আজঃ শুক্রবার ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উপ-আঞ্চলিক পরিচালক পুলিশ হেফাজতে।

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উপ-আঞ্চলিক পরিচালক এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফ মাহমুদ অপুকে ডবলমুরিং থানা পুলিশ তদের হেফাজতে রেখেছে। সন্ধ্যায় এ রিপোর্টয় লেখাকালে মো. শরীফ মাহমুদ অপু থানায় রয়েছেন। এর আগে তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে জড়িত শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি— গত বছরের ৪ আগস্ট অপুর স্বাক্ষরিত চিঠিত কারফিউ জারি হয়েছিল। তাই তাকে আটক করতে হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে নগরের ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ শেখ মুজিব সড়কের বনানী কমপ্লেক্স সংলগ্ন বাংলাদেশ বেতার ভবনে নিজ কার্যালয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে পুলিশ সদস্যরা গিয়ে তাকে হেফাজতে নিয়েছেন।

জানা গেছে, মো. শরীফ মাহমুদ অপু কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ণমতি গ্রামের ইঞ্জিনিয়ার জয়নাল আবেদিনের ছেলে। তাঁর বাবা কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। এছাড়া শরীফ মাহমুদ অপু তেজগাঁও-হাতিরঝিল থেকে নির্বাচিত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের প্রায় ১০ বছর জনসংযোগ কর্মকর্তা ছিলেন। অভিযোগ আছে, অবৈধ আয়ের অর্থে বাড়ি, গাড়ি, প্লট, ফ্ল্যাট এমনকি ব্যাংককের পাতায়ায় রেস্টুরেন্ট দিয়েছেন তিনি। রাজধানীর বসুন্ধরা, উত্তরা ও গুলশানে বেশ কয়েকটি দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান করেছেন। নিজের ও স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে রয়েছে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা।

আরও অভিযোগ আছে, পুলিশের এসপি, ওসি ও এসআই বদলির পাশাপাশি তিনি অন্তত অর্ধশত ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের লাইসেন্স পাইয়ে দিয়েছেন। যার বিনিময়ে অপু নিজের এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের জন্য নিয়েছেন ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা করে। এসব টাকার বড় একটি অংশ দিতে হতো কামালের ছেলে অথবা তাঁর স্ত্রীর কাছে।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে জড়িত শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উপ-আঞ্চলিক পরিচালককে আটকে রেখেছে বলে জানতে পেরেছি। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছি। যেহেতু উনি একজন সরকারি কর্মকর্তা। তাই এ বিষয়ে

বাংলাদেশ বেতার কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে আলাপ করছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেসব শিক্ষার্থী সেখানে আছেন তারা কোনো রাজনৈতিক দলের পদে আছে কি-না তা জানা নেই। ছাত্রদের দাবি, গত বছরের ৪ আগস্ট তাঁর (অপু) স্বাক্ষরিত চিঠিতে নাকি কারফিউ জারি হয়েছিল।

তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে ওসি বলেন, যতটুকু জেনেছি, ওই সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকে একটি মামলা রয়েছে। আমরা দুদকের সাথেও যোগাযোগ করেছি। তাদের তদন্ত চলমান রাখা অবস্থায় আটক দেখাবে কিনা তারা জানাবে। আপাতত তাকে আমরা হেফাজতে নিয়ে আসবো। এরপর ঊর্ধ্বতনদের সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা নেব।

দুপুরে জানতে চাইলে বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উপ আঞ্চলিক পরিচালক মো. শরীফ মাহমুদ অপু বলেন, কিছু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লোক আমার অফিসে এসেছে। তারা আমাকে ফ্যাসিবাদের দোসর বলছে। আমিতো সরকারি চাকরি করি, সিদ্ধান্ত সরকার দেবেই। তারা দাবি করছে, আমি কারফিউর ঘোষণা দিয়েছিলাম আন্দোলনের সময়ে। সরকারি দায়িত্ব পালন করেছিলেন দাবি করে তিনি বলেন, আমিতো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা ছিলাম না। আমি ছিলাম মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা। সেই হিসেবে

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ আমি পালন করেছি। এখন যিনি মন্ত্রণালয়ে আছেন জনসংযোগ কর্মকর্তা তিনিও পালন করছেন তার দায়িত্ব। আমি না থাকলে তখন আরেকজন থাকতো। এটা কেউ না কেউ দায়িত্ব পালন করবেই।
জানা গেছে, চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি শরীফ মাহমুদ অপুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শরীফ মাহমুদ অপু ৫৮ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। দুদকের অনুসন্ধানে এ তথ্য পাওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রামে নিয়োগে অনিয়ম, জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে দুদকের হানা।

চট্টগ্রাম জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। নকল-নবিশ নিয়োগে অনিয়ম, বিভিন্ন কাজে ঘুষ দাবি ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে পরিচালিত অভিযান শেষে দুদক কর্মকর্তারা অভিযোগের ‘প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন’ বলে জানিয়েছেন। বুধবার দুদক জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক সাইয়েদ আলমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযান শেষে সাইয়েদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, এখানে জেলা রেজিস্ট্রার আগে যিনি ছিলেন মিশন চাকমা ওনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল এবং জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর অভিযোগ ছিল ওখানে অফিস সহকারী এবং প্রধান সহকারী তারা হোতা ছিল এখানে টাকা-পয়সা তারা কালেকশন করে। এছাড়া চাকরির পদোন্নতি নিয়ে অভিযোগ ছিল। সন্দ্বীপে কিছু নকল-নবিশের নিয়োগ নিয়ে অনিয়ম ছিল। সবগুলো আমরা রেকর্ডপত্র চেয়েছি এবং পেয়েছি।

নকল-নবিশ নিয়োগে অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে অনেক আগে থেকেই নকল-নবিশ নিয়োগ বন্ধ ছিল। তারপরও আইজিআরের পারমিশন ছাড়া এখানে নকল-নবিশের নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আইজিআর একটি শোকজ করা হয় এবং সাময়িকভাবে নিয়োগটি বাতিলও করা হয়। আমরা জিনিসটা দেখবো এখানে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়েছে কিনা। আর্থিক অনিয়ম ঘটেছে

অবশ্যই। এখানকার কিছু কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। তাদের আমরা ব্যক্তিগত নথি তলব করেছি। তাদের নামে কোনো ধরনের সম্পদ আছে কি-না, সেটাও দুদক খতিয়ে দেখবে। আমরা বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশন বরাবর জমা দেব। আর আরও কিছু রেকর্ডপত্র আমরা সংগ্রহ করবো। স্বন্দ্বীপে ১৯ জন নকল-নবিশ নিয়োগ দেওয়া হয়। সেটা নিয়ম অনুযায়ী হয়নি যতটুকু আমরা চিঠিতে দেখেছি। বাকি অভিযোগগুলোর বিষয়ে রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে কমিশন বরাবর প্রতিবেদন দেব।

নামজারির জন্য ঘুষ দাবি করা হয় বিভিন্ন সময়ে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, এ ধরনের অভিযোগ আছে, আমরাও শুনেছি। আমরা যখন সরেজমিনে আসি তখন সবাই অ্যালার্ট হয়ে যায়। আমরা সেটা নিয়েও কাজ করছি। মানুষের ভেতরে সচেওতনতা তোইরির চেষ্টা করছি। যেন ঘুষ চাইলেই না দেয়। আমরা ক্যাশ ড্রয়ার তল্লাশি করেছি। সেরকম টাকা-পয়সা পাওয়া যায়নি। কিছু ডকুমেন্টস পাওয়া গেছে। সেগুলো আমরা পর্যালোচনা করবো।

জেলা রেজিস্ট্রি অফিসে দালালদের আধিপত্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা আজকে এসে এ পর্যন্ত দালালদের দেখিনি। আমরা নিজেরাই দেখলাম সবকিছু। তারপরও দালাল পাওয়া গেলে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

সারাদিন ভাংড়ি সংগ্রহ করে চলে এদের জীবন।

সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় ভ্যান নিয়ে ঘুরে এরা। চলে যায় একেবারে গ্রামের ভিতর। পুরাতন কাগজ, বই, কার্টুন, পুরাতন টিন, নষ্ট বোতল, নষ্ট প্লাস্টিকের কোটা, ইত্যাদি বিভিন্ন রকম মাল সংগ্রহ করে ভ্যানে নিয়ে আসে তাদের মহাজনের কাছে। মহাজন সেগুলো একটা দাম ধরে কিনে নেয়।

কথা হলো শহিদুল নামের একজনের সাথে। মোটামুটি যা হয় তাই দিয়ে চলে তাদের সংসার । তারপর মহাজন সেগুলো বিভিন্ন ভাগে ভাগ করেন। কাগজ আলাদা, টিন আলাদা, লোহা আলাদা। মহাজনের রয়েছে ৩ জন লোক। তাদের কাজ এগুলো বাছাই করা বস্তায় ভর্তি করে ওজন দেয়া। তারপর সেগুলো যাবে রাজশাহী বিসিক এলাকায়, কিছু প্রতিষ্ঠান এগুলো কিনে নিয়ে। তারা আবার এগুলো নিয়ে, মেশিনের সাহায্যে কুচি, কুচি করে ঢাকাতে পা ঠায়। এভাবেই চলছে তাদের জীবন। ঢাকা যাবে আবার এগুলো বিভিন্ন জায়গায়। এসব দিয়ে আবার নতুন করে জিনিস তৈরি করা হবে। এই ভাবে চলে কিছু মানুষের জীবন জিবিকা।এই পুরাতন জিনিস গুলো আবার নতুন রুপে বাজারে আসবে, এই রিসাইকেল হয়ে ।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ