আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় অসামাজিক কার্যকলাপের দায়ে এনজিও কর্মীসহ আটক -২

পাবনা প্রতিনিধি :

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে সৌখিন নামের এক আরবান এনজিও কর্মচারী ও তার কথিত প্রেমিকাকে আটক করা হয়েছে।গত শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে উপজেলার পৌর সদরের কালিবাড়ি এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ তাদেরকে আটক করে। এর আগে ওই এনজিও কর্মীর ভাড়া বাসায় অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ জনতা আপত্তিকর অবস্থায় তাদের দুজনকে আটক করে আগে গণধোলাই দেয় পরে থানা পুলিশকে খবর দেয়। তবে পুলিশ বলছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জানা গেছে, সৌখিন নামের আরবান এনজিও এক কর্মী নিজ বাড়ি কুষ্টিয়া জেলাতে হলেও প্রায় বছরখানেক ধরে ভাঙ্গুড়া শাখায় চাকরি করেন। তার ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী ও একটি সন্তান রয়েছে। চাকুরীর সুবাদে ভাঙ্গুড়া পৌর সদরের কালিবাড়ি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেছেন। বেশ কিছুদিন হলো তার স্ত্রীর সাথে পারিবারিকভাবে বলিবনা হচ্ছিল না। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তাদের প্রায়ই কলহ বিবাদ লেগে থাকতো। এমন অবস্থায় ভাঙ্গুড়া বাজারের বকুলতলা রেল চত্ব্বর এলাকায় ফুচকা খেতে গিয়ে শাম্মি (ছদ্মনাম) নামের এক বিবাহিত নারীর সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। ওই নারীর স্বামী বিদেশ থাকায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এনজিও কর্মী সৌখিনীর সঙ্গে তাদের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই এনজিও কর্মীর বাসায় কেউ না থাকার সুবাদে একাধিকবার শাম্মি নামের ওই নারী এনজিও কর্মীর বাসায় এসে মধুর সময় কাটিয়েছেন। এভাবে প্রায় পাঁচ মাস কেটে গেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় জনতা তাদের দুজনকে অনৈতিক ও অসামাজিক অবস্থায় আটকের চেষ্টা করতে থাকে। ঘটনার দিন দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বাসায় কেউ না থাকায় সুযোগে পূর্বের ন্যায় সৌখিন নামের এনজিও কর্মী ওই মহিলাকে তার বাসায় নিয়ে আসেন। এরপর স্থানীয় জনতা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে ওই বাড়িতে প্রবেশ করে তাদের দুজনকে অসামাজিক অবস্থায় দুজনকে আটক করে প্রথমে গণধোলাই দেন এরপর থানা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ওসি তদন্ত মোঃ আব্দুল করিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের দুজনকে আটক করে ভাঙ্গুড়া থানায় নিয়ে আসেন।

ঘটনার বিষয় আরবান এনজিওর ভাঙ্গুড়া শাখার ব্যবস্থাপক আসমা খাতুন জানান, বিষয়টি অত্যন্ত লজ্জাজনক, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তার অপকর্মের দায় আরবান এনজিও নিবে না।

এ ঘটনার বিষয় আরবান এনজিওর এরিয়া ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে, শাখা ব্যবস্থাপক ও অন্যান্য কর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ধরনের নেককারজনক ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হবে।

ঘটনার বিষয়ে ওসি (তদন্ত)আব্দুল করিম জানান, অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে স্থানীয় জনতার হাতে আটক আরবান এনজিও কর্মী ও এক মহিলাকে আটক করে ভাঙ্গুড়া থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ