
বিশ্বব্যাপী যেসব অসংক্রামক রোগে মানুষের সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে- তার অধিকাংশই বায়ু দূষণজনিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী বায়ু দূষণের কারণে বছরে ৪২ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু হচ্ছে। বেসরকারি স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর জরীপ মতে মধ্যম মাত্রার দূষণ এলাকা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। দিন দিন এই জেলায় বায়ু দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এখনই কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এক সময় তা অসহনীয় পর্যায়ে চলে যেতে পারে।
এ বিষয়ে সাবেক জেলা মেডিকেল অফিসার ও সহকারী সার্জন ডাঃ মাজেদ আলি খাঁন বলেন, “বায়ু দূষণ, সার্বিকভাবে পরিবেশ দূষণের এক ভয়াবহ প্রভাব পড়ে মানুষের প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর। এতে পুরুষের শুক্রাণু তৈরিতে ব্যাঘাত ঘটে, শুক্রাণুর মান কমে যায়। অন্যদিকে মেয়েদের ডিম্বাণু কল্পনাতীতভাবে কমে যায়। আবার যেসব ডিম্বাণু রয়েছে সেগুলোও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া এই অতিক্ষুদ্র বায়ু দূষিত কণা এতোটাই ক্ষুদ্র যে এটি সহজেই মানুষের চোখ-নাক-মুখ দিয়ে ঢুকে রক্তের সাথে মিশে যায় এবং ফুসফুস, হার্ট, কিডনি লিভার আক্রান্ত করে থাকে। তাই আমাদের উচিত বায়ু দূষণ রোধ করা।

এদিকে নয়াগোলা করিমুন্নেসা স্বতন্ত্র এবতেদায়ী নূরানী মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক আলহাজ্ব মোঃ লতিফূর রহমান বলেন, “শুষ্ক মৌসুমে বায়ু দূষণের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়, এতে করে বাচ্চারা মাদ্রাসা আসা যাওয়ার সময় বায়ু দূষণের শিকার হয়। তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে রাস্তার কাজ সংস্কার করার সময় বায়ু দূষণের সৃষ্টি হয়। আমাদের দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন বায়ুদূষিত এলাকাগুলো চিহ্নিত করে দিনে দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর পর পানি ছেটানোর ব্যবস্থা করে, নির্মাণ কাজের সময় নির্মাণ স্থান ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করে, নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনের সময় ঢেকে নিয়ে যাওয়া নিশ্চিত করে, রাস্তায় ধুলা সংগ্রহের জন্য সাকশন ট্রাক ব্যবহার করে, অবৈধ ইট ভাটা বন্ধ করে উন্নত প্রযুক্তির সেন্ড ব্লকের প্রচলন বাড়ানো এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করে। এতে করে বায়ু দূষণের মাত্রা কমবে বলে আশা করছি।
উল্লেখ্য, রাস্তা নির্মাণ ও সংস্করন ক্ষেত্রে ঠিকাদার কোম্পানিগুলো বায়ু দূষণ ঠেকাতে যেসব প্রটোকল মানার কথা তা মানছে না।
