
“আহা আজি এ বসন্তে এত ফুল ফোটে, এত বাঁশি বাজে, এত পাখি গায়, আহা আজি এ বসন্তে… ” বসন্ত বাতাসে সইগো, বসন্ত বাতাসে, বন্ধুর বাড়ির
ফুলের গন্ধ আমার বাড়ি আসে সইগো..”ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান, দিগন্তে ঐ ফুলের আগুন লাগলো বসন্তে সৌরভে সেথা জাগলো- এমনি অনেক বসন্তের শুভাগমন নানা গান, নৃত্যে, আবৃত্তিতে, ঢোলবাদন, কথামালা, শোভাযাত্রা, যন্ত্রসংগীতসহ আয়োজনে পহেলা ফাল্গুন ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করেছে বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রাম।
নগরীর পাহাড়তলী আমবাগান রেলওয়ে জাদুঘর সংলগ্ন শেখ রাসেল পার্কে শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) নিপ্পন পেইন্ট বোধন বসন্ত উৎসবের আয়োজন করে বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রাম।‘নিবিড় অন্তরতর বসন্ত এলো প্রাণে’ শিরোনামে বোধনের বসন্ত উৎসব সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হয় ভায়োলিনিস্ট চিটাগাং এর যন্ত্রসংগীতের মধ্য দিয়ে।

বোধন আবৃত্তি পরিষদের সভাপতি সোহেল আনোয়ারের সভাপতিত্বে এসময় কথামালায় অংশ নেন বোধনের উপদেষ্টা লায়ন বাসুদেব সিনহা, নিপ্পন পেইন্টের সিনিয়র ম্যানেজার মানব কুমার সাহা, প্রথম আলোর চট্টগ্রাম ব্যুরোর সিনিয়র সাংবাদিক প্রণব বল, বোধনের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুবর্ণা চৌধুরী। অতিথিরা বলেন, বোধনই একমাত্র সংগঠন গত ১৯ বছর যাবৎ মুক্ত পরিসরে বসন্ত উৎসবকে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ব্যাপক উচ্ছ্বাস সার্বজনীন উদ্দীপনা বাড়িয়েছে দেয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বোধনের এবারের বসন্ত উৎসবের আহবায়ক বিপ্লব কুমার শীল, যুগ্ম আহবায়ক ইসমাইল চৌধুরী সোহেল, সদস্য সচিব সাদাব ইয়াসির, আহবায়ক পরিষদের সদস্য অনুপম শীল, মৃন্ময় বিশ্বাস প্রমুখ। সময়ের পরম্পরায় স্বতঃস্ফূর্ত হতে বধির সকাল। এরপর কথার শাঁখে নানান বাঁকে বসন্তের হাওয়ায় দলীয় নৃত্যে অংশ নেন স্কুল অব ক্ল্যাসিক্যাল এন্ড ফোক ডান্স, ওডিসি এন্ড টেগোর ডান্স মুভমেন্ট সেন্টার, নৃত্যরূপ একাডেমি, মাধুরী ডান্স একাডেমি, সুরাঙ্গন বিদ্যাপীঠ, নৃত্য নিকেতন এর শিল্পীরা। এরপর নানান ভাব-বন্ধনের গাঢ়তায় গানে অংশ নেন সুরপঞ্চম, ধ্রুপদ সংগীত নিকেতন, আর কে মিউজিক একাডেমি, আন্তর্জাতিক বিশ্বতান। একক সংগীত পরিবেশন করেন রিষু তালুকদার ও নন্দিনী রায়। বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করেন বোধন আবৃত্তি পরিষদের আবৃত্তিশিল্পীরা।

বিকেল পৌনে তিনটায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা দিয়ে শুরু হয় বিকেলের অধিবেশন। যেখানে ঢোলের উচ্ছ্বসিত ছন্দে উৎসব অঙ্গন হয়ে ওঠে উদ্বেলিত। ঢোলবাদনের মধ্য দিয়ে বসন্ত শোভাযাত্রাটি পাহাড়তলীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে বসন্ত মঞ্চে যন্ত্র সংগীতে তবলার লহরা পরিবেশন করে মোহন সংগীত বিদ্যালয়। সংগীতে পরিবেশন করে বাগীশ্বরী সংগীতালয় শিল্পীরা। নৃত্য পরিবেশনায় ছিল নৃত্যেশ্বর নৃত্যালয়ের শিল্পীরা। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশনায় ছিল বোধন।
পুরো অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন গৌতম চৌধুরী, পল্লব গুপ্ত, পলি ঘোষ, সুচয়ন সেনগুপ্ত, ঋত্বিকা নন্দী, ফাতেমা তুজ জোহরা, ইভান পাল। সবশেষে বসন্তের নতুন কুড়ির বৃন্তে কোমলপ্রাণের দেশপ্রেম জাগিয়ে কণ্ঠ মেলান উপস্থিত সকলের সাথে বোধনের আবৃত্তিশিল্পীরা।