আজঃ শুক্রবার ১৪ মার্চ, ২০২৫

বন্যায় মাছ চাষীদের মাথায় হাত চট্টগ্রামে ভেসে গেছে কোটি কোটি টাকার মাছ

নিজস্ব প্রতিবেদক

অতিবৃষ্টি, ভারতে পানি ও পাহাড়ী চলে চট্টগ্রামের মাছ চাষীরা চরম ক্ষতির সন্মুখীন হয়েছে। পানির স্রোতে ভেসে গেছে তাদের কোটি কোটি টাকার মাছ। গত কয়েকদিনে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি এবং পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের মিরসরাই, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজান, সীতাকুণ্ডসহ বিভিন্ন উপজেলার মৎস্য চাষের পুকুর, দিঘি ও মৎস্য হ্যাচারির মাছ ভেসে গেছে। এর মধ্যে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিরসরাই উপজেলায়। বিশেষ করে এসব এলাকায় বন্যার পানিতে প্রায় ২৭৭ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিরসরাই মুহূরী মৎস্য প্রজেক্টের চাষীরা। এ প্রজেক্টের ৬ হাজার একরে চাষকৃত মাছ বন্যার পানির সাথে একাকার হয়ে গেছে। তাছাড়া প্রাকৃতিক মৎস্য ক্ষেত্র হালদা নদীর বড় আকারের রুই জাতীয় মাছ বিভিন্ন জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অফিসার শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ দৈনিক বলেন, গত কয়েকদিনের অবিরাম বৃষ্টিতে ভেসে গেছে চট্টগ্রামের মিরসরাই, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজান, সীতাকুণ্ডসহ বিভিন্ন উপজেলার মৎস্য চাষের পুকুর, দিঘি, মৎস্য হ্যাচারির মাছ। এতে মৎস্য বিভাগের তাৎক্ষণিক হিসেবে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২৭৭ কোটি টাকা। তাছাড়া বৃষ্টির পানিতে হালদা নদী বেশি প্লাবিত হয়েছে। এ অবস্থায় নদীর অন্যান্য মাছ ছাড়াও রুই জাতীয় মাছ (রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিবাউশ) খাল-বিলে ছড়িয়ে পড়েছে। এমন কি এসব মাছ খাল-বিল হয়ে বিভিন্ন উপজেলাও ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে মনে হচ্ছে মিরসরাই উপজেলায় মানুষের জালে ধরা পড়া ২০ কেজি ওজনের কাতলা মাছটি হালদা নদীর। এ কারণে হালদার রুই জাতীয় মাছের বিশুদ্ধতা নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, মিরসরাই উপজেলার ৬ হাজার একর আয়তনের মুহূরী মৎস্য প্রজেক্টের সবগুলো মাছ পানিতে ভেসে গেছে। স্থানীয় চাষীরা জানান, তাদের প্রতি একরে গড়ে ১০ লাখ টাকার মাছ থাকে। সে হিসেবে তাদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার মাছ। তবে তাৎক্ষণিক ক্ষতি নিরুপণে মৎস্য বিভাগ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত জেলা মৎস্য অফিসের হিসাবে মিরসরাই উপজেলায় মৎস্য খাতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৪২ কোটি টাকা। এ উপজেলার ৮ নং দুর্গাপুর ইউনিয়নের আবদুল টেন্ডাল বাড়ির জনৈক বাবরের জালে বৃষ্টির পানিতে ধরা পড়েছে ২০ কেজি ওজনের একটি কাতলা মাছ। জেলা মৎস্য অফিসের ধারণা বানের পানিতে ভেসে মাছটি হালদা নদীর সংযুক্ত খাল-বিল হয়ে ওই এলাকায় গেছে।
এদিকে বৃষ্টি ও বানের পানিতে মিরসরাইয়ের পর বেশি ক্ষতি হয়েছে ফটিকছড়ি উপজেলায়। এ উপজেলার বেশিভাগ ইউনিয়নের পুকুর, দিঘি ও মৎস্য প্রজেক্ট বানের পানিতে ভেসে গেছে। তাতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি ১০ লাখ টাকা। বানের পানিতে একই অবস্থা হয়েছে হাটহাজারী উপজেলাও। এ উপজেলায় বানের পানিতে ভেসে গেছে ১২ কোটি টাকার মাছ। বানের পানি থেকে রেহায় পায়নি রাউজানের পুকুর, দিঘি ও মৎস্য হ্যাচারিগুলো। এ উপজেলায় মৎস্য বিভাগের তাৎক্ষণিক হিসেবে ক্ষতি নিরুপণ করা হয়েছে প্রায় ৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। তাছাড়া বৃষ্টি ও বানের পানিতে ক্ষতি হয়েছে সীতাকুণ্ড ও রাঙ্গুনিয়ার পুকুর, দিঘি ও মৎস্য হ্যাচারিগুলোও।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

টেকসই উন্নয়নে জ্বালানি নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিতের দাবি

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে “বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নারীর ক্ষমতায়নঃ টেকসই উন্নয়নে জ্বালানি নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত কর” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নারীর অংশগ্রহণ, ক্ষমতায়ন, জ্বালানি অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহন প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহন বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে। আইএসডিই বাংলাদেশ, ক্লিন (কোস্টাল লাইভলিহুড এন্ড এনভায়রনমেন্টাল একশন নেটওয়ার্ক) ও বিডাব্লিউজিইডি (বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি এন্ড ডেভেলপমেন্ট), সিএসডিএফ এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল

সারাদেশে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করে নারীদের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণকারীরা নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারের প্রয়োজনীয়তা ও বিদ্যুৎ খাতে নারীর অন্তর্ভুক্তি বিষয়ে সচেতনতামূলক বার্তা তুলে ধরেন। তারা জোর দিয়ে বলেন, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে জ্বালানি খাতে নারীর সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে এবং সকল স্তরে জ্বালানির ন্যায়সঙ্গত ব্যবহার নিশ্চিত করা ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসাারের প্রয়োজনীয়তা ও বিদ্যুৎ খাতে নারীর অন্তর্ভূক্তির বিষয়ে গুরুত্বআরোপ করেন।

ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আইএসডিই বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক এস এম নাজের হোসাইন বলেন, দেশে ব্যবহৃত মোট জ্বালানির ৪৬ শতাংশই ব্যবহার হয় গৃহাস্থলির কাজে অর্থাৎ নারীরাই সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করছেন কিন্তু আমদানিকৃত জীবাশ্ম জ্বালানির ফলে প্রতিনিয়ত বিদ্যুৎ এর মূল্য বৃদ্ধির কারণে তারাই সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছেন।
নারী নেত্রী ও চিটাগাং সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক জেসমিন সুলতানা পারু বলেন, নারীরা জ্বালানি খাতে পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়ন, উৎপাদন থেকে বিতরণ সব ক্ষেত্রেই বঞ্চিত। সারাদেশে নারীদের

মালিকানায় মাত্র ২-৪ শতাংশ জমি থাকায় বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের এড়িয়ে যান এবং পরামর্শ গ্রহণ প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র সুবিধাভোগী হিসেবে তাদেরদের অন্তর্ভুক্ত করেন এবং ‘সংবেদনশীল বিষয়’’ হিসেবে দেখেন, কিন্তু সক্রিয় অংশীদার বা নীতিনির্ধারক হিসেবে নারীদের স্বীকৃতি দেওয়া হয় না।
চিটাগাং সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট ফোরামের প্রকল্প সমন্বয়কারী শাম্পা কে নাহার বলেন, জ্বীবাশ্ম জ্বালানী ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কারণে নারীরা নানাবিধ মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, কারণ পুরুষদের মতো তারা সহজে স্থান বদল করতে পারেন না। স্থানীয় এলাকায় বহিরাগতদের ভিড়ের কারণে নারীদের চলাচল, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন এবং মৌলিক প্রয়োজন পূরণে অসুবিধার সম্মুখীন হন। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান গুলোকে এসব সমস্যা সমাধানে খুব বেশি তৎপর হতে দেখা যায় না। সাধারণত পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (ঊওঅ) প্রক্রিয়ার বাধ্যতামূলক শর্ত পূরণের জন্যই নারীদের নামমাত্র পরামর্শ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

সভায় চট্টগ্রাম ফোরাম অন ইকোলজি এন্ড ডেভেলপমেন্টের সদস্যা ও ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদ্যৗস বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সবসময় নারীদের বিশেষ প্রয়োজন, বিশেষ করে প্রজনন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলোকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করেন।জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিশেষ করে কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলো, মাত্রাতিরিক্ত পারদ, সীসা, ক্যাডমিয়াম, সালফার ও ক্রোমিয়াম নির্গত করে। এই বিষাক্ত

ধাতুগুলো নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলে। নারীরা এই দূষণের সরাসরি ও নিরীহ শিকার হলেও তাদের কোনো ক্ষতিপূরণের অধিকার নেই, কারণ তাদের নামে জমির মালিকানা থাকে না। প্রচারাভিযান কর্মীরা নারীদের জন্য সহজে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে আহ্বান জানান।

আলোচনা ও প্রচারাভিযানে অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনা অংশনেন সিাংবাদিক ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এম নাসিরুল হক, মহানগর মহিলা দলের সহ-সভাপতি সায়মা হক, উত্তর জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক লায়লা ইয়াছমিন, বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফ্রুটস এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন এর কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সেলিম জাহ্ঙ্গাীর, ক্যাব চকবাজার থানা কমিটির সভাপতি আবদুল আলীম, অধিকার চট্টগ্রামের সমন্বয়ক ওসমান জাহাঙ্গীর, নারী উদ্যোক্তা ফারজানা মুক্তাদির, ছাত্র প্রতিনিধি পার্থ সরকার, হারিসা খানম সুখী প্রমুখ।

শোক সংবাদ

বীর চট্টলার কৃতি সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধা,, বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক সফল মন্ত্রী জননেতা জনাব আবদুল্লাহ আল নোমান ভাই আজ ভোর ৬টায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ