আজঃ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় স্বামীর যাবজ্জীবন

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রামে স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে স্বামী আবুল কাশেমমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন একটি আদালত। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর এলাকায় এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় এ রায় ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে এক লাখ অর্থদণ্ডও করা হয়েছে তাকে। এছাড়া নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় ওই গৃহবধূর শ্বশুরকে খালাস দিয়েছেন বিচারক।দণ্ডিত আবুল কাশেম বাগানবাজার ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন জানান, নিজ স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার দায়ে আসামি ইমাম হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে তাকে এক লক্ষ অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন বিচারক। মোট ১২ জন সাক্ষী ও একজন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্য রেকর্ড করা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামি ইমাম হোসেন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় অপর আসামি আবুল কাশেমকে খালাস দেয়া হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় ইমাম-ফাতেমা দম্পতি। বিয়ের পর স্বামী এবং শ্বশুড় কারণে-অকারণে ফাতেমাকে মানসিক নির্যাতন করতো। এছাড়াও তার কন্যা সন্তান হওয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন কটূক্তিও করতো। ২০২১ সালের ১৩ মার্চ দিবাগত রাত ৩টায় ফাতেমার বাবাকে ফোন করে তার স্বামী জানায় জানায়, ফাতেমার গায়ে আগুন লেগেছে। সাথে সাথে তার বাবা বাড়ির উঠোনে গিয়ে দেখেন তার মেয়ের মাথা-মুখমণ্ডলসহ অধিকাংশই আগুনে পুড়ে গেছে। ফাতেমাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক ঢাকায় রেফার করে।
হাসপাতালে নেওয়ার সময় ফাতেমা জানান, ঘটনার দিন তার স্বামীর বাড়িতে ফেরা নিয়ে তর্কাতর্কি হলে তাকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দসহ মারধর করে। একপর্যায়ে তার গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ১৫ মার্চ গৃহবধূর স্বামী এবং শ্বশুড়কে আসামি করে ভূজপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন বাদী। একইবছরের ১৬ মার্চ ভোর সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার তদন্ত শেষে দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ভুজপুর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক মো. জাকির হোসেন ২০২১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২২ সালের ৩১ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।আহত ওসমান হাদীর সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এছাড়া চিকিৎসা কার্যক্রম নিবিড়ভাবে তদারকি করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন।


একই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ, প্রত্যক্ষদর্শীর তথ্য গ্রহণ, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা এবং হামলার পেছনে কোনো সংগঠিত পরিকল্পনা থাকলে তা উন্মোচনের জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।

কুষ্টিয়ায় নারী পুলিশ কনস্টেবলের মোবাইল ছিনতাইচেষ্টা, যুবক আটক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় এক নারী পুলিশ কনস্টেবলের মোবাইল ফোন ছিনতাইচেষ্টার অভিযোগে আশিকুর রহমান (২১) নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে থানাপাড়া পাঁচ বিল্ডিং এলাকায় এই ছিনতাইচেষ্টার ঘটনা ঘটে। পরে তাঁকে আটক করা হয়। আশিকুর রহমান খোকসা চরপাড়া এলাকার বিল্লাল হোসেনের ছেলে।

আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে তাঁকে চুরি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।সন্ধ্যায় খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোতালেব হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওসি বলেন, থানার পাশেই ভুক্তভোগী নারী কনস্টেবলের বাসা। ডিউটি শেষে ফেরার পথে তাঁর মোবাইল ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় এক যুবককে আটক করা হয়েছে। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ