
সরকার দেশের জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ,সিটিও পৌর মেয়রদের প্রজ্ঞাপন জারি করে অপসারণ করলে ইউনিয়ন পরিষদের বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি, যদিও পরবর্তী যাচাই-বাছাই করে ব্যাবস্হা বলে জানিয়েছেন স্হানীয় সরকার মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ।
জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার ১-নং ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দাপ্তরিক কাজে বাধাঁ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মেম্বারদের বিরুদ্ধে। পরিষদে যেতে চেয়ারম্যানকে বাধাঁ দিচ্ছেন মেম্বাররা। চেয়ারম্যানের কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে লাঠিসোঠা নিয়ে পরিষদে অবস্থান করছেন মেম্বার ও তাদের অনুসারীরা। বৃহস্পতিবার বিকালে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান লাকপতি। প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। জানা যায়,দীর্ঘদিন যাবত কামালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের দ্বন্ধ চলে আসছে। গত কয়েক মাস আগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে চেয়ারম্যানের প্রতি অনাস্থা দেন ১১ জন ইউনিয়নের সদস্যরা। কিন্তু চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মেম্বারদের সকল অভিযোগ মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় অনাস্থা প্রস্তাব না মঞ্জুর করে দেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়। এরপর গত ৫ জানুয়ারি সরকার পতনের পর ইইনিয়নের সদস্যরা আবারো চেয়ারম্যানের অপসারনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। অপসারনের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করছেন মেম্বাররা। এরপরেও নিয়মিত অফিস করছিলেন তিনি। গত বুধবার সকালে চেয়ারম্যানকে প্রতিহত করতে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা তাদের লোকজন নিয়ে লাঠি সোটা'”সহ পরিষদে অবস্থান নেয়। এতে করে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ফলে পরিষদে যেতে পারেনি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান লাকপতি। এই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অহনা জিন্মানাতের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ।

সংবাদ সম্মেলনে ইউ”পি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান লাকপতি বলেন, আমি জনগণের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছি। সর্বশেষ গত ১৯ আগস্ট ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করি। ২০ আগস্ট ইউনিয়ন পরিষদের যাওয়ার পথে খবর পাই প্যানেল চেয়ারম্যান গোলাপ জামাল, ইউপি মেম্বার সুমন, লাবনী আক্তার, হোসনে আরা, সামিউল হক, নুরুল আমিন ও সাইফুল ইসলাম সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ও চারপাশে অবস্থান করছে। আমি সেখানে গেলে আমার উপর হামলা করা হতে পারে এমন আশঙ্কা থাকায় বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করি। এমন পরিস্থিতিতে তিনি আমাকে পরিষদে যেতে নিষেধ করেন। এই পরিস্থিতিতে ইউনিয়ন পরিষদে প্রবেশে বাধা প্রদান করে আমাকে পরিষদের কার্যক্রমে অনুপস্থিত দেখানো হচ্ছে। এছাড়াও তারা আমাকে দায়িত্ব পালনে নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছে।
চেয়ারম্যান আরো বলেন,অনৈতিক সুবিধা না পাওয়ায় একটি মহল দীর্ঘদিন যাবত তার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য নানা ভাবে পায়তারা করে আসছে। তারা ইউপি মেম্বারদের ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এর আগেও মেম্বাররা অনাস্থা দিয়েছিল। মেম্বারদের সকল অভিযোগ মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় অনাস্থা প্রস্তাব না মঞ্জুর করে দেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়। এখন নতুন করে তারা আবার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। চাইলে আমি পরিষদে যেতে পারি। এলাকার সকল সাধারণ জনগন আমার সাথে রয়েছে। তারা বাধাঁ দিয়ে আমাকে আটকাতে পারবে না। কিন্তু আমি আসলে সংঘাত চাই না। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। তিনি আরো বলেন,মেম্বাররা সকলেই নানা অপকর্মের সাথে জড়িত। মেম্বার এবং তাদের স্বজনদের নামে সরকারি বিভিন্ন ভাতার কার্ড রয়েছে। নিজেরা দুর্নীতি করে আমাকে দুর্নীতিবাজ বলছে। আমি কোন দুর্নীতি বা অনিয়মের সাথে জড়িত নই। র্দুর্নীতির কোন প্রমান দিতে পারলে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবো। যতদিন দায়িত্বে আছি কাজ করে যেতে চাই। জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চেয়ারম্যানকে ভুমিদস্যু ও দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে মেম্বাররা বলেন, দাবি একটাই চেয়ারম্যানের অপসারণ। চেয়ারম্যানকে কোনভাবেই পরিষদে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চেয়ারম্যনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দেন তারা।

বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অহনা জিন্নাত বলেন, চেয়ারম্যানের অভিযোগ জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও সার্বিক পরিস্থিতি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।