আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

নোয়াখালী:

মাদ্রাসা সুপারের দুর্নীতি ১০ বছর বয়সে দাখিল পাস: জাল জালিয়াতির মহা কারখানা

রিপন মজুমদার স্টাফ রিপোর্টার:

সেনবাগ:

নোয়াখালীর সেনবাগে জাল জালিয়াতির মহা কারখানা হিসেবে চিহ্নিত কাদরা বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সাবেক সুপার মাও. আবদুল কুদ্দুছ।

এরকম চাঞ্চল্যকর তথ্য উপাত্ত জানতে ও অনুসন্ধান করতে গিয়ে থমকে যায় সাংবাদিক ! কেঁচো খুড়তে বেরিয়ে এলো অজগর সাপ। ইসলামের লেবাসধারী এই মাও. আবদুল কুদ্দুছের জন্ম তারিখ ০১/০৩ /১৯৬৪ ইং সালে তিনি দাখিল পরীক্ষা পাস করেছেন ১৯৭৪ সালে। বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে নাকি এ সনদ দেয়া হয়েছে। এলাকাবাসী ও অভিভাবক সহ সকলের দৃষ্টি ঐ মাদ্রাসার সাবেক সুপার মাও. আবদুল কুদ্দুছের উপর। তাঁরা জানতে চায় কী ভাবে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে ১০ বছর বয়সের একজন ছাত্র দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে ? মাদ্রাসা বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দিকে তাকিয়ে আছে সেনবাগের কাদরা বালিকা দাখিল মাদ্রাসার অভিভাবক সহ আমজনতা! শুধু এরকম সনদ দিয়ে মাদ্রাসার সুপার হিসেবে দীর্ঘদিন জাল জালিয়াতির মহা কারখানায় নামে বেনামে বিভিন্ন রেজুলেশন, প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নিজের নাম দিয়ে রেজুলেশন লিখা এবং মাদ্রাসায় ঢুকতে দেয়ালের উপরে লিখা প্রতিষ্ঠাতা: মাও. আবদুল কুদ্দুছ এর সাইনবোর্ড সকলের নজরে পড়ে। এরকম বিভিন্ন অনিয়ম কে নিয়ম করে নিজের ইচ্ছে মতো মাদ্রাসা পরিচালনা করে গত ২৯/০২/২০২৪ ইং তারিখে অবসরে যান। এক শিক্ষকের আবেদনে প্রতিষ্ঠাতার বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মোস্তফা হোসেন গত ০২/০৭/২০২৪ইং তারিখে ১২টি রেজুলেশন পর্যালোচনায় মাও. আবদুল কুদ্দুছ প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হওয়ার প্রমান না পাওয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্পষ্টভাবে পত্র দিয়ে জানিয়ে দেন ঐ সুপার প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র দেখাতে না পারায় তিনি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নয়। সুপার জালিয়াতি করে ম্যানেজিং কমিটির অগোচরে রেজুলেশন করে নিজেকে প্রতিষ্ঠাতা সাজিয়ে এ মাদ্রাসা কে লুটেপুটে খাওয়ার পায়তারা করছেন। এটা তার বড় ধরনের অপরাধ নয় কী ? এরকম জালিয়াতকারী শিক্ষক থেকে শিক্ষার্থীরা কী শিখবে? শিখবে জালিয়াতির ফাঁকফুকুর! তারপরও দীর্ঘদিন মাদ্রাসার সুপার পদে দায়িত্ব পালন করার সময় কালে সুপারের নিজ হাতের লেখা একখানা রেজুলেশন, পত্র বা নোটিস মাদ্রাসার রেকর্ডে নেই। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে সুপার পদে থাকা অবস্থায় কখনো চক, বোর্ড ব্যবহার করেন নি। সিনিয়র শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষকের বর্ণনামতে। এতে বুঝা যায় যে তিনি কামিল পর্যন্ত লেখা পড়া করেছেন কী না? নাকি অন্যের দ্বারা ফক্সি দিয়ে অর্জিত সার্টিফিকেট ? এতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাচ্ছে।

আরো বেরিয়ে এলো বর্তমানে স্থানীয় পৌরসভার কাউন্সিলর মোঃ আইয়ুব আলী মিয়াজী’র বিরুদ্ধে বিগত ০১/০৩/২০১০ইং তারিখে মিথ্যা বানোয়াট মূলক রেজুলেশন করে, কিন্তু এসম্পর্কে ঐ সময়ে মোঃ আইয়ুব আলী কিছুই জানেন না। পরে কাউন্সিলর মোঃ আইয়ুব আলী মিয়াজী জানতে পেরে গত ২৪/০৬/২০২৪ ইং তারিখে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট মানহানীর সুবিচারের জন্য আবেদন করেন। এভাবে নীল নক্সা করে রেখেছে ঐ সুপার, যেন ভবিষ্যতে প্রভাবশালী কেউই মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হতে না পারে!
এব্যাপারে কাউন্সিলর মোঃ আইয়ুব আলী মিয়াজী কে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেন – আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট, বিভ্রান্তিমূলক ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে মাও. আবদুল কুদ্দুছ রেজুলেশন করেছে কিন্তু ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্যদের কাছে এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা আপনার সম্পর্কে এমন কোন রেজুলেশন করিনি। এব্যাপারে আইয়ুব আলী মিয়াজীর বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট, বিভ্রান্তিমূলক ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে রেজুলেশন করায় মাও. আবদুল কুদ্দুছ এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তিনি আরো বলেন, এ মাদ্রাসাটির জায়গা দিয়েছেন কাদরার আবু তাহের ভূঁঞার ভাই রফিক ভূঁঞা, তারপরও এলাকার বিভিন্ন দানবীর ব্যক্তিদের দান-অনুদানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি কীভাবে প্রতিষ্ঠাতা হন? সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট এরকম দূর্নীতিবাজ ও জাল জালিয়াতকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।

বিগত ২৩/১১/২০০৬ ইং সালে ঐ সুপারের ছেলে রিয়াদ – কাদরা বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মোঃ সানা উল্যাহ বিএসসি কে প্রাণ নাশের হুমকি ও অশোভন আচরণের কারণে সুপার নিজে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও শিক্ষকগণের উপস্থিতিতে ছেলের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে লিখিত মুচলেকা দেন, মাদ্রাসার ব্যাপার তার ছেলে রিয়াদ ভবিষ্যতে কোন শিক্ষকের সাথে এমন আচরণ আর করবে না। এরপরও কীভাবে ১৫/০৬/২০২২ তারিখে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটিতে ঐ সুপারের ছেলে মোঃ আবদুল্লাহিল মাসুম প্রকাশ রিয়াদ কে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে দাতা সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়?

জালিয়াতির মহাকান্ডে আরো বেরিয়ে এলো সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসা থেকে ফক্সি পরীক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা দেয়ার সময় ঐ সুপারকে ২০১২ সালের ১৪/০২/২০১২ ইং তারিখে দাখিল পরীক্ষায় ( নুর নাহার এর পরিবর্তে আছমা আক্তার কে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ করে দেয়ায় ) সেনবাগ ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সহ হাতে নাতে ধরে সেনবাগ থানায় ১৬/০২/২০১২ ইং তারিখে ১৭ নং মামলায় ধারা ৪২০,৪৬৫,৪৬৭,৪৬৮,৪৭১ ও ১৯৭ দঃবিঃ তৎসহ ১৯৮০ সালের পাবলিক পরীক্ষা আইনের ৬,১২ ও ১৩ ধারায় মামলা দেয়া হয়। মামলার বাদী ছিলেন, তৎকালীন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবদুর রহিম।

অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে দেখা গেলো নিজ মেয়ে ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার পর তার মেয়ের হাজিরা খাতায় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের ০৭ তারিখ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত জাল স্বাক্ষর দিয়ে উপস্থিত দেখিয়ে এমপিও’র সরকারি বেতন গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষককে তিনি রীতিমতো বি়ভিন্ন হুমকি দমকীর মাধ্যমে
কোণঠাসা করতে গিয়ে তার মেয়ে ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা রজু করবে। ঐ শিক্ষক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে আবেদন করার পরও তাঁকে বিভিন্ন মামলা দিয়ে জেলের ঘানি টানাবে বলে এখনো হুমকি দমকী দিয়ে যাচ্ছে ঐ সুপারের ছেলে রিয়াদ। অনুসন্ধান করতে গিয়ে সাংবাদিকদেরকেও দেখে নেয়ার হুমকি ও মামলা হামলা করবে বলে রিপোর্ট প্রকাশে বাধাগ্রস্হ করে যাচ্ছে এবং ঐ সুপারের জামাতা জাকির হোসেন, এনটিভির অনলাইন ডেক্সে ঢাকায় কর্মরত কিন্তু জাকির হোসেন অনুসন্ধানী এ প্রতিবেদককেও মামলা হামলার ভয়ভীতি প্রদর্শন পূর্বক জাল জালিয়াতির অনুসন্ধানে বাধাগ্রস্থ করছে।

গত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সেনবাগ পৌরসভার মেয়র আবু নাছের ভিপি দুলাল বলেন, সাংবাদিক বন্ধুরা আপনার অবগত আছেন য়ে – আমি শিক্ষা বান্ধব ব্যক্তি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এসএমসির সভাপতি হিসেবে দীর্ঘ দিন দায়িত্ব পালনের ফলশ্রুতিতে কয়েকবার জাতীয় পুরষ্কার প্রাপ্ত সহ চট্টগ্রাম বিভাগের শ্রেষ্ঠ সভাপতির পুরষ্কার প্রাপ্ত হই। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর আমার পৌরসভায় কাদরা বালিকা দাখিল মাদ্রাসাটির অবহেলিত অবস্থা দেখে মাদ্রাসাটির উন্নয়নকল্পে সভাপতি হিসেবে আগ্রহ প্রকাশ করলে মাদ্রাসার সুপার মাও. আবদুল কুদ্দুছ আমাকে সভাপতি হিসেবে মেনে নিতে গড়িমসি করার পর স্হানীয় সংসদ সদস্যের ডিও লেটার প্রেরণের কারণে সভাপতি হিসেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মনোনয়ন দেন। সভাপতির দায়িত্ব পালন কালে মাদ্রাসার সুপার মাও. আবদুল কুদ্দুছ ম্যানেজিং কমিটির সভা সহ বিভিন্ন কাগজ পত্রে আমি স্বাক্ষর করি। আমি যখন ব্যস্ত থাকি, ঠিক সে সময়ে বিভিন্ন কাগজপত্রে স্বাক্ষরের জন্য নিয়ে আসে,অনেক সময় পড়ে দেখার সময় থাকে না। বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে কাগজপত্রে স্বাক্ষর করে দেই। ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ নির্বাচনের জন্য মাদ্রাসার ভোটার তালিকা প্রণয়ন কালে মাও. আবদুল কুদ্দুছ নিজেকে প্রতিষ্ঠাতা ভোটার দাবি করলে, এক শিক্ষকের আবেদনে আপনারা সাংবাদিক মহল সকল বিষয়ে অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে বেরিয়ে আসে উনার লেবাসধারীর আড়ালে জাল জালিয়াতির ফাঁকফুকুর। আমার মতে এই মাও. আবদুল কুদ্দুছ দূর্নীতি ও জাল জালিয়াতির রোল মডেল। যেহেতু সুপার মাদ্রাসা কাগজপত্র স্বাক্ষরের জন্য নিয়ে আসে,ঐ সকল কাগজপত্রের মাঝে প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে রেজুলেশনে মাও. আবদুল কুদ্দুছ নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করে,যা আমি ইতোপূর্বে জানি নাই। সাংবাদিক ভাইদের নিকট থেকে ও রেজুলেশনে কপি দেখে আমি রীতিমতো বিশ্বাস করতে পারছি না- ইসলামের এই লেবাসধারী মাও. আবদুল কুদ্দুছ আসলে একজন দূর্নীতি ও জাল জালিয়াতকারী ব্যক্তি। আপনারা জানেন আমি কাদরা বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি হওয়ার পূর্বে ২০১২ সালে ফক্সি পরীক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা দেয়ার প্রাক্কালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার পাশা ( বর্তমানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার) হাতেনাতে মাও. আবদুল কুদ্দুছ কে ধরে- তৎকালীন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবদুর রহিম বাদী হয়ে মাও.আবদুল কুদ্দুছের বিরুদ্ধে মামলা দেন।
আমি সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দূর্নীতি ও জাল জালিয়াতকারী মাও. আবদুল কুদ্দুছ এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।

এ প্রতিবেদক মাও. আবদুল কুদ্দুছ এর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেনি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় গভীর রাতে স্বর্ণের দোকানে দুর্ধর্ষ ডাকাতি

পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমণিষা বাজারে বুধবার গভীর রাতে একদল দুর্ধর্ষ ডাকাত দল চার-পাঁচ টি স্বর্ণের দোকানে ও একটি বাড়িতে ডাকাতি করে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অষ্টমণিষা বাজারের শ্রী রতন কুমার কর্মকার, তপন কুমার কর্মকার, উত্তম কুমার কর্মকার, ইউসুফ আলী ও আত্তাব আলীর স্বর্ণের দোকানগুলোর তালা ভেঙে দুর্বৃত্ত ডাকাত দল প্রায় ৩০/৩২ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায়। পরে ডাকাত দল রতন কুমার কর্মকারের বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে তার স্ত্রী ও ছেলে রঞ্জন কর্মকার কে মারধর করে আরও ১০ ভরি স্বর্ণ ও ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাত দল।

শ্রী রঞ্জন কুমার কর্মকার বলেন,একটি ডাকাত দল বাজারে নেমে দুই নৈশপ্রহরীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রথমেই বেঁধে ফেলেন।রতন কর্মকার বলেন, ‘ডাকাতেরা বাড়িতে ঢুকতেই আমি তিন তলায় উঠে প্রতিবেশীদের ফোন করি। কিন্তু কেউ আসেনি। পরে দীপকে ফোন করলেও বের হতে পারেনি, কারণ তার দরজার সামনে দুইজন অস্ত্রধারী দাঁড়িয়ে ছিল।’

তারপর প্রায় ১০-১২ জনের একটি ডাকাত দল প্রথমে স্বর্ণের দোকানগুলোতে হামলা চালায় এবং কিছুক্ষণ পরে তারা তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে সবাইকে অস্ত্রের মুখে স্বর্ণালংকার ও টাকা পয়সা সব লুট করে। তার মা স্বর্ণের গহনা খুলে দিতে দেরি করলে তাকে অনেক মারধর করে। রঞ্জন কর্মকার বাধা দিলে তাকেও বেদম প্রহার করা হয়। দুর্ধর্ষ ডাকাত দলের হাতে দুইটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র সহ সাপল,লোহার রড ছিলো বলে তারা জানান।

স্থানীয়রা আরও জানান,দুর্ধর্ষ ডাকাত দল স্পিডবোট যোগে গভীর রাতে বাজারে এসে স্বর্ণের দোকানগুলোতে ডাকাতি করে গুমানী নদীর ভাটির দিকে চলে যায়।

খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (চাটমোহর,ভাঙ্গুড়া সার্কেল) আবু বকর সিদ্দিক, পাবনা ডিবির ওসি রাশিদুল ইসলাম, ডিবির একটি টিম এবং ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কারা জড়িত, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মামলা প্রক্রিয়াধীন।’

পাবনা ডিবি পুলিশের ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘এটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের কাজ। খুব শিগগিরই ডাকাত চক্রকে গ্রেপ্তার করা হবে।’অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলছে। তদন্তে বিস্তারিত জানা যাবে।’

অংশ নিয়েছে প্রায় ৬০০ প্রতিযোগী চট্টগ্রামে এনআইটি উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতায়

বিজ্ঞানমনষ্ক শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের যথাযথ প্রয়োগের লক্ষ্যে চট্টগ্রামের মুরাদপুরস্থ’ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এনআইটি)’র উদ্যোগে ১১তম বারের মতো “এনআইটি উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা-২০২৫” এনআইটি’র অডিটোরিয়ামে শনিবার অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ কারীগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্কভিউ হসপিটাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. এটি. এম. রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট অধ্যক্ষ মো কামাল হোসেন। সভাপতিত্ব করেন এনআইটি’র চেয়ারম্যান আহসান হাবিব।

প্রতিযোগিতায় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ২৬৪টি বিভিন্ন ধরনের উদ্ভাবনীমূলক প্রকল্প প্রর্দশিত হয়। এতে প্রায় ৬০০ প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন বলেন, আজকের এই প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র একটি বিজয়ীর খোঁজ নয়, বরং এটি আমাদের সবার জন্য একটি শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সকলেই নতুন কিছু শিখেছে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় উদ্ভাবন নিয়ে আসার অনুপ্রাণিত হয়েছে। প্রতিযোগীতায় শিক্ষার্থীরা প্রমাণ করেছে, আমাদের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অসীম সম্ভাবনা রয়েছে। প্রত্যেকটি প্রকল্পই আলাদা এবং একেকটি নতুন চিন্তার প্রতিফলন। উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা শুধু একটি ইভেন্ট নয়; এটি হলো কারিগরি শিক্ষার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির সবচাইতে কার্যকর মঞ্চ।

ড. এটি. এম. রেজাউল করিম বলেন,দক্ষতা একজন মানুষকে কর্মবাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এবং তাকে স্বনির্ভর করতে সাহায্য করবে। উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের সেই দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং কার্যকরী সমস্যা সমাধানের রুপরেখা তৈরী করে। অধ্যক্ষ মো কামাল হোসেন বলেন, এই প্রতিযোগিতায় উত্থাপিত সাশ্রয়ী ও টেকসই সমাধানগুলো কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে আমূল পরিবর্তন আনতে সক্ষম। আমাদের তরুণরা প্রমাণ করেছেন যে তাদের মেধা ও সৃজনশীলতাই দেশকে ‘আধুনিক বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের মূল চালিকাশক্তি।


ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির চেয়ারম্যান আহসান হাবিব বলেন, উদ্ভাবন শুধু প্রযুক্তির খেলনা নয়, উদ্ভাবন হল মানুষের জীবনকে সহজ ও অর্থপূর্ণ করার হাতিয়ার। আজকের এই ছোট ছোট ধারণাগুলোই আগামী দিনের বড় বড় শিল্প ও সামাজিক পরিবর্তনের বীজ বপন করছে।প্রতিযোগীতায় মোট ২৬৪ টি প্রজেক্ট অংশ নেয়। প্রজেক্ট সমুহকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে বিভিন্ন মানদন্ডে বিচার বিশ্লেষণ করার জন্য মূল্যায়ন দলে ছিলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. এ. কে. এম. মাঈনুল হক মিয়াজী, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. এইচ.এম

. এ আর মারুফ,চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের এসোসিয়েট প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান মো. দিদারুল আলম মজুমদার। চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর সিভিল ডিপার্টমেন্ট প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী মো জাহাঙ্গীর আলম, কম্পিউটার বিভাগের চীফ ইন্সট্রাক্টর প্রকৌশলী মেহেদী, ইলেকট্রিক্যাল বিভাগ চীফ ইন্সট্রাক্টর প্রকৌশলী সুজিত কুমার বিশ্বাস, মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট এর চীফ ইন্সট্রাক্টর প্রকৌশলী নুরুননবী।

বিচারক প্যানেল প্রজেক্ট সমুহ মূল্যায়ন সম্পন্ন করেন। মূল্যায়নে প্রাপ্ত নাম্বারের ভিত্তিতে টপ টেন নির্ধারণ করে পুরস্কার হিসেবে ১ম,২য় ও ৩য় স্থান অর্জন কারীর মধ্যে যথাক্রমে ৫০ হাজার, ৩০ হাজার ও ২০ হাজার নগদ অর্থ ও ক্রেস্ট পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া ইমার্জিং প্রজেক্ট হিসেবে চতুর্থ থেকে ১০ম স্থান অর্জনকারীদেরও ৫ হাজার নগদ অর্থ ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। সমাপনী পর্বে সকল অংশগ্রহণকারীকে সনদ বিতরণ করা হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ