আজঃ সোমবার ১৭ নভেম্বর, ২০২৫

সব নির্বাচনে সরকারি চাকুরেরাও প্রার্থী হতে পারার প্রস্তাব:চট্টগ্রামে সংস্কার কমিশন

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, উপজেলা, ইউনিয়ন, পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশনের নির্বাচন একসঙ্গে করার প্রস্তাব করা হবে। নির্বাচনে যাতে সরকারি চাকুরেরাও প্রার্থী হতে পারেন সেই প্রস্তাব রাখার পাশাপাশি খরচের বহরও কমানো হবে। রোববার দুপুরে নগরের একটি হেটেলে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের অংশীজনদের সাথে মতবিনিময় সভায় কমিশনের চেয়ারম্যান ড. তোফায়েল আহমেদ এসব কথা জানান।
চাকরি করে মেয়র-কাউন্সিলর হতে বাধা নেই ইউরোপের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, চাকরি করে কিংবা অন্য পেশার সাথে সংযুক্ত এমন কারো মেয়র-কাউন্সিলর হতে বাধা নেই। কিন্তু ফুলটাইম এক্সিকিউটিভ বডিতে থাকলে তিনি এককভাবে করবেন না। উনি কিন্তু কয়েকজনকে নিয়ে একটা এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল করবেন। যেমন কলকাতা কিংবা লন্ডন সিটি করপোরেশনে মেয়র-কাউন্সিলর আছে। এটা এখানেও হতে পারে। চেয়ারম্যান ফুল টাইম করবেন দুই-তিনজন মেম্বারকে সাথে নিয়ে। বিকল্প প্রপোজালও আছে। এটাকে ৫ বছরের জন্য না করে দুই বছর অথবা একবছর করে রোটেটিং করা যায় কিনা। এগুলো সবগুলো বিবেচনা করা হবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. ফেরদৌস আরফিনা ওসমান, আবদুর রহমান, ড. মাহফুজ কবীর, মাশহুদা খাতুন শেফালী, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, ইলিয়া দেওয়ান, অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম প্রমুখ।
নির্বাচনের খরচ কমানোর কথা জানিয়ে সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচন আমাদের দেশে খুবই ব্যয়বহুল হয়েছে। ব্যয়বহুল দুই সেন্সে। একটা প্রার্থীর জন্য আরেকটা সরকারের জন্য। আমি নির্বাচন কমিশন থেকে তথ্য নিয়ে দেখেছি। গত সরকারের সময়ে যে নির্বাচনগুলো হয়েছে উপজেলা, ইউনিয়ন, পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশন এতে খরচ হয়েছে ২৩ হাজার কোটি টাকা। ১৯ লাখ লোককে নিয়োগ করা হয়েছে। দিন লেগেছে ২২৫ দিন। তাহলে এই জিনিসটা অনেক ব্যয়বহুল, অনেক সময় নষ্ট করে এবং অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার ফলে কাজকর্ম ব্যাহত হয়।
খরচের বহর না কমালে নির্বাচনে ভালো মানুষ আসতে পারবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, একটা কমন কথা আসছে যে, ভোট কেনাবেচা হবে। ভোটের মধ্যে টাকা খরচটাও শুধু সংসদীয় পদ্ধতিতে হচ্ছে তাতো নয়। একজন মেয়র হতে হলে ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে খরচ করতে হচ্ছে। এই খরচের বহরটা কিন্ত কমাতে হবে নির্বাচন থেকে। না হলে ভালো মানুষ আসতে পারবে না নির্বাচনে।
ড. তোফায়েল আহমেদ আরো বলেন, সেজন্য এটাকে আমরা একসাথে একইদিনে করতে পারি আইন পরিবর্তন করে তাহলে খরচ হবে ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকা। আর মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ দিন লাগবে। একবারেই নির্বাচন শেষ হয়ে যাবে। একেকটা নির্বাচন একেকসময়ে হলে সরকারের সময়, বাজেট এবং পরিকল্পনার সাথে সম্পর্ক থাকছে না।
দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিষয়ে বলেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন এটা কেউ চাচ্ছে না। কিন্তু দলের একেবারে প্রভাব মুক্ত হবে এটা কিন্তু হলফ করে কেউ বলতে পারবে না। যারা নির্বাচন করে তারা রাজনীতি তো করেন। একদল থেকে হয়তোবা একাধিক প্রার্থী দাঁড়াবে। আর যদি আমরা এটা করতে পারি— সরকারি চাকরি বা অন্য কিছু করার পরেও কাউন্সিলর-মেম্বার হতে বাধা নেই, তাহলে কোয়ালিটি চেঞ্জ হবে বলে আমার ধারণা। ইঞ্জিনিয়ার, প্ল্যানার— এরকম অনেকে আছেন। তারা যদি দাঁড়ান, তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন তাহলে নির্বাচনের কোয়ালিটি ভালো হবে।
শিক্ষকতার যোগ্যতার প্রশ্নটা সব জায়গায় বলা হচ্ছে। আমরা এটা একচুয়েলি বিবেচনা করছি। কিন্তু সংবিধানের সাথে যদি সাংঘর্ষিক হয় তাহলে এটা করা যাবে না। কারণ জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে যদি শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রশ্ন না থাকে তাহলে স্থানীয় নির্বচনের ক্ষেত্রে আনা কঠিন হবে। সেক্ষেত্রে আমরা সবাই মিলে আলাপ-আলোচনা করবো। সব জায়গাতেই একই রকম মতামত পাওয়া যাচ্ছে’ যোগ করেন তিনি।
প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়টি ভোটারদের নির্ধারণ করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ভোটারদেরকেই নির্ধারণ করতে হবে আমার এখানে যারা দাঁড়াচ্ছেন তার মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতা আছে কিন্তু নেতৃত্ব বা অন্যান্য যোগ্যতায় ঘাটতি থাকলে কাকে সিলেক্ট করবো।
সংসদীয় পদ্ধতি এবং রাষ্ট্রপতি পদ্ধতি নিয়ে বলেন, সংসদীয় পদ্ধতি এবং রাষ্ট্রপতি পদ্ধতি, এই দোলাচলের মধ্যে আমরা অনেকরকম মতামত পাচ্ছি। বিশেষ করে যখন মেম্বার, কাউন্সিলর, সাধারণ লোক এবং একাডেমিয়ান—তারা বেশিরভাগই সংসদীয় পদ্ধতির পক্ষে। চেয়ারম্যান এবং মেয়র সাহেবরা এটার বিরোধীতা করছেন। তারা বলছেন, এটা করলে যারা এতদিন চেয়ারম্যানে ছিলেন কিংবা মেয়রে ছিলেন তারা মেম্বারে দাঁড়াবেন কিভাবে? এর মানে মেম্বারশিপটাকে নেগলেট করা হচ্ছে চারদিক থেকে। মেম্বারের যদি কোয়ালিটি ইমপ্রুভ করতে হয় তাহলে মেম্বার কারা হবে তাতেও অনেকরকম পরিবর্তন করতে হবে।
‘না ভোট’ বিষয়ক প্রস্তাবনার বিষয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘না ভোটের বিষয়টা নির্বাচন সংস্কার কমিশনের বিষয়। এটা আগেও বলেছি যে এটার ক্ষেত্রে অনেক মতামত আমরা পেয়েছি। অনেক মানুষ না ভোটের পক্ষে মতামত দিয়েছেন। আমাদের কমিশন চিন্তা করছে, না ভোট রাখা যায়। কারণ এটা একটা চেকপয়েন্ট হবে। আমাদের দেশে ইতিহাস আছে ১৫২ থেকে ১৫৩টি সংসদ সদস্য পদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছে। না ভোট হলে এই সুযোগটা চলে যাবে। অন্যদিকে, কিছু মানুষ আছে যারা পছন্দের প্রার্থী না থাকায় ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছেন না। এ বিষয়ে সংস্কার কমিশনের সক্রিয় বিবেচনায় আছে।’
সংরক্ষিত আসন নিয়ে তিনি বলেন, সংরক্ষণ ব্যবস্থা যুগ যুগ ধরে চলবে এটাও যুক্তিসঙ্গত না। সেজন্য আগামী তিনটি নির্বাচনে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে সংরক্ষিত আসন থাকবে।
কবে নাগাদ কমিশন রিপোর্ট জমা দেবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রিপোর্ট জমা দেওয়ার সময় ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত অফিসিয়ালি আছে। আমরা চেষ্টা করবো সময়ের রিপোর্টটা দিয়ে দেওয়ার।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

নেত্রকোণা হাসপাতালে আলাদা ডায়ারিয়া ওয়ার্ড উদ্বোধন।

নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আলাদা ডায়রিয়া ওয়ার্ড আনুষ্ঠানিকভাবে ১৬ নভেম্বর (রবিবার) ৩য় তলায় উদ্বোধন করা হয়েছে। উদ্বোধন করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোমেনুল ইসলাম।

এসময় উপস্থিত ছিলেন মোহনগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুল ইসলাম রতন, প্রধান সহকারি মোঃ মাহবুবুর রহমান খান, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার শহিদুর রহমান, সিনিয়র স্টাফ নার্স নূরে ফারজানা প্রমুখ। মোহনগঞ্জ হাসপাতালের ডায়ারিয়া রোগীদের আলাদা কোন ওয়ার্ড ছিল না।

পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডের মাঝামাঝি খালি জায়গার মেঝেতে ডায়ারিয়া রোগীর চিকিৎসা করা হতো। ৪ নভেম্বর নেত্রকোণা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ গোলাম মাওলা নঈম এর কাছে আলাদা ওয়ার্ড খোলার জন্য মোহনগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুল ইসলাম রতন দাবী করলে তিনি মানবিক বিবেচনায় বিষয়টি আমলে নিয়ে আলাদা ওয়ার্ড খোলার নির্দেশ দেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোমেনুল ইসলামকে।

উক্ত নির্দেশের প্রেক্ষিতে আজকে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় আলাদা ডায়ারিয়া ও ডেঙ্গু ওয়ার্ড খোলা হয়। এতে ডায়ারিয়া রোগীরা অনেকটা ভোগান্তি থেকে রেহায় পেয়েছে আজ থেকে। মোহনগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি আজ বাস্তবায়ন হয়েছে। এলাকা বাঁশি নেত্রকোণা সিভিল সার্জনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

বোয়ালখালীতে নাম মাত্র ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়াই চলছে ফার্মেসি, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে সাধারণ মানুষ!

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে নিয়ম-নীতি না মেনেই চলছে ওষুধের ব্যবসা। অধিকাংশ ওষুধের দোকানের নেই কোনো ড্রাগ লাইসেন্স। ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই গড়ে তোলা হয়েছে এসব প্রতিষ্ঠান। ফার্মাসিস্টের স্থলে সাধারণ কর্মচারীরাই বিক্রি করছেন ওষুধ।ড্রাগ লাইসেন্স ও ফার্মাসিস্ট ছাড়া ওষুধ বিক্রির ক্ষেত্রে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না এসব ফার্মেসিতে। ড্রাগ লাইসেন্স বিহীন এসব ফার্মেসিতে বিক্রি করা হচ্ছে নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ। অনেকেই
এসব ফার্মেসির ওষুধ সেবন করে নানা ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়ছেন। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে প্রতিনিয়তে এসব ফার্মেসির বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে।

সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, উপজেলার পৌরসভা ও কধুরখীল,পশ্চিম গোমদন্ডী, শাকপুরা, সারোয়াতলী, পোপাদিয়া, আমুচিয়া, চরনদ্বীপ, শ্রীপুর-খরনদ্বীপ, আহল্লা করলডেঙ্গা ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে, হাটা-বাজারে, আনাচে কানাচে গড়ে উঠেছে প্রায় দুই শতাধিক ফার্মেসি। এর মধ্যে অধিকাংশ ফার্মেসির ড্রাগ লাইসেন্স নেই। লাইসেন্সবিহীন এসব ফার্মেসিতে অদক্ষ বিক্রয় কর্মীরা ওষুধ বিক্রি করছেন।

স্থানীয় কয়েকজন সচেতন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন ফার্মেসিতে আর বিশেষজ্ঞ লোকের দরকার হয় না। ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভরা বলে দেন কোন ওষুধ কী কাজে লাগে- সেই অনুযায়ী ওষুধ বিক্রি হয়। এ ছাড়া অনেক ওষুধের দোকানে নিম্নমানের ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভরা ওষুধ বিক্রি করে দেন। ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রির ক্ষেত্রে ভালোমানের ওষুধের চেয়ে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি কমিশন নেওয়া হচ্ছে। এতে বেশি লাভের আশায় ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রিতে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন ওষুধ ব্যবসায়ীরা। সাধারণ মানুষও কোন ওষুধটি আসল ও কোনটি ভেজাল তা চিহ্নিত করতে অপারগ। এর ফলে এ ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধের বাণিজ্য দিন দিন জমজমাট হচ্ছে। আর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। এ ছাড়া অসচেতন রোগীদের চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনে উল্লিখিত ওষুধের একই গ্রুপের নিম্নমানের ওষুধ সরবরাহ করার অভিযোগও রয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাফরিন জেরিন জিতি বলেন, ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়া ফার্মেসি ব্যবসা পরিচালনা করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, আমরা নিয়মিত মনিটরিং করছি। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে এই বিষয়ে অবহিত করে ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়া ফার্মেসির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ