আজঃ শুক্রবার ২০ জুন, ২০২৫

চৌদ্দগ্রামের আলকরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

জহিরুল ইসলাম সুমন চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান করছে আলকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিন সকালে বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকেন অভিভাবকরা। দ্রুত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন ভবন নির্মাণ করতে শিক্ষা উপদেষ্টাসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

মঙ্গলবার সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, আলকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে , নারানকুরি, বাকগ্রাম, ধোপাখিলা, আলকরা ও জঙ্গলপুর গ্রামের দেড় শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। ১৯৯৮ সালে বিদ্যালয়ের টিনসেড ঘর ভেঙে একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। পাঠদানে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ২০০২ সালে একই ভবনের দোতলা নির্মাণ করে সরকার। ছয় কক্ষ বিশিষ্ট দোতলা ভবনের ১৫টিরও বেশি পিলারে গত কয়েক বছর ধরে ফাটল দেখা দিয়েছে।

প্রতিদিনই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে শ্রেণীকক্ষে পড়ালেখা করে। শিক্ষার্থীদের ন্যায় দূর্ঘটনার শঙ্কায় থাকেন শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ। এনিয়ে বেশ কয়েকবার শিক্ষকদের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারবৃন্দ বিদ্যালয় পরিদর্শন করে প্রকৃত উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ‘পরিত্যক্ত ঘোষণা’ এবং নতুন করে ভবন নির্মাণে গত সরকারের সংসদ সদস্য মুজিবল হকসহ কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী নাবিলা আক্তার ও চতুর্থ শ্রেণীর তানিশা আফরিন বলেন, ‘আমরা আতঙ্কে পড়ালেখা করছি। উপরের স্যারদের বলবেন, আমাদের একটি নতুন বিল্ডিং করে দিতে। এটাই একমাত্র অনুরোধ’।

নারানকুরি গ্রামের খোরশেদ আলম, রহিমা বেগম, জাহাঙ্গীর হোসেন ও আলকরা গ্রামের মোঃ বাদল বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সন্তানদের পাঠদানে পাঠিয়ে শঙ্কায় থাকতে হয়, কখন দূর্ঘটনা ঘটে। শিগগিরই নতুন ভবন নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আহবান জানাচ্ছি’।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সেলিম মিয়া ও সাব্বির হোসেন বলেন, ‘বিল্ডিংয়ের ১৭-১৮টি পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। আরেক সহকারী শিক্ষক ইশরাত জাহান বাবলী বলেন আমরা সব সময় ভয়,ও আতংকের মধ্যে থাকি, এই ভয়,ও আতংকের মধ্যে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান করাই। উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার প্রান্তিক সাহা বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবহিত করেছেন। বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ভর্তি করাতে চায় না’।

প্রধান শিক্ষক রোকসানা পারভিন বলেন, ‘একটি মাত্র ভবনেই চলছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। আর এ ভবনের অধিকাংশই পিলারেই ফাটল দেখা দিয়েছে এবং কিছু পিলারের পলেস্তর খসে পড়েছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে অভিভাবকরা শঙ্কায় থাকেন। দ্রুত বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আহবান জানাচ্ছি’।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল হুদা তালুকদার বলেন, ‘বিদ্যালয়টি সরেজমিন পরিদর্শন করে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আবারও অবহিত করা হবে’।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রামে থানায় অস্ত্র লুটে জড়িত ‘ব্লেড মাসুম’ গ্রেফতার।

চট্টগ্রাম মহানগরের পাহাড়তলী থানায় সংঘটিত অস্ত্র লুটের ঘটনার সঙ্গে ‘জড়িত’ সাইদুর রহমান মাসুম ওরফে ‘ব্লেড মাসুম’ (২৮) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) নগর পুলিশ ভবনের কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান সিএমপি’র পশ্চিম জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূঁইয়া। এ সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি ৭ দশমিক ৬২ এমএম পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি ও দুটি ম্যাগাজিন।

‘ব্লেড মাসুম’ দীর্ঘদিন ধরে নগরজুড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল জানিয়ে জানিয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, পাহাড়তলী থানার ওসি মো. বাবুল আজাদের নেতৃত্বে এসআই জসীম উদ্দীন ও সঙ্গীয় ফোর্স বুধবার (১৮ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে জেলেপাড়া রানী রাসমণিঘাট ওভারব্রিজের নিচে চেকপোস্ট পরিচালনা করে। রাত ১২টা ৫০ মিনিটে মাসুম পায়ে হেঁটে সাগরিকা রোড চৌরাস্তার দিকে যাওয়ার সময় সন্দেহ হলে পুলিশ তাকে থামতে বলে। এসময় সে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে ধাওয়া দিয়ে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, তল্লাশিতে মাসুমের কোমরে বেল্টে ঝোলানো অবস্থায় একটি কালো রঙের পিস্তলের খোলস, একটি ৭.৬২ এমএম পিস্তল, লোড করা ম্যাগাজিনে চার রাউন্ড গুলি এবং একটি খালি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়।
উপ-পুলিশ কমিশনার হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূঁইয়া বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম জানায়, গত ৫ আগস্ট পাহাড়তলী থানায় হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটে

জড়িত সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে সে অস্ত্র ও গুলি সংগ্রহ করে। এরপর তা নিজের হেফাজতে রেখে বিভিন্ন ছিনতাই ও ডাকাতির কাজে ব্যবহার করে আসছিল। মাসুম ও তার অজ্ঞাতনামা সহযোগীরা পাহাড়তলী, টোল রোড, পতেঙ্গা সৈকত এবং বন্দর এলাকায় পথচারী, সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটক, যাত্রী ও পণ্যবাহী গাড়িচালকদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মালামাল লুটে নিত। তার বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতির একটি পুরনো মামলাও রয়েছে।

কক্সবাজারের সাবেক ডিসি-জেলা জজের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ১ জুলাই।

ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত নথি জালিয়াতির মামলায় কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক, সাবেক জেলা ও দায়রা জজসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য ১ জুলাই সময় নির্ধারণ করেছেন আদালত। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান এ আদেশ দিয়েছেন।

এদিন মামলার ধার্য তারিখে অন্তবর্তী জামিনে থাকা পাঁচ আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। এরা হলেন- কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. রুহুল আমিন, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার, ওই আদালতের স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদ, আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কৌঁসুলি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাবলু বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামিরা আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। তাদের অন্তবর্তী জামিনের মেয়াদ অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ১ জুলাই পর্যন্ত বর্ধিত করেছেন আদালত।

মামলার নথিপত্র পর্যালোচনায় জানা গেছে, কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি এলাকায় কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দা এ কে এম কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর আদালতে মামলাটি দায়ের করেছিলেন।এতে কক্সবাজারের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনকে প্রধান আসামি করে ২৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য দুদককে নির্দেশ দেন।

কিন্তু তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ মো. সাদিকুল ইসলাম তালুকদার মামলার এক নম্বর আসামি রুহুল আমিনের নাম বাদ দিয়ে নথিপত্র পাঠান দুদকের প্রধান কার্যালয়ে।জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনের নাম বাদ দেওয়ার ঘটনা জানতে পেরে একই আদালতে বাদী কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন, জেলা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা করেন।

ওই মামলার তদন্ত শেষে দুদকের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন ২০২৪ সালের ১ জুলাই আদালতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।তদন্তে নথি জালিয়াতির ঘটনায় সহযোগিতা করায় সাবেক জেলা প্রশাসক ও জেলা জজ ছাড়াও আসামি করা হয় বাদীপক্ষের

আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. জাফর আহমদকে।দুদকের কক্সবাজার আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবদুর রহিম ও কক্সবাজারের সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস এম শাহ হাবিবুর রহমানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি কক্সবাজারের বিশেষ জজ আদালতে জালিয়াতির বিষয়ে দুদকের দেওয়া প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হয়। ২৩ জানুয়ারি আদালত ওই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে অভিযুক্ত পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে তারা আদালতে হাজির হয়ে অন্তর্র্বতী জামিন পান। সম্প্রতি মামলাটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারের জন্য স্থানান্তর করা হয়।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ