আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

সাংবাদিকদের সম্মানে চট্টগ্রাম মহানগরী শ্রমিক কল্যাণের ইফতার মাহফিল

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

সাংবাদিকদের সম্মানে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন, চট্টগ্রাম মহানগরীর ইফতার মাহফিল। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের জুলাই বিপ্লব স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি এস এম লুৎফুর রহমান। সঞ্চালনা করেন ফেডারেশনের নগর সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌধুরী।

সভাপতির বক্তব্যে এস এম লুৎফুর রহমান জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের শহিদদের স্মরণ করেন। দেশ ও জাতিগঠনে সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি শ্রমিকদের অধিকারের বিভিন্ন দিক এবং শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সৃজনশীল ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।

সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট পতনোত্তর সময়ে একটি সমৃদ্ধ, শ্রমিকবান্ধব ও ন্যায়ভিত্তিক দেশ গড়ার সম্ভাবনার সামনে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ। সেই সম্ভাবনাকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোই সময়ের দাবি। কিন্তু বিভিন্ন শ্রম সেক্টরে ঘাপটি মেরে থাকা পতিত স্বৈরাচারের দোসররা সেই সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করার চক্রান্ত করছে। সে সকল চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও শ্রমিক নিপীড়করা এখনও বিভিন্ন পদে বসে থাকায় শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে। শ্রম অসন্তোষ দূরীকরণে অবিলম্বে এসকল দুর্নীতিবাজ ও শ্রমিকনিপীড়কদের অপসারণ করতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দর, ই-ইপিজেড, সি-ইপিজেড, রেলওয়ে, বিপিসি, ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশন, শিল্পকারখানা ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান-সহ সকল শ্রমসেক্টর থেকে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিদায় করতে হবে। মেধা, দক্ষতা ও সততাকে মূল্যায়ন করে শূন্যপদে নিয়োগ দিতে হবে। মেধা, দক্ষতা ও সততার ভিত্তিতেই পদোন্নতি দিতে হবে।

শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ নিরাপদ করার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে, নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করতে হবে।
রমজানের শুরু থেকেই মানুষ ঈদের প্রস্তুতি শুরু করে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য নতুন জামাকাপড় কেনার মাধ্যমে ঈদের আমেজ শুরু হয়। কিন্তু শ্রমিকদের বেতন-বোনাস যথাসময়ে পরিশোধ না করার কারণে শ্রমিক-পরিবার ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়। আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি, সকল সেক্টরের শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন, চলতি বেতন ও ঈদ বোনাস ২০ রমজানের মধ্যে আদায় করতে হবে।

ইফতার মাহফিলে সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নূরুল আমীন, ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইসহাক, বিশিষ্ট সাংবাদিক মোহাম্মদ উল্লাহ, বিশিষ্ট লেখক ও আলেমে দ্বীন অধ্যাপক লিয়াকত আখতার সিদ্দিকী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব ও দৈনিক আমার দেশের আবাসিক সম্পাদক জাহিদুল করিম কচি, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল ও ইন্টারন্যাশনাল প্রেস কাউন্সিলের সদস্য মঈনুদ্দীন কাদের শওকত, প্রেস ক্লাবের অন্তবর্তী কমিটির সাবেক সদস্য সচিব গোলাম মাওলা মুরাদ ও দৈনিক কালের কণ্ঠের ব্যুরো প্রধান মোস্তফা নাঈমসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।

শ্রমিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের চট্টগ্রাম জেলা দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা নূর হোসাইন, চট্টগ্রাম জেলা উত্তরের সভাপতি ইউসুফ বিন আবুবকর, মহানগরী সহ-সভাপতি নাজির হোসেন ও মকবুল আহম্মেদ ভূঁইয়া, সহ-সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শিহাবউল্লাহ ও অধ্যক্ষ এম আসাদ উল্লাহ আদিল, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ হামিদুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ মোঃ নুরুন্নবী, দপ্তর সম্পাদক স. ম. শামীম, প্রচার সম্পাদক আবু সুফিয়ান, ট্রেড ইউনিয়ন সম্পাদক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মজুমদার, প্রকাশনা সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম ও বিশিষ্ট শ্রমিকনেতা ইমরান শিকদারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের দোয়া মাহফিল খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায়

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রেস ক্লাবের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা, সিনিয়র সাংবাদিক এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

দোয়া মাহফিলে বক্তারা বলেন, দেশের গণমাধ্যমের উন্নয়ন, সাংবাদিক সমাজের কল্যাণ এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বেগম খালেদা জিয়া ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজ চিরদিন স্মরণ করবে। বক্তারা ঐতিহাসিক অবদান স্মরণ করতে গিয়ে উল্লেখ করে বলেন, ১৯৭৮ সালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের উন্নয়নে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ২ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছিলেন।

১৯৮০ সালে বায়েজিদের শেরশাহ এলাকায় সাংবাদিকদের আবাসনের জন্য সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটি-তে ১৬ একর জমি বরাদ্দ দেন, যা ১৯৮১ সালে বিচারপতি আব্দুস সাত্তার সরকারের আমলে তা রেজিস্ট্রি করা হয়। ১৯৯৪ সালে প্রেস ক্লাবের আর্থিক সংকট মোকাবিলায় তৎকালীন মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমানের অনুরোধে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১৫ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেছিলেন।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের শৃঙ্খলা ও ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত বলেন, বেগম খালেদা জিয়া প্রেস ক্লাবের জন্য অসামান্য অবদান রেখেছেন। আমি অতীতে তাকে আজীবন সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলাম, কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি। এখন আবারও অনুরোধ জানাই—বেগম খালেদা জিয়াকে প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্যপদ প্রদান করা হোক।

দোয়া মাহফিলে দেশ ও জাতির শান্তি, কল্যাণ ও স্থিতিশীলতার পাশাপাশি বেগম খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন শাহ আনিস জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন।
দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন প্রেস ক্লাবের অন্তবর্তী কমিটির সদস্য মুস্তফা নঈম, চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, প্রেস ক্লাবের সাবেক লাইব্রেরি সম্পাদক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামসহ অন্য সদস্যরা।মাহফিল শেষে বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার উদ্যেগে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সাইবার ভিত্তিক সংগঠন জিয়া সাইবার ফোর্স (জেডসিএফ) চট্টগ্রাম দক্ষিণ উদ্যোগে বিএনপির চেয়ারপার্সন আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও পরিপূর্ণ সুস্থতা কামনায় জিয়া সাইবার ফোর্স- (জেডসিএফ), চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার উদ্যেগে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত। গত শনিবার বাদে মাগরিব পটিয়া তৈয়াবিয়া এতিমখানা, হেজখানা, খতমে কোরআন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত দোয়া মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন আহ্বায়ক মোঃ আবুল বশর চৌধুরী। সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্য সচিব এডভোকেট আজিজুল হক।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী বাহাউদ্দীন ফারুক মুন্না। উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক আরাফাত চৌধুরী, কাজী মোঃ বাদশা, নাবিদুর রহমান, মোঃ রবিউল হোসেন আলভী, মোহাম্মদ মাহিম, তানবির জিহান সহ দক্ষিণ জেলার সকল নেত্ববৃন্দ। দোয়া ও মোনাজাতে মহান আল্লাহর দরবারে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য রোগ থেকে পরিপূর্ণ সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এসময় দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করেও দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ