আজঃ শুক্রবার ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

চৌদ্দগ্রামের আলকরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

জহিরুল ইসলাম সুমন চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান করছে আলকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিন সকালে বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকেন অভিভাবকরা। দ্রুত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন ভবন নির্মাণ করতে শিক্ষা উপদেষ্টাসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

মঙ্গলবার সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, আলকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে , নারানকুরি, বাকগ্রাম, ধোপাখিলা, আলকরা ও জঙ্গলপুর গ্রামের দেড় শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। ১৯৯৮ সালে বিদ্যালয়ের টিনসেড ঘর ভেঙে একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। পাঠদানে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ২০০২ সালে একই ভবনের দোতলা নির্মাণ করে সরকার। ছয় কক্ষ বিশিষ্ট দোতলা ভবনের ১৫টিরও বেশি পিলারে গত কয়েক বছর ধরে ফাটল দেখা দিয়েছে।

প্রতিদিনই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে শ্রেণীকক্ষে পড়ালেখা করে। শিক্ষার্থীদের ন্যায় দূর্ঘটনার শঙ্কায় থাকেন শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ। এনিয়ে বেশ কয়েকবার শিক্ষকদের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারবৃন্দ বিদ্যালয় পরিদর্শন করে প্রকৃত উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ‘পরিত্যক্ত ঘোষণা’ এবং নতুন করে ভবন নির্মাণে গত সরকারের সংসদ সদস্য মুজিবল হকসহ কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী নাবিলা আক্তার ও চতুর্থ শ্রেণীর তানিশা আফরিন বলেন, ‘আমরা আতঙ্কে পড়ালেখা করছি। উপরের স্যারদের বলবেন, আমাদের একটি নতুন বিল্ডিং করে দিতে। এটাই একমাত্র অনুরোধ’।

নারানকুরি গ্রামের খোরশেদ আলম, রহিমা বেগম, জাহাঙ্গীর হোসেন ও আলকরা গ্রামের মোঃ বাদল বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সন্তানদের পাঠদানে পাঠিয়ে শঙ্কায় থাকতে হয়, কখন দূর্ঘটনা ঘটে। শিগগিরই নতুন ভবন নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আহবান জানাচ্ছি’।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সেলিম মিয়া ও সাব্বির হোসেন বলেন, ‘বিল্ডিংয়ের ১৭-১৮টি পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। আরেক সহকারী শিক্ষক ইশরাত জাহান বাবলী বলেন আমরা সব সময় ভয়,ও আতংকের মধ্যে থাকি, এই ভয়,ও আতংকের মধ্যে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান করাই। উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার প্রান্তিক সাহা বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবহিত করেছেন। বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ভর্তি করাতে চায় না’।

প্রধান শিক্ষক রোকসানা পারভিন বলেন, ‘একটি মাত্র ভবনেই চলছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। আর এ ভবনের অধিকাংশই পিলারেই ফাটল দেখা দিয়েছে এবং কিছু পিলারের পলেস্তর খসে পড়েছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে অভিভাবকরা শঙ্কায় থাকেন। দ্রুত বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আহবান জানাচ্ছি’।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল হুদা তালুকদার বলেন, ‘বিদ্যালয়টি সরেজমিন পরিদর্শন করে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আবারও অবহিত করা হবে’।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চৌদ্দগ্রামে শিবির নেতা হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সাবেক শিবির সভাপতি সাহাব উদ্দিন পাটোয়ারীর খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলে করেছে ছাত্রশিবির। বৃহস্পতিবার বিকেলে মিছিলটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম বাজার প্রদক্ষিণ করে। এরআগে চৌদ্দগ্রাম নজমিয়া কামিল মাদরাসা মাঠে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা জামায়াতের আমীর মাহফুজুর রহমান। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা শিবিরের সভাপতি

মহিউদ্দিন রনির সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী জাহিদুল ইসলাম চৌধুরীর পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পৌর জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ ইব্রাহিম, নায়েবে আমীর কাজী এয়াছিন, সেক্রেটারী মোশারফ হোসেন ওপেল, শহীদ সাহাব উদ্দিনের পিতা জয়নাল পাটোয়ারী, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা শিবিরের সাবেক সভাপতি আবদুর রব ফারুকী, জেলা পূর্বের সাবেক সভাপতি ইব্রাহিম ফয়সাল, সাবেক সেক্রেটারী

ফরিদুজ্জামান রুবেল, অফিস সম্পাদক মোশারফ হোসাইন, উপজেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি আল আমিন রাসেল, রবিউল হোসেন মিলন, মাঈন উদ্দিন, কফিল উদ্দিন, জোবায়ের মাসুম, উপজেলা শিবিরের সভাপতি মোজাম্মেল হক, জেলা শিবিরের সাবেক অফিস সম্পাদক রবিউল করিম মজুমদার শামীম, সাবেক সাহিত্য সম্পাদক বোরহান উদ্দিন। এ সময় বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত শিবিরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে পৌর এলাকার চান্দিশকরা গ্রামে নিজ বাড়িতে মায়ের সামনে থেকে উপজেলা শিবিরের সভাপতি সাহাব উদ্দিন পাটোয়ারীকে আটক করে পুলিশ। পরে ফ্যাসিস্ট মুজিবুল হকের নির্দেশে ও স্থানীয় আ’লীগ নেতাদের পরামর্শে পরদিন মহাসড়কের লালবাগ এলাকায় সাহাব উদ্দিন পাটোয়ারীর মাথায় গুলি করে হত্যা করে। আমরা এই সরকারের নিকট অবিলম্বে খুনিদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করছি।

চট্টগ্রামে পাউবোর প্রকল্পে নিম্নমানের সরজ্ঞাম ব্যবহারের অভিযোগ

চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর মেগা প্রকল্পে বেড়িবাঁধের ব্লক তৈরিতে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে নিম্নমানের বালি ও পাথর ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। তবে সেরকম হওয়ার কথা নয় বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। যদি অনিয়ম দেখা যায়, তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তারা। জানা যায়, ২০২১ সালের মে মাসে একনেক সভায় অনুমোদিত পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পটিয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের আওতায় ১১৫৮ কোটি টাকা ও শ্রীমাই

খালে মাল্টিপারপাস হাইড্রোলিক ইলেভেটর ড্র্যাম নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ১৩৩ কোটি টাকাসহ মোট প্রায় ১৩শ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। এতে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় বারবার কাজের গুণগত মান বজায় রাখার জন্য তাগিদ দিলেও ঠিকাদার ও পাউবো কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে লবণাক্ত বালি ও পাথর ব্যবহার করে ব্লক তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও ব্লক তৈরির সময় পাউবোর কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার নিয়ম থাকলেও সেখানে কাউকে দেখা যায়নি। গত ২৪ জানুয়ারি উপজেলার ভাটিখাইন ইউনিয়নের বাইপাস

পয়েন্টে সরেজমিন পরিদর্শনকালে এমন চিত্রের দেখা মেলে । উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্লক তৈরির পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, ১:২.৫:৫ মাত্রার ঢালাই টেন্ডারে থাকলেও বালি ও পাথরের পরিমাণ বেশি এবং সিমেন্টের পরিমাণ কম দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ঢালাইয়ের পর কমপক্ষে ২১ দিন ব্লক ভিজিয়ে রাখার নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। রোদ বেশি হলে এই সময়কাল আরও বৃদ্ধি পায়, কিন্তু তা অনুসরণ করা হচ্ছে না। সিডিউল অনুযায়ী, বালির এফএম কমপক্ষে ১.৫ হওয়া উচিত, কিন্তু তাতে ব্যবহার করা হচ্ছে এফএম ১ থেকে .৮ সাইজের কাঁদাযুক্ত লবণাক্ত বালি।

ওই এলাকার বাসিন্দা মফিজুর রহমান বলেন,স্থানীয় প্রভাবশালী মহলকে দিয়ে বালি ও পাথর সরবরাহ করানোর কারণে ঠিকাদাররা ইচ্ছেমত লুটপাট করছে। কাজের গুণগত মান একেবারেই নিশ্চিত করা হচ্ছে না। অপর এক বাসিন্দা নাজমুল হোসেন বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর ধরে সিন্ডিকেটের সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কয়েকজন প্রকৌশলী পরস্পর যোগসাজশে উন্নয়নের নামে লুটপাট করেছে। পটিয়ায় পাউবোর প্রকল্পগুলোতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। তিনি আরও বলেন,পাউবোর প্রকল্প মানেই যেন দুর্নীতির মহোৎসব।

বিগত বছরগুলোতে যারা লুটপাট করেছে, তাদের সহযোগীরাই এখনও একই কাজ করছে। তবে পাউবো চট্টগ্রাম পওর বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ জানান, তারা পাথর,বালি, সিমেন্ট ইত্যাদি নির্মাণসামগ্রী পরীক্ষা করেছেন এবং প্রকল্প সাইট ও তৈরিকৃত ব্লক সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন।

তিনি জানান, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ব্লক তৈরি করা হলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রকল্প পরিচালক খ.ম জুলফিকার তারেক বলেন, ‘আমার জানা মতে, এরকম হওয়ার কথা না। যদি অনিয়ম দেখা যায়,তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ