আজঃ বুধবার ১২ মার্চ, ২০২৫

চমেক হাসপাতাল বার্ণ ইউনিট

গাছ লাগিয়ে প্রতিবাদ পরিবেশকর্মীদের

স ম জিয়াউর রহমান, চট্টগ্রাম।

পাহাড়ে যদি আর একটিও কোপ পড়ে তাহলে এখানে পরিবেশকর্মী শুধু নয়, চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে-হুশিয়ারি

বিগত কয়েকমাস আগেও পাহাড়টি ঠাঁয় দাড়িয়ে ছিল স্বমহিমায়। চট্টগ্রাম নগরের কাটা পাহাড় সংলগ্ন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ছাত্রাবাসের পাশেই বিশাল এই পাহাড়টির সামনে একটি বিশেষায়িত বার্ণ ইউনিট স্থাপনের উদ্যোগ নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পাহাড়কে রেখে এই ইউনিট করার কথা থাকলেও আচমকাই বিশাল এই পাহাড়টি কাটা শুরু করে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সবার অগোচরে পাহাড় কাটার এই যজ্ঞ চট্টগ্রামে কর্মরত পরিবেশকর্মী ও বিভিন্ন সংগঠনের নজরে পড়ায় প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। হাসপাতাল

কর্তৃপক্ষের সাথে একাধিক বৈঠক হয় পরিবেশ সংগঠন ও কর্মীদের। সেখানে কর্তৃপক্ষ পাহাড়টি রেখেই বার্ণ ইউনিট গড়ে তোলার অঙ্গীকার করে। কিন্তু ২ দিন না যেতেই সবাইকে ফাঁকি দিয়ে প্রধান গেইট বন্ধ করে রাতে ও দিনে স্কেভেটর দিয়ে পুরো পাহাড়টির অর্ধেক অংশ কেটে সাবাড় করে ফেলে কর্তৃপক্ষ। কেটে ফেলা হয় শতবর্ষী বেশ কয়েকটি গাছও। উপড়ে ফেলা হয় গাছগুলোর শেকরও। পরিবেশ অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা, এবং কোনো ধরণের ছাড়পত্র না নিয়েই পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষাকারী পাহাড় কেটে সাবাড় করার দৃশ্যটি চোখে পড়ে পরিবেশকর্মীদের।

গতকাল মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে সেই পাহাড়ে অবস্থান নেন চট্টগ্রামের পরিবেশকর্মী ও পরিবেশ বিষয়ক বিভিন্ন সংগঠন। সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশের পাশাপাশি প্রায় আড়াই শতাধিক গাছ লাগিয়ে প্রতিবাদ করেন তারা। পরিবেশ কর্মীদের আহবানে সাড়া দিয়ে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগও অংশ নেয় গাছ লাগানোর কর্মসূচিতে। সরকারি এই সংস্থাটি আড়াই শতাধিক গাছ নিয়ে পরিবেশকর্মীদের সাথে নিয়ে রোপন করে দেন পাহাড়টিতে।

মঙ্গলবার এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন পরিবেশবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মাহফুজুর রহমান, উদ্ভিদ বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. এম এ গফুর, ডা. মনজুরুল করিম বিপ্লব, পরিবেশকর্মী ঋতু পারভীন, রাশেদ সুফিয়ান, মো. শফিকুল ইসলাম খান, মাহমুদ মুরাদ, এআরটি রাহী, মো. রহিম, আনোয়ার জাহান রোজি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এমএ হাশেম রাজুসহ পরিবেশ সংগঠন সম্মিলিত পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন, সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), ভোরের আলোসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন।

প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, আমরা উন্নয়নের বিপক্ষে নই। চট্টগ্রামে বার্ণ ইউনিটের অত্যন্ত প্রয়োজন। কিন্তু সেটি পাহাড় কেটে, পরিবেশ ধ্বংস করে নয়। কয়েকজনকে বাঁচানোর নামে লক্ষ কোটি মানুষকে মৃত্যুঝুঁকিতে ফেলার অধিকার কারও নেই। কয়েকজন মানুষকে অক্সিজেন দিতে গিয়ে লক্ষ কোটি মানুষের প্রাকৃতিক অক্সিজেন ধ্বংস করার অধিকার আপনাদের নেই। পরিবেশকর্মীরা বলেন, একাধিকবার বৈঠক করে পাহাড় না কাটার অঙ্গীকার করেও রাতের আঁধারে পাহাড় কেটে সাবাড় করার নির্দেশদাতা প্রতিটি পাহাড়কখেকো, বার্ণ ইউনিটসংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কর্মকর্তা, প্রকৌশলীসহ যারা এই পাহাড় কাটার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষাভাবে জড়িত

তাদেরকে অতিদ্রুত আইনের আওতায় আনার জোড় দাবি জানাচ্ছি। সেই সাথে হুঁশিয়ার করে দিয়ে তারা বলেন, এই পাহাড়ে যদি আর একটিও কোপ পড়ে তাহলে এখানে পরিবেশকর্মী শুধু নয়, চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে। যারা পাহাড় কাটবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা ভঙ্গ করেছে তাদেরও শেষবারের মতো হুঁশিয়ারি দেয়া যাচ্ছে- ছাড় দেয়া হবে না। প্রকৃতি-পরিবেশ ধ্বংস করে কোনো উন্নয়ন কাজ আমরা চাই না।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

পাহাড় কেটে ভবন নির্মাণ : খুলশী ক্লাবকে ৪৮ লাখ টাকা জরিমানা।

চট্টগ্রাম নগরের খুলশীর ফয়েজ লেক এলাকায় পাহাড় কেটে ভবন নির্মাণের দায়ে খুলশী ক্লাব কর্তৃপক্ষকে ৪৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ আরোপ করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) সোনিয়া সুলতানা এ ক্ষতিপূরণ আরোপ করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন একই দপ্তরের পরিদর্শক রুম্পা শিকদার। তিনি জানান, খুলশী থানাধীন ফয়েজ লেক এলাকায় খুলশী ক্লাব সংলগ্ন পাহাড় কেটে ভবন নির্মাণের দায়ে ৪৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ৯ মার্চ দপ্তরের সিনিয়র কেমিস্ট রুবাইয়াত তাহরীম সৌরভ, পরিদর্শক রুম্পা শিকদার, মো. সাখাওয়াত হোসাইন, মনির হোসেনসহ এনফোর্সমেন্ট টিম পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
পরিদর্শনকালে তারা দেখতে পান খুলশী ক্লাব সংলগ্ন পাহাড়টি ঝুঁকিপূর্ণভাবে কাটা হয়েছে। খুলসী ক্লাব কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাহাড় কেটে তারা ক্লাবের সীমানার ভিতরে অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ

পরিচালনা করছিলেন। জানা যায় ওই ভূমিটির শ্রেণি পাহাড় ও টিলা। গত ১১ মার্চ পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত শুনানিতে বলা হয়, ৪৮ হাজার ৭৫০ ঘনফুট পাহাড় সরকারের অনুমতি ছাড়া কেটে পরিবেশের ক্ষতিসাধন করা হয়েছে। যা পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ অনুসারে দণ্ডনীয় অপরাধ। ওই আইনের ৬ এর খ ধারা অনুসারে ৪৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ আরোপ করা হলো।

বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে রিকশাচালকের মৃত্যু

আ.লীগ নেতার ফ্ল্যাটে অভিযান নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ, রিকশাচালকের মৃত্যু
রাজশাহীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় ছুরিকাঘাতে আহত রিকশাচালক গোলাম হোসেন রকি (৫৮) মারা গেছেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ২ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনি মারা যান।

রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কে বিশ্বাস জানান, ওই সংঘর্ষের সময় রিকশাচালক গোলাম হোসেনের বুকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল। এছাড়া তার মাথায় আঘাত ছিল। ঘটনার পর থেকেই তার জ্ঞান ফেরেনি। সন্ধ্যার পর তিনি মারা গেছেন।

বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক হাসান বলেন, আহত রিকশাচালক মারা গেছে বলে শুনেছি। কেউ অভিযোগ দিলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরের দড়িখড়বোনা এলাকায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। আগের দিন রাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতার ফ্ল্যাটে অভিযান এবং তার ভাইকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ান বিএনপির দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলে ওই সংঘর্ষ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রিকশাচালক গোলাম হোসেন ওই রাতে রিকশা রেখে হেঁটে ভাড়া বাসায় যাচ্ছিলেন। তখন একটি গ্রুপ তাকে আরেক গ্রুপের লোক ভেবে ছুরিকাঘাত করে। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

নিহত গোলাম হোসেনের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার সাহেবপাড়ায়। রাজশাহী নগরের দড়িখড়বোনা মহল্লায় তিনি স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন। শহরে রিকশা চালিয়ে তিনি সংসার চালাতেন।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ