
নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের দড়িপুরা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের দপ্তরী রাসেল মোল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। স্মার্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ফেডারেশনের মহাসচিব পরিচয়ে শিক্ষক সহ সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন কাজ সহজে করে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছে।
জানা গেছে, দপ্তরী রাসেল মোল্লা আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে ও স্মার্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব পরিচয়ে এলাকায় বহু মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বছরের পর বছর ঘুরেও সেই টাকা ফেরত পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। উল্টো ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে আসছে রাসেল। বিগত দিনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে তার ভয়ে এলাকাবাসী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও কোনো প্রতিবাদ করতে পারতো না।

জয়নগর ইউনিয়নের কামরাব গ্রামের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক দিলিপ মাস্টারকে দ্রুত অবসর ও কল্যাণ ভাতা পাইয়ে দেয়ার কথা বলে ৭২ হাজার ৫ শ টাকা আত্মসাৎ করেছে দপ্তরী রাসেল মোল্লা। বছরের পর বছর ঘুরলেও কাজ বা টাকা কোনোটিরই হদিস পাচ্ছেন না শিক্ষক।
এব্যাপারে দড়িপুরা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের দপ্তরী ও স্মার্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ফেডারেশনের মহাসচিব মোঃ রাসেল আহমেদ’কে প্রথমে ফোন করলে তিনি জানান, শিক্ষকের টাকা মীমাংসার মাধ্যমে ফেরত দিয়েছে। তবে দিলীপ মাস্টার জানান, সে কোনো টাকা ফেরত দেয়নি। যে কাজে টাকা নিয়েছে সেই কাজটাও করে দেয়নি।

দপ্তরী রাসেল মোল্লাকে আবার প্রশ্ন করলে তিনি প্রথমে মিথ্যা কথা বললেও পরবর্তী জানান, সামনের সপ্তাহে টাকা ফেরত দিয়ে দিবেন। এরপর মাসের পর মাস গেলেও টাকা ফেরত পায়নি ওই শিক্ষক।
শিক্ষক বলেন, একটা পাগলা কুকুরকে বিশ্বাস করা যায়। কিন্তু তাকে (রাসেল মোল্লা) বিশ্বাস করি না। আমার কাছ থেকে অবসর ও কল্যাণ ভাতা পাইয়ে দেয়ার কথা বলে ৭২ হাজার ৫০০ টাকা নিয়েছে। টাকা ফেরত দিবে বলে মাসের পর মাস ঘুরছে, টাকা ফেরত দেয় না। সে আমার সাথে বাটপারি শুরু করে দিয়েছে।
কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি বলে, আমি অসুস্থ মানুষ। হার্টে রিং পড়ানো হয়েছে। টাকার অভাবে চিকিৎসাও করাতে পারছি না। রাসেল সব জানে। তারপরও আমার টাকা ফেরত দিচ্ছে না।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, কারো কাছে ১০, ২০ ও ৫০ হাজার এরকম করে এলাকার বহু মানুষের কাছ থেকে দপ্তরী রাসেল টাকা আত্মসাৎ করেছে। টাকা ফেরত চাইলেই সে তার দাপট দেখায়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর এলাকার ভুক্তভোগী অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তারা টাকা আত্মসাতের ব্যাপারে পোস্ট দিচ্ছেন। দড়িপুরা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে রাসেল মোল্লার অপসারণ দাবিতে ফেসবুকে ঝড় উঠেছে।