আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

বহিবিশ্ব:

বিশ্বকাপ ফাইনাল নিয়ে যা কিছু জানা থাকা প্রয়োজন

স্পোর্টস নিউজ ডেস্ক:

জাতীয়:

বিশ্বকাপ ফাইনাল নিয়ে যা কিছু জানা থাকা প্রয়োজন

নতুন চ্যাম্পিয়ন পাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নাকি ফিরে আসবে প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়নরা? আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই এই প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে ক্রিকেটবিশ্ব। প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপার সুবাস নিয়ে মাঠে নামবে দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৭ বছরের খরা ঘোচানোর স্বপ্নে লড়াইয়ে সামবে ভারত। বারবাডোজের এই মহারণ ঘিরে যা কিছু প্রশ্ন কিংবা কৌতূহল জাগতে পারে আপনার, সেসবের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে এখানে।

ফাইনালের মঞ্চে প্রথমবার

ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি মিলিয়েই প্রথমবার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাই বলার অপেক্ষা রাখে না, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে প্রথমবার।

সেমি-ফাইনালে এই দুই দলের লড়াই হয়েছিল একবারই। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল ভারত।

সেরা দুই দলই কি ফাইনালে

কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠা দুই দলকে সেরা দুটি দল বলতেই হয়। এবার ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষেত্রে তা আরও বেশি সত্যি। দুই দলই গ্রুপের সেরা হয়েছে, সুপার এইটের সেরা হয়েছে এবং অপরাজিত থেকে ফাইনালে উঠেছে। টানা আট জয়ে শিরোপার মঞ্চে এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারতের জয় একটি কম, কারণ কানাডার সঙ্গে তাদের ম্যাচটি ভেস্তে গিয়েছিল বৃষ্টিতে।

ফাইনালে যে দলই জিতবে, ইতিহাস গড়া হবেই। এই প্রথম অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন দেখবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

দক্ষিণ আফ্রিকার ঐতিহাসিক মুহূর্ত

দক্ষিণ আফ্রিকার সুদীর্ঘ ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ম্যাচ সম্ভবত এটিই। প্রথমবার তারা বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলবে। ১৯৯৮ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছাড়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আর কোনো আইসিসি আসরের ফাইনালে তারা উঠতে পারেনি।

ওয়ানডে বিশ্বকাপে তারা পাঁচবার সেমি-ফাইনালে খেলেছে (১৯৯২, ১৯৯৯, ২০০৭, ২০১৫, ২০২৩), টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এবারের আগে খেলেছে দুই দফায় (২০০৯, ২০১৪)। কিন্তু প্রথমবার শিরোপার এতটা কাছে তারা যেতে পেরেছে এবার।

ভারত যে কারণে মরিয়া

প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর এই শিরোপা বারবারই হাতছানি দিয়ে মিলিয়ে গেছে ভারতের সামনে থেকে। দেশের মাঠ ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের পর দুই সংস্করণের কোনো বিশ্বকাপ শিরোপার স্বাদ আর পায়নি তারা। এমনকি ইংল্যান্ডে ২০১৩ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পর সিনিয়র ক্রিকেটে আর কোনো আইসিসি ট্রফিই তারা জিততে পারেনি।

অথচ বৈশ্বিক আসরগুলোয় বরাবরই দারুণ ধারাবাহিক তারা। ট্রফি খরার এই ১১ বছরে ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছে তারা, এই সংস্করণের সেমি-ফাইনালে খেলেছে ২০১৬ ও ২০২২ আসরেও। ২০১৫ ও ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছে তারা। গত বছর দেশের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে হৃদয়ভাঙা হারের যন্ত্রণা তাদের সইতে হয়েছে। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুই আসরে দুবারই ফাইনালে উঠে তারা হেরে গেছে, ২০২১ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে, গত বছর অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে।

তাদের জন্য এবার আরেকটি সুযোগ, দীর্ঘ এই ট্রফি খরা ঘুচিয়ে যন্ত্রণা উপশম করার।

ক্যারিবিয়ায় আগের ফাইনাল

ওয়েস্ট ইন্ডিজে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্বকাপের ফাইনাল। আগেরবার ২০১০ আসরের ফাইনালও হয়েছিল বারবাডোজের কেনসিংটন ওভালে। অস্ট্রেলিয়াকে ৭ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবার বৈশ্বিক শিরোপার স্বাদ পেয়েছিল ইংল্যান্ড।

মাঠ, পিচ আর কন্ডিশন

এবারের আসরে এই মাঠে এটি হবে নবম ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে নামিবিয়া ও ওমানের লড়াই গড়িয়েছিল সুপার ওভারে, পরের ম্যাচটি ভেসে যায় বৃষ্টিতে। বাকি ছয় ম্যাচের কোনোটিতে সেভাবে লড়াই জমেনি।

প্রথম চারটি পূর্ণ ম্যাচের তিনটিতেই আগে ব্যাট করা দল জিতে যায়। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্কটল্যান্ড ১০ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৯০ করার পর ম্যাচ ভেসে যায় বৃষ্টিতে। সবশেষ দুই ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে অল্প রানে আটকে সহজেই জিতে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ড।

এবারের আসরে এখানে খেলার সুযোগ পায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারত একটি ম্যাচ খেলেছে সুপার এইটে। আফগানিস্তানকে তারা ৪৭ রানে হারায় সেই ম্যাচে।

ক্যারিবিয়ার অনেক মাঠে বাতাস বড় ভূমিকা রাখে। তবে এখানে বাতাসের প্রভাব ততটা তীব্র থাকবে না।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস

ভারত-ইংল্যান্ডের সেমি-ফাইনালে বৃষ্টি হানা দিয়েছিল দুই দফায়। ফাইনালেও কিছুটা শঙ্কা আছে বৃষ্টির। স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হবে ফাইনাল। এ দিন ভোর চারটা থেকে সকাল ৯টার মধ্যে ৫০ শতাংশ শঙ্কা আছে বৃষ্টির। টসের সময়টায় (১০টা) সেই শঙ্কার হার ৩০ শতাংশ। দুপুর একটা নাগাদ আবার তা বেড়ে হয়ে যাচ্ছে ৫০ শতাংশ।

এ দিনই ম্যাচ শেষ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। এজন্য বাড়তি ১৯০ মিনিট সময় বরাদ্দ করা আছে। যদিও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জয়-পরাজয় নির্ধারণ করতে ৫ ওভার করে খেলা হতে হয়। তবে আইসিসি টুর্নামেন্টের সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালের ক্ষেত্রে খেলা হতে হয় অন্তত ১০ ওভার করে।

রিজার্ভ ডে

ফাইনালের জন্য রিভার্জ ডে আছে। শনিবার ১০ ওভার করে খেলা শেষ করা না গেলে ম্যাচ গড়াবে পরের দিনে। টস বা ম্যাচ নতুন করে হবে না। যেখানে খেলা থেমেছিল, নতুন দিনে শুরু হবে সেখান থেকেই।

প্রথম দিনের মতো পরের দিনও খেলা শুরুর সময় সকাল সাড়ে ১০টা।

দুই দিনেও যদি খেলা শেষ না হয়

রিজার্ভ ডে মিলিয়েও যদি খেলা শেষ করা সম্ভব না হয়, তাহলে দুই দলকেই যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

আমিরাতে ৬শ গাড়ি দিয়ে ‘ঈদ আল ইতিহাদ ইউএই ৫৪’ বানিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে আজমান।

যানবাহন ব্যবহার করে বিশ্বের বৃহত্তম উদযাপন বাক্যাংশ তৈরি করে আজমান গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড স্থাপন করেছে। ৬০৩টি যানবাহনকে “ঈদ আল ইতিহাদ ইউএই ৫৪” বার্তাটি স্পষ্টভাবে লেখার জন্য সাজানো হয়েছিল।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৫৪তম ঈদ আল ইতিহাদ উদযাপনের সাথে মিলে যাওয়া এই কৃতিত্ব গিনেস বিচারক প্যানেল কর্তৃক প্রশংসিত হয়েছে এবং পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে প্রদর্শিত অসাধারণ নির্ভুলতা এবং সাংগঠনিক দক্ষতার জন্য উচ্চ প্রশংসা করেছে।

এই স্কেলের একটি সুস্পষ্ট বাক্যাংশ তৈরির জন্য ৬০৩টি যানবাহনের সমন্বিত চলাচলকে সমন্বয় করা একটি অভূতপূর্ব কৃতিত্ব হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে, যা অসাধারণ দৃশ্যমান প্রভাব সহ বিশ্বমানের অনুষ্ঠান সম্পাদনের জন্য আজমানের ক্ষমতাকে তুলে ধরে।

আজমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ, আজমান হোল্ডিং এবং রায়াত কোম্পানি যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছিল। অংশগ্রহণকারী সকল প্রতিষ্ঠানকে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস থেকে আনুষ্ঠানিক সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়, যা নতুন রেকর্ডকে স্বীকৃতি দেয়, যা এই জাতীয় উপলক্ষকে একটি বিশিষ্ট উপায়ে উপস্থাপনের প্রচেষ্টাকে উদযাপন করে যা সংযুক্ত আরব আমিরাত ইউনিয়নের অর্জনের আনন্দ এবং গর্বকে গভীরভাবে প্রতিফলিত করে।

আজমান ৬০৩টি যানবাহন নিয়ে ‘ঈদ আল ইতিহাদ ইউএই ৫৪’ গঠনের জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড স্থাপন করেছে পর্যটন, সংস্কৃতি এবং তথ্য বিভাগের চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল আজিজ বিন হুমাইদ আল নুয়াইমির পৃষ্ঠপোষকতায় চিত্তাকর্ষক এবং অত্যন্ত সমন্বিত অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ১৮ জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ গেল জাপানে।

চট্টগ্রামের কমনওয়েলথ যুদ্ধ সমাধিক্ষেত্র (ওয়ার সিমেট্রি) থেকে ১৮ জন জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ উত্তোলন করে তাদের দেশে পাঠানো হয়েছে। প্রায় ৮০ বছর পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত এসব জাপানি সৈন্যের দেহাবশেষ সমাধি থেকে তোলা হলো। সোমবার বিকেলে জাপান সরকারের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এসব দেহাবশেষ নিয়ে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ কাজে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক সহায়তা দিয়েছে।

সেনাবাহিনীর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জাপান সরকারের বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দলটি গত ১৭ নভেম্বর থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রামে অবস্থান করে সমাধি থেকে দেহাবশেষ উত্তোলন সম্পন্ন করেন। আর পুরো কার্যক্রম তত্ত্বাবধান ও খননকাজে নেতৃত্ব দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত লেফট্যানেন্ট কর্নেল কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতীক।

চট্টগ্রাম নগরীর দামপাড়া বাদশা মিয়া সড়কে ‘ওয়ার সিমেট্রি, চট্টগ্রাম’ হিসেবে পরিচিত এ কমনওয়েলথ সমাধিক্ষেত্রের অবস্থান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ১৯৪৪-৪৫ সালের দিকে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী এ সমাধিসৌধ প্রতিষ্ঠা করে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, এখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহতদের ৭০০টিরও বেশি সমাধি আছে। এর মধ্যে ১৮ জন জাপানি সৈনিকের সমাধি। বিশ্বজুড়ে প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহতদের সমাধিক্ষেত্র রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে ‘কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশন’।


এর আগে, গত বছরের নভেম্বরে কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিহত ২৩ জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ উত্তোলন করে দেশটিতে নিয়ে যাওয়া হয়। এদের সবার পরিচয় সমাধির ওপর লিপিবদ্ধ থাকায় জাপানে তাদের স্বজনদের শনাক্ত সহজ হয়েছিল বলে সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য। কুমিল্লার ময়নামতিতেও দেহাবশেষ উত্তোলনের কাজে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন খনন বিশেষজ্ঞ অবসরপ্রাপ্ত লেফট্যানেন্ট কর্নেল কাজী সাজ্জাদ আলী জহির, বীরপ্রতীক।

চট্টগ্রাম থেকে দেহাবশেষ উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বলেন, ‘কুমিল্লায় প্রত্যেকটি সমাধির ওপর সৈনিকের নেমপ্লেট ছিল। চট্টগ্রামে সেটা নেই। এখানে সমাধিক্ষেত্রে একটি জায়গায় একটা নেমপ্লেটে ১৮ জনের নাম লেখা আছে। কিন্তু কোনটা কার সমাধি সেটা চিহ্নিত করা নেই। আমরা ১৮টি সমাধিই খনন করেছি। সবগুলোতে মাথার খুলি, কঙ্কাল, কোমড়ের অংশ, আঙুলের অংশসহ আরও বিভিন্ন দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। তবে কুমিল্লার মাটি লবণাক্ত না। সেজন্য সেখানে খননকাজ সহজ ছিল। চট্টগ্রামে সেটা একটু কঠিন ছিল এবং সময়ও বেশি লেগেছে।’

খননে পাওয়া দেহাবশেষ নিয়ে জাপানের প্রতিনিধিদল ‘খুবই সন্তুষ্ট’ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকেই (সোমবার) উনাদের বিমানে তুলে দিয়ে এলাম। দেহাবশেষগুলো খুবই সতর্কতার সঙ্গে যাতে ভেঙ্গে না যায়, সেজন্য তুলা দিয়ে মুড়িয়ে বাক্সে নেওয়া হয়। আমি নিজেই সেগুলো প্যাকিং করি। এর মধ্যে কয়েকটা হাতে করে এবং আর কিছু কার্গো বিমানে পাঠানো হয়েছে।’জাপানে নিয়ে স্বজনদের কাছ থেকে নমুনা নিয়ে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে দেহাবশেষগুলোর পরিচয় শনাক্ত করে তাদের পরিবারের কাছে দেওয়া হবে বলে দেশটির প্রতিনিধি দলের বরাতে জানান কাজী সাজ্জাদ আলী জহির।

এদিকে সেনাবাহিনীর বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, দেহাবশেষ উত্তোলন শেষে গত ২৮ নভেম্বর সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল যথাযোগ্য সামরিক মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করে। এরপর সেগুলো জাপানের প্রতিনিধি দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়।চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘ওয়ার সিমেট্রি থেকে ১৮ জন জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ উত্তোলন করা হয়েছে। সেনাবাহিনী এ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। বিষয়টি আমরা অবগত আছি।’

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ