আজঃ বুধবার ১২ মার্চ, ২০২৫

অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে শিশু হাসপাতাল

গোলাম কিবরিয়া রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি

রাজশাহী শহরের বহরমপুর রেল ক্রসিংয়ের দক্ষিণে লক্ষ্মীপুর কড়াইতলা এলাকায় দিঘির পাড়ে ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত ২০০ শয্যার শিশু হাসপাতালটি। অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। ভবন নির্মাণকাজের জন্য নিয়োজিত ঠিকাদার নিজের

লোক দিয়ে প্রায় চার বছর ধরে হাসপাতাল ভবনটি পাহারা দিচ্ছেন। তারপরও চুরি হয়ে যাচ্ছে শিশু হাসপাতালটির সরঞ্জাম। ঠিকাদার বারবার চিঠি দিলেও সিভিল সার্জনের কার্যালয় নবনির্মিত শিশু হাসপাতালটি বুঝে নিচ্ছে না।

অন্যদিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে প্রতিদিন গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিচ্ছে শত শত শিশু। শুধু শয্যার অভাবে রামেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ফ্লোরে এমনকি সংশ্লিষ্টদের চলাচলের করিডরে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছে অনেকের আদরের সন্তান। চলমান শৈত্যপ্রবাহ ও ঠান্ডা বাতাসের মধ্যে রামেক হাসপাতালের করিডরে শয্যা পেতে চিকিৎসাধীন শিশু ও অভিভাবকদের দুর্ভোগ বর্ণনার অযোগ্য।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আট বছর আগে ২০১৬ সালে রাজশাহী শিশু হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। মূল ভবন নির্মাণকাজ তিন বছরে শেষ হয়। এরপর ঠিকাদারকে আরো কিছু বাড়তি কাজ দেওয়া হয়। সেই কাজও ২০২৩ সালের জুনের আগেই শেষ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অর্থাৎ দেড় বছর আগে নতুন ভবনসহ অন্যান্য সব কাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়েছে। তবে ২০০ শয্যার এই শিশু হাসপাতালটি এখনো বুঝে নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর চিঠি দিয়ে ভবনটি হস্তান্তরের জন্য অনুরোধ করা হয়।

ঠিকাদারের ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ সরকার জানান, রাজশাহী শিশু হাসপাতাল ভবনটি তারা পাহারা দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। এভাবে আর পাহারা দিয়ে সরঞ্জাম টিকিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তাদের পাহারাদার কিছু বলতে গেলেই চোরেরা কাচ ভেঙে দিয়ে যাচ্ছে। জানালার অ্যালুমিনিয়াম ফ্রেম খুলে নিয়ে যাচ্ছে। তারা হাসপাতাল ভবনটি বুঝে নিতে কত বার চিঠি দিয়েছেন; তা মনে করতে পারছেন না। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভবন হস্তান্তরের আহ্বানে সাড়া দিচ্ছেন না।

রাজশাহী শিশু হাসপাতাল ভবন বুঝে না নেওয়ার বিষয়ে রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু হায়াত মুহাম্মদ শাকিউল আজম বলেন, ‘সমস্যা গণপূর্তের নয়। সমস্যা সিভিল সার্জন তথা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতাল বুঝে নেওয়া হচ্ছে না, এটাই সমস্যা। আমরা ভবন নির্মাণকাজ শেষ করেছি। ভবনটা সিভিল সার্জনের বুঝে নেওয়ার কথা। তিনি কেন বুঝে নিচ্ছেন না? আমরা জানি না।’

সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ‘আমরা কয়েক বার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছি। গত ৫ আগস্টের পর থেকে সাড়া মিলেনি। তিনিও বদলি হয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি আর কিছু বলতে পারছি না।’

এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন রাজশাহী জেলার সভাপতি আহমেদ শফি উদ্দিন বলেন, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গেলে খুব করুণ দৃশ্য দেখা যায়। কী মানবেতরভাবে আমাদের শিশুদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। শিশু হাসপাতালের জন্য জনগণের অর্থ ব্যয় তখনই সার্থক, যখন তা জনগণের উপকারে আসে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাজশাহী শিশু হাসপাতাল ভবন অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে হাসপাতালটি অবিলম্বে চালু করা উচিত।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

অটোরিক্সায় মহিলাকে হেনস্তা, অবশেষে গ্রেফতার

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় নারীকে হেনস্তা করা মো. রানাকে (৪২) নওগাঁ থেকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ) অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।

বুধবার (১২ মার্চ) সকালে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আটককৃত রানা রাজশাহী মহা নগরীর কেশবপুর এলাকার বাসিন্দা।

জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে অটোরিকশায় বসে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করে এক নারীকে হেনস্তা করেন রানা। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে রানাকে আটকের দাবি ওঠে। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাকে আটকের জন্য নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ জানতে পারে নওগাঁয় অবস্থান করছে রানা। এরপর রাতে নওগাঁয় অভিযান চালিয়ে রানাকে আটক করে পুলিশ।

এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, রানাকে নওগাঁ থেকে আটক করে রাজশাহীতে নিয়ে আসা হচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

ঠাকুরগাঁওয়ে পঙ্গু ও দুস্থ শ্রমিকের মাঝে চেক বিতরণ ।

ঠাকুরগাঁওয়ে জেলা ট্রাক ট্যাংকলরী, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ৫৭ জন পঙ্গু-দুস্থ ও অসহায় শ্রমিকের মাঝে চেক বিতরণ করা হয়েছে। ১ মার্চ শনিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা ট্রাক ট্যাংকলরী, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ শ্রমিক ইউনিয়নের প্রধান কার্যালয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে চেকগুলো বিতরণ করেন জেলা ট্রাক ট্যাংকলরী, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ শ্রমিক ইউনিয়নের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ।

চেক বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মামুনুর রশিদ মামুন, ঠাকুরগাঁও জেলা ট্রাক ট্যাংকলরী কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু কাশেম, দপ্তর সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাবু,সড়ক সম্পাদক সাকিব বাবু, ঠাকুরগাঁও জেলা ট্রাক ট্যাংকলরী, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ভুট্ট, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জব্বার, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমানসহ নেতা কর্মীরা। পরে এক আলোচনা শেষে ৫৭ জন পঙ্গু অসহায় ও দুস্থদের মাঝে প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার চেক বিতরণ করা হয়।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ