
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান করছে আলকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিন সকালে বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকেন অভিভাবকরা। দ্রুত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন ভবন নির্মাণ করতে শিক্ষা উপদেষ্টাসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, আলকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে , নারানকুরি, বাকগ্রাম, ধোপাখিলা, আলকরা ও জঙ্গলপুর গ্রামের দেড় শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। ১৯৯৮ সালে বিদ্যালয়ের টিনসেড ঘর ভেঙে একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। পাঠদানে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ২০০২ সালে একই ভবনের দোতলা নির্মাণ করে সরকার। ছয় কক্ষ বিশিষ্ট দোতলা ভবনের ১৫টিরও বেশি পিলারে গত কয়েক বছর ধরে ফাটল দেখা দিয়েছে।

প্রতিদিনই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে শ্রেণীকক্ষে পড়ালেখা করে। শিক্ষার্থীদের ন্যায় দূর্ঘটনার শঙ্কায় থাকেন শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ। এনিয়ে বেশ কয়েকবার শিক্ষকদের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারবৃন্দ বিদ্যালয় পরিদর্শন করে প্রকৃত উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ‘পরিত্যক্ত ঘোষণা’ এবং নতুন করে ভবন নির্মাণে গত সরকারের সংসদ সদস্য মুজিবল হকসহ কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী নাবিলা আক্তার ও চতুর্থ শ্রেণীর তানিশা আফরিন বলেন, ‘আমরা আতঙ্কে পড়ালেখা করছি। উপরের স্যারদের বলবেন, আমাদের একটি নতুন বিল্ডিং করে দিতে। এটাই একমাত্র অনুরোধ’।

নারানকুরি গ্রামের খোরশেদ আলম, রহিমা বেগম, জাহাঙ্গীর হোসেন ও আলকরা গ্রামের মোঃ বাদল বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সন্তানদের পাঠদানে পাঠিয়ে শঙ্কায় থাকতে হয়, কখন দূর্ঘটনা ঘটে। শিগগিরই নতুন ভবন নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আহবান জানাচ্ছি’।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সেলিম মিয়া ও সাব্বির হোসেন বলেন, ‘বিল্ডিংয়ের ১৭-১৮টি পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। আরেক সহকারী শিক্ষক ইশরাত জাহান বাবলী বলেন আমরা সব সময় ভয়,ও আতংকের মধ্যে থাকি, এই ভয়,ও আতংকের মধ্যে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান করাই। উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার প্রান্তিক সাহা বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবহিত করেছেন। বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ভর্তি করাতে চায় না’।
প্রধান শিক্ষক রোকসানা পারভিন বলেন, ‘একটি মাত্র ভবনেই চলছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। আর এ ভবনের অধিকাংশই পিলারেই ফাটল দেখা দিয়েছে এবং কিছু পিলারের পলেস্তর খসে পড়েছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে অভিভাবকরা শঙ্কায় থাকেন। দ্রুত বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আহবান জানাচ্ছি’।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল হুদা তালুকদার বলেন, ‘বিদ্যালয়টি সরেজমিন পরিদর্শন করে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আবারও অবহিত করা হবে’।