আজঃ মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর, ২০২৫

রাজশাহীতে ৭ মামলার আসামি বিপ্লব গ্রেপ্তার।

:মোঃ গোলাম কিবরিয়া রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি

৭ মামলার আসামি হিসেবে আত্মগোপনে থাকা রাজশাহীর বাঘা উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ফকরুল হোসেন বিপ্লব (৩২)–কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। পাকুড়িয়া ইউনিয়নের জোতনশী এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিপ্লব ওই গ্রামের মহসিন আলীর জামাতা এবং বাঘা পৌরসভার মিলিক বাঘা (পন্ডিতপাড়া) এলাকার বাসিন্দা আলতাফ হোসেনের ছেলে।

পুলিশ জানায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তার বিরুদ্ধে নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ, হামলা, ভাঙচুর, চাঁদা দাবি এবং মারধরের অভিযোগে বিএনপির পক্ষ থেকে চারটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা হওয়ার পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সিফাত রেজা জানান, বিপ্লবের বিরুদ্ধে বিএনপির করা চারটি মামলার পাশাপাশি অস্ত্র ও মাদকসহ আরও তিনটি মামলা রয়েছে, যার সংখ্যা মোট সাতটি। রিমান্ড চাওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রয়োজন হলে আবেদন করা হবে।

বাঘা পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুরুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, বিপ্লব স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদ পাওয়ার আগেই তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকের মামলা ছিল। পরবর্তীতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর আস্থাভাজন হয়ে তিনি এ পদ লাভ করেন এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে দাপট দেখাতে থাকেন।

তিনি আরও জানান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কারাগারে থাকাকালীন সময়ে তার মুক্তির দাবিতে পোস্টার লাগানোর সময় বিপ্লবসহ আওয়ামী লীগের নেতা সামিউল ইসলাম নয়ন, আনোয়ার হোসেন মিল্টন এবং তাদের সহযোগীরা তাকে ও অন্যান্য পোস্টার লাগানো কর্মীদের মারধর করে এবং পোস্টার লাগাতে বাধা দেয়। এরপর পুলিশ ডেকে তাদের গ্রেপ্তার করিয়ে মামলা করে। পুলিশ বিষয়টি জানলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি।

বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আ. ফ. ম. আসাদুজ্জামান বলেন, বিপ্লব আত্মগোপনে থেকে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছিলেন। এমন খবরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে এবং শনিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।এ বিষয়ে আরও অধিক তদন্ত চলছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

নেত্রকোনায় হুইল চেয়ার বিতরণ।

নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গণশুনানীতে অংশ নিয়ে গত বুধবার তিনজন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরিবারের পক্ষ থেকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামানের নিকট হুইল চেয়ারের আবেদন করেন।

এরই প্রেক্ষিত মঙ্গলবার সকালে প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তিনজন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরিবারের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম সরদার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুখময় সরকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুন মুন জাহান লিজা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শামীমা ইয়াসমিন, সর্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আসমা বিনতে রফিক, প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা সঞ্জীব চক্রবর্তী প্রমুখ।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, প্রতি বুধবার জেলার বিভিন্ন এলাক হতে আগত সাধারন নাগরিকদের জন্য গণশুনানীর কার্যক্রম চলমান থাকবে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যাক্তিদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত থাকবে।

গাবতলীর তোজাম্মেল হত্যা : বগুড়ায় দশ আসামির তিনজন ফাঁসি, তিনজনের যাবজ্জীবন

বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় ২০১৭ সালে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী তোজাম্মেল হোসেন হত্যা মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। ১০ আসামির তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড (ফাঁসি), তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একজন খালাস পেয়েছেন। রায়ে দণ্ডিত ছয় আসামির প্রত্যেকের একলাখ টাকা করে অর্থদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুজন আসামি অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় শিশু আদালতে তাদের বিচার চলছে।

হত্যা মামলার সাত বছর পর মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে রায় দেন বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শাহজাহান কবির। রায় ঘোষণার সময় একজন আসামি বাদে সবাই অনুপস্থিত ছিলেন।

পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন বিচারক। তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল বাছেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি- বাবুল প্রামাণিক ওরফে আবুল কালাম আজাদ, মনিরুজ্জামান মিশু, মো. মানিক। যাবজ্জীবন দণ্ডিত তিন আসামি- দেলোয়ার হোসেন দুলু, মাজেদুর রহমান পিন্টু এবং আশিক হাসান। মামলার আসামি শান্ত শাকিদারকে অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

রায়ে বলা হয়, হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত তিন আসামির গলায় ফাঁসি দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কার্যকর করা হবে না। প্রয়োজনীয় আদেশের জন্য হাইকোর্ট বিভাগে রায়ের নথিপত্র জমা দেওয়ার আদেশ দেন বিচারক। এছাড়া জরিমানা পরিশোধ না করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির প্রত্যেককে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর গাবতলী উপজেলার দূর্গাহাটা ইউনিয়নের বটিয়াভাঙ্গা দক্ষিণপাড়া এলাকায় তোজাম্মেল হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। একটি জমি কেনাকে কেন্দ্র করে বিবাদ ও পূর্ব শত্রুতার জেরে নৃশংস হত্যার ঘটনা ঘটে, জানিয়েছিল পুলিশ। নিহত তোজাম্মেল দূর্গাহাটা গ্রামের মৃত ওসমান আলীর ছেলে। তিনি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদের পরাজিত প্রার্থী ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল বাছেদ জানান, হত্যাকান্ডের পরের দিন নিহতের ভাই মমিন মোল্লা বাদী হয়ে ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার রায়ে বাদীপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামিদের অধিকাংশই পলাতক থাকায় বাদীর পরিবার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ