আজঃ সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

চট্টগ্রাম মহানগর

২ লক্ষ ১০ হাজার ৯৮৪টি হোল্ডিং থেকে লক্ষ্যমাত্রার ৫৪ শতাংশ পৌরকর আদায়

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) এর নিজস্ব আয়ের অন্যতম প্রধান খাত পৌরকর আদায়। আপিলে হোল্ডিং ট্যাক্স ‘সহনীয়’ করাসহ নানা উদ্যোগ নেয়ায় এবার চসিকে সর্বোচ্চে পৌরকর আদায় হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনসহ উন্নয়ন কাজে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ হারে ম্যাচিং ফান্ডের যোগান দিতে হয় চসিককে। এই অর্থের সংস্থানে রাজস্ব আদায়ের উপর নির্ভর করতে হয়। ফলে পৌরকর আদায়ে বিভিন্ন সময়ে নানা কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে চসিক।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, নগরে বর্তমানে ২ লক্ষ ১০ হাজার ৯৮৪টি সরকারি–বেসরকারি হোল্ডিং রয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৫১৬টি সরকারি এবং ২ লক্ষ ৯ হাজার ৪৬৮টি বেসরকারি হোল্ডিং রয়েছে। এসব হোল্ডিংয়ের বিপরীতে ৩৮৪ কোটি ৭৫ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪৫ টাকা পৌরকর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। বিপরীতে ২০৮ কোটি ৮০ লাখ ১১ হাজার ৮০৫ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার ৫৪ শতাংশ। বিদায়ী অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি ১১৫ কোটি ২৬ লাখ ৩৯ হাজার ২১টা পৌরকর এসে বেসরাকরি হোল্ডিংয়ে বিপরীতে। যা লক্ষ্যমাত্রার ৬৮ শতাংশ। সরকারি হোল্ডিংয়ের বিপরীতে আদায় হয় ৯৩ কোটি ৫৩ লাখ ৭২ হাজার ৭৮৪ টাকা।
এর আগের অর্থবছরের (২০২২–২০২৩) লক্ষ্যমাত্রার ৪৭ শতাংশ পূরণ হয়। অর্থবছরটিতে ৩৯৭ কোটি ৫০ লাখ ৭৪ হাজার ৯৪২ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয় ১৮৬ কোটি ৯৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫৭৩ টাকা। ওই হিসেবে পূর্বের অর্থবছরের চেয়ে বিদায়ী অর্থবছরে ২১ কোটি ৮৬ লাখ ৬৫ হাজার ২৩২ টাকা বেশি পৌরকর আদায় হয়েছে।
চসিকের প্রধান রজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সহনীয় পর্যায়ে আপিল নিষ্পত্তি করার পাশাপাশি নিয়মিত টাস্কফোর্স পরিচালনা, করদাতাদের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ এবং মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের কঠোর মনিটরিংসহ নানা উদ্যোগ নেয়ায় গত ২৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পৌরকর আদায় হয়েছে।
জানা গেছে, সিটি কর্পোরেশন অ্যাক্ট ২০০৯ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি হোল্ডিংয়ের বিপরীতে চসিক পৌরকর আদায় করে। বর্তমানে ২৫টি ওয়ার্ড থেকে ১৭ শতাংশ এবং ১৬টি ওয়ার্ড থেকে ১৪ শতাংশ পৌরকর আদায় করে চসিক। ১৭ শতাংশ পৌরকরের মধ্যে ৭ শতাংশ হোল্ডিং ট্যাঙ (গৃহকর), ৩ শতাংশ বিদ্যুতায়ন রেইট এবং ৭ শতাংশ আর্বজনা অপসারণ রেইট রয়েছে। যেসব ওয়ার্ড থেকে ১৪ শতাংশ পৌরকর আদায় করা হয় ওসব ওয়ার্ডের বর্জ্য অপসারণ রেইট নেয়া হয় ৩ শতাংশ।
এদিকে পৌরকরের বাইরে ২৪ কোটি ৬৫ লাখ ৯২ হাজার ৭০৩ টাকা ট্রেড লাইসেন্স ফি, ৮৫ কোটি ৬৬ হাজার ৭৮১ টাকা ভূমি হস্তান্তর কর, ৪৪ লাখ ৪৮ হাজার ৫৬০ টাকা বিজ্ঞাপন কর, ৫ কোটি ১৭ লাখ ৬০ হাজার ১১৪ টাকা সপসাইন ফি, ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৬৬৪ টাকা প্রমোদকর ফি, ৫ লাখ ৬০ হাজার ৪০০ টাকা যান্ত্রিক যানবাহন ফি ও ২ কোটি ৪৫ লাখ ৮১ হাজার ৭৯৪ টাকা অযান্ত্রিক ফি আদায় করে বিদায়ী অর্থবছরে। এছাড়া এস্টেট শাখা থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৪ কোটি ৯১ লাখ ২৪ হাজার ৬১১ টাকা। সবমিলিয়ে বিদায়ী অর্থবছরে ৩৭২ কোটি ৯ লাখ ৩৩ হাজার ৭৬৬ টাকা রাজস্ব আদায় করে চসিক। যা পূর্বের ২০২২–২০২৩ অর্থবছরের চেয়ে ১৬ কোটি ১৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা বেশি। পূর্বের অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩৫৫ কোটি ৯৩ লাখ ৭০ হাজার ২৬৯ টাকা।
চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, হোল্ডিং ট্যাক্স সহনীয় করার জন্য আমি যে পন্থার ঘোষণা দিয়েছিলাম সেটা অবলম্বন করেছি। আপিলে করদাতাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সহনীয় করে দিয়েছি। এতে করদাতারা সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধে উৎসাহী হন। আমি হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধি না করে আওতা বৃদ্ধির পক্ষে। তাই মানুষের উপর হোল্ডিং ট্যাক্সের চাপ কমেছে। তিনি বলেন, করদাতাদের পৌরকর আপিল নিষ্পত্তিকরণের লক্ষ্যে ৬টি রিভিউ বোর্ড গঠন করা হয়। উক্ত রিভিউ বোর্ডে আমি নিজে উপস্থিত থেকে গণশুনানির মাধ্যমে করদাতাদের চাহিদামতো সহনীয় পর্যায়ে কর মূল্যায়ন করায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে করদাতারা আগ্রহ নিয়ে আপিল শুনানিতে অংশগ্রহণ করেছেন এবং বকেয়া কর পরিশোধের সুবিধার্থে সারচার্জ মওকুফের সুবিধা দেওয়া হয়েছে বিধায় করদাতারা নিয়মিত পৌরকর পরিশোধ করছেন। নগরবাসীর গৃহকর নিয়ে যে অসন্তোষ ছিল তা প্রশমিত হয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বরমা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বাকলিয়ায় আটক

চট্টগ্রাম চন্দনাইশ উপজেলা বরমা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মধুসুদন দত্তকে আটক করেছে বাকলিয়া থানা পুলিশ। বাকলিয়া থানা পুলিশের বিশেষ একটি দল গোপন অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে বাকলিয়া থানাধীন বহদ্দার হাট বলির হাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে বরমা ইউনয়িনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মধুসুদন দত্তকে আটক করে বাকলিয়া থানা পুলিশ। আটককৃত মধুসুদন দত্ত ৫নং বরমা ওয়ার্ড আওতাধীন ৫নং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

এ ব্যাপারে বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইখতিয়ার উদ্দিন জানান, বরমা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মধুসুদন দত্তকে আটক করা হয়েছে। তিনি বরমা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলে জেনেছি। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মধুসুদন দত্ত বরমা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ২ হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। বর্তমান চেয়ারম্যান অপসারিত হলে মধুসুদন দত্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান।

ফটিকছড়ি প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটিকে সংবর্ধনা

পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠন ফটিকছড়ি প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটিকে সংবর্ধনা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ফটিকছড়ি উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।
১৫ ফেব্রুয়ারী (শনিবার) বিকালে ফটিকছড়ি উপজেলা সদরস্থ একটি কনভেনশন সেন্টারে এই সংবর্ধনার আয়োজন করে।
সংবর্ধনা উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় নাগরিক কমিটি বাংলাদেশ ফটিকছড়ি উপজেলার আহ্বায়ক বিশিষ্ট ব্যাংকার মুহাম্মদ একরামুল হক। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ফটিকছড়ি প্রেসক্লাব সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ মাসুদ ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আবু এখলাছ ঝিনুক।
প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, এস.এম. মোরশেদ মুন্না (দৈনিক পূর্বকোণ), মোঃ এমরান হোসেন (দৈনিক পূর্বদেশ), মুহাম্মদ নাছির উদ্দীন (দৈনিক কালের কন্ঠ), মোঃ সাইফুর রহমান সোহান (দৈনিক দেশ রূপান্তর), মোহাম্মদ আলমগীর নিশান (এশিয়ান টিভি), আনোয়ার হোসেন ফরিদ (সি প্লাস টিভি), আহমেদ এরশাদ খোকন (দৈনিক কালবেলা/চট্টগ্রাম মঞ্চ), সজল চক্রবর্তী (দৈনিক সবুজ বাংলা), মোহাম্মদ মোস্তফা কামরুল হোসেন (দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন), মোঃ নাজিম উদ্দীন শাহনেওয়াজ (দৈনিক মানবকন্ঠ), মুহাম্মদ কামাল উদ্দীন চৌধুরী (দৈনিক দিনকাল), জাহাঙ্গীর উদ্দীন মাহমুদ (চট্টগ্রাম প্রতিদিন), মুহাম্মদ দৌলত শওকত (দৈনিক ভোরের কাগজ), মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন চৌধুরী (দৈনিক কর্ণফুলী), মুহাম্মদ ফজলুল করিম (দৈনিক দেশ বর্তমান) ও আব্দুল কাদের চৌধুরী (দৈনিক ঘোষণা) প্রমূখ।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ