আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

বিজিবি সুনামের সাথে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হচ্ছে: মহাপরিচালক

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার ক্ষেত্রে বিজিবি অত্যন্ত বিশ্বস্ততা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বর্ডারগার্ড বাংলাদেশের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতস্থ দেশের একমাত্র প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডারগার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজের ১০৩ তম রিক্রুট ব্যাচের শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজে তিনি এ কথা বলেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯ টায় বিজিবি মহাপরিচালককে সশস্ত্র সালাম প্রদানের মধ্য দিয়ে ১০৩তম রিক্রুট ব্যাচের নবীন সৈনিকদের শপথ গ্রহণ ও প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।

বিজিবির বীর উত্তম মজিবর রহমান বিশাল প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি অতিথি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী নবীন সৈনিকদের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। এ সময় বিজিটিসিএন্ডসি’র কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গাজী নাহিদুজ্জামান প্রধান অতিথির সাথে ছিলেন।

মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী তৎকালীন ইপিআরের ৮১৭ জন অকুতোভয় বীর শহীদদেরকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। একইসাথে ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ সকল ছাত্র-জনতাকেও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং আহতদের আশু আরোগ্য কামনা করেন।

বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ খ্যাত এই বাহিনী বাংলাদেশের ৪৪২৭ কিলোমিটার সুদীর্ঘ সীমান্ত সুরক্ষাসহ সীমান্ত ভূমি ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান, মাদক ও অস্ত্রসহ অন্যান্য অবৈধ পণ্যের চোরাচালান প্রতিরোধ, নারী ও শিশু পাচার রোধসহ যেকোনো ধরণের আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। শুধু তাই নয়, দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার ক্ষেত্রেও বিজিবি অত্যন্ত বিশ্বস্ততা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হচ্ছে।

নবীন সৈনিকদের উদ্দেশ্যে বিজিবি মহাপরিচালক ‘মনোবল, ভ্রাতৃত্ববোধ, শৃঙ্খলা ও দক্ষতা’ বিজিবির এই চারটি মূলমন্ত্রে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত হয়ে অর্পিত যেকোনো দায়িত্ব সুশৃঙ্খল ও সুচারুরূপে পালনের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, শৃঙ্খলা হচ্ছে সৈনিক জীবনের অলঙ্কার। আদেশ ও কর্তব্য পালনে যে কখনো পিছপা হয় না সেই প্রকৃত সৈনিক। সততা, বুদ্ধিমত্তা, নির্ভরযোগ্যতা, আনুগত্য, তেজ ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি। নবীন সৈনিক হিসেবে এই সকল পেশাগত ও চারিত্রিক গুণাবলি অর্জন করতে হবে। তাহলেই কেবল পূর্বসূরীদের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে দেশের সেবায় নিজেদেরকে নিয়োগ করতে পারবে। দেশ সেবার মহান কার্যভার গ্রহণের এই মাহেন্দ্রক্ষণে নবীন সৈনিকদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান বিজিবি মহাপরিচালক।

নবীন নারী সৈনিকদের উদ্দেশ্যে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মহিয়সী নারীদের অংশগ্রহণ, অবদান ও আত্মত্যাগ অবিস্মরণীয়। আজ নারীরা বিভিন্ন অঙ্গনে যথাযথ যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। আজ নবীন নারী সৈনিকরা দেশ মাতৃকার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃপ্ত শপথ নিয়ে সৈনিক জীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। নবীন নারী সৈনিকরা বিজিবির সার্বিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় আরো গতিশীল ভূমিকা রাখাসহ বাহিনীর সুনাম-সুখ্যাতি বৃদ্ধিতে সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে নিরলসভাবে কাজ করবে বলে বিজিবি মহাপরিচালক আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিজিবি মহাপরিচালক নবীন সৈনিকদের তেজদীপ্ত কুচকাওয়াজের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। তিনি তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, বৃহত্তর কর্মজীবনে কাজের ব্যাপ্তি ও পরিধি আরো বিস্তৃত হবে। নবীন সৈনিকরা যখন সীমান্তে নিয়োজিত থাকবে তখন তাদের সততা, নিষ্ঠা ও পেশাগত দক্ষতার ওপরই নির্ভর করবে এ বাহিনীর ভাবমূর্তি ও গৌরব। প্রতিপক্ষ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে কোনো অবস্থাতেই নমনীয় আচরণ প্রদর্শন না করার জন্য নবীন সৈনিকদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান বিজিবি মহাপরিচালক। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, দেশ মাতৃকার অখণ্ডতা রক্ষায় নবীন সৈনিকেরা প্রয়োজনে তাদের জীবন দেবে তবু দেশের এক ইঞ্চি মাটি হাতছাড়া হতে দিবে না। নবীন সৈনিকেরা কখনো দেশবাসীকে হতাশ ও নিরাশ করবে না। তাদের দেয়া নিশ্চিদ্র নিরাপত্তাই দেশের মানুষের নির্বিঘ্ন ঘুম নিশ্চিত করবে। এই নবীন সৈনিকরাই হবে সীমান্তের নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক।

বিজিবি মহাপরিচালক ১০৩তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ এবং নান্দনিক সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের জন্য বিজিটিসিএন্ডসি’র কমান্ড্যান্ট ও সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ এবং বিভিন্ন বিষয়ে সেরা নবীন সৈনিকদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। সবশেষে তিনি নবীন সৈনিকদের সর্বাঙ্গীন মঙ্গল এবং বিজিবির উত্তরোত্তর সাফল্য ও অব্যাহত অগ্রযাত্রা কামনা করেন। ভাষণ প্রদান শেষে বিজিবি মহাপরিচালক ১০৩তম রিক্রুট ব্যাচের সেরা চৌকস রিক্রুট হিসেবে ১ম স্থান অধিকারী বক্ষ নম্বর-৫৭৪ সাইফ মিয়া এবং অন্যান্য বিষয়ে সেরা সৈনিকদের হাতে তাদের সফলতার জন্য ক্রেস্ট তুলে দেন। এরপর নবীন সৈনিকদের চৌকসদল কর্তৃক বিজিবি মহাপরিচালককে সশস্ত্র সালাম প্রদানের মাধ্যমে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। পরিশেষে বিজিবির প্রশিক্ষিত সদস্যদের অংশগ্রহণে আকর্ষণীয় ট্রিক ড্রিল এবং বিজিবির সুসজ্জিত বাদকদল কর্তৃক মনোজ্ঞ ব্যান্ড ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হয়।

প্রসঙ্গত, ১০৩তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ গত ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে শুরু হয়। দীর্ঘ ২৪ সপ্তাহের কঠোর ও কষ্টসাধ্য প্রশিক্ষণ সফলতার সাথে সম্পন্ন করে ৬৫৮ জন পুরুষ ও ৩৬ জন নারী সর্বমোট ৬৯৪ জন রিক্রুট আজ সমাপনী কুচকাওয়াজের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে সৈনিক জীবনে পদার্পন করলো। প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বিজিবি’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসন ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিজিবির অফির্সাস,পরিবারের সদস্যবৃন্দ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বর্ডারগার্ড পাবলিক স্কুলের ছাত্র ছাত্রী শিক্ষক তাদের অভিভাবকগণ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বোয়ালখালীতে বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে ৩২ টি চেক বিতরণ

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের উদ্যোগে বোয়ালখালীতে ৩২ টি বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানে চেক বিতরণ করা হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় শাকপুরা প্রজ্ঞাবংশ বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ উপলক্ষে এক সভা বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের ট্রাষ্টি রূবেল বড়ুয়া হৃদয় এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন- চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ঐক্য ফ্রন্ট বোয়ালখালী উপজেলা শাখার সভাপতি পল্টু কান্তি বড়ুয়া ও সমাজকর্মী রাজীব বড়ুয়ার উপস্থাপনায় এতে আশির্বাদক ছিলেন- শাকপুরা সার্বজনীন তপোবন বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত বসুমিত্র মহাস্থবির, ভদন্ত বিপস্সী মহাথের, ভদন্ত পরমানন্দ মহাস্থবির, ভদন্ত দীপানন্দ থেরো। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন -চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব আজিজুল হক চেয়ারম্যান,

জেলার সদস্য মোঃ শওকত আলম, বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক হাজী ইছহাক চৌধুরী, সাবেক সদস্য সচিব হামিদুল হক মান্নান চেয়ারম্যান, পৌরসভা বিএনপি সাবেক আহবায়ক শহীদুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক প্রচার সম্পাদক সরোয়ার আলমগীর, বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, শওকত আলী চেয়ারম্যান, আবদুল আওয়াল মঞ্জু, শাকপুরা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম খান, পৌরসভা বিএনপি নেতা হাজী আবু আকতার, বোয়ালখালী উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মোঃ ইকবাল হোসেন, প্যানেল চেয়ারম্যান হাসান চৌধুরী, শ্রমিক দল নেতা মোঃ মোঃ ইলিয়াসসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ,

বোয়ালখালী সম্মিলিত বৌদ্ধ পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী জয়সেন বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ ঐক্য ফাউন্ডেশন বোয়ালখালী উপজেলা শাখার সভাপতি বিকাশ বড়ুয়া, বৈদ্যপাড়া পঞ্চরত্ন স্মৃতি পরিষদের সভাপতি দেশপ্রিয় বড়ুয়া, প্রদীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ঐক্য ফ্রন্ট মহানগর-জেলা ও উপজেলা শাখার নেতা কমল জ্যোতি বড়ুয়া,তাপস বড়ুয়া , সুমন বড়ুয়া, রনি বড়ুয়া চৌধুরী, বিপ্লব বড়ুয়া, প্রকৌশলী দিক্ষিত বড়ুয়া, অর্ণব বড়ুয়া,সুমন বড়ুয়া ছোটন বড়ুয়া,পিপলু বড়ুয়া সহ বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার/ মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ বলেছেন- বাংলাদেশ সম্প্রতির মেলবন্ধ, এদেশে সকল ধর্মের সহবস্থান ছিল -আছে- থাকবে। তাই ধর্মীয় সৌহার্দ্য বজায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এরিই ধারাবাহিকতায় আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট আমাকে নির্বাচিত করুন আমি আপনাদের সকলের আশির্বাদ প্রার্থী। তিনি এসময় বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের ট্রাস্টি রূবেল বড়ুয়ার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন এখন সরকারী টাকা দপ্তরে গিয়ে আনতে হয়না, রূবেল বড়ুয়াই সরকারী টাকা নিয়ে আপনাদের নিকট হাজির। তার এ কর্মযজ্ঞকে আপনাদের আশির্বাদে রাখতে হবে।

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক গ্রেফতার

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। কথিত প্রেমিকের নাম বুলবুল (২০)। তিনি উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চাচকিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী ফকিরের ছেলে।রবিবার(৭ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে চাচকিয়া বিলের মধ্য নিয়ে গিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী কে তার প্রেমিক বুলবুল সহ বন্ধুরা মিলে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় ধর্ষণ মামলা রজ্জু করেন। মামলায় তথিত প্রেমিক বুলবুল সহ ৪ জন কে আসামি করা হয়।

ধর্ষণের খবর পেয়ে এএসপি সার্কেল (চাটমোহর) আবু বক্কার সিদ্দিক ও থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বুলবুল এর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার দিন গত শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রীকে চাচকিয়া বিলের মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে বুলবুল তার বন্ধু সোহানুজ্জামান ও তাওহিদ মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তারা মেয়েটির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এবং ঘটনাটি কাউ কে জানালে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরদিন শনিবার দুপুরে ঘটনা জানার পর ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত বুলবুল কে দুপুরে পাবনা আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাবনা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ