আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

চালের বাজারে দরপতন, বেড়েছে ছোলা ও ডালের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে পাইকারিতে চালের দর নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে। তবে খুচরায় এখনও তেমন প্রভাব না পড়লেও আগামী সপ্তাহ থেকে কমতে শুরু করবে বলে আশা বিক্রেতাদের। অন্যদিকে বেড়েছে ছোলা ও ডালের দাম। ডিমের দাম কমেছে, বেড়েছে খাসির মাংসের দাম। তবে শবে বরাতকে সামনে রেখে বিভিন্ন সময় গরুর মাংসের দর বাড়তি থাকলেও এবারের চিত্র ভিন্ন। এবার গরুর মাংসের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, রমজানে চাহিদা কমে যাওয়া, বিপুল পরিমাণ আমদানি ও সরকারিভাবে ন্যায্যমূল্যে চাল বিক্রির খবরে দরপতন শুরু হয়েছে।
শুক্রবার চট্টগ্রামের পাহাড়তলী চালের আড়ত, রিয়াজউদ্দিন বাজার ও বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে নিত্যপণ্যের দামের এ চিত্র পাওয়া গেছে।এ ছাড়া অন্যান্য মুদিপণ্য, শাকসবজির দাম আগের মতোই আছে।

শাকসবজি বরাবরের মতো ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে আছে। মাছের কিছুটা চড়া দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
পাহাড়তলীর আড়তগুলো ভারত থেকে আমদানি করা স্বর্ণা, বেতি আতপ, নাজিরশাইল, পাইজাম চালে সয়লাব। প্রতিকেজি বেতি আতপ তিন টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৫৩ টাকায়। ৩৮ টাকার সিদ্ধ নাজিরশাইল ৩৫ থেকে ৩৬ আর ৩০ টাকার পাইজাম বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকায়।

তবে দেশি নাজিরশাইল, মিনিকেট ও কাটারি আতপের দাম এখনও কমেনি। প্রতি কেজি কাটারি আতপ ৮৫ টাকা, নাজিরশাইল হাফসিদ্ধ মানভেদে ৮৫ ও ৮৮ টাকা, মিনিকেট আতপ ও সিদ্ধ ৭৪-৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, মৌসুম শেষ হয়ে যাওয়ায় এসব চালের দাম তেমন কমেনি। তবে না কমলেও আর বাড়ার সম্ভাবনা নেই।

পাহাড়তলী বাজারের আড়তদার এস এম নাজিম উদ্দিন বলেন, কয়েকদিন পর রমজান মাস শুরু হবে। তখন চালের চাহিদা কমে যাবে। ঈদের পরেই শুরু হবে বোরো মৌসুম। আবার ভারত, মায়ানমার থেকে যে পরিমাণ চাল এসেছে, আড়তে এখন প্রচুর মজুত আছে। টিসিবি বলছে, তারা ন্যায্যমূল্যে চাল বিক্রি করবে। সব মিলিয়ে চালের দাম নিম্নমুখী হয়েছে। এটা আস্তে আস্তে আরও কমবে।

রিয়াজউদ্দিন বাজারের খুচরা মুদি দোকান হারুন এন্টারপ্রাইজের কর্মচারী সাইফুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘খুচরায় কেজিতে ১-২ টাকা কমেছে। দুইমাস আগে পাইকারিতে বস্তায় যেখাতে ২০০-৩০০ টাকা বেড়েছিল, সেখানে কমেছে মাত্র ৪০-৫০ টাকা। এটা আরও কমলে খুচরায় প্রভাব পড়বে।
তবে নগরীর আসকার দিঘীর পাড় এলাকার এক দোকানি বলেন, খুচরায় চাল আমরা এখনও কম দামে বিক্রি করতে পারছি না। ২৫ কেজি কিংবা ৫০ কেজির বস্তায় ৪০-৫০ টাকা কমেছে। কিন্তু গাড়ি ভাড়ায় পোষাচ্ছে না। আরও কমলে তখন গড়পরতা হিসেবে আমরাও কম দামে বিক্রি করতে পারব।

রিয়াজউদ্দিন বাজারে ছোলা বিক্রি হচ্ছে মানভেদে কেজিপ্রতি ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়। গত সপ্তাহে ছোলা ১২০ থেকে ১৩০ কিংবা ১৩৫ টাকার মধ্যে ছিল বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন। ডালের মধ্যে ছোট মসুরের ডাল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা, মোটা মসুরের ডাল ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা জানালেন, মসুর ডালের দাম কেজিতে অন্তঃত ৫ টাকা বেড়েছে। এছাড়া বড় মুগ ডাল ১৩০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ডাল ১২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে ছোট মুগ ডাল কেজিতে বেড়েছে অন্তঃত ২৫ টাকা।

অন্যান্য পণ্যের মধ্যে খোলা আটা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, প্যাকেট আটা ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, খোলা ময়দা ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা এবং প্যাকেট ময়দা ৭০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বাজারে প্যাকেটজাত চিনির ঘাটতি আছে। খোলা চিনির মধ্যে সাদা ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা ও লাল চিনি ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ এখনও স্বাভাবিক হয়নি। তবে খুচরা পর্যায়ে দামে তেমন একটা হেরফের হয়নি। বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা ও প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৮০ টাকা, পাম সুপার ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
রমজানের আরেক অত্যাবশ্যকীয় পণ্য খেজুর।

রিয়াজউদ্দিন বাজারে প্যাকেটজাত খেজুরের মধ্যে প্রতি কেজি দাবাস খেজুর ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা, জিহাদি খেজুর ২৪০ টাকা, আজওয়া খেজুর ৯০০ টাকা, বরই খেজুর ৪০০ টাকা, মরিয়ম খেজুর ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।বাজারে ব্রয়লার মুরগির ডিম প্রতি ডজন ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, দাম কমেছে ৫ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের দামও প্রতি ডজনে অন্তঃত ৫০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২৪৫ থেকে ২৫০ টাকা দরে। হাঁসের ডিম আগের দরে প্রতিডজন ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি গত সপ্তাহে ১৮০ থেকে ১৯৫ টাকা, সোনালী মুরগি ৩৩০ টাকা, সোনালি হাইব্রিড ২৯০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৪০ থেকে ৫৮০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগি ৩০০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। মুরগির দর গত সপ্তাহের মতোই আছে।

শবে বরাতের আগেরদিন গরুর মাংস হাড়ছাড়া প্রতিকেজি ৯৫০ টাকা এবং হাড়সহ ৭৫০ থেকে ৭৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এবার দাম বাড়েনি। তবে খাসির মাংসের দাম প্রতিকেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে ১২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।এছাড়া বাজারে আকারভেদে প্রতিকেজি রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, কাতলা মাছ ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ও শিং মাছ ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, বেলে ও আইড় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। ট্যাংরা প্রতিকেজি ৬০০ টাকা, শোল মাছ ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা, চাষের কই ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, পাঙ্গাস ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা এবং গলদা চিংড়ি বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে।

শীতকালীন শাকসবজির সরবরাহে ঘাটতি না থাকায় দাম ক্রেতার নাগালের মধ্যেই আছে। বাজারে মুন্সিগঞ্জের নতুন আলু মানভেদে প্রতিকেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা, লাল আলু, সাদা আলু, বগুড়ার আলু ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবজির মধ্যে কাঁচামরিচ ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, বেগুন, মানভেদে ২০ থেকে ৩০ টাকা, মূলা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, শিম, শসা, টমেটোর দাম ১৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শসা ৩০, মিষ্টিকুমড়া ৩০, করলা ৪০, মটরশুঁটি ৭০, গাজর ৪০ টাকা, বরবটি ৫০ ও লাউ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শাকের মধ্যে লাল শাক, লাউ শাক, মুলা শাক, পালং শাক, কলমি শাক, ডাঁটা শাক ১০ থেকে ২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতিকেজি দেশি রসুন ২৩৫, চায়না রসুন ২০০ থেকে ২২০ টাকা, ভারতীয় আদা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, চায়না আদা ২২৫ টাকা, দেশি আদা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের কর্মসূচীতে রয়েছে-১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কাট্টলীস্থ’ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে (ডিসি পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে) ৩১ বার তোপধ্বনি ও পুস্পস্তবক অর্পণ, সকল সরকারী-বেসরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিবসের শুভ উদ্বোধন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেও সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন।

ঐদিন সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য মহান বিজয় দিবস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন।

বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আহসান হাবীব পলাশ ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন। বেলা ১২টায় সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকেটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চল”িচত্র প্রদর্শনী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তনে বা উন্মুক্ত ¯’ানে ব¯‘ুনিষ্ট ও নৈর্ব্যত্তিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চল”িচত্র প্রদর্শনী। এছাড়া বিজয় দিবসের দিন সুবিধাজনক সময়ে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদেও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত,

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বা¯’্য, জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোড়া ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনা, জেলা পর্যায়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান, টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট, প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ, কাবাডি, হা-ডু-ডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সুবিধাজনক সময়ে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুপুর দেড়টায় হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে-কেয়ার, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কর‌্যাণ কেন্দ্র, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ও ভবঘুরে পুনর্বাসন কেন্দ্রসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন।

দিনব্যাপী শিশু পার্ক, ডিসি পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা শিশুদের জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা ও বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাকরণ, পর্যটন কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং ডিশ ক্যাবল অপারেটর/ মালিকগণ কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন। ১৫-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান/ স্থাপনায় আলোকসজ্জাকরণ এবং মহান বিজয় দিবসের পরদিন ১৭ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ‘চট্টগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও সর্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামিলীগের সাবেক পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার মিয়ার বিএনপিতে যোগদান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জুলফিকার মিয়া বিএনপিতে যোগদান করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি ঢাকায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) এর বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান সম্পন্ন করেন।

এ সময় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তাকে দলে স্বাগত জানান। দলীয় একটি সূত্র বলছে, আগাম রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে জুলফিকার মিয়ার এই যোগদান বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করবে বলে সকলে মনে করছেন।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামিলীগের এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন কর্তৃক নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বিএনপির অনেক ত্যাগি নেতারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন- বিএনপির এমন দিন আসবে কখনো চিন্তাও করিনি। তবে কী আওয়ামিলীগ দিয়ে বিএনপির ত্যাগীদের আবার নির্যাতনের স্বীকার করতে চায় মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ? কেন আমরা এতদিন নির্যাতিত ছিলাম? এই দিন দেখার জন্য?

এ বিষয়ে জুলফিকার মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ দেখায়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোচনা সমালোচনার শুরু হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছে; এভাবে আওয়ামিলীগ দ্বারা বিএনপি সাজাতে থাকলে ভোটের মাঠে এর প্রভাব বিস্তার করবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ