়া, গোজাকুনিয়া, নোয়াগাও, হরিণতলা, নাগডোরা এলাকায়ও বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে।

নেত্রকোনা সদর উপজেলার তাতিয়র গ্রামের বাসিন্দা নেওয়াজ আলী বলেন, আমাদের এলাকাটি তিন নদীর মোহনা হওয়ায় সবদিক থেকেই বিপদে আছি আমরা। এবার ফসলের কোন ক্ষতি না হলেও গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নদীর পানি বেড়ে আমাদের ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে এবং চলাচলের মূল রাস্তাটিও পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন আমরা খুব কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি।

কলমাকান্দা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল আলী বিশ্বাস বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের লাগোয়া গ্রাম রাজাপুর, ভোটপাড়া, মনতলা, ঘোষপাড়া, গোজাকুনিয়া, নোয়াগাও, হরিণতলা নাগডোরা সহ কয়েকটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। বেশ কিছু গ্রামীণ সড়ক পানিতে ডুবে গেছে।। আর এক থেকে দেড় ফুট পানি বাড়লে প্রচুর বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে যাবে।’

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান জানান, গত সোমবার থেকে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় চেরাপুঞ্জিতে ৩৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। একই সময়ে, অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় নেত্রকোনার দুর্গাপুর ও জারিয়াঝাঞ্জাইল স্টেশনে ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এতে জেলার ছোট-বড় সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরমধ্যে কলমাকান্দা পয়েন্টে উব্ধাখালি নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়াও ওই উপজেলার মহাদেও, বৈঠাখালী, মঙ্গলেশ্বরী ও গণেশ্বরী নদীর পানি বেড়েই চলেছে। এছাড়া কংশ, ধনু ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বেড়েছে। এদিকে জেলার হাওর উপজেলা মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরীর লোকালয়ে উজানের পানি ঢুকতে শুরু করেছে।

কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুকনো খাবার, আশ্রয়কেন্দ্র, উদ্ধারকারী দল, মেডিকেল টিমসহ সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় উপজেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজসহ মোট ৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে বিশরপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে পাঁচটি পরিবারের ২০ জনের মতো আশ্রয় নিয়েছেন। সঙ্গে গৃহপালিত প্রাণীগুলোকেও নিরাপ স্থানে নিয়ে আসা হয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

রায়পুরাতে ব্র্যাক মাইগ্রেশন’র স্কুল প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত

রিইন্টিগ্রেশন অব মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার্স ইন বাংলাদেশ প্রজেক্ট , ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম বিদেশ ফেরত অভিবাসীদের সচেতনতা আনয়নে স্থানীয় পর্যায়ে নিরাপদ অভিবাসন ও রেমিটেন্স ব্যবস্থাপনার উপর কুইজ প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে স্কুলের সাধারন শিক্ষার্থীদের নিয়ে।

আজ (১৮ মে) রবিবার সকাল ১১ টায় নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের শতদল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাকক্ষে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো: মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিদেশ ফেরত অভিবাসীদের পুনরেকত্রীকরনে অভিবাসীদের জন্য পরিচালিত প্রশিক্ষন, রেফারেলসেবা এবং সরকারি সেবাসমুহ সম্পর্কে ফিল্ড অর্গানাইজার মোছাঃ শরিফা আক্তার শিক্ষার্থীদের জানান। ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম ২০০৬ সাল থেকে অভিবাসীদের কল্যানে কাজ করে আসছে। মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের আওতায় বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম, বিদেশ ফেরতদের পুনরেত্রীকরণ এবং ভুক্তভোগীকে জরুরি সাহায্য প্রদানসহ নানা ধরনের আইনি সহায়তা প্রদান করা হয়।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহকারী শিক্ষকা শারমিন আক্তার শিল্পী ও ব্র‍্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের ভলান্টিয়ার সোহানা আক্তার, মোস্তাকিমা আক্তার,চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের রেনু আক্তার’সহ প্রমুখ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে শ্বশুর-শাশুড়ির নির্যাতনে মারাত্মক আহত পুত্রবধূ-পলাতক শ্বশুর-শাশুড়ি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দাইপুখুরিয়া ইউনিয়নের চাকলা গ্রামে শ্বশুর-শাশুড়ির নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন জিয়াসমিন (৩২) নামের এক গৃহবধূ। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাথ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। আহত জিয়াসমিন ওই গ্রামের আতিকুল ইসলামের স্ত্রী। তাঁর পিতার বাড়ি একই উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে।

তিনি মৃত জামাল উদ্দিন জুমুর মেয়ে। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকালে পারিবারিক কলহের জেরে শ্বশুর আলহাজ্ব সাইদুর রহমান মিয়া (৭০) ও শাশুড়ি আলহাজ্ব আয়েশা বেগম মিলে পুত্রবধূ জিয়াসমিনকে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে জ্ঞান হারান জিয়াসমিন। ধারণা করা হয়, তাঁরা তাঁকে মৃত ভেবে রেখে পালিয়ে যান। পরে

প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। জিয়াসমিনের পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে বিভিন্নভাবে তাঁকে নির্যাতন করে আসছিলেন শ্বশুর-শাশুড়ি। একাধিকবার এ নিয়ে সালিস হলেও নির্যাতন বন্ধ হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দুইজন হজ করে এসে যদি মানুষ না হন, তাহলে সেটা সমাজের জন্য লজ্জার। একজন গৃহবধূকে এভাবে নির্যাতন করার অধিকার তাঁদের নেই। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। ঘটনার পর অভিযুক্ত সাইদুর রহমান ও আয়েশা বেগম পলাতক রয়েছেন।

তাঁদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় চাকলা গ্রামে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা প্রশাসনিক পদক্ষেপ ও দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। এবিষয়ে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম কিবরিয়া বলেন, ঘটনাটি পারিবারিক কলহ থেকে ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। একটি পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, অন্য পক্ষও অভিযোগ দিতে পারে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ