আজঃ শনিবার ৮ নভেম্বর, ২০২৫

চেম্বারের মতবিনিময় ২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে ফিলিপাইনে ১১০ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

ফিলিপাইন দূতাবাসের থার্ড সেক্রেটারী এবং ভাইস কনসাল মিজ লিন আর. গুতেরেজ বৃহস্পতিবার সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের চেম্বার কার্যালয়ে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ও চিটাগাং চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা’র সভাপতিত্বে ফিলিপাইনের অনারারী কনসাল এম. এ. আউয়াল, চিটাগাং চেম্বারের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এরশাদ উল্যাহ, সাবেক পরিচালক আমজাদ হোসেন চৌধুরী ও মাহফুজুল হক শাহ, ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট এন্ড বিজনেসম্যান ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশন’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পার্ক শিপিং লাইন এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী, চট্টগ্রাম বিজনেস ফোরামের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী কামরুল হুদা, লুব-রেফ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ, উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি খালেদা আউয়াল, শিপার্স কাউন্সিল অব বাংলাদেশ এর পরিচালক লোকপ্রিয় বড়ুয়া, বিএসআরএম গ্রুপের সঞ্জয় কুমার ঘোষ ও চিটাগাং চেম্বারের যুগ্ম সচিব নুরুল আবছার চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বঞ্চিত ব্যবসায়ী সমাজের সমন্বয়ক এস. এম. সাইফুল আলমসহ দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময়কালে চিটাগাং চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন-স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে। বন্দরনগরী চট্টগ্রামের তৈরিপোশাক, ফার্মাসিউটিক্যালস, শিপবিল্ডিং, শিপব্রেকিং এবং আইটি সেক্টর এই ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে যাচ্ছে। পাশাপাশি চিটাগাং চেম্বার ব্যবসায়িক পরিবেশ ও বিনিয়োগের উন্নয়নে সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি ফিলিপাইনের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্কে বলেন-২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে ফিলিপাইনে ১১০ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি করা হয়। ফিলিপাইন থেকে ৩৮ মিলিয়ন ডলার পণ্য আমদানি করা হয়। এতে বুঝা যায় উভয়দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সেইভাবে গড়ে ওঠেনি। তাই এই বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ভিসার জটিলতা। তাই বিজনেস টু বিজনেস সম্পর্ক বাড়াতে এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করতে ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণের উপর জোর দেন চেম্বার প্রশাসক।
ফিলিপাইন দূতাবাসের থার্ড সেক্রেটারী এবং ভাইস কনসাল লিন আর. গুতেরেজ বলেন-ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে চট্টগ্রাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া এখানে রয়েছে বিনিয়োগের যথেষ্ট সম্ভাবনা। তাই দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্কোন্নয়নে আন্তরিক ফিলিপাইন সরকার। এ লক্ষ্যে ভিসা জটিলতা নিরসনসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। দু’দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্ক বাড়াতে তিনি বাংলাদেশী ব্যবসায়ী ডেলিগেটদের ফিলিপাইনে আমন্ত্রণ জানান।
অন্যান্য বক্তারা বলেন-চট্টগ্রামে রয়েছে প্রায় ৪/৫টি অর্থনৈতিক অঞ্চল। অঞ্চলগুলোতে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকার যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। ফিলিপাইনের মত কৃষি প্রধান বাংলাদেশে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, ম্যানুফ্যাকচারিং, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং পর্যটন সেক্টরে ফিলিপাইনের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের সাথে একক ও যৌথ বিনিয়োগের আহবান জানান।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত “প্রজেক্ট অধরা” মাসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা — আমাদের দেহ, আমাদের যত্ন।

হাল্ট প্রাইজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গর্বের সঙ্গে উপস্থাপন করছে “প্রজেক্ট অধরা”— একটি তাৎপর্যপূর্ণ ও সম্প্রদায়মুখী উদ্যোগ, যা নারীদের মাসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত লজ্জা, কুসংস্কার ও ভুল ধারণা দূর করতে কাজ করে। এই উদ্যোগ এস ডি জি ৩ (সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল) এবং ৪ (গুণগত শিক্ষা)-এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয় ৪ নভেম্বর, ২০২৫ তারিখে ফতেয়াবাদ শৈলবালা সিটি কর্পোরেশন হাই স্কুলে যেখানে অংশগ্রহণ করেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট অতিথিরা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাল্ট প্রাইজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ২৫/২৬ সনের ক্যাম্পাস ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ অনিক, চিফ অফ স্টাফ কাজী মুহাইমিনুল ইসলাম মুনাজ এবং চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট কারিন সাফফানা। পাশাপাশি এই প্রকল্পটির নেতৃত্ব দেন তানজিফ হাসান‌, নিশাত তাহসিন চৌধুরী এবং কমিউনিটি এনগেজমেন্ট টিমের সকল সদস্য। তাঁরা সবাই একত্রে মাসিক সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, সঠিক জ্ঞান প্রদান এবং ভ্রান্ত ধারণা দূর করার প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্বসহকারে উল্লেখ করেন।

কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য একটি নিরাপদ, স্বাচ্ছন্দ্যময় এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে মাসিক সম্পর্কে স্পষ্ট, সহানুভূতিশীল এবং আত্মবিশ্বাসী আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়। সেশনে আলোচনা করা হয় মাসিক কীভাবে শুরু হয়, কীভাবে রক্তপ্রবাহ ঘটে, মাসিক চলাকালীন কীভাবে নিজেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত এবং এই সময়ে কোন স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলি অনুসরণ করা জরুরি। আয়োজকরা উল্লেখ করেন, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য দুটোই এ সময় সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং যথাযথ যত্ন নেওয়া অপরিহার্য।

সেশনের শেষে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও উৎসাহ বৃদ্ধি করতে একটি কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়, যা আলোচিত বিষয়গুলোকে আরও সুস্পষ্টভাবে উপলব্ধি করতে সহায়তা করে। অংশগ্রহণকারীদের মাঝে নিজস্বভাবে প্রস্তুত করা উপহার প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে, যা তাদের শেখার আগ্রহ ও সম্পৃক্ততাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও, অংশগ্রহণকারী ছাত্রী, শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষিকার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয় তাঁদের মতামত, অভিজ্ঞতা এবং কর্মশালা-পরবর্তী উপলব্ধি জানতে। অনুষ্ঠানে বার্তা দেওয়া হয় যে নারীর মাসিক স্বাস্থ্য কোনো লজ্জার বিষয় নয়, এটি তাদের শরীর ও জীবনের একটি প্রাকৃতিক চক্র। এই বিষয়টি লুকিয়ে নয়, বোঝা ও যত্ন নেওয়া উচিত — কারণ
আমাদের দেহ, আমাদের যত্ন — প্রতিটি চক্রই গুরুত্বপূর্ণ।
এর পাশাপাশি আরও নতুন তথ্য ও আপডেট জানতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হাল্ট প্রাইজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজটি অনুসরণ করুন।

চট্টগ্রামে প্রবাসীর ১৯ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট, আসামি গ্রেফতার

চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে ডাকাতি মামলার পলাতক আসামি মো. সাদ্দাম হোসেনকে (৩২) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭। চান্দগাঁও থানাধীন নুরুজ্জামান নাজির বাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার সাদ্দাম হোসেন ভোলার লালমোহন থানার দুলা মিয়া এলাকার মো. ফারুকের ছেলে।

র‌্যাব-৭’র সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এ আর এম মোজাফ্ফর হোসেন জানান, গত ২১ জুলাই সাড়ে ৮টায় দুবাই প্রবাসী মোহাম্মদ সামসুদ্দিন চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে এ কে খান বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার পথে লিংক রোড় এলাকায় ডাকাতদল নগদ টাকাসহ ১৯ লাখ ৮২ হাজার ২০০ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তিনি ৩/৪ জনকে আসামি করে হালিশহর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গোপন খবরের ভিত্তিতে চান্দগাঁও থানাধীন নুরুজ্জামান নাজির বাড়ি এলাকা থেকে এ মামলার আসামি সাদ্দামকে গ্রেফতার করা হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ