আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

বৃষ্টির প্রভাবে সবজি-মাছ’র দাম চড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৃষ্টির প্রভাবে সবজি-মাছ’র দাম চড়া

ছবি-৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: মাছ থেকে মুরগি, সবজি থেকে গরুর মাংস, চাল থেকে ফলের বাজার-সবখানেই শুধু দাম বাড়ছে। আগের সপ্তাহের চেয়ে অনেক পণ্যেরই দাম বেড়েছে। দাম বাড়ার এই হার ক্রমাগত দেখা যাচ্ছে গত একমাস ধরে।
বিশেষ করে এক সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টির মধ্যে ‘সরবরাহ সংকটে’ বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারে সবজির দাম বেড়েছে। সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ কমে দাম বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে গভীর সাগরে মাছ ধরার জন্য জেলেরা যেতে পারছেন না। এর ফলে বাজারে সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ কমে গেছে। ব্রয়লার মুরগি, গরু-ছাগলের মাংস, চালের বাজার এখনো চড়া আছে। তবে ডিম, আলু, পেঁয়াজসহ মুদিপণ্যের দর আগের মতো আছে। নগরীর বকশিরহাট ও সাবএরিয়া কাঁচাবাজার এবং বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকানে দর যাচাই করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এতদিন লইট্যা, পোয়া, চিংড়ি, রূপচাঁদা, বড় কোরাল, ছোট কোরাল, ফাইস্যা, ছুরিমাছ, করতি, সুরমাসহ সামুদ্রিক বিভিন্ন জাতের মাছের দাম ক্রেতার নাগালের মধ্যে আসে। কিন্তু বিপত্তি শুরু হয়েছে জুলাইয়ের শেষভাগে এসে।বাজারে আবারও সামুদ্রিক মাছের দাম বেড়ে গেছে। বাজারে লইট্যা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, ফাইস্যা ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, পোয়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, শাপলা পাতা মাছ ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, কোরাল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, রুপচান্দা ৩৫০ থেকে ৭০০ টাকা, আইড় ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকা, চিংড়ি (বাগদা ও গলদা) সাইজভেদে ৬৫০ থেকে ১২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
আর বরাবরের মতো ইলিশ সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরেই আছে। খুচরা বাজারে এক-দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০০ থেকে ২৪০০ টাকায়। ৫০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৫০০ টাকা, এক কেজির কিছু কম ওজনের ইলিশ ১৮০০-২০০০ টাকা এবং জাটকা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়। দুই-আড়াই কেজি ওজনের বড় ইলিশ মাছ প্রতি কেজি তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সব বাজারে বড় ইলিশ নেই।

এছাড়া খাল-নদী ও চাষের মাছের মধ্যে রুই ও কাতলা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০, পুঁটি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, নাইলোটিকা ২২০ থেকে ২৮০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৪৫০, কৈ ২০০ থেকে ২২০ এবং তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস মিলছে ২২০ থেকে ২৮০ টাকায়।
অন্রদিকে বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে। ৭০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে কিনতে হচ্ছে প্রতি কেজি বিভিন্ন ধরনের সবজি। কাঁকরোল, বরবটি, ঝিঙা, পটল, ঢেঁড়শ ৭০ থেকে ৯০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলা ও বেগুন কেজিতে অন্তত ৩০ টাকা বেড়ে ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিষ্টি কুমড়া ৩০-৪০ টাকা, পেঁপে ও লাউ ৬০ টাকা, শিম ৮০ টাকা, গাজর দেশি ৮০ টাকা, চায়নার ১৩০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ১২০ টাকা, কচুর লতি ১০০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, শালগম ৭০ টাকা, মূলা ৬০ দরে বিক্রি হয়েছে। কাঁচামরিচ ১২০-১৪০ টাকা, ধনেপাতা ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।মুন্সীগঞ্জের আলু ২৫ টাকা, বগুড়ার লাল আলু ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শাকের মধ্যে কচু শাক ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া শাক ৫০ টাকা, পুঁই শাক ৪০ টাকা ও লাল শাক ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সাবএরিয়া বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. জাহাঙ্গীর বলেন, আমরা রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়ত থেকে পাইকারি দরে কিনে এখানে খুচরায় বিক্রি করি। বৃষ্টির জন্য আড়তে সবজি আসছে না। আগের যেসব সবজি আছে সেগুলো আড়তদাররা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। বাড়তি দামে কিনে আমাদেরও বাড়তি দামে বেচতে হচ্ছে।

এছাড়া বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩১০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৮০ টাকা, সাদা লেয়ার ও লাল লেয়ার মুরগি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। অন্যান্য মাংসের মধ্যে গরুর মাংস ৮৫০ থেকে ৯৫০ টাকা, খাসি ও পাঁঠা ছাগলের মাংস ১২০০ থেকে ১২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।ডিমের দাম অপরিবর্তিত আছে। ফার্মের মুরগির ডিম ডজনপ্রতি ১৩০ টাকা, দেশি মুরগি ২৪০ টাকা ও হাঁসের ডিম ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের দরও আগের মতো চড়া আছে। খুচরায় সরু চালের মধ্যে ডায়মন্ড, মঞ্জুর, সাগর, রসিদ- এসব ব্র্যান্ডের মিনিটেক চাল প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভালো মানের মিনিকেট আতপ মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের চাল বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। স্বর্ণা ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ জাতের মাঝারি মানের চাল ৬০ থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।খুচরা বাজারে মুদি পণ্যের দাম অপরিবর্তিত আছে। কেজি প্রতি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, দেশি রসুন ১২০ টাকা, চায়না রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, চায়না আদা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, ভারতীয় আদা ১২০ দরে বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া, প্রতি কেজি ছোট মসুর ডাল ১৩০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১১০ টাকা, মাষকলাই ডাল ১৮০ টাকা, ডাবলি ৬০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা, কাজু বাদাম এক হাজার ৭০০ টাকা, পেস্তা বাদাম দুই হাজার ৭০০ টাকা, কাঠ বাদাম এক হাজার ২২০ টাকা, কিশমিশ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, দারুচিনি ৫২০ টাকা, লবঙ্গ এক হাজার ৪০০ টাকা, কালো গোলমরিচ এক হাজার ৩০০ টাকা, সাদা গোলমরিচ এক হাজার ৬০০ টাকা, জিরা ৬০০ টাকা, প্যাকেট পোলাও চাল ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, খোলা পোলাও চাল মানভেদে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।আর প্রতি কেজি প্যাকেটজাত সাদা চিনি ১২৫ টাকা, খোলা সাদা চিনি ১২০ টাকা, খোলা লাল চিনি ১৪০ টাকা, প্যাকেট লাল চিনি ১৭০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৪০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ৯০ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৮০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৫০ টাকায় দরে বিক্রি হয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম ও চাঁদপুরে অভিযানে তিনমাসে ২৬২১টি কচ্ছপ উদ্ধার

ছবি-১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম থেকে একের পর এক পাচার হচ্ছে ‘প্রকৃতির ঝাড়ুদার’ কচ্ছপ। চট্টগ্রাম মহানগরের রিয়াজউদ্দিন বাজার কচ্ছপ পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট। বিশেষ করে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে কচ্ছপের মাংস ও স্যুপ জনপ্রিয় এবং বিলাসবহুল খাবার হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। কচ্ছপের মাংসের চড়া দাম থাকায় পাচারকারীরা আর্থিক লাভের আশায় বাংলাদেশ থেকে কচ্ছপ সংগ্রহ করে। বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া কচ্ছপের গন্তব্য চীন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, হংকং এবং সিঙ্গাপুর। সবচেয়ে বড় বাজার চীনে।

খাবার ছাড়াও চীনে কচ্ছপের মাংস ও খোলস দিয়ে বিভিন্ন ধরনের টনিক বা ওষুধ তৈরি করা হয় বলে সূত্রে জানা গেছে। এদিকে গত তিনমাসে ২৬২১টি বিভিন্ন প্রজাতির কচ্ছপ উদ্ধার করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। এরমধ্যে নভেম্বর মাসে ৫৭২, অক্টোবরে ৪০৯ ও সেপ্টেম্বরে ১৬৪০টি।জানা গেছে, ‘বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২’ অনুযায়ী কচ্ছপ শিকার, হত্যা, বিক্রি ও পাচার দণ্ডনীয় অপরাধ। এই অপরাধে জেল ও জরিমানার বিধান রয়েছে। পাচারকারী চক্র বিপন্ন করে তুলছে কচ্ছপের জীবনচক্র।

বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, গত তিনমাসে চট্টগ্রাম ও চাঁদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২৬২১টি কচ্ছপ উদ্ধার করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। এরমধ্যে গত ২৫ নভেম্বর মিরসরাই বড় তাকিয়া বাজার এলাকা থেকে ১৭ কেজি, মিরসরাই বাজার থেকে ২২টি, বড় তাকিয়া বাজার থেকে ২৯ কেজি, মিরসরাই হাদি ফকিরহাট থেকে ৫২টি, ২৬ নভেম্বর মিরসরাই মিঠাছড়া বাজার থেকে ১৯ কেজি, নয় দুয়ারিয়া বাজার থেকে ২১ কেজি, বাঁশখালীর বাণীগ্রাম থেকে ৩৪টি, ১৯ নভেম্বর চাঁদপুরের দোয়াভাঙ্গা এলাকা থেকে ২৫কেজি, শাহরাস্তি সূচিপাড়া থেকে ৫০ কেজি, ১৮ নভেম্বর মিরসরাই হাদী ফকির হাট থেকে ২ কেজি, বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ২০ কেজি, চাঁদপুর সদর বড় মসজিদ এলাকা থেকে ৪২টি, চট্টগ্রাম থেকে নেয়ার পথে কুমিল্লা এলাকা বাস থেকে ৪০ কেজি, ২১ অক্টোবর চাঁদপুর সদর বড় মসজিদ এলাকা থেকে ৪২টি, ১৪ অক্টোবর চাঁদপুরের শাহরাস্তির শিতোশী এলাকা থেকে ২০ কেজি, ১৫ অক্টোবর চাঁদপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে ১০০ কেজি, ১৩ অক্টোবর নোয়াখালীর সূবর্ণচর এলাকা থেকে ৩০ কেজি, ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা থেকে পাচার করার সময় যাত্রাবাড়ি ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় বাস থেকে ১২ কেজি কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার করা কচ্ছপের মধ্যে সুন্ধি প্রজাতির কচ্ছপের সংখ্যা বেশি। ধুম ও কড়ি প্রজাতির কচ্ছপের সংখ্যাও রয়েছে। এর আগে পাচারের সময় গত ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক যাত্রীর লাগেজ থেকে ৯২৫টি কচ্ছপ উদ্ধার করে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। কচ্ছপগুলো মালেয়েশিয়া নেয়া হচ্ছিল।

বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট কর্মকর্তারা জানান, দেশের সীমানা পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত চীন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, হংকং এবং সিঙ্গাপুর যাচ্ছে কচ্ছপের চালান। দেশে খাল-বিল ও হাওড়ে প্রচুর পরিমাণ মিঠাপানির কচ্ছপ দেখা যায়। এর মধ্যে ‘সুন্ধি’ কচ্ছপ অন্যতম। অবাধ শিকার ও আন্তর্জাতিক পাচারকারী চক্রের কারণে প্রাণীটি বিপন্ন হয়ে পড়েছে। কচ্ছপকে বলা হয় ‘প্রকৃতির ঝাড়ুদার’। এরা মরা মাছ ও পচা আবর্জনা খেয়ে পানি পরিষ্কার রাখে। কচ্ছপ হারিয়ে গেলে জলজ বাস্তুতন্ত্র ভেঙে পড়বে এবং পানির গুণাগুণ নষ্ট হবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে কচ্ছপের চালান প্রথমে অবৈধভাবে ভারতে পাচার হয়। বিশেষ করে যাশোর (বেনাপোল), সাতক্ষীরা(ভোমরা) আগরতলা এবং সিলেটের সীমান্ত এলাকা দিয়ে পাচার হয়। ভারতে পৌঁছানোর পর সেখান থেকে আন্তর্জাতিক পাচারকারী চক্রের মাধ্যমে মিয়ানমার বা নেপাল হয়ে কচ্ছপগুলো চীন ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে পাঠানো হয়। বাংলাদেশে প্রায় ২৫-৩০ প্রজাতির কচ্ছপ ও কাছিম রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাচার হয় সুন্ধি কচ্ছপ। এটি আকারে ছোট এবং সহজলভ্য হওয়ায় এর পাচার হয় সবচেয়ে বেশি। খোলসের চাহিদার কারণে কড়ি কচ্ছপ ও মাংসের জন্য পাচার হয় ধুম কচ্ছপ। চট্টগ্রামে যেসব এলাকা থেকে কচ্ছপ পাচার করা হয় তা হলো, বান্দরবান ও রাঙামাটি সীমান্তবর্তী এলাকা, ফটিকছড়ি, বাঁশখালী এবং মিরসরাই।

নগরীর রিয়াজ উদ্দিনবাজার কচ্ছপ পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসাবে ব্যবহার হয়।বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক অসীম মল্লিক জানান, অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত কচ্ছপ পাচারের মৌসুম। ডোবা, পুকুর কিংবা নদীতে এ সময় পানি কম থাকায় পাচারকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠে। চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজার কচ্ছপ পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট। দেশে ২৫ থেকে ৩০ ধরনের কচ্ছপ রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি পাচার হয় সুন্ধি কচ্ছপ। কড়ি ও ধুম কচ্ছপও মাঝে মাঝে পাচার হয়। অসীম মল্লিক আরো জানান, সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামে আমরা বেশ কয়েকটি অভিযান চালিয়েছি। ঢাকা থেকে গিয়ে অভিযান চালানো অনেকটা সময় সাপেক্ষ। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে।

এফ. এ. ক্রিয়েটিভ ফার্মের যুগপূর্তি উদযাপন নিরবিচ্ছিন্ন সেবা পাচ্ছে প্রায় ১ হাজারেরও অধিক গ্রাহক —–

দেশের অন্যতম জনপ্রিয় সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এফ. এ. ক্রিয়েটিভ ফার্ম লিমিটেড তাদের প্রতিষ্ঠার এক যুগপূর্তি উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী কাস্টমার মিটআপ ও যুগপূর্তি অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।


গত রোববার সকালে আগ্রাবাদ আকতারুজ্জামান সেন্টারে কোম্পানির কর্পোরেট অফিসে খতমে কোরআন এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় এবং পরবর্তীতে কেক কাটার মধ্য দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রথম দিন কেক কেটে যুগপূর্তি উৎসবের শুভ সূচনা করেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট কাজী আবুল মনছুর।


এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক চাঁটগার চোখ এর সম্পাদক ও প্রকাশক একে এম জহুরুল ইসলাম,সাপ্তাহিক পূর্ববাংলা এর সম্পাদক ও প্রকাশক এম আলী হোসেন, দৈনিক গিরিদর্পণ এর পরিচালনা সম্পাদক এম কে মোমিন, বাংলাদেশ টেলিভিশন বিটিভি’র অনুষ্ঠান পরিচালক ও মোনালিসা মিউজিক এর কর্নধার ফরিদ বঙ্গবাসী, সাপ্তাহিক আজকের সত্যসংবাদ এর সম্পাদক ও প্রকাশক হারুন অর রশিদ, কর্ণফুলি নিউজ সম্পাদক ও প্রকাশক সাইফুল ইসলাম, অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি, রেয়াজউদ্দিন বাজার শাখার ব্যবস্থাপক আনিসুল মোস্তাফা, নকশায়ন প্রোপার্টিস এর চেয়ারম্যান ইঞ্জিয়ার স্নেহশীস দে, গ্রীণ ইন্টারন্যাশনাল এর সিইও বেলাল হোসেন, এমটিআই ট্রাভেল ইন্টারন্যাশনাল এর প্রোপ্রাইটর তাহিদ আলাল, স্যাম শিপিং এজেন্সি ও ইন্টারমেরিন শিপ সার্ভিস এর ব্যবস্থাপনা অংশীদার ইমরানুল হকসহ অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ।


দ্বিতীয় ও সমাপনী দিনে কেক কেটে সবার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন দৈনিক দিনকাল এর চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান হাসান মুকুল।এ সময় উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক ভোরের আকাশ আবাসিক সম্পাদক কামাল পারভেজ, সনাতনী দর্পণ এর সম্পাদক ও প্রকাশক নিতাই ভট্টাচার্য, দৈনিক একত্তর বাংলাদেশ সম্পাদক ও প্রকাশক শেখ সেলিম, দৈনিক ঘোষণা এর ব্যুরো প্রধান মুজিব উল্লাহ তুষার,
দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ এর স্টাফ রিপোর্টার সাহাবউদ্দিন, ভয়েস চট্টগ্রাম এর চেয়ারম্যান ফরমান উল্যাহ, অফিসার ইউনিয়ন ব্যাংক রকিবুল ইসলাম সায়েম, কায়সার মাহমুদ, সহকারি পরিচালক সিল্ক রোড় ট্রেডিং এন্ড ম্যানুফ্যাকচারিং লি: সহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

এফ. এ. ক্রিয়েটিভ ফার্ম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরহাদ আমিন ফয়সল বলেন, দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দেশ-বিদেশের গ্রাহকদের রেগুলার ও কাস্টম সফটওয়্যার নির্মাণ, শতাধিক স্বনামধন্য পত্রিকা ও প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপ ডিজাইন-ডেভেলপমেন্ট এবং ডোমেইন–হোস্টিংসহ বিভিন্ন আইটিইএস সেবা দিয়ে আসছে এফ. এ. ক্রিয়েটিভ ফার্ম লিমিটেড। ২০২৬ সালের মধ্যে আমরা মধ্যম আয়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য নামমাত্র সাবস্ক্রিপশনে একটি ঝগঊ SME Application আনতে যাচ্ছি, যাতে প্রযুক্তি সেবার বাইরে থাকা ব্যবসায়ীরাও সহজে প্রযুক্তির সুবিধা নিতে পারেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে প্রায় ১ হাজারেরও অধিক গ্রাহককে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে আসছে আমাদের প্রতিষ্টান, আগামীতেও আরও উন্নত ও মানসম্মত গ্রাহকসেবা প্রদানে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।দুই দিনের এই আয়োজনে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারী, গ্রাহক, গণমাধ্যমকর্মী এবং সম্মানিত আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ