
চট্টগ্রাম মা ও শিশু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন। ছয় দেশের সাড়ে সাতশ’ চিকিৎসক নিয়ে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান আয়োজকেরা।
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে দিনব্যাপী এই সম্মেলনে বাংলাদেশসহ যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, মিশর, ভারত ও নেপাল থেকে ৭৫০ জনের বেশি চিকিৎসক, গবেষক, শিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেবেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. অসীম কুমার বড়ুয়া, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম জালাল উদ্দিন, সেক্রেটারি ও সদস্যসচিব অধ্যাপক ডা. অলক নন্দী এবং হাসপাতালের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ আলম।
এসময় আয়োজকেরা জানান, শুক্রবার সকাল ৮টায় সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হলেও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে সকাল সাড়ে ১১টায়। প্রধান অতিথি থাকবেন সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ওমর ফারুক ইউসুফ।
দিনব্যাপী এ আয়োজনে ১৭টি সেশনে উপস্থাপন করা হবে ৮৯টি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ। যার মধ্যে আছে ৪০টি মেডিসিন, ২৫টি সার্জারি, ১২টি গাইনি এবং ডেন্টাল, বেসিক মেডিসিন ও মেডিকেল শিক্ষা সংক্রান্ত আরও ১২টি গবেষণা। এছাড়া সম্মেলনে আগের দিন দুইটি ও পরের দিন আরও দুইটি হাতে কলমে বৈজ্ঞানিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে।
বৈজ্ঞানিক সেমিনারকে কেন্দ্র করে দেশি–বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অংশগ্রহণে হাসপাতালে ৬ জন থাইরয়েড রোগীর অপারেশনবিহীন অস্ত্রোপচার করা হবে। ‘থার্মাল এবলেশন’ নামের এই সার্বাধুনিক পদ্ধতিতে থাইরয়েড নডিউল বা গলগণ্ড রোগ কাটা–ছেঁড়া, দাগ ছাড়া চিকিৎসা করা যায়।
ডায়াবেটিস ও হরমোন রোগ বিভাগ জানায়, বাংলাদেশে এ ধরনের প্রথম ওয়ার্কশপ এটি। এতে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় চিকিৎসকেরা যৌথভাবে হাতে–কলমে থার্মাল এবলেশন প্রযুক্তি প্রদর্শন করবেন—যা তরুণ চিকিৎসকদের জন্য যুগান্তকারী অভিজ্ঞতা হবে।
হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ মো. মোরশেদ আলম বলেন, গবেষণার মাধ্যমেই চিকিৎসার অগ্রগতি সম্ভব। ৮৯টি গবেষণা উপস্থাপন ও থার্মাল এবলেশনের মতো নতুন প্রযুক্তির হাতে–কলমে প্রদর্শন এ সম্মেলনকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. অসীম কুমার বড়ুয়া বলেন, পাঁচ দেশের গবেষকরা তাঁদের গবেষণা ও প্রযুক্তি শেয়ার করবেন। থার্মাল এবলেশন আমাদের দেশে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম জালাল উদ্দিন বলেন, দেশে প্রতিবছর প্রায় তিন হাজার চিকিৎসাবিষয়ক গবেষণা প্রকাশিত হলেও বাস্তবে সেগুলোর প্রয়োগ কম। এ ধরনের সম্মেলন গবেষণা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করবে। সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. অলক নন্দী জানান, বিভিন্ন সেশনে গবেষকেরা হাতে–কলমে চিকিৎসার সর্বশেষ উদ্ভাবন উপস্থাপন করবেন।‘
নবীন চিকিৎসকদের জন্য এটি বিশাল প্রাপ্তি’ বলেন তিনি।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কমিটির ট্রেজারার অধ্যাপক ডা. আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, সায়েন্টিফিক সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. সঞ্জয় কান্তি বিশ্বাস, প্রচার সেক্রেটারি ও ডেন্টাল ইউনিটের প্রধান ডা. মো. কামরুল হাসান, অফিস সেক্রেটারি ডা. হাদী মো. হাবিব উল্লাহ, শিক্ষক সমিতির সংস্কৃতি ও বিনোদন সম্পাদক ডা. ফাহিম হাসান রেজা প্রমুখ।