আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা-গাউছিয়া ফের হকারদের দখলে

মাহাবুবুর রহমান রনি, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি:

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের ভুলতা-গাউছিয়া এলাকার ফুটপাত ফের হকারদের দখলে চলে গেছে। উচ্ছেদ করার পাঁচ মাস পর এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কের দুই পাশ দখল করে কাপড়, কসমেটিকস, ফলমূল, মাছ, শাক-সবজি, চায়ের দোকান, চটপটি ও ফুচকার দোকানপাট বসিয়ে হকাররা সহ¯্রাধিক দোকনে পণ্য কেনা-বেচা করছে। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত আরো জমজমাট হয়ে ওঠে কেনা-বেচা। স্থানে স্থানে রেন্ট-এ-কারের প্রাইভেটকারের স্ট্যান্ড থাকায় যানযট স্থায়ীভাবে রূপ নিচ্ছে। তাতে মহাসড়কের ভুলতা-গাউছিয়া এলাকায় যানযট লেগেই থাকে। এমন দৃশ্য প্রতিদিনের। গতকাল ১৫জুলাই সোমবার ফুটপাত ও মহাসড়ক দখল হওয়ায় দুইপাশেই যাত্রী ও মালবাহী গাড়ির দীর্ঘ যানজট দেখা যায়। তাতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রী ও পথচারীদের।
গত ৩ফেব্রæয়ারি মহাসড়কের যানজট নিরসন করতে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান মাহমুদ রাসেলের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে মহাসড়ক দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সহ¯্রাধিক দোকান পাট উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু স্থানীয় পুলিশ ও প্রভাবশালী নেতাদের ম্যানেজ করে হকাররা আবারো মহাসড়ক দখলে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আগের মতোই ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির নিচে ফুটপাত ও মহাসড়ক দখল করে ইজিবাইকের স্ট্যান্ড। একটু সামনেই গাউছিয়া মার্কেট-১ এর পাশে ফুটপাত ও মহাসড়ক দখল করে কাপড়, কসমেটিকস, জুতা, আখের রসের দোকান, ডিমের দোকানপাট বসিয়ে হকাররা ব্যবসা করেছে। পাশেই গাউছিয়া মার্কেট-২ এর সামনে একই চিত্র দেখা গেছে।
গাউছিয়া কাঁচাবাজারের সামনে আরো ভিড়। সেখানেও পূর্বের মতোই ফুটপাতে টং বসিয়ে অর্ধশতাধিক ফলের দোকানে কেনা বেচা চলছে। সেই সঙ্গে গাউছিয়া কাঁচা বাজারের সামনে গড়ে তুলেছে গাউছিয়া-মাধবদীর লেগুনা ও মিনিবাসের স্ট্যান্ড। গোলাকান্দাইল গোলচত্ত¡রে ও ফ্লাইওভারের নিচে মহাসড়ক দখল করে গোলাকান্দাইল-কুড়িল বিশ্বরোড প্রাইভেটকার ও সিএনজির অবৈধ স্ট্যান্ড। গোলাকান্দাইল গোলচত্ত¡রের পূর্বপাশে মহাসড়কের উপর বাস স্ট্যান্ডের স্থান দখল করে গড়ে তুলেছে পিকআপ স্ট্যান্ড। সাওঘাট স্ট্যান্ডে মহাসড়ক দখল করে ইজিবাইক ও সিএনজি স্ট্যান্ড করা হয়েছে। সাওঘাট স্ট্যান্ড থেকে গোলাকান্দাইল চৌরাস্তা পর্যন্ত ভ্যান গাড়ি দিয়ে মহাসড়ক দখল করেছে চালকরা। আল-রাফি হসপিটাল, ইদ্রিস আলী প্লাজা, ভাই ভাই শপিং কমপ্লেক্সের সামনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাস স্ট্যান্ডের স্থান দখল করে প্রাইভেটকার, সিএনজি ও ইজিবাইকের অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে তুলেছে তারা।
পূর্বাচল গার্ডেন, মহোত্তম শপিং কমপ্লেক্স, নুরম্যানশন, আব্দুল হক সুপার মার্কেট ও তাঁতবাজারের সামনে মহাসড়ক দখল করে ৫শতাধিক অবৈধ দোকানপাট বসিয়ে কেন-বেচা চলছে প্রতিনিয়ত। এসকল দোকানপাট থেকে পুলিশ ও রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা প্রতিদিন ২শ’ টাকা থেকে ৫শ’ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে।
এ ব্যাপারে ভুলতা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আলী আশরাফ মোল্লা বলেন, পুলিশ মহাসড়ক দখলমুক্ত রাখতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। প্রতিনিয়তই অভিযান চলছে। অবৈধ দোকানপাট থেকে পুলিশ কোন রকম চাঁদা আদায় করে না।
রূপগঞ্জ থানা ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে রূপগঞ্জ থানা পুলিশও মহাসড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। মহাসড়ক দখল মুক্ত রাখতে বেশ কয়েকবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা গাউছিয়ার যানজট নিরসনে ফুটপাত দখলকারীদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। রূপগঞ্জ উপজেলা আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহাসড়কের অবৈধ দখলদারদের শিগগিরই উচ্ছেদ করা হবে।
সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক বলেন, মহাসড়ক দখলদাররা যে দলেরই হোক কিংবা যত শক্তিশালীই হোক ছাড় দেওয়া হবে না। যাত্রীদের চলাচলের জন্য মহাসড়ক দখলমুক্ত করা হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ভোলায় জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত ।

দ্বীপজেলা ভোলার আধুনিক সাহিত্য সংগঠন জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে ।গতকাল ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যায় ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম এর সভাপতিত্বে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টিসংসারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান, জাতীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট ভোলা জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রভাষক কবি মিলি বসাক, জলসিঁড়ির সদস্য সচিব কবি মহিউদ্দিন মহিন, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জলসিঁড়ির সংগঠক কবি নীহার মোশারফ, আবৃত্তিশিল্পী সমাজসেবক মীর মোশারেফ অমি প্রমুখ ।

সভায় উপস্থিত সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম কে সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সাংবাদিক কবি রিপন শানকে নির্বাহী সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সংগঠক মহিউদ্দিন মহিনকে সাধারণ সম্পাদক, কবি গবেষক কবি নীহার মোশারফ কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫- ২০২৭ গঠন করা হয়েছে ।

কমিটির সহ-সভাপতিগণ হচ্ছেন- সিনিয়র প্রভাষক কবি মিলি বসাক, কবি মোঃ জুলফিকার আলী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গণ হচ্ছেন- কবি আল মনির, আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি । অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ । নির্বাহী সদস্যগণ হচ্ছেন- অধ্যক্ষ কবি এম এস জালাল বিল্লাহ, কবি দিলরুবা জ্যাসমিন, কবি চৌধুরী সাব্বির আলম এবং কবি এরশাদ সোহেল ।

আসছে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার বিকেল ৪ টায় ভোলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিতব্য জলসিঁড়ির মাসিক সাহিত্য সভায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ