আজঃ মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর, ২০২৫

নগরীর পাহাড়তলীতে বোধনের বসন্ত বন্দনা

স ম জিয়াউর রহমান।

“আহা আজি এ বসন্তে এত ফুল ফোটে, এত বাঁশি বাজে, এত পাখি গায়, আহা আজি এ বসন্তে… ” বসন্ত বাতাসে সইগো, বসন্ত বাতাসে, বন্ধুর বাড়ির
ফুলের গন্ধ আমার বাড়ি আসে সইগো..”ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান, দিগন্তে ঐ ফুলের আগুন লাগলো বসন্তে সৌরভে সেথা জাগলো- এমনি অনেক বসন্তের শুভাগমন নানা গান, নৃত্যে, আবৃত্তিতে, ঢোলবাদন, কথামালা, শোভাযাত্রা, যন্ত্রসংগীতসহ আয়োজনে পহেলা ফাল্গুন ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করেছে বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রাম।

নগরীর পাহাড়তলী আমবাগান রেলওয়ে জাদুঘর সংলগ্ন শেখ রাসেল পার্কে শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) নিপ্পন পেইন্ট বোধন বসন্ত উৎসবের আয়োজন করে বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রাম।‘নিবিড় অন্তরতর বসন্ত এলো প্রাণে’ শিরোনামে বোধনের বসন্ত উৎসব সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হয় ভায়োলিনিস্ট চিটাগাং এর যন্ত্রসংগীতের মধ্য দিয়ে।

বোধন আবৃত্তি পরিষদের সভাপতি সোহেল আনোয়ারের সভাপতিত্বে এসময় কথামালায় অংশ নেন বোধনের উপদেষ্টা লায়ন বাসুদেব সিনহা, নিপ্পন পেইন্টের সিনিয়র ম্যানেজার মানব কুমার সাহা, প্রথম আলোর চট্টগ্রাম ব্যুরোর সিনিয়র সাংবাদিক প্রণব বল, বোধনের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুবর্ণা চৌধুরী। অতিথিরা বলেন, বোধনই একমাত্র সংগঠন গত ১৯ বছর যাবৎ মুক্ত পরিসরে বসন্ত উৎসবকে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ব্যাপক উচ্ছ্বাস সার্বজনীন উদ্দীপনা বাড়িয়েছে দেয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বোধনের এবারের বসন্ত উৎসবের আহবায়ক বিপ্লব কুমার শীল, যুগ্ম আহবায়ক ইসমাইল চৌধুরী সোহেল, সদস্য সচিব সাদাব ইয়াসির, আহবায়ক পরিষদের সদস্য অনুপম শীল, মৃন্ময় বিশ্বাস প্রমুখ। সময়ের পরম্পরায় স্বতঃস্ফূর্ত হতে বধির সকাল। এরপর কথার শাঁখে নানান বাঁকে বসন্তের হাওয়ায় দলীয় নৃত্যে অংশ নেন স্কুল অব ক্ল্যাসিক্যাল এন্ড ফোক ডান্স, ওডিসি এন্ড টেগোর ডান্স মুভমেন্ট সেন্টার, নৃত্যরূপ একাডেমি, মাধুরী ডান্স একাডেমি, সুরাঙ্গন বিদ্যাপীঠ, নৃত্য নিকেতন এর শিল্পীরা। এরপর নানান ভাব-বন্ধনের গাঢ়তায় গানে অংশ নেন সুরপঞ্চম, ধ্রুপদ সংগীত নিকেতন, আর কে মিউজিক একাডেমি, আন্তর্জাতিক বিশ্বতান। একক সংগীত পরিবেশন করেন রিষু তালুকদার ও নন্দিনী রায়। বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করেন বোধন আবৃত্তি পরিষদের আবৃত্তিশিল্পীরা।

বিকেল পৌনে তিনটায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা দিয়ে শুরু হয় বিকেলের অধিবেশন। যেখানে ঢোলের উচ্ছ্বসিত ছন্দে উৎসব অঙ্গন হয়ে ওঠে উদ্বেলিত। ঢোলবাদনের মধ্য দিয়ে বসন্ত শোভাযাত্রাটি পাহাড়তলীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে বসন্ত মঞ্চে যন্ত্র সংগীতে তবলার লহরা পরিবেশন করে মোহন সংগীত বিদ্যালয়। সংগীতে পরিবেশন করে বাগীশ্বরী সংগীতালয় শিল্পীরা। নৃত্য পরিবেশনায় ছিল নৃত্যেশ্বর নৃত্যালয়ের শিল্পীরা। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশনায় ছিল বোধন।

পুরো অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন গৌতম চৌধুরী, পল্লব গুপ্ত, পলি ঘোষ, সুচয়ন সেনগুপ্ত, ঋত্বিকা নন্দী, ফাতেমা তুজ জোহরা, ইভান পাল। সবশেষে বসন্তের নতুন কুড়ির বৃন্তে কোমলপ্রাণের দেশপ্রেম জাগিয়ে কণ্ঠ মেলান উপস্থিত সকলের সাথে বোধনের আবৃত্তিশিল্পীরা।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

দাড়িপাল্লার বিজয়ে কোমর বেঁধে নামতে হবে — অধ্যক্ষ হেলালী

চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও সাবেক কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী বলেছেন, “আগামী নির্বাচন হবে সত্য ও মিথ্যার, ন্যায় ও অন্যায়ের লড়াই। তাই সবাইকে সম্মুখ সমরে জিহাদের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দাড়িপাল্লার বিজয় নিশ্চিত করতে কোমর বেঁধে মাঠে নামতে হবে।”

১১ অক্টোবর সকালে পাঁচলাইশ থানাধীন ৮ নং শুলকবহর ওয়ার্ড কেন্দ্র কমিটির বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ হেলালী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধার ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জামায়াতের কর্মীরা সবসময় প্রথম সারিতে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ। ইসলামি মূল্যবোধের ভিত্তিতে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনই তাঁর রাজনৈতিক অঙ্গীকার বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অধ্যক্ষ হেলালী আরও বলেন, উন্নয়ন ও পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন সৎ, ত্যাগী ও নীতিবান নেতৃত্ব। অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনই আজকের সময়ের দাবি। তিনি প্রত্যেক কর্মীকে জনগণের মাঝে দাড়িপাল্লার আদর্শ প্রচারে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন পাঁচলাইশ থানা জামায়াতের আমীর ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুল হাছান রুমী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম-১০ আসনের নির্বাচন পরিচালক ও হালিশহর থানা জামায়াতের আমীর ফখরে জাহান সিরাজী সবুজ।

সম্মানিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নগর আইনজীবী থানার আমীর অ্যাডভোকেট আরিফুর রহমান, পাঁচলাইশ থানা সেক্রেটারি মাওলানা মফিজুল হক, ইঞ্জিনিয়ার আরিফুল হোসাইন, শফিউল আজিম মন্টি, ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম, শহীদুল্লাহ তালুকদার, নুরুল ইসলাম, ইমরান সিকদার, গিয়াস উদ্দীন তালুকদার, আল আমিন ভূঁইয়া ও ইফতেখার হোসাইন।

বক্তারা বলেন, দাড়িপাল্লার বিজয়ের মধ্য দিয়েই দেশ পাবে ন্যায়ভিত্তিক নেতৃত্ব ও সুশাসনের নিশ্চয়তা।

কাপাসগোলায় টিসিভি টিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শনে যুগ্ম সচিব

‘টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধ করব টাইফয়েড মুক্ত বাংলাদেশ গড়বো’Ñশ্লোগানে ১লা নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত কমিউনিটি পর্যায়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে স্বাস্থ্য বিভাগে ৪১টি ওয়ার্ডের সকল স্থায়ী ও অস্থায়ী ইপিআই টিকাদান কেন্দ্রে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরে কম বয়সে সকল শিশুকে বিনামূল্যে এক ডোজ টাইফয়েড টিকা দেয়া হচ্ছে।

১৬নং চকবাজার ওয়ার্ডে নাজমাঈ ডেমিরেল সিটি কর্পোরেশন দাতব্য চিকিৎসালয় গতকাল ঢাকা হইতে আগত স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্মসচিব (জনসাস্থ্য) ডা. শিব্বির আহমেদ ওসমানী কাপাসগোলা ইপিআই জোনের অধীন দেবপাহাড সমাজসেবা কার্যালয়ে ঞঈঠ টিকাদান কার্যক্রম পরিদর্শন ও দেবপাহাড সংলগ্ন বস্তিতে জঈগ করেন, সাথে ছিলেন ডা. ইমং প্রু, ডিভিশনাল কো-ডিনেটর (ডঐঙ), ডা. তপন কুমার চক্রবর্তী, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চসিক ও ডা. খাদিজা আহমেদ, ঝওগঙ(ডঐঙ)। এ সময় কাপাসগোলা জোনের ইপিআই টেকনিশিয়ান ও বেসরকারি সংস্থার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ