আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

ঈদযাত্রায় সড়কে ডাকাতি, ছিনতাই, দুর্ঘটনা ও যানজট রোধে জরুরী পদক্ষেপ নিন – যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

এম মনির চৌধুরী রানা

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

একসাথে বিপুল মানুষের যাতায়াতে তীব্র গণপরিবহনের সংকট মোকাবিলায় এবার ঈদের লম্বা ছুটি সঠিকভাবে কাজে লাগানো গেলে যাত্রীদের ভোগান্তিমুক্ত, স্বস্তিদ্বায়ক ঈদযাত্রা নিশ্চিত করা সম্ভব বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

আজ সকালে নগরীর, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ক্র্যাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির আয়োজিত “ঈদযাত্রায় সড়কে ডাকাতি, নগর জুড়ে ছিনতাই, সড়ক দুর্ঘটনার শংকা উত্তোরণের উপায়” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। সড়কে বাড়তি চাপ ও ফিটনেসবিহীন সিটিবাসে পোষাক শ্রমিকদের যাত্রা বন্ধে কলকারখানা ও পোষক শ্রমিকদের বেতন-বোনাস ২৪ মার্চের মধ্যে পরিশোধ করে ধাপে ধাপে বাড়ি পাঠানো নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।

*যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন,* এবারের ঈদে ঢাকা ও আশেপাশের জেলা থেকে প্রায় দেড় কোটি মানুষ নিজ নিজ গন্তব্যে যাত্রা করবেন। দেশের এক জেলা থেকে অপর জেলায় আরও ৩ থেকে সাড়ে ৩ কোটি মানুষের যাতায়াত হতে পারে, যার ৭৫ শতাংশ সড়কপথে, ১৭ শতাংশ নৌপথে এবং ৮ শতাংশ রেলপথে যাতায়াত হবে। পথে পথে যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করা, সড়কে ডাকাতি, ছিনতাই ও দুর্ঘটনা রোধে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান তিনি।

*সংগঠনের পর্যবেক্ষণে মতে, বিগত ঈদুল ফিতরে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত এবং ১৩৯৮ জন আহত হয়। বিগত ৯ বছরে শুধুমাত্র ঈদুল ফিতরে ২৩৭৭টি দুর্ঘটনায় ২৭১৪ জন নিহত এবং ৭৪২০ জন আহত হয়েছে। এবারের ঈদে দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মালিক সমিতি, শ্রমিক ফেডারেশন, পুলিশ ও বিআরটিএ’র হস্তক্ষেপ কামনা করে সংগঠনটি।*

৮৩ শতাংশ কোচ ও ৬০ শতাংশ লোকোমোটিভ মেয়াদোত্তীর্ণ এবং ৮২ শতাংশ রেলক্রসিং অরক্ষিত এমন পরিস্থিতিতে রেল দুর্ঘটনা ও লাইনচ্যুতি, টিকিট কালোবাজারি বন্ধ করে হয়রানীমুক্ত রেলসেবা প্রদানের দাবী জানান বক্তারা।

নৌ-পথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, ঘাট ও নৌ-বন্দর কেন্দ্রিক যাত্রী হয়রানী, খেয়া পারাপারে বন্দরের যাত্রী পারাপারে বেসরকারি ইজারাদারদের লুটপাটের দৌরাত্ম্য বন্ধ করার দাবি উঠে আসে।

*বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মোঃ সাইফুল আলম বলেন,* সরকারের পরিকল্পনার গলদে নানান অব্যবস্থাপনায় যাত্রী দুর্ভোগ ও সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। এর দায় অন্যায়ভাবে মালিকদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এবারের ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে মালিক সমিতি কঠোর হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

*বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আবদুর রহিম বক্স দুদু বলেন,* ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহন নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিতে হবে। এবারের ঈদযাত্রায় শ্রমিক ফেডারেশন যাত্রীসাধারনের পাশে থাকবে, যেকোন অভিযোগ সাথে সাথে আমলে নেবে।

*বিআরটিএ’র পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন,* ফিটনেসবিহীন যানবাহন বন্ধে বিআরটিএ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে ৬৪ জেলায় ভিজিলেন্স টিম তৎপরতা চালাবে। যাত্রী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ভিজিলেন্স টিমে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সীমিত সামর্থ্য নিয়ে বিআরটিএ প্রাণপন চেষ্টা চালাবে। যাত্রী সচেতনতা, পরিবহন মালিক সমিতি, শ্রমিক ফেডারেশন ও পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার সম্বন্নিত প্রচেষ্টায় নিরাপদ ও নির্বিঘœ ঈদযাত্রা নিশ্চিত করা সম্ভব।

*হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি অপারেশন মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন,* সড়কে ডাকাতিতে জড়িত ১৪৪৩ জন ডাকাতকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। ৩৯০০ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়কে ৩৪০টি অপারেশন টিম কাজ করছে। ঈদে যাত্রাপথে হাইওয়ে পুলিশের হটলাইন নাম্বার সাথে রাখুন। আমাদের কল করার ১৫ মিনিটের মধ্যে সাড়া মিলবে। তিনি প্রবাসীদের ঈদে লাগেজ-ব্যাগেজ নিয়ে বাড়ি যেতে হাইওয়ে পুলিশের সেবা নেওয়ার আহ্বান জানান।

*সুপারিশমালা সমূহ:*
১. ঈদযাত্রা বহরে ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কড় যানবাহন চলাচল বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
২. মোটসাইকেল যাত্রী ও আরোহীর মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সামগ্রীসহ ভেস্ট পরিধান বাধ্যতামূলক করা, রুটভিত্তিক গতি নির্ধারণ, সহযাত্রীর সাথে লাগেজ-ব্যগেজ নিয়ে মহাসড়কে যাতায়াত নিষিদ্ধ করা।
৩. অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণের ভিজিলেন্স টিমে যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৪. যানজট ও দুর্ঘটনা কমাতে জাতীয় মহাসড়ক থেকে প্যাডেল রিকশা, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, নসিমন-করিমন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ঈদের ১০ দিন আগে উচ্ছেদ করতে হবে।
৫. কৃত্রিমভাবে যানজট সৃষ্টিকারী মহাসড়কের টোলপ্লাজা অতিরিক্ত জনবল নিয়ে যানজট নিরসনের উদ্যোগ নিতে হবে।
৬. সড়কে ডাকাতি ও ছিনতাই বন্ধে হাইওয়ে পুলিশ, জেলা ও মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশকে স্পটে দাড়িয়ে গাড়ির কাগজপত্র দেখার পরিবর্তে ঈদের ১০ দিন আগে থেকে পেট্রোলিং ডিউটির নির্দেশনা দিতে হবে। সড়কে ডাকাতি ও ছিনতাই বন্ধে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মীদের সড়কে সক্রিয় রাখতে হবে। পুলিশের তৎপরতার পাশাপাশি স্ব স্ব এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ মহাসড়কের পয়েন্টে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং পন্থায় ঈদের আগে-পরে পাহাড়াদারি নিশ্চিত করতে হবে।
৭. সড়ক, রেল ও নৌপথে যাত্রী হয়রানী, অজ্ঞানপাটি, মলমপাটি, টিকিট কালোবাজারী বন্ধে গোয়েন্দা পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার দৃশ্যমান কার্যক্রম এই মুহুর্তে চালু করতে হবে।

আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব ড. মুহাম্মদ জকরিয়া, বিশিষ্ঠ নারীনেত্রী ও শিক্ষাবীদ ঢাকা ইস্পাহানি কলেজের অধ্যক্ষ রফিকা আফরোজ, প্রচার সম্পাদক মাহামুদুল হাসান রাসেল, ছাত্র প্রতিনিধি রেজাউল ইসলাম প্রমুখ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের কর্মসূচীতে রয়েছে-১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কাট্টলীস্থ’ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে (ডিসি পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে) ৩১ বার তোপধ্বনি ও পুস্পস্তবক অর্পণ, সকল সরকারী-বেসরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিবসের শুভ উদ্বোধন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেও সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন।

ঐদিন সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য মহান বিজয় দিবস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন।

বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আহসান হাবীব পলাশ ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন। বেলা ১২টায় সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকেটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চল”িচত্র প্রদর্শনী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তনে বা উন্মুক্ত ¯’ানে ব¯‘ুনিষ্ট ও নৈর্ব্যত্তিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চল”িচত্র প্রদর্শনী। এছাড়া বিজয় দিবসের দিন সুবিধাজনক সময়ে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদেও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত,

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বা¯’্য, জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোড়া ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনা, জেলা পর্যায়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান, টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট, প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ, কাবাডি, হা-ডু-ডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সুবিধাজনক সময়ে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুপুর দেড়টায় হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে-কেয়ার, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কর‌্যাণ কেন্দ্র, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ও ভবঘুরে পুনর্বাসন কেন্দ্রসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন।

দিনব্যাপী শিশু পার্ক, ডিসি পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা শিশুদের জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা ও বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাকরণ, পর্যটন কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং ডিশ ক্যাবল অপারেটর/ মালিকগণ কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন। ১৫-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান/ স্থাপনায় আলোকসজ্জাকরণ এবং মহান বিজয় দিবসের পরদিন ১৭ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ‘চট্টগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও সর্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

চট্টগ্রামে সবজির বাজার চড়া, কমেনি পেঁয়াজের ঝাঁঝ

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রামের বাজারগুলোতে ফের সবজরি দাম বেড়ে গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দর আবারও উর্ধমূখী। নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার ও কাজির দেউড়ি বাজার এবং বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকানে দর যাচাই করে এ চিত্র পাওয়া গেছে। এদিকে পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে কমলেও খুচরায় এর প্রভাব পড়েনি। তবে মাছ-মাংসসহ অন্যান্য পণ্যের দাম অপরিবর্তিত আছে।বিক্রেতারা বলেছেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা সবজির দাম আড়ত পর্যায়ে বেশি হওয়ায় খুচরায় এর প্রভাব পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের শেষে দেশি পেঁয়াজ পাইকারিতে প্রতিকেজি মানভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় পৌঁছেছিল। কিন্তু গত দুইদিনে কেজিতে অন্তঃত ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমেছে। এরপরও খুচরায় প্রতিকেজি পেঁয়াজ ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারির হিসেবে পেঁয়াজের দর খুচরায় প্রতিকেজি ১০০ টাকার মধ্যে থাকার কথা ছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে বেশি দামে কেনা পেঁয়াজ মজুত রয়ে যাওয়ায় তাদের বাড়তি দামে বেচতে হচ্ছে।বাজারে দেশি রসুন ৮০ থেকে ১১০ টাকা, চায়না রসুন ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, চায়না আদা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, ভারতীয় আদা মান ভেদে ১৪০ থেকে ১৬০ দরে বিক্রি হয়েছে।

এদিকে শীতকালীন অধিকাংশ সবজি গত সপ্তাহে প্রতিকেজি ৬০ টাকার মধ্যে নেমে এসেছিল। কিন্তু বেশ কয়েকটি সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি দেখা গেছে। বাজারে টমেটো মানভেদে ৭০ থেকে ১০০ টাকা, নতুন শিম ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল, দেশি পটল, দেশি গাজর, দেশি শসা, ছোট করলা প্রতিকেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, কচুর লতি, কচুরমুখী, লাউ, চালকুমড়া ৫০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব সবজির দাম গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে ছিল।তবে ফুলকপি-বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, মূলা ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগের মতোই আছে। শালগমের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে ৬০ টাকা হয়েছে। বগুড়ার নতুন আলুর দাম কেজিতে অন্তঃত ৪০ টাকা কমে প্রতিকেজি ৪০ টাকায় এবং

মুন্সীগঞ্জের পুরোনো আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা, বগুড়ার পুরনো আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা, পেঁপে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।অন্যান্য সবজির মধ্যে কাঁচামরিচের দাম কমে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ধনেপাতা ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শীতকালীন লাল শাক-পালং শাকসহ অন্যান্য সব ধরনের শাক আঁটিপ্রতি ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে সয়াবিন তেল ছাড়া অন্যান্য মুদিপণ্যের দামে তেমন হেরফের হয়নি। সরকারিভাবে নির্ধারিত প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা ও খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।এছাড়া ছোট মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ৯০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১২০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৪৫ টাকা, খেসারি ডাল ৯০ টাকা, বুটের ডাল ৬০ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা, মাষকলাই ডাল ১২০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১১০ টাকা ও খোলা চিনি ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই কেজির প্যাকেট আটা ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১২০ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১৪৫০ থেকে ১৫৫০ টাকা, খোলা ঘি ১২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মসলার মধ্যে এলাচ প্রতিকেজি ৪ হাজার ৭৫০ টাকা, দারুচিনি ৫০০ টাকা, লবঙ্গ ১২৮০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১৩৫০ টাকা ও কালো গোলমরিচ ১১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।


চালের মধ্যে মোটা চাল ব্রি-২৮ ও স্বর্ণা প্রতিকেজি ৬৪-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ৭২ থেকে ৮৫ টাকা, মানভেদে প্রতি কেজি নাজিরশাইল চাল ৭৫ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিকেজি লালতীর, এসিআই, স্কয়ার কোম্পানির প্যাকেট পোলাও চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাও চাল মানভেদে ৯০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগি ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা, লেয়ার ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৫৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। হাঁসের মধ্যে দেড় কেজি ওজনের প্রতি পিস দেশি হাঁস ৫০০ টাকা, দুই কেজি ওজনের চীনা হাঁস প্রতি পিস ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

গরুর মাংস প্রতিকেজি ৭৮০ থেকে ৯০০ টাকা, খাসির মাংস ১২০০ টাকা এবং ছাগল ১১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতি ডজন লাল ডিম ১২০ টাকা থেকে কমে ১১০ টাকা, সাদা ডিম ১২০ থেকে ১২৫ টাকা ও দেশি হাঁসের ডিম ১৯০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।মাছের মধ্যে লইট্যা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, আইড় ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা, চিংড়ি (বাগদা ও গলদা) প্রকারভেদে ৭৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া খাল-নদী ও চাষের মাছের মধ্যে রুই ও কাতলা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, ছোট আকারের পাবদা ৪০০ টাকা, মাঝারি সাইজের ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, পুঁটি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া বড় সাইজের ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা,

নাইলোটিকা ২২০ থেকে ২৮০ টাকা, কৈ ২০০ থেকে ২২০ টাকা এবং পাঙাস ও সিলভার কার্প ১৮০ থেকে ২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।বাজারে এখন ইলিশ আর তেমন নেই। তবে ৭-৮টি মিলে ওজনে এক কেজি হয় এমন কিছু ইলিশ এখনও সীমিত আকারে পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলো কেজিপ্রতি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ