
চট্টগ্রামে শতাধিক মার্কেট এবং জনবহুল এলাকা অগ্নি দূর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছে। অগ্নি দূর্ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিস বাহিনী দূর্ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই অনেকটাই ক্ষতি হয়ে যায়। প্রতি বছর নগরীর কোন না কোন মার্কেটে ঘটে চলেছে অগ্নি দূর্ঘটনা। ২০২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী, চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লায় সমবায় মার্কেটে আগুন লেগে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যায় এবং একজনের মৃত্যু হয়। একই বছরের ১২ জানুয়ারী রেয়াজউদ্দিন বাজারের নুপুর মাকের্টে আগুন লাগে। এর আগে চৌধুরী প্লাজা, হোটেল সফিনা, জহুর হকার মাকের্টে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। আবার অনেক মাকের্টে রয়েছে পোশাক কারখানা কিংবা বিভিন্ন ক্রোকারীজ ও খাদ্য তৈরির কারখানা।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের আঞ্চলিক অফিসের দেয়া তথ্য মতে, চট্টগ্রামে অন্তত ৪৫ মার্কেটে ও ১০টি বাজার আগুনের ঝূঁকিতে রয়েছে। মার্কেটগুলো তৈরি হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। তাছাড়া অনেকদিন পূর্বে নির্মিত কিছু ভবন রয়েছে, সেগুলোর কোন মেয়াদ নেই এবং মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। জরাজীর্ণ ভবনগুলো ভাঙ্গার জন্য সিডিএকে যে নোটিশ করা হয়েছিল তা কখনেই আলোর মুখ দেখেনি।
পরিবেশবিদরা এ ব্যাপারে বারবার সিডিএ, ফায়ার সার্ভিস ও পরিবেশ অধিদপ্তরে তাগাদা দিলেও কার্যত এ ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকী এ তালিকা অনুসারে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করেননি।
চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানার রাজাখালী এলাকার গত কয়েকমাসে বেশ কয়েকটি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুয়ায়ী বাকলিয়া থানার রাজাখালী এলাকার ফাইভস্টার গলির মুখে মোহাম্মদ মিয়ার চার তলার ভবনের নীচতলায় সেমাই কারখানা রয়েছে। এ কারখানার ২য়, ৩য় ও ৪র্থ তলায় আবাসিক ভাড়াটিয়া রয়েছে। যখন সেমাইয়ের চুলায় আগুন দেয়া হয়, তখন উপরে বসবাসরতরা আগুনের তাপে কষ্ট ও দূর্ভোগের শিকার হয়। এখানে যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে অঘ্নিদূর্ঘটনা। ধ্বসে পড়তে পারে ভবন। এ চারতলা ভবনের নীচ তলায় সেমাই কারখানার গ্যাসের চুলার উত্তাপে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ভবনের উপরের তলার বাসিন্দারা। ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল অনেক বছর পূর্বে। এ ভবনের মেয়াদ আরো অনেক বছর আগে ফুরিয়ে গেছে। সেমাই কারখানার তাপের ভবনের বিভিন্নস্থাানে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে।
ভবনটির বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় রাজাখালী ফায়ার সর্ভিসের ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম জানান, ভবনটি বেশ জারজীর্ণ ও ঝুকিপূর্ণ। তাই ভবন মালিককে বেশ কয়েকবার নোটিশে ভবন ভাঙ্গার তাগিদ দিয়েছি। তাছাড়া এ এলাকায় অন্যান্য ব্যবসা ও আবাসিক এলাকা থাকার কারনে সেমাই কারখানা সরিয়ে নিতে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। সেমাই কারখানাটি আবাসিক এলাকায় হওয়ায় পরিবেশেরও বিপর্যয় হচ্ছে। প্রতিনিয়ত নিদারুণ কষ্ট পাচ্ছে এখানকার বসবাসরতরা। এদিকে আবাসিক এলাকা থেকে পোশাক ও শিল্প কারখানা শিল্পজোানে সরিয়ে নেয়ার সরকারী সিদ্ধান্ত থাকলেও ওই সকল পোশাক ও অন্যান্য কারখানা সরিয়ে না নেয়ার কারণে প্রায়ই কোন না কোন দূর্ঘটনা ঘটে চলেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সিডিএ, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসনের কাছে এ ব্যাপারে কয়েকবার অভিযোগ দিয়েও কার্যত ফল আসেনি। রাজাখালী এলাকার বাসিন্দারা বলেন, অবিলম্বে এ ঝূঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙ্গে ফেলা হোক।