আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

বড়গাঙ শিশুসদন ও বড়গাঙ বৌদ্ধ বিহারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন।

প্রেস রিলিজ

 

চট্টগ্রামের বিশ্বমৈত্রি বৌদ্ধ বিহার ও কর্ণফুলী বড়গাঙ বৌদ্ধ বিহারে অবৈতনিক অধ্যক্ষ হিসাবে বিজয়ানন্দ ভিক্ষুকে জড়িয়ে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শুক্রবার ৫ সেপ্টেম্বর বিকালে চট্টগ্রাম নগরীর চেরাগীপাহাড় লুসাই হলে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, চট্টগ্রামের বিশ^মৈত্রী বৌদ্ধ বিহার ও কর্ণফুলী বড়গাঙ বৌদ্ধ বিহারে অবৈতনিক অধ্যক্ষ হিসাবে বিজয়ানন্দ ভিক্ষু দীর্ঘ ২৮ বছর দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সম্প্রতি একটি গোষ্ঠী ঐ বৌদ্ধ বিহারের সম্পদ লুণ্ঠন করার হীন মানসে ষড়যন্ত্র করে সভাপতি ও সহ-সভাপতির সভাপতিত্বে কোন সভা না করে একটি রেজুলেশনের মাধ্যমে প্রধান সমন্বয়কারী অমল বড়–য়া ঐ বৌদ্ধ বিহারগুলো ও ভিক্ষুদের বিরুদ্ধে কুচক্রী, বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আমরা এটার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছি। আজকের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সেই ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচন করছি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরো জানান, একটা গোষ্ঠী বা ব্যক্তি এবং বড়গাঙ বৌদ্ধ বিহার ও বড়গাঙ শিশু সদন এর বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা তথ্য ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বৌদ্ধ ধর্মের সম্মানহানি ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে। বিজয়ানন্দ ভিক্ষু দুইটি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ১। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ কেন্দ্রীয় বিশ^মৈত্রী বৌদ্ধ বিহার ২। উক্ত বৌদ্ধ বিহারের শাখা বৌদ্ধ বিহার চট্টগ্রাম কর্ণফুলী বড়গাঙ শিশু সদন ও বড়গাং বৌদ্ধ বিহার। এ দুইটি বৌদ্ধ বিহারে সার্বিকভাবে ধর্মীয় কাজকর্ম পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এবং এ যাবৎ দায়িত্ব দেওয়ার পর দুইটি বৌদ্ধ বিহার দিন দিন উন্নতি হচ্ছে। এ উন্নতি দেখে অমল বড়–য়া সহ ষড়যন্ত্রকারীগণ হিংসার বর্শবর্তী হয়ে গভীর চক্রান্ত করছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানান, বিগত ২০২৪ সালের ১২ এপ্রিল তারিখে অমল বড়–য়ার সভাপতিত্বে সভার কার্যবিবরণী বহিতে দেখা যায় আনন্দ বড়–য়া চৌধুরীর নাম আছে, কিন্তু তাঁর স্বাক্ষর নেই আর অনুরূপ সভাপতির নাম আছে স্বাক্ষর নেই। এতে বুঝা যায় যে, এ সভা সম্পূর্ণ ভূয়া। আমাদের দুই বিহারাধ্যক্ষ কোন শর্ত ভঙ্গ করে নাই। তারা বৌদ্ধ ধর্মালম্বী হয়েও অবৌদ্ধের কাজ করছে। তারা বুদ্ধ ধর্মের বিনয়, বিধি বিধান মানে না বিধায় একজন বৌদ্ধ সন্যাসীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে এবং বুদ্ধের বিনয় মতে ধর্মীয় গুরু সব সময় সর্বোচ্চ স্থানে থাকে।

শুধু বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু নয়, সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি প্রত্যেক ধর্মীয় গুরু যার যার ধর্ম অনুসারে সমাজে সর্বোচ্চ স্থানে রাখেন।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরো জানান, বড় গাঙ শিশু সদন ও বড়গাঙ বৌদ্ধ বিহার হচ্ছে চট্টগ্রামস্থ আগ্রাবাদ সিডিএ আ/ এ বিশ^মৈত্রী বৌদ্ধ বিহারের শাখা বৌদ্ধ বিহার হিসেবে চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ সহ তথা বিশে^র বৌদ্ধ প্রতিরূপ বৌদ্ধ রাষ্ট্রগুলোই অবগত আছেন। এটা বৌদ্ধ দায়ক দায়িকাগণ অস্বীকার করতে পারবে না।

সুতরাং আমাদের দুই বৌদ্ধ বিহারের আমার গুরু অধ্যক্ষ বিজয়ানন্দ ভিক্ষু। ১৯৯৭ ইং হতে ২০২৫ ইং অদ্যাবধি সুদীর্ঘ ২৮ বছর বড়গাঙ বৌদ্ধ বিহার ও বড়গাং শিশু সদন এবং কেন্দ্রীয় বিশ^মৈত্রী বৌদ্ধ বিহার এর চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সার্বিক দায়িত্বে আছে তিনি অস্থায়ী অধ্যক্ষ নয়, তিনিই আজীবন অধ্যক্ষের পদে আসীন রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানান, দক্ষিণ শাহমীরপুর বড়–য়া পাড়ার স্থানীয় কমিটি কর্তৃক দুই বিহারের অধ্যক্ষ ভিক্ষুকে/ পুরোহিত অধ্যক্ষ পদ হতে অপসারণ করতে পারে না। কারণ স্থানীয় কমিটির উপরে ও উর্ধ্বে কেন্দ্রীয় কমিটি চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ এবং শাখা কমিটি সিইপিজেড চট্টগ্রাম, কর্ণফুলী ও আনোয়ারা শাখা কমিটি রয়েছে। উক্ত উর্ধ্বতন কমিটির শলাপরামর্শ না করে, যে কোন মনগড়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করছি। বিহারাধ্যক্ষের জীবদ্দশায় তার শিষ্যমন্ডলী বিহার অধ্যক্ষ হতে পারে না। পক্ষান্তরে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষকে অব্যাহতি অথবা অপসারণ করা কোন কমিটির এখতিয়ার নেই। তার অধ্যক্ষের পদ স্থায়ী, কারণ তিনি অবৈতনিক কাজ করছেন।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরো জানান, দক্ষিণ শাহমীরপুর বড়–য়া পাড়ার স্থানীয় কমিটি হল একটি ভূয়া বানোয়াট কমিটি এই কমিটিতে যিনি সভাপতি তিনি অনেক বছর বিদেশে অবস্থান করছেন। গত ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই বিহারধ্যক্ষকে ভুল বুঝিয়ে স্থানীয় কমিটিতে অনুমোদন করাইছেন।

বিহারাধ্যক্ষ অত্যন্ত সরল সাদাসিদে বৌদ্ধ ধর্মের পুরোহিত। উক্ত কমিটি বিহারাধ্যক্ষকে বলে ছিলেন আমরা দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ বড়গাঙ বৌদ্ধ বিহারে সিয়ংদান বা পিন্ডদান হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছি। তাই আমরা এবার নতুন কমিটি গঠন করে সিয়ং বা পিন্ডদান করিব বলে প্রলোভন দেখিয়ে কমিটিতে স্বাক্ষর করান। স্থানীয় কমিটি বিহারাধ্যক্ষ কিংবা ধর্মীয় গুরুর সাথে এ রকম ব্যবহার করার প্রতারণার শামিল। তাই আমরা চট্টগ্রামস্থ আগ্রাবাদ বিশ^মৈত্রী বৌদ্ধ বিহারের অধীনে সকল কমিটি কর্তৃক দক্ষিণ শাহমীরপুর বড়–য়া পাড়াস্থ স্থানীয় ভূয়া কমিটি প্রত্যাখ্যান করছি।

উল্লেখ্য যে,উক্ত মিটিং এ সভাপতি উপস্থিত ছিল না এবং তার নাম না লিখে সিল/ স্ট্যাম্প দিয়ে তার নাম লিখে দেয়া হয়েছে। আর তার স্বাক্ষর নকল করা হয়েছে। অথচ অধ্যক্ষের নাম কম্পিউটারে লেখা হয়েছে। উদ্দেশ্যপ্রেণোদিতভাবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম কম্পিউটারে লেখা হয়নি। সভাপতির স্বাক্ষর জাল বলে সন্দেহতীত মনে হয়। যেহেতু সভাপতি মহোদয় দেশের বাইরে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানান, দক্ষিণ শাহমীরপুর স্থানীয় বড়–য়া পাড়ার কমিটির সভাপতি দেবপ্রিয় বড়–য়া কয়েক বছর যাবৎ দুবাই নামক একটি রাষ্ট্রে রয়েছে। কার্যকরী কমিটিতে সভাপতি থাকাবস্থায় প্রধান সমন্বয়কারী কিভাবে সভায় সভাপতিত্ব করতে পারে এবং কমিটির সভায় মিটিং হলে উক্ত মিটিং এ সভাপতি মহোদয় তার ক্ষমতাবলে সভাপতিত্ব করেন এবং তার অবর্তমানে সহ সভাপতি পদাধিকার বলে সভাপতিত্ব করে সভা পরিচালনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরো জানান, ১৯৯১ সালের ২৫ জানুয়ারী ‘বড়গাঙ শিশুসদন ও বড়গাঙ বৌদ্ধ বিহারটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালে সর্বপ্রথম অর্থায়ন করেছিল চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে অবস্থিত বিশ্বমৈত্রী বৌদ্ধ বিহার। তখন হতে ‘বড়গাঙ শিশুসদন ও বড়গাঙ বৌদ্ধ বিহার’টি আগ্রাবাদস্থ বিশ্বমৈত্রী বৌদ্ধ বিহারের অন্তর্গত ও আওতাধীন শাখা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য হয়ে আসছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানান, প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন পরম শ্রদ্ধেয় স্বর্গীয় প্রয়াত ভদন্ত ধর্মতিলক ভিক্ষু মহোদয়। বর্তমানে তাঁর উত্তরসুরী হিসেবে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন শ্রদ্ধেয় বিজয়ানন্দ ভিক্ষু মহোদয়।

উল্লেখ্য তিনি বিশ্বমৈত্রী বৌদ্ধ বিহারেরও অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। বিশ্বমৈত্রী বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ শ্রদ্ধেয় বিজয়ানন্দ ভিক্ষু মহোদয় আমার গুরু। গুরুর আদেশে আমি বড়গাঙ বৌদ্ধ বিহারের উপাধ্যক্ষ পদে আসীন রয়েছি। আমি কোন দায়ক-দায়িকা বা জনগণ কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত হই নাই।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরো জানান, এই বৌদ্ধ বিহারের অবস্থানরত ভিক্ষুদের খাবার-দাবার, চিকিৎসা ও ভরণ-পোষণসহ যাবতীয় বিষয়ে দেখাশোনা করেন চট্টগ্রামের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ও কোম্পানীতে চাকুরীরতরা, পার্বত্য চট্টগ্রাম হতে আসা চট্টগ্রামে অবস্থানরত হাজার হাজার দায়ক-দায়িকা, উপাসক-উপাসিকাবৃন্দ। অধিকাংশ দায়ক-দায়িকাবৃন্দ বসবাস করেন সিইপিজেড এবং কেইপিজেড এলাকায়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানান, বড়গাঙ শিশুসদন ও বড়গাঙ বৌদ্ধ বিহারের পাশে রয়েছে একটি ছোট বড়–য়া পাড়া। তাঁরাও বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। তাঁদের পাড়ায় পূর্বে নাম ছিল রতন জ্যোতি বৌদ্ধ বিহার। বর্তমানে দেয়াং পাহাড় শাক্যমনি বৌদ্ধ বিহার নামে একটি বিহার রয়েছে। তাহারা ঐ বৌদ্ধবিহারে বিভিন্ন পূজা-পার্বণ অনুষ্ঠান উদযাপন করে থাকে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরো জানান, আমি জেনে ও শুনে খুবই মর্মহত, হতাশ ও হতবাক যে, স্থানীয় অমল বড়–য়ার সভাপতিত্বে গত ২০২৪ সালের ১২ এপ্রিল দক্ষিণ শাহ মিরপুরস্থ বড়–য়া পাড়ার দায়ক-দায়িকাদের আলোচনা সভায় অত্র বিহারে অনুষ্ঠিত হয়। কার্যবিবরণী বহিতে লেখা পড়ে আমি অত্যন্ত মর্মাহত এবং হতাশ। কারণ তাঁরা এ যাবৎ পর্যন্ত কোন সভা বা মিটিং বড়গাঙ বৌদ্ধ বিহারে করেননি। যাবতীয় সভা/ মিটিং তাঁরা স্থানীয় বড়–য়া পাড়ার বৌদ্ধ মন্দিরেই করে থাকে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানান, যেহেতু অমল বড়–য়ার সভাপতিত্বে এই বড়গাঙ বৌদ্ধ বিহারে কোন সভা অনুষ্ঠিত হয়নি অতএব সেই সভার কার্যবিবরণী ও গৃহীত সিদ্ধান্ত ভুয়া, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক। তাছাড়া অমল বড়–য়া স্থানীয় কমিটিতে প্রধান সমন্বয়কারীর সভাপতিত্ব করে আর পূর্ণাঙ্গ কমিটির সভাপতি সে স্থানীয় কমিটির সভাপতি বাদ দিয়ে প্রধান সমন্বয়কারীকে সভাপতিত্ব করার অর্থ হচ্ছে বড়গাঙ বৌদ্ধ বিহার ও বড়গাঙ শিশু সদন সহ ভিক্ষদেরকে তাড়িয়ে দিয়ে বৌদ্ধ বিহার ভোগ দখল করার চক্রান্ত করছে। আমি স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, এই সভার কার্যবিবরণী ও গৃহীত সিদ্ধান্ত ভুয়া, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বড়গাঙ শিশুসদন ও বড়গাঙ বৌদ্ধ বিহারের উপাধ্যক্ষ ভদন্ত ধর্মকীর্তি ভিক্ষু, প্রজ্ঞা দর্শন ভিক্ষু, কুমার কশ্যপ ভিক্ষু ও বিশ^মৈত্রী বৌদ্ধ বিহার এবং এর শাখা বিহার বড়গাঙ বৌদ্ধ বিহারের পরিচালনা কমিটি, দুই বিহারের অঙ্গ সংগঠন এবং চট্টগ্রাম শহরস্থ সচেতন বৌদ্ধ সমাজ।

 

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ভোলায় জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত ।

দ্বীপজেলা ভোলার আধুনিক সাহিত্য সংগঠন জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে ।গতকাল ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যায় ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম এর সভাপতিত্বে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টিসংসারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান, জাতীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট ভোলা জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রভাষক কবি মিলি বসাক, জলসিঁড়ির সদস্য সচিব কবি মহিউদ্দিন মহিন, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জলসিঁড়ির সংগঠক কবি নীহার মোশারফ, আবৃত্তিশিল্পী সমাজসেবক মীর মোশারেফ অমি প্রমুখ ।

সভায় উপস্থিত সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম কে সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সাংবাদিক কবি রিপন শানকে নির্বাহী সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সংগঠক মহিউদ্দিন মহিনকে সাধারণ সম্পাদক, কবি গবেষক কবি নীহার মোশারফ কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫- ২০২৭ গঠন করা হয়েছে ।

কমিটির সহ-সভাপতিগণ হচ্ছেন- সিনিয়র প্রভাষক কবি মিলি বসাক, কবি মোঃ জুলফিকার আলী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গণ হচ্ছেন- কবি আল মনির, আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি । অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ । নির্বাহী সদস্যগণ হচ্ছেন- অধ্যক্ষ কবি এম এস জালাল বিল্লাহ, কবি দিলরুবা জ্যাসমিন, কবি চৌধুরী সাব্বির আলম এবং কবি এরশাদ সোহেল ।

আসছে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার বিকেল ৪ টায় ভোলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিতব্য জলসিঁড়ির মাসিক সাহিত্য সভায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ