আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে মৃত্যুর ৮ মাস পর সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলসহ ৩শ’ জনকে আসামি করে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রাম মহানগরে সরকার পতনের দিন গত বছরের ৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হয়ে মো. ইউসূফ (৩৫) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার ৮ মাস পর হত্যা মামলা দায়ের করেছে পরিবার। বুধবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ডবলমুরিং থানায় বাদী হয়ে মামলাটি করেন ওই ভুক্তভোগী শ্রমিকের বাবা মো. ইউনুচ। তিনি জেলার হাটহাজারী উপজেলার পশ্চিম ধলই ইউনিয়নের জলই কোম্পানির বাড়ির বাসিন্দা। মামলায় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৫ জনকে এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ২শ’ থেকে ৩শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন,সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চু, এম এ লতিফ, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, সাবেক কাউন্সিলর মোর্শেদ আক্তার চৌধুরী, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, তৌফিক আহম্মেদ চৌধুরী, আরশাদুল আলম বাচ্চু, জাফর আলম চৌধুরী, আবদুস সবুর লিটন, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি, আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুম, ডবলমুরিং থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোস্তফা কামাল টিপু প্রমুখ।

মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, ভুক্তভোগী ইউসুফ বাদীর দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রথম ছেলে। তিনি ঝর্ণাপাড়া আইস ফ্যাক্টরি সড়কে বরফের কারখানায় কাজ করতেন। গত বছরের ৫ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইউসূফ দেওয়ানহাট এলাকায় বিভিন্ন দোকানে বরফ সরবরাহ করার জন্য যাচ্ছিলেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইউসূফের স্ত্রীর বড় বোন তার স্ত্রীকে ফোন করে জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে দেওয়ানহাট মোড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে ইউসূফ মারা গেছে। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

পরে বিভিন্ন দিকে ‘আন্দোলনের কারণে গন্ডগোল থাকায়’ চমেক থেকে মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে গ্রামে বাড়িতে নিয়ে যায় তার পরিবার। গ্রামে গিয়ে তারা ইউসূফের বুকের মাঝখানে গুলিবিদ্ধ দেখতে পান। স্থানীয়ভাবে নিহতের পরিবার জানতে পেরেছে, ১ থেকে ৪ নম্বর আসামিদের নির্দেশে বাকি আসামিরা ৫ আগস্ট দেওয়ানহাট মোড়ে লাঠিসোঁটা, লোহার রড়, ধারালো কিরিচ, দেশী ও বিদেশী অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশী ও বিদেশী অস্ত্র ব্যবহার করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। তাদের ছোঁড়া গুলিতে ইউসূফ মৃত্যুবরণ করে। বাদী ও তার পরিবার ‘ছেলের মৃত্যুশোকে থাকায় এবং বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক কারণে’ এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব করেছেন।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট বিজয় মিছিল পরবর্তীতে দেওয়ানহাট মোড়ে এক শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। ওই ঘটনায় তার বাবা ইউনূচ বাদী হয়ে সাবেক শিক্ষামন্ত্রীসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২শ’ থেকে ৩শ’ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান জামায়াতে যোগ দিলেন

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান। শনিবার ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

জামায়াত আমিরের উপস্থিতিতে মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নীতি ও আদর্শ, দেশপ্রেম এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অবিচল অবস্থানের প্রতি গভীর আস্থা ও সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি সংগঠনের প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন।

আওয়ামিলীগের সাবেক পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার মিয়ার বিএনপিতে যোগদান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জুলফিকার মিয়া বিএনপিতে যোগদান করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি ঢাকায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) এর বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান সম্পন্ন করেন।

এ সময় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তাকে দলে স্বাগত জানান। দলীয় একটি সূত্র বলছে, আগাম রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে জুলফিকার মিয়ার এই যোগদান বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করবে বলে সকলে মনে করছেন।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামিলীগের এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন কর্তৃক নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বিএনপির অনেক ত্যাগি নেতারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন- বিএনপির এমন দিন আসবে কখনো চিন্তাও করিনি। তবে কী আওয়ামিলীগ দিয়ে বিএনপির ত্যাগীদের আবার নির্যাতনের স্বীকার করতে চায় মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ? কেন আমরা এতদিন নির্যাতিত ছিলাম? এই দিন দেখার জন্য?

এ বিষয়ে জুলফিকার মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ দেখায়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোচনা সমালোচনার শুরু হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছে; এভাবে আওয়ামিলীগ দ্বারা বিএনপি সাজাতে থাকলে ভোটের মাঠে এর প্রভাব বিস্তার করবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ