আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

রূপগঞ্জে অবৈধ গ্যাসে চলে ডাইনিং কারখানা।

মাহাবুবুর রহমান রনি,রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

রুপগন্জে অবৈধ গ্যাস সংযোগে চলছে এসকল ডাইং কারখানা। খোঁজ নিয়ে দেখা যায় যত্রতত্র গড়ে উঠা ছোটবড় প্রায় অর্ধশত ডাইং কারখানা কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চালিয়ে আসছে। একদিকে কারখানার বর্জ্যের পানি এলাকার আবাদি জমিতে ফসলে ব্যাপক

ক্ষতি সাধন করছে অআরাক দিকে পরিবেশ দূষন করে প্রায় ৭ শত একর ফসলি জমির আবাদ নষ্ট করে যাচ্ছে। অন্যদিকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এলাকার বসবাসরত মানুষ। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা রয়েছে নিরব ভূমিকায়। ডাইং কারখানায় অবৈধভাবে দেয়া সংযোগ প্রতিরোধে কর্তৃপক্ষের কোন তৎপরতা না থাকায় এলাকাবাসী ফুঁসে উঠছে।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলে কারখানাগুলো সরকারের কোন প্রকার অনুমোদন বা লাইসেন্স না থাকায় কারখানাগুলো থেকে সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করে রূপগঞ্জে এ রকম শতাধিক ডাইং কারখানায় অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে।
জানা যায়, রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল সাওঘাট কাতরারচক এলাকায় রয়েছে ফুজি ডাইং কারখানা, মিতা ডাইং কারখানা, গোলাকান্দাইল হাট সংলগ্ন পূর্বপাড়া রয়েছে হাসান ডাইং কারখানা, উত্তর পাড়া এলাকায় জামান ডাইং কারখানাসহ ইউনিয়নের হরগাও ও ডহরগাঁও এলাকার ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড় ঘেষে গড়ে উঠেছে শতাধিক ডাইং কারখানা। এসকল কারখানার বর্জে পানিতে ব্রাহ্মপুত্রের পানি ও এলাকার পরিবেশ দূষনে হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বিশেষ করে গোলাকান্দইল পূর্ব পাড়া হাসান ডাইং ও উত্তরপাড়ার জামান ডাইং কারখানার বিরুদ্ধে অবৈধ গ্যাস সংযোগের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে মালিকপক্ষের সাথে বারবার যোগাযোগ করো তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এসব ডাইং কারখানা পরিবেশ দূষনের জন্য যেমন দায়ী তেমনি ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি করছে। এদের দূষিত বর্জ্যের পানি একদিকে নদীতে ফেলায় নদীর পানি নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে কয়েকটি কারখানার বর্জ্য ফসলী জমিতে সরাসরি গিয়ে পড়ছে। এতে করে গোলাকান্দাইল, সাওঘাট, মাহনা, আধুরিয়া ও দড়িকান্দি এলাকার প্রায় ৭শ একর জমির ফসল বিনষ্ট হচ্ছে। এসব জমিতে সারা বছর কালো পানি জমে থাকার কারনে কোন প্রকার ফসল ফলাতে পারছেনা কৃষকরা। এতে করে কম মূল্যে জমি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে তারা।

গোলাকান্দাইল পূর্বপাড়া ও উত্তরপাড়া এলাকায় গ্রামের ভিতরে হাসান ডাইং ও জামান ডাইং কারখানা গড়ে উঠার ফলে এলাকাবাসী পড়ছে স্বাস্থ্য ঝুকিতে। এলাকার অনেকেই বিভিন্ন প্রকার রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ কারখানার বর্জ্যের পানি সরাসরি টাটকী খালে গিয়ে পড়ছে। এতে গোলাকান্দাইল ও দড়িকান্দি মৌজার কয়েকশ একর জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলেও কোন কর্ণপাত করছেনা কারখানা কর্তৃপক্ষরা। প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ডাইং কারখানা বন্ধের দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে হাসান ডাইং কারখানার মালিক ও জামান ডাইং কারখানার মালিক পক্ষকে জানালেও কোন প্রতিকার না পেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছে এলাকাবাসী।
গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ সুইটি জানান, এলাকায় বিভিন্ন ডাইং কারখানার কেমিক্যাল মিশ্রিত বর্জ্যের পানি পুকুর, ডোবা, খাল-বিলে জমা হচ্ছে। আর এই পানিতে রোগবাহী মশা মাছি সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে চুলকানি ও ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু বৃদ্ধসহ সববয়সী মানুষ। এসকল রোগিদের স্থানীয় হাসপাতালগুলো চিকিৎসা দিতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিয়াকত আলী জানান, শিশুশ্রম বেআইনী। তাছাড়া জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এ ধরনের কারখানা নির্মাণ করে পরিবেশের ক্ষতি করা যাবে না। খুব শীঘ্রই হাসান ডাইং কারখানা ও জামান ডাইং কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এছাড়া শুধু ডাইং কারখানা নয় রূপগঞ্জের সাওঘাটে গড়ে উঠছে অবৈধ কেমিক্যালের দোকান। সেখানে বিস্ফোরক কেমিক্যাল বিক্রি করা হচ্ছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে সাওঘাটে বড় ধরণের দুর্ঘটনা। আব্দুল্লাহ কেমিক্যাল নামের দোকানে অবৈধ কেমিক্যাল বিক্রি করা হয়। তার কোন লাইসেন্স নেই। সরকারকে কর ফাঁকি দিচ্ছে সাওঘাটে অবস্থিত আব্দুল্লাহ কেমিক্যালের পরিচালক ফজলুল হক।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন আমরা দু একদিনের মধ্যেই এ সকল অবৈধ গ্যাস সংযোগকারী কারখানা গুলোতে অভিযান চালাবো।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বোয়ালখালীতে বিলুপ্ত পথে কালোজিরা ধানের আবাদ।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বোয়ালখালীতে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে কৃষকের ঐতিহ্যবাহী কালোজিরা ধানের আবাদ। এক সময় কৃষকরা বিভিন্ন ধানের পাশাপাশি এই কালো জিরা ধানের চাষও করত। অন্যান্য ধানের চেয়ে খরচ বেশি ও ফলন কম হওয়ায় কালো জিরা ধান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষকরা। ফলে এই কালো জিরা ধানের জায়গা দখল করে নিয়েছে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান। আধুনিক উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বীজের অভাবেও এই ঐতিহ্যবাহী ধানের আবাদ হ্রাস পাচ্ছে বলে জানান উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা জানান । তবে সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা কিংবা প্রদর্শনী পাওয়া গেলে ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথ থেকে উত্তরনের সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা।

বুধবার বিকেলে বোয়ালখালীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, আমন মৌসুমে সর্বত্রই চাষ হয়েছে বিভিন্ন জাতের উচ্চ ফলনশীল ধানের। কালো জিরা ধানের চাষ একে বারেই নেই বললেই চলে। হাতে গুনা কয়েকজনে এই চাষ করেছে তাও সীমিত আকারে। তবে সুখের কথা, বিচ্ছিন্নভাবে কম পরিমাণে হলেও বিলুপ্তপ্রায় কালোজিরা ধানের চাষ করেছেন সারোয়াতলীর কৃষক নুরুল আলম , করলডেঙ্গার কৃষক কাওসার, পোপাদিয়া কৃষক আনোয়ার।

তিনি বলেন, একসময় প্রতিটি কৃষক পরিবারের ঐতিহ্য ছিলো সুগন্ধিযুক্ত কালোজিরা, বিন্নী, কাশিয়াবিন্নি, সরুসহ নানান জাতের ধান। এ ধান কাটার সময়কে ঘিরে গ্রাম বাংলা মেতে উঠত নবান্নের উৎসবে। এ চিকন চাল দিয়ে পিঠা-পুলি, পোলাও, বিরিয়ানি, খিচুড়ি, ক্ষির, পায়েস, ফিরনি ও জর্দাসহ আরও সুস্বাদু মুখরোচক নানা ধরনের খাবার তৈরী করে খাওয়ানো হতো পাড়া প্রতিবেশীদের । আবহমান বাংলার ঐতিহ্য অনুযায়ী শ্বশুরবাড়িতে জামাই এলে জামাই পাতে সুগন্ধিযুক্ত চিকন চালের ভাত দিয়ে আপ্যায়ন করা হতো। বর্ণাঢ্য পরিবার থেকে শুরু করে নিন্ম মধ্যবিত্ত হলে ও একবেলা অবশ্যই এই চালের ভাত রান্না করা হতো। সেইসব এখন অতীত দিনের স্মৃতি। ক্রমবর্ধমান খাদ্যের চাহিদা মেটাতে সারাদেশ থেকেই হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতিবান্ধব এ সমস্ত জাতের দেশি ধান।

কৃষকরা জানান , কালোজিরা ধানের ফলন হয় কম। কানিপ্রতি অন্য জাতের ধান যেখানে ৮০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ আড়ি উৎপাদন হয় সেখানে এ জাতের ফলন হয় সর্বোচ্চ ৩০ আড়ি পর্যন্ত। তবে বাজারে দাম দ্বিগুণ পাওয়া যায়। প্রতি কেজি চাল ৮০ থেকে ১২০ টাকা বিক্রি করা যায় । লাভের কথা মাথায় রেখে কৃষকেরা আমন ধানে বেশি আগ্রহী হলে ও এখন ও গ্রামের গৃহস্থ পরিবারের কাছে এ ধানের কদর সবসময়ই রয়েছে। আর তাছাড়া হাট বাজারে এখন আর এই চাল পাওয়া যায় না। এখন প্রায় বিলুপ্তের পথে ঐতিহ্যবাহী এসব সুগন্ধি ধান।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, গত ৫ বছর পূর্বে বোয়ালখালীতে ২৫ হেক্টর কৃষি জমিতে কালোজিরা ধান চাষ হতো। বর্তমানে ৫ হেক্টর জমিতে এ ধানের চাষ করেছেন কৃষকেরা। স্থানীয়ভাবে ‘কালোজিরা ধানের আবাদ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে কৃষি অফিসার মো. শাহানুর ইসলাম বলেন, বর্তমানে আমন ধানের অনেক উচ্চ ফলনশীল জাত রয়েছে, যে গুলোর ফলন অনেক বেশী এবং রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম। অন্যান্য উচ্চ ফলনশীল জাতের তুলনায় কালোজিরা ধানের ফলন কম হয়। ফলন কম হলেও বাজারে এর দাম বেশি থাকে, খরচ বেশি হওয়ার কারণে কৃষকরা এ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।

বোয়ালখালীর ভারাম্বা খালে গিলে খাচ্ছে সড়ক বসতবাড়ি

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বোয়ালখালীতে ক্রমাগত ভাঙনে ভারাম্বা খাল গিলে খাচ্ছে সড়ক ও বসতবাড়ি। উপজেলার ৮ নং শ্রীপুর খরণদ্বীপ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে কর্ণফুলী নদীতে মিশে যাওয়া এ খালটি ১০নং আহল্লা করলডেঙ্গা ইউনিয়নের বৈদ্যানী খাল থেকে নেমে আসে। খালের উভয় পাশে অবস্থিত চৌধুরী পাড়া, বড়ুয়া পাড়া, জলদাসপাড়া, শান্তিবাজার, কুলালপাড়া ও সৈয়দ আমির পাড়ার মানুষের চলাচলের একমাত্র পথ এখন ভাঙনের আতঙ্কে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, খালের পশ্চিমপাশের বড়ুয়া পাড়া, চৌধুরী পাড়া সড়কটি প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ প্রতিদিন প্রায় হাজার মানুষ পায়ে হেঁটে চলাচল করেন এ সড়কে। খালের ভাঙনে কাঁচা সড়কের বড় অংশ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বর্ষায় দুর্ভোগ আর ও প্রকট হয়।

শুধু কাঁচা সড়ক নয়, খালের পূর্ব পাশের পাকা সড়কটিও কয়েক জায়গায় ভেঙে পড়েছে,বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। ঝুঁকিতে রয়েছে কবরস্থান, মসজিদ, মন্দিরসহ ধর্মাবলম্বীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। বড়ুয়া ও জলদাসপাড়ার বেশ কয়েকটি বাড়ি ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

বড়ুয়া পাড়ার বাসিন্দা পলাশ বড়ুয়া, ননা বড়ুয়া, মিলন বড়ুয়া এবং জলদাসপাড়ার রাখাল দাশ ও রসনা দাশ জানান, বাড়িঘর খালের ভাঙনে শেষ হয়ে যাচ্ছে। পথে ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। সরকার দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বহু মানুষ গৃহহীন হবে। কালিছড়ি মন্দির এলাকার রতন মাস্টার বলেন, ‘দেড় কিলোমিটার সড়কটি পাকা হলে ১০ হাজার মানুষের ভোগান্তি কমবে।

শ্রীপুর খরণদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান হাসান চৌধুরী বলেন, ‘শ্রীপুর চৌধুরী পাড়া, জলদাসপাড়া, পশ্চিম জৈষ্ঠপুরা বড়ুয়া পাড়া, দক্ষিণ কুড়াল পাড়ার অর্ধেক অনেক জায়গাই খালের ভাঙনে বিলীন হয়েছে। রসনা বড়ুয়া, শিবু বড়ুয়া ও কালিছড়ি মায়ের মন্দির পুরোপুরি নদীগর্ভে চলে গেছে। গত বছর সৈয়দ আমির পাড়ার সড়ক সংস্কারের সময় গাইড ওয়াল ভেঙে পড়ে। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে ২১০ মিটার এলাকায় ব্লক বসানো হয়। এখনো ৭০০ মিটার অংশ ভাঙন ঝুঁকিতে আছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।

উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুন্নবী চৌধুরী বলেন, খালের দুই পাশের ভাঙনরোধ ও সড়ক পাকাকরণ এখন জরুরি। ইতিমধ্যে অনেকের বাড়িঘর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভাঙনে পড়েছে। তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানান।

উপজেলা সহকারি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফারুক জানান, ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্লকের কাজ চলমান রয়েছে। ব্লকের কাজ শেষ হলে শান্তি বাজার থেকে আমির পাড়া ৭০০ মিটার পর্যন্ত সড়কের কাজ শুরু হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ