আজঃ বৃহস্পতিবার ২২ মে, ২০২৫

পরিচ্ছন্নকর্মীর চোখের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন চসিক মেয়র

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই প্রতিটি ওয়ার্ড পরিদর্শনে যাচ্ছেন। রোববার সকালে চসিকের ১৫ নম্বর বাগমনিরাম ওয়ার্ডে পরিদর্শনে গিয়ে মেয়র অনেকগুলো বিষয় দেখতে পান। গিয়েই বরাবরের মতো পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাজিরা নিচ্ছিলেন তিনি। তাদের নামে নানান অভিযোগ ও কাজের সুনাম শুনে জানান প্রতিক্রিয়াও। তবে এ সময় দুই পরিচ্ছন্নকর্মীর শারীরিক সমস্যা দেখতে পেয়ে ‘নরম সুরে’ তাদের সঙ্গে কথা বলে দায়িত্ব নিলেন চিকিৎসার।এ সময় শ্রবণশক্তিহীন জসিম উদ্দিনের সমস্যার কথা শোনেন এবং আরেক পরিচ্ছন্নকর্মী রহিম বাদশার চোখের সমস্যায় দেখতে পেয়ে চিকিৎসার দায়িত্ব নেন তিনি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পরিদর্শনে মেয়রকে কাছে পেয়ে পরিচ্ছন্নকর্মীরা তাদের সমস্যার কথা জানাচ্ছেন। পরিচ্ছন্নকর্মীদের অভিযোগ- তারা তাদের নিরাপত্তা সরঞ্জামের কিছুই পান না। পাশাপাশি ভ্যান নষ্ট হলে সেটিও তাদের পকেটের টাকা দিয়ে মেরামত করতে হয়। এছাড়াও, তাদের বেতনও মিলে দেরিতে। এদিকে একে একে পরিচ্ছন্নকর্মীদের হাজিরা নিচ্ছিলেন মেয়র। নাম শুনে পরিচ্ছন্নকর্মীরাও উপস্থিত হচ্ছিলেন মেয়রের সামনে। হাজির হওয়া পরিচ্ছন্নকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগে কেউ বলছেন কাজ করেন আবার কেউ বলছেন তারা কাজ করেন না। এমন সময় তালিকায় হঠাৎ নাম আসে রহিম বাদশা নামে এক পরিচ্ছন্নকর্মীর। মেয়র তার নাম ধরে ডাকতেই উপস্থিত একজন মজার সুরে বলেন, কিরে তুকে ১০ থেকে ১৫ দিন ধরে দেখা যায় না। তবে অনেকে আবার তিনি ভালো মানুষ- কাজ করেন নিয়মিত এমন কথাও বলেন।
যদিও এসবের কিছুই কর্ণপাত করেননি সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। পরিচ্ছন্নকর্মী রহিম বাদশা সামনে আসতেই তার চোখের দিকে নজর পড়ে মেয়রের। সঙ্গে সঙ্গে মেয়র জিজ্ঞেস করেন চোখের কি সমস্যা? পরিচ্ছন্নকর্মীও তার চোখের সমস্যার কথা মেয়রকে জানান। আর মেয়র ‘নরম সুরে’ জানিয়ে দেন ‘রহিম বাদশার চিকিৎসার দায়িত্ব চসিকের’।
তবে এর আগেই মেয়র তার চোখের পরীক্ষা নিয়েছেন। উপস্থিত জনগণের সামনে আঙ্গুল উঁচিয়ে ধরে জিজ্ঞেস করেছেন এখানে কতটি আঙ্গুল। যদিও কর্মীর স্বাভাবিক চোখে না দেখার কারণে তিনি ভুল বলেছেন। তখন মেয়র পুরোপুরি নিশ্চিত হন ওই পরিচ্ছন্নকর্মী আসলেই চোখের সমস্যায় ভুগছেন। তাই যেহেতু সে দিনের বেলায় কম দেখতে পান তার জন্য রাতে কাজ করা সমস্যার।
এ সময় মেয়রের কাছে ওই পরিচ্ছন্নকর্মী আবদার করেন যাতে তাকে রাতের বেলায় বাদ দিয়ে দিনের কাজ করার সুযোগ দেন। পরে মেয়র বিষয়টি অফিসিয়াল জানাবেন বলে জানান। তবে আগে চিকিৎসা করানোর কথা জানান মেয়র।
চোখের চিকিৎসার বিষয়ে মেয়রের দেওয়া আশ্বাসে খুশি বলে জানিয়েছেন পরিচ্ছন্নকর্মী রহিম বাদশা। তিনি বলেন, ১০ বছর ধরে সিটি করপোরেশনে কাজ করছি। আর এ চোখের সমস্যাও ১০-১৫ বছর ধরে। মেয়র মহোদয় আজ আমার চোখের অবস্থা দেখতে পেয়ে চিকিৎসা করানোর কথা বলেছেন। এতে আমি অনেক খুশি। তিনি আরো বলেন, মেয়র মহোদয়কে এটিও বলেছি, যাতে আমাকে দিনের বেলায় কাজ করার সুযোগ দেন। তাহলে আমার জন্য উপকার হবে।
এ সময় চসিক মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, এসব তো আসলে আগে থেকে হয়ে আসছে। আমি মাত্র কিছুদিন হলো দায়িত্ব নিয়েছি। আশা করি আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। শ্রমিকদের সেফটি মেজারমেন্টের জন্য যেটা যেটা দরকার, সেগুলো দেওয়া হবে। আগে কেন দেওয়া হয়নি; সেটা জানি না। তবে এখন থেকে সব ঠিক হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, পরিচ্ছন্নকর্মীরা যেহেতু বেতন পান। তাই তাদের দায়িত্ব ঠিকমতো কাজ করা। আর আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে তাদের সেফটি মেজারমেন্টের বিষয়গুলো দেখা। ছোট ছোট ভ্যানের কথা বলছে সেগুলো আমরা দেখছি। পরিচ্ছন্ন কর্মীরাও মেয়রের একটি অংশ জানিয়ে শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমি আশা করব আমি যেহেতু জনগণের সেবক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি; তারাও (পরিচ্ছন্নকর্মী) আমার একটা অংশ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা শূন্যে নামিয়ে আনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা ক্রমান্বয়ে শূন্যে নামিয়ে আনার নির্দেশনা দিয়েছেন। বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন’ বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন। সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, সিডিএসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে প্রধান উপদেষ্টা জলাবদ্ধতা নিরসন বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য অভিজ্ঞতার কথা শোনেন। এরপর তিনি জলাবদ্ধতা সামনের বর্ষা মৌসুমে আগের তুলনায় অর্ধেকে এবং ক্রমান্বয়ে শূন্যে নামিয়ে আনতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা অনেক রকম থিওরিটিক্যাল আলোচনা করেছি, সেসব আর করতে চাই না, আমরা চাই জলাবদ্ধতার সমস্যা থেকে চিরতরে বের হয়ে আসতে। কিন্তু সেটা একবারেই হবে না, তাই আমাদের ক্রমান্বয়ে অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। এ বছর যেহেতু বর্ষা মৌসুম ইতোমধ্যে এসে গেছে, তাই এবার সমস্যা পুরোপুরি সমাধান সম্ভব হবে না। কিন্তু গত কয়েক মাসে সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো সম্মিলিতভাবে যে প্রচেষ্টা চালিয়েছে, তাতে যদি এবছর আশানুরূপ ফল না আসে তাহলে তো সব কিছু মনে হবে জলে গেল।

চট্টগ্রামকে এ কাজে দৃষ্টান্ত স্থাপনের তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন হচ্ছে একটি প্রতীকী সমস্যা এবং খুবই জটিল সমস্যা। এই সমস্যা নিরসনের মাধ্যমে অন্যান্য শহর ও জেলা উৎসাহিত হবে, তাই চট্টগ্রামকে এ কাজে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে হবে। চট্টগ্রাম শহরের যে সক্ষমতা রয়েছে অন্য অনেক অনেক শহরের সেই সক্ষমতা নেই। তাই চট্টগ্রামের সকল প্রতিষ্ঠানকে সক্রিয় হতে হবে এবং নাগরিক সমাজকে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে নিজেদের সক্ষমতার প্রমাণ দিতে হবে।
সভায় অন্যান্যের মধ্েয সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক–ই–আজম
বীরপ্রতীক, প্রধান উপদেষ্টার স্পেশাল এনভয় লুৎফে সিদ্দিকী, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন প্রধান উপদেষ্টার

চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তরের স্মারক ফলক উন্মোচন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।বুধবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রামের সার্কিট হাউস থেকে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ফলক উন্মোচন করেন তিনি। এর আগে, চট্টগ্রাম বন্দরে মতবিনিময় সভা শেষে তিনি সড়ক পথে সার্কিট হাউসে এসে পৌঁছান। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম সফর করছেন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
উদ্বোধন ঘোষণা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কালুরঘাট ব্রিজে আমার অনেক স্মৃতি। এ সেতুর ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনেক। আজ এখানে বোয়ালখালীর বাসিন্দাও উপস্থিত আছেন। কালুরঘাট সেতু তাদের বহুল আকাঙ্খিত। এটি তৈরি হয়ে গেলে চট্টগ্রামবাসীর বহু কষ্টের অবসান হবে।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ